South Indian Movie
South Indian Movie
একজন আমাকে প্রশ্ন করলো, “আপনি দক্ষিণী ছবি দেখেন কি? ছবিগুলোর খুব রমরমা কিন্তু!”
আমার সাফ উত্তর :—
আপনি যেমন বললেন, “দক্ষিণী চলচ্চিত্রের রমরমা,” —তা বটে! রমরমাই বটে! সকল ‘রমরমায়’ অ্যারোমা (aroma) থাকে না, জানবেন। মানে, সুগন্ধী বিতরণ করার মহৎ দিকটি সেথায় উপস্থিত থাকেনা, আর কি। মানতে শরম নেই, কোনোরকম সুগন্ধী ছাড়াই শুধুমাত্র রমরমার পশ্চাতে আমি মাইলের পর মাইল দৌড় দিতে পারি, সুগন্ধী গ্রহণ করার জন্য আমার ক্ষয়িষ্ণু ঘ্রাণশক্তি নিয়ে কোনোকিছুকে ‘রমরমা’ তকমা সাঁটিয়ে দিতে পারি। তাতে আমার বিন্দুমাত্র ক্লান্তিবোধ পাবেন না।
মশলা যদি ঠিকমতো মেশানো হয়, চাট জমবেই। সে চাটের স্বাদ নেওয়ার জন্য আমার মতো পাবলিক পিঁপড়ের মতো পিল পিল করে যে কোনও গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইবে।
মাল সস্তা হলে খরিদ্দারের ভিড় বেশি লাগে, চিরাচরিত এই চিত্র আমাদের চোখ সওয়া। আর সে মালের প্রোডাকশন পাবেন বেশি বেশি আর গরম গরম। দুয়ারে পৌঁছিয়ে দিয়ে যাবে ওরা। এটাকেই আপনি নিজস্ব ভাষায় রমরমা বলছেন, তা বুঝতে পারি।
সস্তা ‘মালের’ বাজার তৈরি করে দেওয়ার জন্য, মিডিয়া গুরুদের আশীর্বাদের হাত ওদের মাথার ওপর সদাই জাগ্রত। মিডিয়াই আসল গুরুদেব!
একটা সময় জাপানি জিনিসপত্রের অনেক কদর ছিলো। সেগুলোর গুণমান ছিলো ভালো, টেঁকসই। তাকে হারিয়ে বাজার কাঁপিয়ে দিলো চায়না মাল। রমরমা শব্দটি এখন তাদের দখলে। বলতে পারেন, পরিবেশ দূষণও তাদের দখলে। সস্তায় কিনে নাও আর ফেলে দাও। ইউজ অ্যান্ড থ্রো। ফেলার জায়গা যদি না পাও রাস্তার ধারে গিয়ে ঢালো! দুর্গন্ধ কি আর আমার একার নাকি! সবাই অল্প অল্প ভাগ-যোগ করে নেওয়া যাক। দুর্গন্ধ ছড়ানোর অধিকার তো কেউ আটকাতে পারে না!
আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে এরকমই। তাই বলে ডায়েরিয়া ছড়ানো খোলা বাজারের খাবার কেউ খাবেন না, এড়িয়ে যাবেন—সেটা খুবই মুশকিল!
যেখানে রেসিডেন্সিয়াল মানুষের সংখ্যা কম, পথচলতি ও ‘বহিরাগত’ পাবলিক বেশি, সেখানে এই ‘ডায়েরিয়া খাবারের’ রমরমা সহজেই হবে। ভালো করে খোঁজ করলে হাইজিনিক খাবারের দোকান পাবেন, সংখ্যায় কম আর আইটেমগুলো রুচিকর মনে হবে না।
আমরা আমাদের রুচি বদল করে ফেলেছি, ডায়েরিয়া খাবারগুলো মনে হয় বেশি সুস্বাদু। সহজে হজম হয়ে যায়।
রমরমা বাজারের মোহে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়ে নিজের নৈতিকতাবোধ, সুস্থ সংস্কৃতি, মূল্যবোধের বদল ঘটিয়ে চলেছি। এভাবে সরীসৃপের মতো বুকে ভর দিয়ে চলতে থাকবো।