STORYMIRROR

অনিশ্রীর ঝুড়োগল্প

Romance Action Classics

4  

অনিশ্রীর ঝুড়োগল্প

Romance Action Classics

অনন্তর (পর্ব ৪)

অনন্তর (পর্ব ৪)

8 mins
404

©️ অনিশ্রী

রাতের তিলোত্তমা :

---------------------------------

"আমার মুক্তি সর্বজনের মনের মাঝে,

দুঃখ বিপদ তুচ্ছ করা কঠিন কাজে।

বিশ্বধাতার যজ্ঞশালা, আত্মহোমের বহ্নি জ্বালা

জীবন যেন দিই আহুতি মুক্তি আসে॥"

কিছু কিছু স্মৃতি আকাশের মতো। যতদিন মানুষটা বেঁচে থাকে, সেই মানুষটার সাথেই থেকে যায়। মাথায় চেপে থাকে, আকাশের মত সাথে করে বয়ে বেড়ায়। মাথার উপরের সরাতে না পারা আকাশের মতোন এইসব স্মৃতি সরানোর সাধ্য মানুষের নাই। এই গানটার সাথে ঊশান্তের সম্পর্ক ঠিক তেমনই। ঐকান্তিকার নাচের You Tube Channel Rhythmic Ringers-এ পাঁচ বছর আগে Upload করা সর্বশেষ Video ছিল এই নাচটাই, "এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়"। স্বর্গীয় Air Chief Marshal ঐতিহ্য ভট্টাচার্য তার মৃত্যুর এক ঘন্টা আগে তার কন্যাসম সহোদরার এই নাচটি Upload করেন। ঐকান্তিকাই ফোনে বলেছিল ঊশান্তকে, তবে ওর দাদাভাই-এর নামটা বলে নি। আর ঠিক তার পনেরো মিনিটের মধ্যেই ঘটে যায় সেই দুর্ঘটনা। তারপর সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় ঐকান্তিকা। ঐকান্তিকা নিরুদ্দেশ হবার পর থেকে এই গানটা যে কতবার শুনেছে ঊশান্ত, তা বোধহয় গোনা যাবে না।

না জানি কতবার, জীবনের কাঠগড়ায় নিজেকে দাঁড় করিয়ে ভেবেছে নিজের অর্জিত সব প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি। কিভাবে জীবন থেকে কুয়াশার মতো মিলিয়ে গেল পাঁচ-পাঁচটা বছর। মানসিক যন্ত্রণা আর অর্ন্তদাহ খুঁজে নিয়েছিলো হৃদয়ের গোপন প্রকোষ্ঠে স্থায়ী ঠিকানা। নিভু নিভু আঁধার ঘরে শরীরে যেন বিঁধে যেত নামহীন খারাপলাগাগুলো। চোখগুলো ছলছল হতো অগোচরে। তবে সবটাই তো জীবনের ব্যর্থতা নয় । এসব নিয়ে কাটানো নিজের জীবনটা তো সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। চেনা গন্ধের রেশ ধরে জীবন চলেছে। কখনো থেমে থাকে নি, হয়তো ক্ষণিক থমকে ছিলো। হঠাৎই ঊশান্ত নিজের গাড়ির সামনের আয়নাতে দেখে ওর ঠিক পেছনের সিটে ঐকান্তিকা বসে আছে। ঠোঁটে স্মিত হাসি আর যেন নীরবে ঊশান্তকে প্রশ্ন করছে,

"আচ্ছা, ক্লান্ত কি শুধু শরীর হয় !! মন ক্লান্ত হয় না !! আচ্ছা, মনকে কি কেউ কখনো কেন ডেকে জিজ্ঞেস করে না, 'ক্লান্ত লাগছে !!'..."

মূহুর্তেই ব্যস্ত হয়ে পিছন ফিরে ঊশান্ত দেখে, কোথায় ঐকান্তিকা !! বোঝে সবটাই তার মনের ভুল। বেশ করে নিজের অবুঝ মনকে বড় করে চোখ পাকিয়ে গাড়ির Accelerator-এ চাপ দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা-অরাজকতার ভীড়ে এই পৃথিবীতে এক মুঠো শুদ্ধ ভালোবাসার সন্ধান পাওয়া তো সত্যিই খুবই দুষ্কর। এক মুঠো শুদ্ধতম ভালোবাসার সন্ধান তো নিজের হৃদয়ে পেয়েই ছিল ঊশান্ত, তাই খুব যত্ন করে সেই অনুভবকে হৃদয়ের গোপনতম প্রকোষ্ঠে তুলে রেখেছিলো। নিজে ঐকান্তিকাকে ভালোবেসেছিলো। আর ঐকান্তিকার কাছ থেকে নিজের সবটা উজাড় করে ভালোবাসতে শিখেছিলো। হয়তো সেই ভালোবাসা ঊশান্তের জন্য ছিল না, ছিল নিজের পরিবারের জন্য। কিন্তু নিজের আশেপাশে সব স্বার্থপর মানুষের কোলাহলে এমন কাউকে যদি ভাগ্যক্রমে পাওয়াই যায় যে নিজের পরিবারকে, নিজের দাদাভাইকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসে তাহলে তার ভালোবাসার কাছে নিজেকে সমর্পণ না করে, তাকে ভালো না বেসে, তার কাছ থেকে ভালোবাসা না শিখে থাকা যায় !!! নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মতো এমন ঐশ্বরিক একটা অনুভূতি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার কি কোনো মানে হয় !!!

"একটা 'তুমি' হারিয়ে যাওয়ার ভীড়ে

অন্য 'তুমি' বাঁধলো জোড়া নীড়ে,

জানলো না কেউ একটা 'তুমি'-র

হারিয়ে যাবার কারণ,

গোপন ব্যথার করুণ ছবি প্রকাশ করা বারণ।"

                                                   (প্রজ্ঞা অনূসুয়া)

রাতের অন্ধকার চিরে মেজর ঊশান্ত রায়ের মার্সিডিজ হাওয়ার বেগে একপ্রকার উড়ে চললেও রাতের গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে রাতের নিরেট শূণ্যতা ঊশান্তের মনকে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে। অপেক্ষার এক একেকটা মূহুর্ত যেন শতাব্দী পার করে দিচ্ছে, তবুও অপেক্ষার শেষ হয় না। আস্তে আস্তে নীল আকাশ কালো মেঘের ভেলায় হারিয়ে গেলো। ঝড়ো বাতাসে হারিয়ে গেলো এক শীতল অনুভব। মেঘের অশ্রু ঝরতে থাকলো মাটির দেহে। FM-এ তখন বলছে,

"নিজেই জানে না 'মন'। কি পেলে সুখী হবে !! আর কী বা তার দুঃখের কারণ !! যা খোঁজে, মন পায় না খুঁজে। আর যা পায়, তা চায় না। খুঁজতে খুঁজতে হারায় শেষে আর ফেরার রাস্তা পায় না।"

                                (কলমে : ছন্দা সাঁতরা)

কোয়েটা, বালুচিস্থান, পাকিস্তান :

------------------------------------------------------

পাকিস্তানের বালুচিস্থান প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সংর্কীন গিরিখাতে পুরানকথা অনুযায়ী শক্তিপীঠ মরুর্তীথ-হিংলাজ মাতার মন্দির অবস্থিত। হিংগোল নদীর তীরে মাতা হিংগুলা বা হিঙ্গুলতা নামেও পরিচিত। শুধু হিন্দু ক্ষত্রিয় বা চরনরাই নয়, স্হানীয় বাসিন্দারাও মাতার ভক্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা এই মন্দির রক্ষা করেন। কিন্তু এখন কয়েক বছরের সুপ্ত থাকা আগ্নেয়গিরি ফের জেগে উঠেছে। পাকিস্তানে ফের লাভা উদগীরণ শুরু করেছে বালুচিস্থান। তবে ইসলামাবাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেদের মুক্তির জন্য বালুচিস্থানের এই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম নতুন নয়। যদিও বিগত প্রায় সাত দশক ধরে নির্মম দমননীতি চালিয়ে পাকিস্তান বালুচদের এই স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বারবার মাথা চাড়া দিয়েছে এই বালুচ বিদ্রোহীরা। পাকিস্তান কিভাবে সেখানে চূড়ান্ত দমননীতি চালিয়ে রোজ পিশে দিচ্ছে মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক মহলে তা রোজ তুলে ধরছে ভারত। তাই এই গোপন মিশনের কর্ণধার RAW তথা FIB অফিসার মেজর ঊশান্ত রায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছে বালুচ বিদ্রোহীরা। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এইভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোতে মনে জোর পেয়েছে বালুচিস্তানের স্বাধীনতা দাবী। বিগত দু'বছর ধরে মেজর ঊশান্ত রায়ের এই গোপন অভিযান আর অনুপ্রেরণাতে আগের থেকে উজ্জীবিত হয়ে ওঠা এই বিদ্রোহীদের রোখা যে আরোও কঠিন হয়ে উঠছে, তা ইসলামাবাদের কাছে স্পষ্ট।

এমতাবস্থায় ঊষর ও রুক্ষ্ম পরিবেশে পর্বতময় গুহায় হঠাৎই মুঠোফোন কেঁপে ওঠলে Call receive করে কানে ফোনটা ধরেন বছর পঞ্চাশের এক পাকিস্তানী দীর্ঘদেহী পুরুষ। পরনে কালো আফগানী জোব্বা আর ঢোলা পাজামা, মাথায় ফেজ টুপি। গায়ের রঙ টুকটুকে ফর্সা। বয়সের ভারে শরীরে ঈষৎ মেদ জমলেও তিনি যে যুবা বয়সে রীতিমতো সুপুরুষ ছিলেন, তা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। ইনিই Field Marshal General শাহরিয়ার গাজী, পাকিস্তানের Senior Most Army Officer। দীর্ঘ দুই দশকের অধিক সময় ধরে ভারতের সাথে যার ছায়া যুদ্ধ। বর্তমানে বালুচিস্থানের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমনে কোয়েটাতে Undercover Officer হিসেবে কর্তব্যরত। নিজের জীবনের সবথেকে বড় সাফল্য হিসেবে মনে করেন বছর পঁচিশ আগে, ব্রিগেডিয়ার ঐশিক ভট্টাচার্যের হত্যা। পেছন থেকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ারের দেহ, কারন সামনে থেকে সেই প্রতাপশালী ব্রিগেডিয়ারকে আটকানো প্রায় অসম্ভব ছিলো। কথায় আছে, "No, Nothing's Fair in Love & War"... তবে বছর পাঁচেক আগে হারিয়েছেন নিজের বড় ছেলে ফারদান ফতিহিকে। এক বিশেষ মিশনে ভারতে গিয়েছিল Lieutenant Colonel ফারদান। তারপর আর ফেরত আসে নি তার আব্বাজানের বুকে। তবে ভারত সরকার নিজের সৌজন্যতা বজায় রেখে Lieutenant Colonel ফারদানের দেহ ফিরিয়ে দিয়েছিলো শাহরিয়ারকে। সেই পরাজয়ের আগুন বুকে নিয়েই আবার ভারতে সেই গোপন মিশন সম্পূর্ণ করতে গেছে শাহরিয়ার ছোট ছেলে, Colonel রায়হান তাহিদ। আজকাল রায়হানের জন্য বড্ড দুশ্চিন্তা হয় শাহরিয়ার, কারন রায়হানের প্রতিদ্বন্দ্বী যে স্বয়ং মেজর ঊশান্ত রায়। কানাঘুষো যতটুকু শুনেছেন শাহরিয়ার, Indian Army-তে না কি বলে ব্রিগেডিয়ার ঐশিক ভট্টাচার্যের Legacy বহন করে চলেছে মেজর ঊশান্ত রায়। সেই একই প্রতাপ, সেই একই শৌর্য, সেই একই বীরতা, সেই একই বুদ্ধিমত্তা, সেই একই অকুতোভয় মানসিকতা। কোনোরকম রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও দু'জনের কর্মকান্ডের পরিক্ষেত্র যেহেতু বালুচিস্থান, তাই নিজের কর্মপন্থা নির্ধারণ ও সমৃদ্ধ করতে ব্রিগেডিয়ার ভট্টাচার্যকে নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন মেজর রায়। মেজয় রায় ব্যতিরেকে যে ব্রিগেডিয়ার ভট্টাচার্যকে সবথেকে ভালো করে চিনতো, সে হলো এই শাহরিয়ার গাজী। তাই নিজের ছোট ছেলে তথা নিজের অস্তিত্বের অন্তিম স্মারককে নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন Field Marshal General শাহরিয়ার। তার চিন্তার ঘোর কাটে ওপার থেকে ভেসে আসা এক যুবার স্নেহমাখা ইস্পাত কঠিন গলার স্বরে,

"আব্বুজান, কেমন আছো তুমি ??"

"আমি ভালো আছি, ছোটে ?? তুই কেমন আছিস ??"

মৃদু হাসির রেশ ভেসে এলো ফোনের ওপার থেকে, সাথে কিছুটা আক্ষেপ, যেন সব ঠিক থেকেও যেন কিছুই ঠিক নেই। ঠিক যেন আড়ালে খুব সযত্নে কোনো একটা কালো সত্যি যেটা লুকিয়ে রাখা আছে, সেটা সুযোগ খুঁজছে হিংস্র শ্বাপদের মতো নিজের স্বরূপ দেখাতে।

"আমি ভালো আছি, আব্বু। খালি শিকার টোপ গিলছে না। ওই মেয়েটার প্যার, ইস্ককে কোনো বিশ্বাস নেই।"

হঠাৎই শাহরিয়ার চাপা কিন্তু তীক্ষ্ণ স্বরে বললেন,

"তাহলে কি হবে, ছোটে ?? আমরা কি আমাদের মিশনে সফল হবো না ??"

ফোনের ওপারের ব্যক্তির চোখে তখন আগুন জ্বলছে, যার উষ্ণ স্রোতের অবতরণ ঘটলো তার গলার স্বরের মধ্যে দিয়ে।

"হবো আব্বুজান, হবো। একটু ধীরজ রাখতে হবে। প্যার, ইস্ককে না ফাসলেও কৃতজ্ঞতাতে ফাসাবো ওকে। কিন্তু ফাসতে তো ওকে হবেই। অনেক হিসাব মেটানোর আছে আব্বু। ভাইজানের মৃত্যুটা আমি এখনো ভুলি নি। আমার ভাইজানকে ওই মেয়েটা গুলি করেছিলো। ওর ছোড়া গুলিতেই আমি আমার ভাইজানকে হারিয়েছি। ওকে আমি ছাড়বো না। তার উপর ওর সব কাজ আর ওর লেখা বই, এগুলোও তো আমাদের চাই। নইলে আমরা জয় পাবো না।"

শাহরিয়ার আর নিজের মনের অবরুদ্ধ আবেগকে রোধ করে রাখতে পারলেন না, ওনার কথায় স্পষ্ট একটা সর্তকবার্তা ছিল।

"কিন্তু ছোটে, সাবধান। মেজর রায় এখন কলকাতায় Posted। আমাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু তো ও জানতে পেরেইছে। তাই ও কলকাতা ফিরেছে। মেজর রায়কে কিন্তু কেউ কোনোদিন চোখে দেখে নি। মানে, উনি ছদ্মবেশ ধরতে এতটাই পটু যে তোর সামনে থাকলেও তুই বুঝতে পারবি না।"

ফোনের ওপারের ব্যক্তিটি একটু ক্ষুন্ন হলো যেন, বেশ অপ্রসন্ন আর ক্ষুব্ধ স্বর আছড়ে পড়লো ফোনের অপর প্রান্ত থেকে। যদিও সেই কন্ঠস্বর ছিলো আত্মবিশ্বাসে ভরপুর।

"আব্বুজান, তুমি ভুলে যাচ্ছো কেন যেসব গুণ ওই মেজর রায়ের আছে, ঠিক সেই সেই বদগুণ এই রায়হানেরও আছে। যে লড়াইটা ব্রিগেডিয়ার ঐশিক ভট্টাচার্য শুরু করে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেটার শেষ করবে এই রায়হান। আর এর মাঝে যারা যারা আসবে, প্রত্যেককে নিজের হাতে শেষ করবে এই রায়হান। তুমি চিন্তা করো না, আব্বুজান। আমাদের এই লড়াই সফল হবেই। এবার রাখছি আব্বু। খুদা হাফিস।"

"খুদা হাফিস ছোটে।"

বাবার ফোন কেটে দিলেও যুবাটির মনে প্রশ্ন আর কৌতুহল দানা বাঁধতে লাগলো। তার বাবা মেজর রায়কে এতটা ভয় পাচ্ছে কেন !!! কি এমন আছে ওই লোকটার ব্যক্তিত্বে !! এক পা, এক পা করে জানলার দিকে এগিয়ে আসে প্রায় নগ্ন এক পুরুষ মূর্তি। তার উর্ধ্বাঙ্গ সম্পূর্ণ নিরাভরণ, নাভির নীচ থেকে কেবল একটা Track Pant পরিহিত। লম্বা পেশীবহুল হাত, চওড়া কাঁধ, নির্মেদ পেশীবহুল শরীরের প্রতিটা খাঁজ মূহুর্তে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতে পারে যে কোনো নারীকে, চাইলেও সেই আকর্ষণ উপেক্ষা করা যায় না। কিন্তু ওই মেয়েটার মধ্যে এতটাই নির্লিপ্ততা যে কখনো চোখ তুলে দেখলোই না রায়হানকে। এতোটা উপেক্ষা তো রায়হানের সহ্য হবে না। নিজের অমানবিক দমননীতির জন্য রায়হানের দরকার আহুতি আর এই মেয়েটা হলো সেই আহুতির নৈবেদ্য। কিন্তু মেয়েটা এখন তার অহং-এ পরিণত হয়েছে। রায়হানের ঠোঁটের কোনে একটা ধূর্ত হাসি খেলে গেলো। মনে মনে সে বলে,

"রায়হানের মর্জিই চিরকাল রায়হানের কাছে শেষ কথা, রায়হানের ইচ্ছেই চিরকাল শেষ ইচ্ছে হয়ে এসেছে রায়হানের কাছে। তুমি ওই রূপের আগুন জ্বেলে রায়হানকে প্রতি মূহুর্তে জ্বালাবে, তা তো হবে না সুন্দরী। যদি সবকিছু ভুলে ভালোবেসে আমার কাছে আসতে, তাহলে তোমাকে রাজরাণী করে রাখতাম। এখন আমার রক্ষিতা হবার জন্য তৈরী থেকো। তুমি আমার কাছে ধরা দাও আর নাই দাও, তুমি আমার হাতের তালুতে বন্দী। আর এবার থেকে সবকিছুর জন্য তৈরী থেকো। তোমার লড়াইটা আর কারোর সাথে নয়, স্বয়ং Colonel রায়হান তাহিদ-এর সাথে। ওই মেজর ঊশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে তুমিই তো আমার তুরুপের তাস।"



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance