Paula Bhowmik

Action Inspirational Thriller

3  

Paula Bhowmik

Action Inspirational Thriller

রেসকিউ

রেসকিউ

2 mins
189


তখন আমি ক্লাস নাইন। স্কুল বিল্ডিং এর দক্ষিণ দিকে একটা মাঠ থাকলেও সেখানে শুধু প্রেয়ার লাইন সাজানো হতো প্রার্থনার সময়। পশ্চিম দিকে ছিল আসল খেলার মাঠ। উত্তর দিকে স্কুলের বয়েজ হস্টেল। দক্ষিণ দিকে প্রাইমারি বিদ্যালয়। আর পূর্ব দিকে পাকা পিচের তৈরি পি. ডব্লিউ. ডি র রাস্তা।


উড়ো খবর জানি যে বুধবার স্কুলের পেছনের মাঠে সার্কেলের খেলা অনুষ্ঠিত হবার কথা ( প্রাইমারি স্কুলের) । আমাদের স্কুল থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তির খবর আমার গোচরে আসেনি। মানে জানার চেষ্টাও করিনি আর কি! নাচতে নাচতে স্কুলে এসে পড়েছি।

এসে দেখি আমি একাই না। আমার মতো বেশ জনা তিরিশেক আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা হাজির। তার মধ্যে কয়েকটি ক্ষুদে বিচ্ছুও রয়েছে।

আমরা বোধ হয় কোনোমতেই স্কুল ফাঁকি দিতে চাই না এমন গোছের সকলেই।

স্কুলের ক্লাস ঘরের দরজায় তো তালা ঝুলছে। বলে রাখা ভালো তখনও স্কুলের ঐ বাউন্ডারিটা তৈরী হয়নি। কিছু সময় অন্যদের হেফাজতে চলে যাওয়া সাজানো খেলার মাঠ দেখার পর ভাবলাম এবারে ছাদে গিয়ে বসি। ওখান থেকে সমস্ত খেলাই দেখা যাবে ভালো ভাবে। আর আমাদের উপস্থিতিতে ওদের খেলার ডিসটার্ব ও হবেনা।

তো সেই মোতাবেক আমার দু তিন জন বান্ধবী ও কয়েকটি সহদরা সম ফাইভ সিক্সের ছাত্রী সমেত ছাদে উঠে গুছিয়ে বসেছি। বেশ ভালো ভাবেই কিছুক্ষণ ধরে এক এক করে খেলা চলছে। মাইকের কথা শুনে স্পষ্টই সব খেলাগুলো বুঝতে পারছি। বেশ মজা লাগছে। 


হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি আমাদের আক্রমন করতে ছুটে এলো। আমরা তো দিশেহারা। সবাই মিলে কামড় খেতে খেতে এমন চিৎকার জুড়ে দিয়েছি যে কিছুক্ষণের জন্যে সব খেলা ওদের ভন্ডুল। অবশ্য তা দেখার পরিস্থিতি তখন ছিল না। একটা বিশাল ধোকরা(এক রকমের বড় পাটের তৈরী ভারী চট) উড়ে এলো। তার তলে সবাই ঢুকে গুটিশুটি হয়ে লুকিয়ে পড়লাম। বাইরে আমাদের ঘিরে তখনও মৌমাছিরা রাগে বোঁ বোঁ করে উড়ে বেড়াচ্ছে।

সিঁড়ি ঘরে যে একটা বিরাট মৌমাছির চাক আছে সে কথা তো আমরা জানি। ওরা ওদের মতো থাকে। কোনোদিন কাউকে কামড়ায় না। আসলে দুষ্টুমি করে নিশ্চয়ই কেউ চাকে ঢিল মেরেছে। সব তো বুঝলাম এখন উপায়! ছাদ থেকে নামবো কি করে? এভাবে লুকিয়ে বা থাকবো কতক্ষণ? তার ওপরে ছোটরা এখনও চিৎকার করে কেঁদে চলেছে।


দেবদূতের মতো কার্নিসে উঠে পড়ে ডাকছে হস্টেলের লম্বা চওড়া দুটো ছেলে। একজনকে চিনি। আমাদের ব্যাচের দুর্গা হেম্ব্রম। কে জানে দুর্গার সাথে হয়তো চরণ থাকতেও পারে, আমি জানিনা।

তবে সেদিন ঐ দুর্গতি থেকে ওরাই ত্রাণ করেছিলো এক একজনকে হাতে হাতে ধরে কলার কাঁদির মতো ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে নামিয়ে। স্কুলের পাশের বাড়িতে পাঠানো হয় আমাদের রেষ্ট নিতে। এদিকে এরপর আবার শুরু হয় প্রাইমারির ছোটদের খেলা। বুড়ো ধাড়ি আমরা লজ্জ্বায় ও দু-চারটে মৌমাছির কামড়ের ব্যাথায় আর খেলা না দেখে সুর সুর করে চলে যাই যে যার বাড়ি। 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Action