কিপটে বুড়ো
কিপটে বুড়ো
রজনীগন্ধার ডাঁটার মতো চেহারা কাবেরীদির। ফর্সা টকটকে রঙ। বেড়াতে এসেছে মামার বাড়ি,মালদা জেলার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তবে পোষ্ট অফিসের যোগাযোগ তো সব যায়গাতেই আছে। সুতরাং বিহারের কাটিহার থেকে ওদের বাড়ি যতই ইন্টিরিয়রে হোক না কেন, এখান থেকে রেজিস্ট্রি করে পাঠালে, এক সপ্তাহের মধ্যে রাখি নিয়ে চিঠিটা ঠিক পৌঁছে যাবে ।
তাই মামাতো বোন শিপ্রাকে নিয়ে হাজির হয়েছে পোষ্ট অফিসে। বেশ লাইন পড়েছে ।
দুই বোন দাঁড়িয়ে রয়েছে লাইনে। একটু একটু করে অজগর সাপের মতো লাইনটা এগোচ্ছে।
একমাথা সাদা লম্বা চুলের এক বুড়ো একপাশে একটা বেঞ্চে বসে লেখালেখির কাজ করছিলেন।
মানে যারা লেখাপড়া জানে না তাদের সাহায্য করেছিলেন আর কি !
ওদের কাজ হবার পর ফেরার পথে হঠাৎ ওনার চোখে পড়ে শিপ্রার সাথে নতুন দেখা ঐ কাবেরিকে।
"তোর সাথে ও কে রে শিপ্রা ? নতুন দেখছি মনে হচ্ছে।"
শিপ্রা বলে ওঠে,
"কাটিহার থেকে এসেছে। আমার পিসতুতো দিদি কাবেরী। দাদাকে রাখি পাঠালো রেজিস্ট্রি করে ।"
"সে কি কাণ্ড ! কি রে ? রেজিস্ট্রির খরচ বেশি ? নাকি রাখির দাম বেশি ?"
কথাটা বলেই খ্যাক খ্যাক করে হেসে ওঠেন ভদ্রলোক।
শিপ্রা মনে মনে ভাবে আচ্ছা পাজি তো লোকটা !
কাবেরি জিজ্ঞেস করে,
"কেয়া বোলা উসনে ?"
"ছাড়ো তো ওনার কথা ! কিপটে কোথাকার !"
"মতলব, কঞ্জুস কাহিকা !"
দুজনেই হাসতে হাসতে বাড়ির পথ ধরে।