অজানা পথেপর্ব - ৪২
অজানা পথেপর্ব - ৪২
ময়না সমীহ লজ্জা করে মিথ্যা বলল,
"হ্যাঁ দাদা খেলাম তো!"
"মিথ্যা বলছ! আমার দিব্যি বলো!"
"আমি তো সকালে চা বিস্কুট খেলাম! আপনি খান তার পর খাব আগে একটা ডিমে পোচ আপনাকে করে দি।"
"ময়না তুমি নিজেকে কাজের দাসী ভাব নিজেকে এ বাড়ির গোপালের মা আমার স্ত্রী ভাব না।:
ময়না কোন উত্তর করেনা চোখ দুটো ছল ছল করছিল ।
"তুমি আগে খাবে তারপর আমি খাব। নিজেকে এত ছোট ভাব কেন।" বিনয় দরদী মনে বলল।
"কেন ছোট ভাবব দাদা! কাল রাতে আমার খুব ভয় করছিল আপনি কাছে টেনে কত যত্ন করে গায়ে হাত দিলেন,আমার ঘুম এল।"
বলতে বলতে ময়না কেঁদে ফেলল।
ময়নার কথা শুনে বিনয়ের মনটা ভীষণ আবেগ প্রবণ হয়ে ভারী গলায় বলল,
"তুমি অসুস্থ দুর্বল খালি পেটে থেকো না,আমার সাথে খাবে এসো।ডিমের পোচ আমি পরে করে নেবো।"
বিনয় ময়নার হাত ধরে স্বস্নেহে ডাইনিং টেবিলে নিয়ে গেল।ময়নার আর কিছু করার ছিল না। অভি এত যে যত্ন ভালোবাসা দিয়ে তার খেয়াল রাখছে, সুখ আনন্দ রাখার যেন মনে জায়গা ছিল না। গ্যাসের বার্নারটা নিভিয়ে বিনয়ের জন্য তার বরাদ্দ খাবার দুজনে খেলো।
বিনয় ডিমের পোচ বাটার গরম করে সামান্য নুন আর গোল মরিচ গুড়ো সংযোগে তৈরী করে নিল। নিজে ও ময়না একসাথে খেলো। তারপর বলল,
"চলো গোপাল এখন ছবি আঁকা নিয়ে ব্যস্ত তোমার গরম জল করতে দিয়েছি আমার ঘরে গিয়ে শোও তোমার ক্ষতটা সম্পূর্ণ পরিস্কার করে ধুয়ে মুছে মলম লাগিয়ে দেবো।"
ময়না ভীষণ বিব্রত আর সংকোচে বলল,
" না দাদা আমি পারব,আপনি কেন এসব করবেন!"
"তোমার লজ্জা করবে!"
"লজ্জা নয় দাদা, নরকে হাত দেবেন! ছি ছি মরন দশা আমার,আপনি গোপালের কাছে বসুন অনেক কষ্ট করে ম্যাডামের কাছে এই গরমে ঘুরে এলেন।"
অভি বলল, "নিজে ঠিকমত পারবে !"
"খুব পারব দাদা।"
"তাহলে এখুনি যাও দেরী করো না।আমি দেখছি।"
বিনয় এরপর গোপালের কাছে ওর ঘরে না গিয়ে ডাইনিংরুমের সোফায় বসল।
একরকম বাধ্য হয়ে সব কাজ রেখে গরম জলে ঠিক মাত্রা একটা ওষুধ মিশ্রণ করে অভির ঘরে ঢুকল।তার কেমন গতকাল রাতের কথা ভেবে ঘরের কপাট বন্ধ করতে গা টা ছম ছম করছে। বিনয় দা তো সামনেই ডাইনিংরুমের সোফায় সেই সাহসে ঘরের কপাট খোলা রেখে তার ক্ষতটা গরম জলে ধুয়ে সে পরিস্কার করছিল। যেন আরো ফুলে আছে! নিজের ভাগ্যেও দোষে দুঃখে কষ্টে চোখে জল আসছিল।তার ক্ষতস্থান পরিস্কার করতে ধুয়ে তার পর বরিক তুলোয় মুছে শুকনো করে মলম বা ক্রিম লাগাতে হবে।নিজে এই ক্ষতস্থানে গরম জলে ধুতেই সে চমকে চমকে উঠছিল। আড়ষ্টভাব সে খুব নার্ভাস বোধ করছিল।
বাইরে থেকে বিনয় নজর করছিল ময়না ক্ষতস্থান ঠিকঠাক ধুয়ে পরিস্কার করতে পারছে না। এই
অনুমান করে বলল আগে ক্ষতটা ধুয়ে মুছে তার পর মলম লাগিয়ে ক্ষতস্থান খোলা রেখে অনেক ক্ষণ শুয়ে থাকবে, যদি লজ্জা করে দরকারে কপাট আমি বাইরে থেকে লাগিয়ে দিচ্ছি ।
আতঙ্কগ্রস্থ ময়না বলে না দাদা কপাট খোলা থাক আমার লজ্জা লাগবে না।দাদা গোপাল যেন এখন এঘরে না আসে।আপনি সোফায় বসে থাকলে আর ঘরের কপাট খোলা থাকলে আমার ভয় করবে না!
কীসের এত ভয় তোমার!
ময়না চুপ করে গেল কোন উত্তর দিল না। মুখ নামাল সে যে কিছু গোপন করছে এটা বিনয় স্পষ্ট বুঝেছিল।
বিনয়ের মনে সংশয় হচ্ছিল মেয়েটার এত ভয় কেন! আর কীসের এত ভয়! কিছু একটা রহস্য লাগছিল ময়নাকে ঘিরে।
বাইরে ডাইনিংরুমের সোফায় বসে ময়নার দিকে বিনয় নজর করছিল। ঠিক মত সে নিজে ক্ষতস্থান পরিস্কারই করতে পারছে না ,অনুমান করে ঘরে ঢুকল, ময়নার কোন লজ্জা নয়, সমীহ করে বলল,
"আমি পারব দাদা!"
বিনয় একটু গম্ভীর মুখে বলল,
"রোগ অসুখে এত লজ্জা করলে চলে না।চলো দেখি!"
হাত সওয়া বেশ গরম ওষুধ মিশ্রণ জলে বরিক তুলো বার বার ভিজিয়ে ক্ষতস্থান বিনয় ধুয়ে ধুয়ে পরিস্কার করছিল।
ময়নার দুচোখে কষ্ট আড়ষ্টতা!,মাঝে মাঝে যন্ত্রণায় আড়ষ্টতায় চমকে উঠছিল।বিনয়কে সমীহ করে কিছু বলতে পারছিল না।
ময়নার ক্ষতস্থানসহ যৌনাঙ্গ এতটাই ফোলা ফোলা নরম টিপলে ময়না যন্ত্রণায় চমকে চোখে জল চলে আসছিল।ক্ষতস্থানের ভিতরের জমে থাকা বদ রক্ত রস বের হতে পারছে না,তাই এই আড়ষ্টভাব বিনয় অনুমান করছিল।তবে সে ডাক্তার নয়। বিনয়ের এসব দেখে যৌন উত্তেজনা, দুরে থাক মনটা খুব খারাপ হচ্ছিল। দরদী বিনয় বলল,
" খুব কষ্ট হচ্ছে ময়না!"