Apurba Kr Chakrabarty

Romance Fantasy Others

4.0  

Apurba Kr Chakrabarty

Romance Fantasy Others

অজানা পথেপর্ব- ৪৪

অজানা পথেপর্ব- ৪৪

3 mins
244


ময়না ওরফে রূপসীর শরীরে জ্বর এলেও ওষুধ দিয়ে জ্বর কমিয়ে, সাহেবের মনোরঞ্জন তার বিছানায় সঙ্গ দিতে উঠতে হত। প্রথম রাতে সাহেবের ফুর্ত্তি নামে তার নৃশংস ধর্ষণে শিকার হয়ে অচেতন হয়ে পড়েছিল,তার কুমারী অক্ষত যোনি ক্ষতবিক্ষত হয়ে রক্ত ক্ষরনের পর তার ক্ষত বিক্ষত যোনি একদিনের জন্য বিরতি পায়নি। তার আতঙ্ক ভয় কষ্ট কাটাতে, প্রথম প্রথম মাদক তাকে যৌন উত্তেজক ও যন্ত্রণানাশক ইঞ্জেকশন দেওয়া হতো। যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার শরীরে এলার্জি হত। বিশেষ করে তার যৌনাঙ্গ লালচে হয়ে থাকত আট দশ ঘন্টা! চুলকানি হাত থেকে বাঁচার জন্য আবার তার এই সব এলার্জি স্থলে লোশন লাগিয়ে দিত। সে ছিল সাহেবের জীবন্ত সেক্স ডল! আর শামসুর বাকী সব খদ্দের কথা এসব ভাবলে এখন ময়নার মনটা কেমন হতাশ হয়ে যায়! 

এই জন্যই তার বুকটা এত কমজোরি।সেই ময়না এক বেশ্যা জেনেও বিনয়দা তাকে গৃহে আশ্রয় দিয়েছেন। গোপালের মায়ের দ্বায়িত্ব পালনের সম্মান দিয়েছেন, আবার বিনয়দা স্ত্রীর ইজ্জত দিয়েছেন।এত সব তার খাওয়া দাওয়া নিয়ে যত্ন নজর!আমার মত সামান্য এক তুচ্ছ ঘৃন্য বেশ্যা মেয়ের প্রতি অভিদার এত যত্ন নজর! এ যেন তার স্বর্গ! এসব কী মা সর্বমঙ্গলার অশেষ কৃপা! ময়না ভাবত।

অসুস্থ জেনে তৎক্ষণাৎ তার ডাক্তারী চিকিৎসা কত মেডিক্যাল টেস্ট কত হায়রানী টাকার শ্রাদ্ধ!তারপর আজ এত যত্ন করে নরক তুল্য ঘৃন্য তার ক্ষতস্থানটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে মলম লাগিয়ে আবার রেষ্ট নিতে বলে গোপালকে নিজে সামলে রাখছেন! কেন এত আমাকে বিনয়দা ভালোবাসে স্নেহ করেন !এসব ভেবে ভেবে তার চোখ জলে ভাসছিল।

রান্নার ঘরে বাকী রান্না ময়না করতে গেল।চোখের জল যেন বাঁধ ভাঙ্গা নদীর মত থামতে চাইছিল না।বার বার তার আনন্দ অশ্রু কাপড়ের আঁচলে মুছে ভেজাচ্ছিল।

অভি একটু পর রান্নার ঘর ময়নাকে দেখে বলল,

"একটু রেস্ট নিতেও তোমার কষ্ট হয়।"

"আমার শরীর ঠিক আছে দাদা,কাজের মধ্যে থাকতে আমার ভাল লাগে।"

বিনয় আর কিছু বলে না। ডাক্তার ম্যাডামের কথা তার মনে পড়ল।এটাই মেয়েটার বদ স্বভাব, কষ্ট হলেও অপরকে জানতে না দেওয়া,অপরকে খুশী সন্তুষ্ট করা ওর আর এক স্বভাব। মরতে বসলেও বলবে ভাল আছি।এত দুর্বল শরীরে কাজে ক্লান্তি নেই।এ কী মানুষ আর আর কিছু! মাঝে মাঝে বিনয় ভাবত অবাক হত মেয়েটার এমন স্বভাব কী জন্মগত! নাকী তাকে অহেতুক সন্তুষ্ট করে!


বিনয় রান্নার ঘরে ঢুকে ময়নাকে সাহায্য করতে লাগল। ময়না সংকোচে একবার বলল,

 

"আমি করছি তো দাদা। আপনি বিশ্রাম নিন।"


বিনয় বলল "আমিও করছি, তোমার মন গেলে বরং গোপালে ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নাও। রান্নার কাজ আমার ভাল লাগে।"


ময়না আর কিছু বলল না।

ময়না সারাদিন নিময় মেনে ডাক্তারের দেওয়া ট্যাবলেট টনিক সব খেলো ,ক্ষতস্থানে নিজেই ওষুধ মলম এদিন রাতে লাগল।অভি তাকে সাহস দিতে সোফায় বসেছিল বিনয় বুঝেছিল গতরাতে পাশের ঘরে এই সব কাজ করতে করতে ময়না ভীষণ ভয় পেয়েছিল।মরন বাঁচন বেগে দৌড়ে তাদের ঘরে ঢুকে কী ভীষণ হাঁপাচ্ছিল।বিজয়ের গোয়েন্দা চোখ এত নজর পড়লেও ময়নার এই অদ্ভুত বিচিত্র চরিত্র ঠিক বুঝতে পারত না।

এরাতে ময়নার ঘুম হল, আজ আর ময়না ভয় পায়নি।

সকাল পাঁচটার সময় উঠে অভি আজ স্নান করে চা তৈরী করার পর ময়না উঠল।

বেশ অপরাধীর মত ময়না বলল,

" দাদা আপনি আমাকে তুলে দিলেন না! একটু ঘুমিয়ে গেছিলাম, সকালে উঠতে দেরী হল।"

"ঠিক আছে তাতে হয়েছে কী! রেষ্ট নাও তোমার ঘুম দরকার। আমি এবার বের হব। আজ খুব আমি ব্যস্ত, আর আমার সময় নেই, তুমি খুব ঘুমিয়েছিল।তুলতে মায়া লাগছিল। 

ঠিক ঠাক গরম জলে ওষুধ মিশ্রণ করে ক্ষতস্থানটা ধুয়ে তার পর মলম লাগাবে। আমার আর সময় নেই।ক্ষতস্থানটা কিন্তু রেগুলার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখাটা ভীষণ জরুরী, ডাক্তার ম্যাডাম বার বার করে বলছেন।"


"আমি ঠিক সময় পরিস্কার করব দাদা,আমার কথা থাক।কী খেয়ে যাবেন দাদা লুচি হালুয়া বরং করে দিচ্ছি।একটু পরে রওনা হবেন দাদা। অভুক্ত পেটে আপনি রওনা হলে আমার খুব খারাপ লাগবে।"

"না না আমার দেরি হয়ে যাবে, এখন মর্নিং স্কুল তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার। না হলে স্কুল বন্ধ হলে সমস্যা হবে।আর এত খারাপ লাগার কী আছে! পথে অনেক খাবার দোকান আছে, খেয়ে নেবো।"

ময়না ভাবছিল,আমার জন্য কী কষ্ট ওনার! মুখে বলল,"খুব খারাপ লাগছে দাদা,এই সকালে অভুক্ত খেটে কত পথ যেতে হবে, আমার জন্য আপনার কী হায়রান!"

বিনয় গম্ভীর মুখে বলল,"এই সব আমার চিন্তা থাক, ঠিকঠাক সময়মত ওষুধ খাবে,আর এখন কাজের বৌ নটার সময় আসবে, গোপালের ঘুম না ভাঙ্গা পর্যন্ত ততক্ষণ, আমি রওনা হলে,ক্ষতস্থানটা ধুয়ে পরিস্কার করে মুছে ওষুধ লাগিয়ে বিছানায় রেষ্ট নাও। " এখন তোমার বিশ্রাম খুব দরকার। "


                ক্রমশ 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance