Apurba Kr Chakrabarty

Action Classics

4.5  

Apurba Kr Chakrabarty

Action Classics

শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ (পর্ব দুই)

শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ (পর্ব দুই)

14 mins
384


নব্বই একশ স্পীডে, বাইক চালিয়ে, চুল উড়িয়ে হিরোর মত সেদিন রাহুল রুবির সামনে বাইপাসের ধারে বাইক স্ট্যান্ড করল, সামনের এক দোকানে ঢুকল।দোকান থেকে বের হয়ে একটু পর যখন সে বাইকের কাছে এল, দেখল এক মধ্য পঞ্চাশ বয়সের স্মার্ট চেহারার মানুষ তার বাইকের পাসে এক দামী কারে বসে ,তাকে মুচকি হেসে বাহবা সুরে বললেন, "কত স্পীড ছিল?"

তার বাইক চালানোর প্রশংসার সে বড় কাঙ্গাল। গর্বিত হেসে বলল,"একশো ছুঁই ছুঁই!"

"আমি কর্নেল বোসরায়,এখন রিটায়ার্ড বা এক্স আর্মি, সার্ভিসে থাকাকালে মটোর বাইক রালী আমার ফেভারিট ইভেন্ট ছিল। "

রাহুলের বাবা ডিফেন্স নয় তবে প্যারামিলিটারিতে আছেন। এমন উচ্চ স্তরের আর্মির অফিসার তার বাইক চালানোর তারিফে ধন্য মনে করে বলে,  "স্যার আমারও খুব শখ এই সব বাইক ড্রাইভিং ইভেন্টে অংশ নেবার, কিন্ত তেমন যোগাযোগ নেই!"

কর্নেল বললেন, "বয়সে তুমি অনেক ছোট ,তাই তুমি করে বলছি!

"সিওর স্যার, নো প্রবলেম "

"তোমার এই বিজি রাস্তায় এত স্পীড দেখে, তাজ্জব হয়ে গেছি। ঠিক মত ট্রেনিং আর পরিবেশ পেলে তুমি ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হতে পারো! কত নাম যশ খ্যাতি আর টাকা ভাবতে পারো ! এক বছরের যা ইনকাম , বিজ্ঞাপন আর স্পনসর্ডসিপ নিয়ে,সারা জীবন এক ভালো বেতনভূক কর্মচারী পায় না।"

"স্যার আমার তো তেমন যোগাযোগ নেই। "

"আরে তুমি যদি রেসিংস্পেশাল টেকনোলজির বাইক পেতে ,আর রেস ট্র্যাক পেতে ,সঙ্গে কোচিং, ভাবতে পারো, তোমার রাইডার স্কীল, তোমায় কোথায় নিয়ে যেতো!"

"স্যার আমি আপনাকে প্রথম দেখছি,চিনি না,তবে ডিফেন্স পার্সোনালদের প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধা আছে।সেই পেক্ষিতে বলছি, আপনার এই লাইনের যোগাযোগ যদি থাকে, আপনার একটু সুপারিশ যদি পেতাম ! "

খানিক চুপ থেকে কর্নেল বললেন "দেখো,আমার কিছু এই ধরনের এখানকার  অ্যামেচার মটোর স্পোর্টস সংস্থার সাথে ভাল যোগাযোগ আছে, ওনারি মেম্বরও আছি। আজই একটা মটোর বাইক রালি ট্রায়াল টুর্নামেন্ট আমন্ত্রিত আছি । ডানকুনি - পালসিট, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, পাঁচটায়। এখন বারোটা, যাবে!"

"স্যার ইচ্ছা তো আছে ,লোকেশন আর রুট ,আমার ঠিক তো জানা নেই ওদিকটা!"

"তোমার বাড়ি!"

"এই তো স্যার ডাকুরিয়া ব্রীজে কাছেই। "

"ওকে। আমি বালিগঞ্জে থাকি। তুমি তিনটের সময় ডাকুরিয়ার ব্রীজের আগেটা দাঁড়াবে।আমার কারে তোমায় তুলে নেবো।" কর্নেল এরপর নিজের গাড়ী  ড্রাইড করে রাহুলকে বাই জানিয়ে চলে গেলেন।

রাহুল আপ্লুত, নমস্কার জানিয়ে বাইক হাঁকিয়ে,যেন বিশ্ব জয় তার শুধু সময়ের অপেক্ষা।এই মানসিক আনন্দে সে ও বাড়ির দিকে অগ্রসর হল।

সারাদিন বাপের টাকায় তেল নষ্ট করে বাইক চালানো তার নেশা।অবাধ্য ছেলে ,বাবা মায়ের কথা শোনে না, পরামর্শ নেয় না।তাদের জন্য ভাবা চিন্তা করার কথা তো বয়েই গেছে। আর সীমার সাথে প্রেম আজকের নয়, সেই কলেজ জীবন থেকেই। বাড়িতে সে থাকে খুব কম, ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনা শেয়ার করে না। দুটো বোন যেন তার গলগ্রহ, বাবা মা ওদের নিয়ে যেন  বড় অপরাধ করেছে,  তাকে বঞ্চিত করেছে, তার সম্পদে ওরা ভাগ বসিয়েছে। হোটেলের মত শুধু খাওয়া আর শোয়া এটাই তার বাড়ির সাথে সম্পর্ক।

রাত তখন আটটা,সীমা ফ্ল্যাটে নিজের ঘরেই ছিল। আজই সে, ফ্ল্যাটের সম্পর্কের কাকু, আবার ল ইয়ার হাইকোর্টের বসেন। তার স্বামীর পথ দুর্ঘটনায় অকাল মৃত্যু জনিত কারনে, কী কী কম্পেনসেশন ও ডাই ইন হারনেস গ্রাউন্ডে চাকরী পেতে পারে। এবং কত সত্ত্বর সম্ভব, সে আলোচনা করেছে। তার বান্ধবীর বাবার অকাল মৃত্যুর জন্য , যে সুত্রেই রাজীবের সাথে তার যোগাযোগ। বান্ধবীর ঐ কেশ অনেকটা অগ্রসর হলেও চাকরিটা এখনও পায় নি। তাই সীমা বেশ টেনশনে ছিল। খুব বেশী নগদ অর্থ, হিসাবী রাজীবের কাছে হাতাতে পারে নি। তাকে নমিনি করে ইনসুরেন্সটাও করল না।

রাহুলের সাথে সীমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক মা জানে।কিন্ত রাহুলকে এখন যে  তার সাথে যোগাযোগ ও ফোনে কথা বলা সীমার নিষেধ, তার মা জানত না, তাই রাহুল অবাদে মাসীমার অনুমতি নিয়ে সোজা সীমার ঘর।

রাহুল বেশ অবসন্ন ক্লান্ত অসুস্থ লাগছিল, কেমন যেন উদভ্রান্ত অস্থির ।

সীমা কড়াসুরে বলল "তোমাকে যে এখন কমাস আমার সাথে দেখা করা,বাড়ি আসা,ফোনে কথা বলা নিষেধ করেছি না! চলে এলে যে!এটা কিন্ত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে! কেউ ছাড় পাবো না।"

রাহুল কপাটটা ভিতর থেকে বন্ধ করে ,জামা প্যান্ট খুলতে দেখে সীমা হতবাক! মুখ নামিয়ে বিরক্ত হয়ে বলে,"সব জিনিসের একটা মুড থাকে,এই টেনশনে, এই অসময়ে এখন তুমি সেক্স করবে ! পাগল!

রাহুল হতাশায় ভয়ে ভেঙ্গে পড়া কাতর হয়ে ,বলে "পাগল আমি নয়, তুমি দেখো আমার কী হাল করেছে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।"

সীমা এবার সত্যিই চমকে ওঠে, উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় বলে "এসব কী !"

রাহুলের সারা শরীরে বেল্টের মারের আঘাত, এতটাই তীব্র, পিঠ,বাহু পাছায় রক্ত জমে যেন কালসিটে এক দুটো নয় অজস্র।

বিস্মিত বিচলিত সীমা বলে "এসব কী করে হল!"

রাহুল জানাল," ওবেলা এক ভন্ড কর্নেল বোস রায়ের সাথে আলাপ হয়, তার কথামত ওর গাড়ীতে, ডানকুনী মটোর বাইক রালী দেখতে যাচ্ছিলাম। আচমকাই রাস্তায় গাড়ীটা ,পুলিশে আটকায়, তল্লাসি করে কিছু সন্দেহ জনক জিনিস পেয়েছে জানায়, গাড়ী থেকে নামিয়ে কর্নেল  আর আমাকে হাতে কড়া লাগিয়ে অন্য গাড়ীতে তোলে। বেশ কিছুদুরে একটা বাগান বাড়ীর মত নিরিবিলি স্থানে নিয়ে যায়। এরপর একটা ছোট ঘরে আমাদের নিয়ে গেল । কর্নেলকে ছেড়ে দিল। সবটাই ছিল অভিনয়। কর্নেল নয় ওঠা বড় মম্তান।আমাকে রিভালবার দেখাল, মুখ চোখ, হাত, পা বেঁধে,উল্টে মেঝেতে উবুকরে ফেলল। তারপর কি বেল্টের মার না মারল,এক সময় মনে হচ্ছিল ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে।অসার হয়ে পড়লে, ঐ ভেকধারী কর্নেল ওদের বলল, ওকে এবার ছেড়ে দাও। আমার মুখ চোখের বাঁধন খুলে দিল। তখন ঘরে কোন আলো নেই অন্ধকার। হুমকী দিয়ে বলল, সীমার সাথে সম্পর্ক রাখলে তোর পা দুটো চিরতরে পঙ্গু করে দেবো। আর এই সব নালিশ পুলিশে করলে আরও বিপদে পড়বি, তোর সব কুকীর্ত্তি আমাদের হাতে। ফাঁসির সাজা পাবি।আমাদের কথা মত চললে প্রানে বাঁচবি। আবার যেদিন যেখানে ডাকব চলে আসবি।এরপর হাত পা খুলে দিল, গাড়ীতে কিছুদুর এসে একটা প্যাকেট ধরিয়ে বলল, " ধর এতে দশ হাজার আছে।একটা গাড়ি ধরে বাড়ি যা। বাড়িতে কিছুই বলিস না, লজ্জায় আজ আর কী বলবি! কোন ভালো ডাক্তার দেখিয়ে নিবি। আঘাত টা অনেক দিন থাকবে , জীবনে ভুলতে পারবি না।" তারপর ধাক্কা দিয়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিল।

কথা শেষ হবার আগে অধৈর্য ভীষণ বিরক্ত সীমা বলল, "তুমি সত্যিই নির্বোধ, এমন একটা জটিল পরিস্থিতিতে,এক অজানা অচেনা কার কথায় চলে গেলে !"

"শোন তোমার আর কোন জ্ঞান পরামর্শ নিতে চাই না।আমার প্রায়়শ্চিত্ত আমি করছি। তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্কে আজই ইতি।"

"কী বলছ! পাগল হয়েছ!"

"হ্যাঁ যদি তাই বল আমার আপত্তি নেই। নিজের পা দুটো হারিয়ে আমি প্রতিবন্ধী তোমার জন্য হতে পারব না। ওরা সব পারে ।"

"এতো সোজা! এতোটা ভীরু কাপুরুষ তোমায় জানতাম না।ক্যারাটে শিখেছ, হাতে মাসল বানিয়ে ,তুমি তো দেখছি রাজীবের অধম! "

একটা ফোন এল, হঠাৎই রাহুলে কাছে। অজানা নম্বর থেকে ,কিন্ত কিন্ত করে রাহুল ফোনটা ধরল, হুমকির সুরে ওদিক থেকে কেউ বলছে, "তোমাকে কিন্তু সতর্ক করেছিলাম, আবার গেছো সীমার কাছে?"

রাহুলের মোবাইলের স্পিকার অনছিল।

সীমা অধৈর্য, বলল "তুমি ফোন নম্বরটা বলো ,ওর নামটা বের করে পুলিশে কমপ্লেন করব। হুমকি দেওয়া বের করছি। "

রাহুল সীমার কথা গুরুত্ব না দিয়ে, অন্য প্রান্তের ব্যক্তি কে কাঁচুমাচু সুরে বলল,"আমি ওকে এটাই বলতে তো এসেছি, ওর সাথে আমার সম্পর্ক আজই শেষ। ঈশ্বরের দিব্যি, এর পর আর কোন  যোগাযোগ রাখব না।"

সীমা রাহুলের ফোন কেড়ে নেয়,কড়া সুরে বলে "কাপুরুষের মত ফোনে হুমকী কেন! আর লুকিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর বাহাদুরী নয়, বরং  তা সন্ত্রাসবাদীদের মত কাপুরুষতা ,সাহস থাকে তো সামনে আয়!"

ওদিক থেকে উত্তর এল বেশ রসীকতার সুরে, "আমি রাজীবের প্রেত, সামনেই আছি দেখতে পারছ না !" বলে অট্টহাসী হাসতে লাগল।

"রাবিশ" বলে সীমা ফোন কেটে দিল। 

এবার সীমা লাল বাজারে ফোন করল। ফোন নাম্বার ও অ্যপসের মাধ্যমে নাম জেনে, কমপ্লেন করলে উত্তর এল, নিকটবর্তী থানায় আজ বা কাল লিখিত এই নাম্বার আর ব্যক্তির নামে কমপ্লেন বা এফ আই আর করুন। 

ফোন কেটে দিল। রাগত সীমা এবার পুলিশের মুন্ডু পাত শুরু করল।

রাহুল বলল,"এমন কমপ্লেন পুলিশে দিন শত শত হয়, আর তুমি ভি আই পি নও, নিজেকে ভাবো কী?পুলিশ তোমার চাকর ! আমি চললাম, আর কোন যোগাযোগ রাখব না। তুমিও রেখো না।"

সীমা কিছু বলতে যায়। রাহুল ইতিমধ্যেই তার পোষাক পড়েছিল। মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিতে বলল , " অনেক হয়েছে,জানি না তোমার এই মন্থরা চলে আবার কি বিপদে পড়ব। তুমি আনট্রাস্টটেড, ভালো নয়। আজ বুঝছি।"

সীমা কোন উত্তর দিল না। কেমন যেন নিজেকেই চরম প্রতারিত পরাজিত মনে হচ্ছিল। রাহুলের জন্য এত বড় ঝুঁকি ! এত অনিশ্চয়তা ! আর সে কীনা,এক দিনেই এক হুমকিতে সব শেষ করে দিল।কাপুরুষ ,একনম্বর স্বার্থপর!

পরদিন সকালে স্থানীয় থানায় সীমা একটা এফ আই আর করে। আর তার ঘন্টা খানেক পর এক অজানা নাম্বার থেকে ফোন এল, বলল , "আমি যাদবপুর থানা থেকে বলছি। আপনার স্বামীর কার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ব্যপারে পুলিশ তদন্ত করছে, যদিও আসামী আন নোন্ , আজ কিন্তু আপনার  শ্বশুর বাড়ির তরফে আপনাকে সন্দেহ তালিকায় রেখে একটা এফ আই আর করেছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। পরে সময় মত যখন দরকার পড়বে থানায় ডাকব । এখন আমাদের না জানিয়ে কলকাতা ছেড়ে যাবেন না।তাতে সমস্যা আর সন্দেহ বাড়বে।

সীমা বড় টেনশনে পরে গেল। শ্বশুরবাড়ির মানুষ তাকে সন্দেহ করছে ! তার বিশ্বাস হচ্ছিল না। প্রতিবেশী উকিল কাকুকে কান্নায় ভেঙ্গেপড়ে বলল "আমি যা খরচ করতে হয় করব কাকু, এই অপমান থেকে বাঁচান, কেউ হয়ত রাজীবের মৃত্যুর ব্যপারে তাদের বিভ্রান্ত করে থাকবে। "

রবিবার থাকায় কোট বন্ধ, হাতে সময় ছিল,উকিল কাকুর গাড়িতেই সীমা তার যাদবপুরের শ্বশুর বাড়ি গেল, সীমাকে কেমন উদভ্রান্ত উদাসীন ও বিষন্ন দেখাচ্ছিল ।সীমাকে দেখে শ্বশুর শাশুড়ি ,কিছুটা যেন হতাশাজনক সুরে বলল,"এর মধ্যেই তুমি ওর অফিসে গেছিলে?"

সীমাকে গার্ড করে উকিল কাকু বললেন"ও যেতে চায় নি। আমি বলেছিলাম। জগত বড় নিষ্ঠুর, ওর বাড়ির অবস্থা ভালো নয়, ওকে তো বাঁচতে হবে! এ স্ত্রী হিসাবে তার দাবী সংক্রান্ত অ্যাডভান্স  পিটিশন একটা করে রাখা উচিত। কিন্ত এটা খুবই বেদনার, এখানকার যাদবপুর থানা থেকে ওকে ফোন করা হয়েছে।সতর্ক করেছে, এখন যেন সীমা কলকাতার বাইরে  না যায়।  আর সেটার কারণ আপনারা ! রাজীবের কার অ্যাকসিডেন্টে মৃত্যু জন্য আপনারা সীমার নামেও এফ আই আর করেছেন!এমনিতেই ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ,এই সময় আপনারা মা বাবার তুল্য, এটা কী করলেন?"

রাজীবের বাবা মা যেন আকাশ থেকে পড়ল,বলল "আমরা কোন এফ আই আর করি নি।বরং থানায় গিয়ে খবর নিন। "

সীমা কিছু ইশারা ইংগিতে, উকিল কাকু চুপ করে গেলেন। সীমা উকিল কাকুকে গাড়িতে ফেরার পথে বলল, "এটাও হয়ত ভুয়ো ফোন, থানার ফোন ভেবে চেক করিনি।এমন ভূয়ো ফোন কেউ আগেও করেছে। একজনের নামে থানায় নালিশ করেছি।" কিন্তু নিদিষ্ট অ্যপস্ থেকে এবার নাম দেখে সীমা চমকে যায়। রাজীব রায়সিংহ ! এতো তার মৃত স্বামীর নাম! কিন্তু এ নাম্বারে ফোন তো তার ছিল বলে জানা নেই! উকিল কাকু বললেন"একই নামে দুজন ব্যক্তি হতেই পারে।"

তিনি নিশ্চিত হতে এবার যাদবপুর থানার ফোন করলেন। তার কাছে কলকাতার সব থানাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অফিসের তথ্য সংগ্রহ থাকে।এবার কনফার্ম হলেন, এই নামে যাদবপুর থানায় কোন অফিসার বা কর্মী নেই। এধরনের কোন এফ আই আরও হয়নি, আর ফোনও ঐ থানা থেকে হয়নি।

সীমা হাঁফ ছেড়ে ভাবল।কোন দুষ্ট মানুষ নিশ্চয়ই তার পিছনের পড়েছে, হয়ত যাদের রাজীব তাকে অনুসরণ করতে রেখেছিল। ভাবল, আর কতদিন করবি! রসদে টাকা কে জোগাবে !

বাড়ি ফিরে সীমা একটু নিশ্চিত হয়ে ঘুমোচ্ছিল। ফোনের রিং বাজতে উঠে ফোন ধরল। অন্য প্রান্তে থেকে জানাল, "আমি লোকাল থানা থেকে বলছি আপনি যে নাম্বার ও ব্যক্তির নামে থানায় অভিযোগ করেছেন, তিনি এক সপ্তাহের আগেই মারা গেছেন, হয়ত তার মোবাইলের সিম অন্য কেউ ব্যবহার করে আপনাকে  ফোন করছেন। "

সীমা বলল, " হয়ত তাই, আজ আমার মৃতস্বামীর নামে এক ফোন নম্বর থেকে আমায় জ্বালাতন করেছে, তাও যাদবপুর থানার নাম নিয়ে। আমি কী করব? "

"সেটা কোন আইনজীবীর পরামর্শ নিন।"ফোন কেটে দিল।

সীমা পাগলের মত ভাবছিল, এসবের মানে কী! কোন দুষ্ট চক্র তাকে কী জব্দ করতে নেমেছে!তবে কী তারা রাজীবের দুর্ঘটনা ইচ্ছাকৃত, পরিকল্পনা মাপিক ধরেই নিয়েছে! আর আমি তাতে জড়িত! রাহুল কে সন্দেহ করেছে ! ভয় দেখিয়ে রাজীবের কাছে কিছু তথ্য পেলো না তো ! ও তো আমার ফোন ধরবে না। হোয়াটস্ অ্যাপসে কিছু লিখলে ও যে বোকামী করবে না, বিশ্বাস কী !

আর কিছু ভাবতে পারছিল না। নিজের প্রতি আজ নিজের ধিক্কার লাগছিল। কি ভুলই না সে করেছে! আমার চেয়েও বেশী ধূর্তের পাল্লায় পড়লাম না তো!  বিপদ যেন আসন্ন ভেবে কেমন উদভ্রান্ত আর বিষন্ন দেখাচ্ছিল ।

কিছুক্ষন মৌন বসে ভাবল, "একবার রাহুলের সাথে দেখা করে আসি। ওটা নির্বোধ এতটা বুঝি নেই। একটু সাহস আর পরামর্শ ওকে দিতেই হবে।"

রাহুলের বাড়ি বেশী দুর নয়, স্কুটিতে গেল।

রাহুলের মা তাকে ভালো মত চেনে। দরজা খুলে তাকে দেখেই আতংকে তার মুখের উপর দরজাটাই বন্ধ করে দিল। কোন কথা শুনতে চাইলেন না,কথা বললেন না। তবে কী রাহুল তার মাকে সব বলেছে! তার প্রতি একরাশ ঘৃনা উনার মনে ঢুকিয়ে দিয়েছে! মনমরা হতাশ সীমা অগত্যা বাড়ি ফিরছিল।

একটা গাড়ী তার মনে হচ্ছিল সমানে তাকে ফলো করছে!আচমকাই তাকে প্রায় ধাক্কা মারতে যাচ্ছিল, কোন মত নিজেকে বাঁচালো,তীব্র ভয় আর উদ্বিগ্ন তাকে গ্রাস করেছে।সে নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছিল।

বাড়ি ফিরে মুখহাত ধুয়ে সবে বসেছে। মা চা পাঁপড় দিয়ে গেছিলেন। হঠাৎই ফোন,সেই নাম্বার, তার মৃত স্বামীর নামে, যাদবপুর থানার নাম করে তাকে যে বিভ্রান্ত করেছিল। মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে কিছু যদি ক্লু পাই!এই পরিকল্পনায় ফোন ধরল।

অন্য প্রান্ত থেকে রসীকতার স্বরে বলল, "খুব তখন ভড়কে গেছিলে বলো ! শ্বশুর বাড়িতে শেষে উকিল কাকুকে নিয়ে  ছুটতে হল তো !

"আপনি কে বলছেন? কি চান ! খুলে বলুন না ! "

"খুব ভয় পেয়েছিলে, যখন গাড়িটা তোমায় চাপা দিতে দিতে দিল না! ওখানেই তোমায় কিন্তু মেরে ফেলতে পারতাম , যেমনটা রাজীব মরে ছিল। "

 সীমা কাতর ভাবে বলল,"ঐ ঘটনার সাথে আমি বা রাহুল কোন ভাবেই জড়িত নয়।প্লিজ বিশ্বাস করুন, আপনি আমাদের মিথ্যা সন্দেহ করছেন ।"

"কিন্ত মাননীয়া চালাক বুদ্ধিমতী  সীমা ম্যাডাম  ! আমার কাছে যে পোক্ত প্রমাণ আছে।তবে পুলিশ কোর্ট আইন এসব পথে যাব না। বড় দীর্ঘ সুত্রতা। তার পর তুমি মহিলা যদি যড়যন্ত্র লিপ্ত প্রমাণ হও , পাঁচ বছর হয়ত জেল তার পর মুক্তি। রাজীবের আত্মা তাতে শান্তি পাবে কী ! তুমি ওর ধর্ম পত্নী ! , বৈদিক রীতিতে তোমাদের বিয়ে হয়। স্বামীর মৃত্যুর প্রতিশোধ তুমি কী চাও না!"

সীমা কেমন ভেঙ্গে পড়ে,"বলে আমাকে ক্ষমা করুন, আমি বাঁচতে চাই। "

আশ্বাসের সুরে বলে, আমি হত্যার মত কোন বড় প্রতিহিংসা নিজে নেবো না। গ্লানি এলে আত্মহত্যা তুমি করতেই পারো। তবে যদি বেঁচে থাকো ! যত দিন বাঁচবে দগ্ধে দগ্ধে তীব্র ভয়, আশঙ্কা, আর মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই বাঁচবে। রাজীব ও বাঁচতে চেয়েছিল। তোমার ছলনার প্রেমে, নিজের বিশ্বাস ভালোবাসা সঁপে দিয়েছিল, আর শুধুমাত্র তোমার শঠতা আর অবজ্ঞা বিয়ের পর বাকী জীবন দগ্ধে দগ্ধে অসহ্য মানসিক যন্ত্রণায় ছিল। 

ডিভোর্স করে তোমাকে একটা মোটা ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছিল, শুধুমাত্র একটু মানসিক যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে চেয়েছিল, তুমি তাও হতে দিলে না। ওর মৃত স্ত্রী হিসাবে যাবতীয় সুযোগ নেবে,প্রচুর অর্থ, চাকুরী তার পর সুদর্শন স্মার্ট যুবক রাহুলকে বিয়ে করে সুখে থাকবে! কী ঠিক তাই তো? ওঠা হবে না,তোমার জীবন কাঠি , আর সুখের চাবি আমার হাতে।"

সীমা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল কোন উত্তর তার ছিল না।অন্য প্রান্ত থেকেই এবার ফোন টা কেটে দিল ।

রাহুলকে সেদিন অচেনা ফোন নাম্বার থেকে ডেকে পাঠাল।আশ্বাস দিল,আর কোন বেল্টের মার তার শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করবে না। এরপর, তাকে তার মটোর বাইককে ফোনের ইনেস্ট্রাকশন অনুসারে  চালাতে বলল।প্রায় এক ঘন্টার পথ। প্রথমে সে  দূর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর কুড়ি কিমি, তারপর বামদিকে ত্রিশ কিমি দুর এক জনশুন্য নির্জন কাঁচা রাস্থায় তার গাড়ি থামলো।পুলিশ পোষাকের দুজন, দুজন সাধারণ পোষাকে ছিল,দেখে বেশ শক্তপোক্ত বলশালী মনে হয়। মিথ্যা নয় সত্যিই দুজন পুলিশ তবে, আইনে যেটা পাঁচ বছরে ,কোর্টের চক্কর কেটে ন্যায় মেলে না। তারা সেটা,পনের দিনেই ন্যায়ের বিচার দিতে, তাদের এই গোপন নিষ্ঠুর পথ।তাদের গ্রুপে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষ আছেন। যারা দরিদ্র নিরীহ অসহায় মানুষের জন্য অনেক সেবামুলক কাজ করেন।

রাহুলকে এদিন রাস্তার একটা সাঁকোর তলায় নিয়ে গেল। রাহুল দেখল সবার মুখ ঢাকা চেনার উপায় নেই। কোন ভনিতা না করে ওরা বলল,"সেদিন যে গাড়িটা রাজীবকে চাপা দেয়,সেটা তোমার বাবার, এক কেন্দ্র সরকারের অফিসে ভাড়ায় দেওয়া আছে। ঐ অফিসের গ্যরেজেই গাড়ি থাকে। যখন তোমার বাবা বাড়িতে থাকেন,ঐ অফিসের ডিউটি  আওয়ারের পর, গাড়ির ড্রাইভার পান্ডে ,তোমাদের বাড়ীর সামনে, তোমার বাবা নির্দেশ মত গাড়ি রাখেন। উনি রাতে বা ছুটির দিন ব্যবহার করেন। তোমাদের তো কোন গ্যরেজেই নেই। তোমাদের বাড়ীর সামনে রাস্তায় গাড়ি রাখা থাকে।

দুর্ঘটনার তিন দিন আগে থেকেই, তোমার কথামত তোমাদের বাড়ীর সামনে, সন্ধ্যা ছটার পর ড্রাইভার পান্ডে গাড়ি রাখছিল।আর তুমি ঐ গাড়ী চালিয়ে, রাজীবের জন্য ওর বাজার যাওয়ার পথে অন্ধকার রাস্তায়,ওত পেতে থাকছিলে।সেদিন সুযোগ পেলে। সীমার নিশ্চয় নির্দেশ ছিল, দুর্ঘটনার পর রাজীব যেন কোন মতে না বাঁচে। 

সিসি ক্যামেরার সেদিনের ফুটেজ দুর্ঘটনার স্থলের প্রায় পাঁচশো মিটার দুরে রেকর্ড হয়েছিল । ঐ সময়ের সব গাড়ির নাম্বার নোট করি। অনেক ধৈর্য শ্রম আর অনেক মেহনতের পর,প্রতিটি ড্রাইভারকে আমারা জেরা করি। সরকারী লোগো লাগানো  গাড়ি হলেও ছাড়ি নেই। ড্রাইভার পান্ডেকে জেরা করে কনফার্ম হই একাজ তোমার। সীমার সাথে রাজীবের চরম মনোমালিন্য, আর সীমার আচরণ স্বভাব, সেই সঙ্গে তোমার সাথে সীমার প্রেম, দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠতা। দুই দুইয়ে চার মিলে যায়। এসবের পিছনে যার মাথা, সীমাকে আর তোমাকে প্রাইম সাসপেক্টেড মনে করেছিলেন ,তার নাম গোপন থাক। মেধা অনুমান আর বিচক্ষনতায়, তিনি যে কোন ঝানু গোয়েন্দাকে টেক্কা দেন।"

রাহুলে ক দিনের আগের বেল্টের আঘাতের যন্ত্রণা এখনও আছে।কোন দ্বন্দ্বে বা সংঘাতে না গিয়ে বলল, "আমি যা পাপ করেছি ,ফাঁসির সাজার মত   অপরাধ, কিন্তু যা করেছি ,মন্থরা সীমার পরামর্শে, আমার শাস্তি হবে, ওর হবে কী ?

"ঠিক কথা, তোমার দোষ কম, বেকার ছেলে, দুটো বোন গলায়। এই পরিস্থিতিতে  সুন্দরী প্রেমিকাকে একটু সাহায্য করে, যদি অনেক সম্পতি, সঙ্গে সরকারী চাকুরে বৌ জুটে যায়, তোমার একটা ভালো হিল্লে হবে।কিন্তু সে স্বামীর সাথে বেইমানী করেছে। কোর্ট পুলিশ করলে তোমার ফাঁসি, আর ওর বড় জোর কটা বছর জেল। আবার না হতেও পারে।বা দশ বিশ বছর কেশ চলতে পারে। তত দিন কে কোথায় থাকবে, বাঁচবে কীনা এতসব  দরকার কী! আমাদের একটা কথা শুনতে হবে, করে দেখাতে হবে, তাহলেই তোমাকে আমরা ছেড়ে দেবো।"

রাহুল আশান্বিত উদ্বিগ্ন হয়ে বলে, " কি করতে হবে বলুন, আমার দ্বারা যদি সম্ভব হয় করব । "

" সীমা তোমাকে আজও বিশ্বাস করে, তুমি আজই এখন থেকে গিয়ে ফোন করো,ওর কাছে যাও,সেক্স করতে হয় তাও করো, " তারপর গোপনে কিছু কথা বলল।

রাহুল চমকে উত্তেজিত হয়ে বলল "এ তো চরম বেইমানী! " 

কর্কশ গলায় কঠিন ভাবে কেটে কেটে একজন বলল,  "ঠিক  আছে, মানলাম, তুমি খুবই উদার মহান প্রেমিক, ফাঁসির জন্যে প্রস্তুত হও,আর সেটা আজই এখানে এক্ষুনি !কোটের দীর্ঘমেয়াদী আইনী প্রক্রিয়ায়  আমরা অপেক্ষা করব না।" ব্যাগ থেকে এবার একটা লম্বা শক্তপোক্ত  রসি বের করল, কর্কশ ভাবে বলল "ঈশ্বরের নাম জপ করো ।" বলিষ্ঠ দুজন তাকে জাপটে ধরল।

স্বার্থপর নির্বোধ নৈতিকবোধ শুন্য রাহুল ভয়ার্ত্ত গলায় বলল " আমি আপনাদের প্রস্তাবে রাজী, কিন্তু আমি বিপদে পড়ব না তো!"

"কেউ তোমাকে ছুঁতে পারবে না, যদি আমাদের কথা মত চলো, এ ভরসা দিচ্ছি।"

রাত তখন আটটার কিছু বেশী। সীমা ,রাহুলের ফোন পেলো, কদিন আগে রাহুলের বাড়ী থেকে অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হলেও, এই বিপদে একমাত্র সেই সঙ্গী,এখনও তাকে ভালোবাসে।তাই ফোনটা সে ধরল।

রাহুল বলল "খুব জরুরী কথা আছে , তোমার বাড়ী যাচ্ছি।" সীমার মা সেদিন তার অসুস্থ মাকে দেখতে বর্ধমান গেছে। বাবা সন্ধ্যার পর মদে আসক্ত হোন।আর দাদা কর্মস্থল ভিন্ন রাজ্য গুজরাতে। একাই ছিল। আসতে বলল।

রাহুল ঘরে এল।অনেকক্ষণ কাঁদল কেমন উদভ্রান্ত হতাশ, কোন কথা বলছিল না। চার তলা ফ্ল্যাটের উত্তর দিকের রারেন্দাটা অন্ধকার, আলো জ্বলছিল না।আড়াই ফুটের রেলিং, রাহুল সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে নিচু দিকে দেখছিল। ফ্ল্যাটের পিছন দিক আলো নেই। বেশ অন্ধকার জনশুন্য। সীমা তার নিকট এগিয়ে এসে বলল, " কী ভাবছ! কি যেন গুরুত্বপূর্ণ কথা  বলবে!"

আচমকাই রাহুল সীমাকে ঠেসে ধরে রেলিং টপকে ফেলতে যায়। সীমার সাথে ধস্তাধস্তি, সীমার কেঁদে ফেলে " তুমি আমাকে মেরে ফেলবে! আমি আজও তোমাকে সত্যিই ভালোবাসী রাহুল!"

রাহুলের কোন ভাবান্তর নেই,একসময় তীব্র ভয় ও আতংকে সীমা বেহূসের মত হয়ে কেমন কাঁপতে শুরু করল।রাহুল সুবিধাই হল রেলিং টপকে এবার সীমাকে ফেলে দিল।

এই পরামর্শ পুলিশ বেশধারী দুজন আজ তাকে দিয়ে ছিল। ফ্ল্যাট পিছনে উত্তরে দিকে রারেন্দা নিচু রেলিং তার ওর জানা ছিল না, ওরাই বলেছিল, কান্নার অভিনয়টাও তাকে শিখিয়ে ছিল। 

সীমা প্রায় বেহূস শরীরটা নিচে পড়তে দেখে রাহুলের হাত পা ভয়ে অবশ হয়ে আসছিল।এখনি এ বাড়ী ছেড়ে পালাতে হবে। কেউ দেখতে পেলেই বিপদ!

হঠাৎই ফোন বেজে উঠল, অজানা নম্বর থেকে । ,রাহুল ফোন ধরল,অন্য প্রান্ত থেকে কেউ বলল, "সাবাশ!" একটু থেমে বলল," তোমারদের এই ধস্তাধস্তি তারপর রেলিং টপকে সীমাকে ফেলার দৃশ্য যে কোন সিনেমার ভিলেন ইর্ষা করবে।আমরা সব ভিডিও করেছি, এবার নিজে রেলিং টপকে ঝাঁপ মারো।চারতলার উপর থেকে পঁয়ত্রিশ চল্লিশ ফুট নিচে পায়খানার কংক্রিটের কঠিন চেম্বারের উপর পড়লে আর রক্ষা নেই। "

দিশেহারা রাহুল,ভয়ার্ত্ত নিরুপায় হয়ে বলে ,           " কিন্তু আমাকে তো এমন বলা হয় নি !"

"আমাদের কথা মত চলতে বলা হয়েছিল,খেয়াল করো । নিচে পুলিশ দাঁড়িয়ে ,ধরা তুমি পড়বেই ,জোড়া খুনের আসামী, কি পুলিশের ডান্ডা তোমার উপর যে চলবে ! ঐ বেল্টের মারের কতগুন, আর কতদিনের এই যন্ত্রণা একটানা যে চলবে ভাবতে পারবে না।তারপর ফাঁসি তো নিশ্চিত, সঙ্গে কলঙ্ক বদনাম, বাবা মায়ের অসম্মান সামাজিক একঘরে।

একবার সাহস করে ঝাঁপ মরো, কেউ তোমায় ছুঁতে পারবে না। আর ভিলেন নয়, কাল খবরে প্রকাশ হবে,  মহান দুই পেমিক যুগল, চার তলা ফ্ল্যাটের বারেন্দা থেকে ঝাঁপ দিয়ে সহমরনে, তুচ্ছ নম্বর এই জীবনের বিনিময়ে প্রেমের তারা এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে। আর তোমার সব কলঙ্ক ঈশ্বর সাক্ষী চেপে যাব।"

রাহুল তীব্র ভয় দুঃখ অনুসূচোনায় রেলিং টপকে ঝাঁপ দেওয়ার রাস্তাটাই বেছে নিয়েছিল।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Action