Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Aparna Chaudhuri

Comedy Drama

5.0  

Aparna Chaudhuri

Comedy Drama

কুট্টুন ১

কুট্টুন ১

3 mins
1.2K


“ওরে শিগগির আয়! মোজাটা পরে নে।“ বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো নির্মলা।

“ইয়া ঘচাং” , বলেই তিড়িং করে লাফ মারল কুট্টুন সোফার হাতল থেকে নিচে। “ মাম্মা এই ভাবে অছুরতাকে মেলে ছিল মা দুগ্গা, না?” জিজ্ঞাসা করলো সে।

“ হ্যাঁ বাবা হ্যাঁ”, কোন রকমে ওর পা টাকে ধরে মোজা পরাতে পরাতে বলল নির্মলা।

“আচ্ছা মা, মা দুগ্গাল চারতে বেবি?”


“হ্যাঁ । লক্ষ্মী , সরস্বতী , কার্ত্তিক আর গণেশ।“ ছেলের চুলটা আঁচড়ে দিতে দিতে বলল নির্মলা। ছেলে কুট্টুন ভীষণ দুরন্ত। ওকে তৈরি করে, সামলে, সময় মত বেরোনো, একটা চ্যালেঞ্জ। একমাত্র গল্প বলে ওকে খানিকটা শান্ত রাখা যায়। মা দুর্গার গল্প আর কোলকাতার দুর্গা পুজোর গল্প শুনে ও খুব উৎসাহিত কোলকাতার পুজো দেখার জন্য। পুজোর সময় কোলকাতা যাচ্ছে ওরা। কুট্টুনকে কোলকাতার ঠাকুর দেখাবে, প্ল্যানটা নির্মলারই । কিন্তু ভাবাটা যত সহজ করাটা যে ততটা সহজ নয়, সেটা আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে নির্মলা ।

“আমলা তিনতে পাঁচটা থাকুল দেখব মাম্মা?” অনর্গল কথা বলে যায় কুট্টুন।

“হুম...... আরও বেশি।”- বেরনোর আগে ভালো করে জানালা দরজা বন্ধ করেছে কিনা, গ্যাস বন্ধ করেছে কিনা, দেখে সুটকেস আর ব্যাগটা সামলে সদর দরজায় তালা দিলো সে।

“আচ্ছা মাম্মা, মা দুগ্গা যখন ফেরত চলে যাবে মাউন্তেনে তখন ওর মাম্মা তো খুব কাঁদবে তাই না?”

“হ্যাঁ তা কাঁদবে বইকি। “, সুটকেস , ব্যাগ আর কুট্টুন কে সামলে, অন্যমনস্ক ভাবে উত্তর দিলো নির্মলা। এবার ট্যাক্সি ধরে এয়ারপোর্টে পৌছতে হবে। শেখর অফিস থেকে সোজা এয়ারপোর্টেই পৌছবে । ট্যাক্সি পেতে বেশ দেরি হয়ে গেলো। মুম্বাইয়ের ট্র্যাফিক, টেনশনে মাথার চুল খাড়া হয়ে গেছে নির্মলার। তাড়াহুড়োতে চেঁচিয়ে ট্যাক্সিওয়ালাকে বলে উঠলো, “ভাগিয়ে , জলদি ভাগিয়ে।“

রসিক ট্যাক্সি চালক মুচকি হেসে উত্তর দিলো , “ ম্যায় ভাগ জাউঙ্গা তো ট্যাক্সি কো কউন ভাগায়েগা ম্যাডাম!”

কোনোরকমে ছুটতে ছুটতে যখন ওরা এয়ারপোর্টে পৌঁছল তখন দেখল শেখর গেটের সামনে হান টান করছে।

“এতো দেরি করে? আর একটু হলেই কোলকাতা যাওয়া হয়েছিল আরকি!“ বলে উঠলো শেখর।

“সরি বাবা! সরি!”, হাঁপাতে হাঁপাতে উত্তর দেয় নির্মলা। সুটকেসটা শেখরের হাতে দিয়ে কুট্টুনকে কোলপাঁজা করে ছুটতে ছুটতে ওরা পৌঁছল চেক ইন এর জন্য।

“হাম দুগ্গা থাকুল দেখনে যা রাহে হ্যাঁয় কোলকাত্তা......” কুট্টুন বলল চেক ইন কাউন্টারের মেয়েটিকে। 

“ ফির উইন্ডো সীট কিসকো দু? তুমহে ইয়া মাম্মিকো?” মেয়েটি মিষ্টি হেসে জিজ্ঞাসা করলো কুট্টুন কে।

লজ্জা পেয়ে বাবার কোলে মুখ লুকোলো কুট্টুন। আজ সারাদিন খুব পরিশ্রম গেছে নির্মলার, ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছে ওর। মনে মনে ভাবছে একবার প্লেনে উঠে বসতে পারলে একটু ঘুমিয়ে নেবে ও।


প্লেনটা সময় মতই ছাড়ল মুম্বাই এয়ারপোর্ট থেকে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো শেখর। কিন্তু এই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলনা। কোলকাতা এয়ারপোর্টে পৌঁছানর আগেই হঠাৎ প্লেনটা লাফিয়ে উঠলো সাংঘাতিক ভাবে। সমস্ত যাত্রীরা চিৎকার করে উঠলো ভয়ে। সঙ্গে সঙ্গে সীট বেল্ট বাঁধার চিহ্নটা জ্বলে উঠলো, আর পাইলটের গম্ভীর গলা শুনতে পাওয়া গেলো স্পীকারে,” খারাপ আবহাওয়ার জন্য সীট বেল্ট বাঁধার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ...... ইত্যাদি ইত্যাদি। শেখর একবার আড় চোখে দেখে নিলো নির্মলা আর কুট্টুন কে। নির্মলা আর তার কোলে কুট্টুন দুজনেই অগাধে ঘুমোচ্ছে। নির্মলাকে বড্ড জ্বালায় ছেলেটা। এতক্ষণ বক বক করে সবে ঘুমিয়েছে। প্লেনটা আর একবার ভয়ানক ভাবে দুলে উঠলো। শেখর একজন frequent flier, তারও মাথা ঘুরে গেলো। প্লেন প্রবল নিম্ন চাপের কবলে। প্লেন একবার ওঠে, একবার পড়ে। প্লেনের বাকি যাত্রীদের অবস্থা সমীচীন। কেউ কেউ বমি করতে শুরু করলো। দুজন তো অজ্ঞানই হয়ে গেলো। এয়ার-হোসটেসরা নাটা-ঝামটা খেয়ে গেলো যাত্রীদের সামলাতে। শেষ পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে প্লেনটা নামলো।

প্লেনের চাকা মাটিতে ঠেকার সঙ্গে সঙ্গে কুট্টুন ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে মায়ের ঘাড়ে চড়ে মাকে ঘুম থেকে তুলে দিলো,” মাম্মা ওত, কোলকাতা এতে গেথে, দুগ্গা থাকুল দেখতে দাবেনা?”

ওর ডাক শুনে নির্মলা আড়মোড়া ভেঙ্গে একগাল হেসে সোজা উঠে দাঁড়ালো নিজের জায়গায়, প্লেন থেকে নামবার জন্যে তৈরি,-“আহ! যা ঘুমোলাম না! এখন একদম ফ্রেশ!”

সারা প্লেনে শ্মশানের স্তব্ধতা, সমস্ত যাত্রীরা অদ্ভুত ভাবে ওর দিকে দেখছে।

শেখর দাঁত কিড়মিড় করে বলে উঠলো,” চুপ চাপ বসে পড়! কোলকাতা নয় ভুবনেশ্বরে নেমেছি আমরা। এতো উথাল পাথাল যে প্লেন কলকাতায় নামতেই পারলো না। চলে এলো ভুবনেশ্বরে । মা, ছেলে, দুজনেই কুম্ভকর্ণ।“

কুট্টুন মন দিয়ে শুনছিল শেখরের কথা। শেখর থামতেই তার প্রশ্ন শুরু হয়ে গেলো,” কুম্ভকন্ন কি মাম্মা?”



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy