গুলাল আবু বকর ‹›

Comedy

5  

গুলাল আবু বকর ‹›

Comedy

আশেপাশে অশরীরী

আশেপাশে অশরীরী

3 mins
1.0K


এই আলোচনায় মজা ছাড়া আর কিই-বা আছে, কি বলেন।

ভয়?..... আরে ধূ—র ভয় পেলে তো খেল খতম। নিজে বিছানা ভিজিয়ে ফেললে অশরীরীর কি যায় আসে। সে এই সুযোগটা নেবে এবং তার লম্বা হাত আমার ঘাড় বরাবর নেমে আসবে। সুতারাং আদৌ ভয় পেলে চলবে না, শুধু ছায়ামূর্তি নারী নাকি পুরুষ এটা ধেয়ানসে observe করা দরকার।


কাউকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলতে হলে সিধা রাস্তা হলো তাকে অবহেলা করতে হবে। অশরীরী কেউ হতাশাগ্রস্ত হলে কেমন তার ভাব হয় আমার দেখার খুব ইচ্ছে। অর্থাৎ এমন ভঙ্গী করে পাশ ফিরে শুয়ে আড় চোখে দেখতে থাকবো যেন দেখেও দেখিনি। এতে করে তার ভিতরের হতাশা দেখার মতো চিজ হবে বলেই মনে হচ্ছে।

দ্বিতীয় আর একটি পন্থা try করা যেতে পারে। নিজের ইচ্ছামতন তাকে ব্যবহার করা, অবশ্য সে যদি রাজি হয়। শোনা কথা, অশরীরীরা নাকি সব পারে। নিমেষে মিলিয়ে যেতে পারে আবার সুতোর মতো সরু হয়ে গোল গোল হয়ে ঘুরতে পারে।


একবার গোবরের বিকট গন্ধে নাক এঁটে এলো। গন্ধ এসে জানান দিচ্ছিলো সে আশেপাশে আছে। অন্ধকারে লাইটের খোঁজে হাতড়াতে গিয়ে নরম কোন জিনিসে হাত জাবড়ে গেলো।

কে যেন মিনমিন করে বলে উঠলো, ‘আমি গোবর ভূত....সব ঘেঁটে দিলেন তো?’

যাক গে সে অন্য গল্প।

হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন, ‘ভালোবাসার মানুষের সবকিছুই সহ্য করা যায়। কিন্তু তার অবহেলা সহ্য করা যায় না।’ 

কাউকে অবহেলা করলে সে মনে মনে আঁকু পাঁকু করে। অশরীরী এই যে আমার কাছে এসেছে নিশ্চয়ই ভালোবাসার টানে, মনের দুঃখে নয়। তেমনটি হলে সে কোনো মন্ত্রীকে ধরতে পারতো। যেখানে গেলে তার মাথাব্যথা নিমেষে উধাও হবে, লাভের গুড়ে কোনো মাছি পড়বে না। ঘুমঘোরে মন্ত্রীমশাই কোলবালিস জড়িয়ে জড়িত কন্ঠে শুধু বলবেন, ‘এই ব্যাটা, আমাকে চ্যায়েন সে ঘুমোতে দে, কী চাই ঝটপট বলে ফ্যাল!’ 


কিন্তু ছায়ামূর্তি আমারই বেডরুমে, মধ্যরাতে... ভুল করে ঢুকেছে বলা যায় না। ভুল করে সে কি সনি লিওনের বেডরুমে ঢুকতে পারতো না? সে যদি এমন ভুলোমনা হয় তবে তার তো ভালো ডাক্তারের পরামর্শ দরকার। অবশ্যই সে জেনেশুনে এসেছে। এখন যদি অবহেলা দেখাই সে নিশ্চয়ই হতাশ হবে।

কিন্তু কাউকে হতাশাগ্রস্ত দেখলে আমি আবার স্থির থাকতে পারি না, কান্না এসে যায়।

ভালো হয় যদি তড়াক করে লাফ দিয়ে বসে পড়ি ও কিছু চেপে রাখা খায়েশ তখনই পূরণ করে নিই।

একবার রংরুট ধরে মোটরবাইক চালিয়ে আসছিলাম। হাতেনাতে ধরা খেয়ে গেলাম। ইয়া মোটা গোঁফওয়ালা এক ট্রাফিক পুলিশ আমাকে ধরলো। দু’হাজার টাকা তৎক্ষণাৎ গুনতে হবে। বললাম, ‘বলেন কি, দু’হাজার! আচ্ছা, আমাকে চালান কেটে দেন দিকি...’

সে বললো, ‘দু’শো টাকা দে, আর ভালোয় ভালোয় কেটে পড়— নয়তো ভেটকি মাছের মতো কামড়ে দেবো...’

অশরীরিকে তাই বলবো, ‘স্রেফ ঐ গোঁফজোড়া আমার চাই। জিন্দা অউর মূর্দা। চেঁছে অথবা ছিঁড়ে, যেভাবে হোক। মুঝে গব্বর চাহিয়ে।’


আমার ঊর্ধতন আমার কাজে বেশ সন্তুষ্ট। কিন্তু অন্য অনেককে খুব বকাবকি করেন, খিঁচিয়ে ওঠেন। মাথা গরম যাকে বলে। শুনেছি, বাড়িতে ম্যাডামের সাথে কিছু একটা নিয়ে আড়াআড়ি চলছে। বিদঘুটে ঝামেলা। মিটমাট হচ্ছে না।

মাথা গরম হওয়ার জন্য এর থেকে আরও “বড়কর্তা” আর কে আছে!

অশরীরীকে বলবো, স্যারের মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য মাথায় বেঁধে থাকার কোনো পট্টি দিতে পারবে কিনা। আমরা অধস্তনরা সবসময় শান্তি চাই।

বকুনি ভাল্লাগে না মোটে!

স্যারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গর্ব করে বলবো, ‘স্যার এই নিন, ধরুন। আজ থেকে আপনার যাবতীয় গৃহঘটিত সমস্যার সমাধান। দু’খানা এনেছি। আপনি ও ম্যাডাম দু’জনে মাথায় দু’ঘন্টা করে মাত্র দুইদিন বাঁধবেন। সকল অশান্তি কাবার। গৃহশান্তি পট্টি। অশরীরি থেকে পাওয়া। কাজ অব্যর্থ। তার ঠিকানাটি নিয়ে নিয়েছি স্যার। আপনার জানাশুনা কেউ থাকলে খবরটা তাকেও দেবেন।’

                (সমাপ্ত)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy