STORYMIRROR

Paula Bhowmik

Fantasy Inspirational

4  

Paula Bhowmik

Fantasy Inspirational

পুনর্ভবা পর্ব :- ১৬

পুনর্ভবা পর্ব :- ১৬

2 mins
384

দিনাজপুরের বিরলে এসে আলাদা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেল ওরা চারজন। কাঞ্চন নদীর এপাশে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে অখিলেশ, আর পাশেই গামছার খুঁটে চোখ মুছে চলেছে লালমোহন। তবে ওর এবার একটা হ্যাপা কমেছে। গরু আর গরুর গাড়িকে নদী পার করানো। আগেরবার ওকে এজন্য অন্য একটা বড় নৌকাতে আলাদাভাবে পারাপার করতে হয়েছিলো। সবচেয়ে বড় সমস্যা গরু গুলোকে নদী পারাপারের ব্যাপারটা বোঝানো।


সাধারনত এতো দূরের যাত্রা কেউ গরুর গাড়িতে করেনা। আসলে অনুপমা দেবীর জেদের কারণেই নেওয়া হয়েছিলো এমন সিদ্ধান্ত। তবে গাড়িটা সাথে থাকাতে সাতোরে শামুক পীরের থানে যেতে খুব সুবিধে হয়েছিলো। সেখানে তো পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনও দ্বিতীয় ব্যবস্থা নেই। আর এই বয়েসে অনুপমা দেবীর পক্ষে এতোটা রাস্তা হেঁটে যাওয়া কিছুতেই সম্ভব হতো না।


অবশ্য চেষ্টা করলে বীরগন্জে এখনও ভাড়াতে গরুর গাড়ি পাওয়া যায় বটে। কিন্তু তাহলে আবার

নিখিলেশকেই যেতে হতো সঙ্গে। অচেনা গাড়োয়ানের ভরসায় যেতে কিছুতেই রাজি হতেননা ওনার মাতৃদেবী। 

অথচ লালমোহন সঙ্গে ছিলো বলে এ নিয়ে আর কাউকেই দুবার চিন্তা করতে হয়নি। ও সাথে থাকা মানে বাড়ির একজন শক্তিশালী পুরুষ অভিভাবক সঙ্গে থাকা। প্রয়োজনে কর্তা মায়ের প্রাণ রক্ষার খাতিরে হাতে লাঠি নিলে যে একাই দু দশ জনকে আটকানোর ক্ষমতা রাখে।


স্টিমারের রেলিংয়ের ধারে খুকুর হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিখিলেশ। খুকু একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে কাকুমণি ও লালমোহন কাকার দিকে। এতো বড় কাঞ্চন নদীটাও আর আগের বারের মতো ওর মনযোগ আকর্ষণ করতে পারছে না। ধীরে ধীরে দেখতে দেখতে দুটো মানুষ যেন প্রায় বিন্দুর আকার ধারণ করলো। স্টীমারটা এখন এসে পড়েছে মাঝনদীতে। যতদূর চোখ যায়, চারদিকে শুধুই জল আর জল। এবারে খুকুও নদীর বুকে প্রায় দিগন্ত বিস্তৃত জলের মধ্যে এই স্টীমারের আশ্রয়টুকুকে যেন ঠিক ভরসা করতে পারেনা। বাবার হাতটা খুব জোরে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে, 


_____তুমি কিন্তু আমার হাতটা ছেড়ে দিওনা বাবা! 

তাহলে আমি ঠিক ডুবে যাবো। 


________না মা, এই তো আমি তোমায় শক্ত করে ধরে আছি। কোনো ভয় নেই। 

মনে মনে বলে ওঠেন, দাঁড়া, এবার বাড়ি ফিরে তোকে আমি সাঁতার শিখিয়েই ছাড়বো। জলকে তোর এত ভয়! 

ভয় জিনিসটা খুব সহজেই মানুষকে একেবারে পেয়ে বসে। অনেকটা যেন ভূতের মতোই।

দুর্বল মনের মানুষেরা সহজেই যেমন ভূতের কবলে পড়ে যায়। তেমনি ভয় কখনও কখনও মানুষের বুদ্ধি বিবেচনা সব গ্রাস করে। জীবনে চলতে গেলে মানুষ কে কখনো কখনো প্রতিকুলতার মুখোমুখি হতেই হয়। তখন যদি মানুষ ভয় পেয়ে যায় তাহলেই মুশকিল। 

সবসময় যেকোনো ভয়কে জয় করার নাম ই এগিয়ে চলা। আর এগিয়ে চলাই হলো জীবন। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Fantasy