Aparna Chaudhuri

Crime Thriller

3  

Aparna Chaudhuri

Crime Thriller

তিন্নি (পর্ব ১৪ )

তিন্নি (পর্ব ১৪ )

3 mins
273


আজ তিনদিন হয়ে গেল তিন্নিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই তিন দিনে পুলিশ হাসপাতাল, মর্গ সমস্ত জায়গা খুঁজে ফেলেছে। কিন্তু কোথাও ওর খোঁজ মেলেনি। পুলিশ স্টেশন থেকে ওর বাবা মাকে খবর দেওয়া হয়েছিল। ওনারা পরের দিন সকালেই পৌঁছে গেছেন ব্যাঙ্গালুরু। পুলিশ স্টেশনের কাছে, একটা হোটেলে ওদের থাকার ব্যবস্থা করেছে শুভম। তিন্নির মা খুব কান্নাকাটি করছিল। দেখে শুভমের খুব মন খারাপ হয়ে গেল। ও নিজের মোবাইল নম্বরটা ওদের দিয়ে বলে এলো, “ কোন দরকার হলে ফোন করতে দ্বিধা করবেন না।“

অফিস থেকে প্রজেক্টের ডেডলাইন দিয়ে চলেছে। এই প্রোজেক্টটা খুবই সম্মানজনক। শুভম চায় না ওটা অন্য কারুর কাছে যাক।

তিন্নি কি সত্যিই কিডন্যাপ হয়েছে? কই এখনও তো কেউ কোনো টাকা পয়সা দাবী করলো না! তিন্নিকে কে কিডন্যাপ করবে? ও তো এখানে কাউকেই চেনে না। আর কেনই বা করবে? তিন্নির বাবা একজন মধ্যবিত্ত অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মচারী। 

শুভম এই সব নানা কথা ভাবতে ভাবতে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছিল অফিসের দিকে । রেড লাইটে গাড়ীটা দাঁড়াতেই একজন নোংরা মত লোক ওর গাড়ীর জানালার কাঁচটা ঠুকে ‘টক্‌ টক্‌’ আওয়াজ করতে লাগলো। ও তার দিকে তাকাতেই লোকটা ওকে কাঁচটা নামানোর জন্য ইশারা করলো। ও কাঁচটা নামাতে লোকটা একটা কাগজের খাম কাঁচের ফাঁক দিয়ে গলিয়ে দিয়েই ভিড়ে মিশে গেল। ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে শুভম চেঁচাতেও ভুলে গেল। ইতিমধ্যে ট্রাফিক লাইট সবুজ হওয়াতে শুভমকে গাড়ী চালু করতে হল।

অফিসের পার্কিং লটে গাড়ীটাকে দাঁড় করিয়ে প্রথমেই শুভম খামটা খুলে দেখলও, ভিতরে কি আছে। ভিতর থেকে বেরোল একটা ছবি। একটি মেয়ে হাত মুখ বাঁধা অবস্থায় একটা ঘরের কোনে শুয়ে আছে। ঘরে আলো কম তাই ছবিটা খুব একটা পরিষ্কার আসেনি। কিন্তু মেয়েটার জামাকাপড় দেখে মনে হচ্ছে ওটা তিন্নি। শুভম ছবিটা উল্টে দেখলো তাতে একটা ফোন নম্বর লেখা রয়েছে। শুভম তাড়াতাড়ি নিজের মোবাইলটা বার করে নম্বরটা ডায়াল করতে গিয়েও কি ভেবে থেমে গেল। তারপর ইন্সপেক্টর বিজয়কুমারের নম্বরটা ডায়াল করলো। বার তিনেক রিং হতেই ওপার থেকে শোনা গেল ওনার ভরাট কণ্ঠস্বর,” হ্যালো! ইন্সপেক্টর বিজয়কুমার হিয়ার।”

শুভম পুরো ঘটনাটা খুলে বলল। উনি খুব মন দিয়ে শুনে বললেন,” আপনি আমায় ওই ফটোটা স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিন। আর ফোন নম্বরটা টেকস্ট করুন। আমি দেখছি কি করা যায়। আর বিকালের দিকে একবার যদি আসেন পুলিশ স্টেশনে ওই খাম আর ছবিটা নিয়ে তাহলে ভালো হয়।“

আজ সুতনুকার কাজটা আই টি ডিপার্টমেন্টের অন্য একটি মেয়েকে দেওয়া হল। মেয়েটির নাম লাবণ্য। এও নতুন জয়েন করেছে কিন্তু সুতনুকার মত শার্প নয়। সুতনুকা শুভমের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বুঝে যেতো। শুভমকে বেশী বোঝাতে হত না। আর ওর কল্পনাশক্তিও খুব ভালো ছিল। ও নিজের থেকে এমন অনেক নতুন জিনিষ করার কথা বলতো যে মাঝে মাঝে শুভমও অবাক হয়ে যেতো। কিন্তু লাবণ্যর মধ্যে তা নেই।

লাবণ্যকে কাজ বুঝিয়ে অফিস থেকে বেরোতে বেরোতে একটু বেশীই দেরী হয়ে গেলো শুভমের। পুলিশ স্টেশনে পৌঁছে দেখলও ওখানে তিন্নির বাবা মাও বসে আছে।

ছবিটাকে কম্পিউটারে আরও বড় করে তার উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ওর মা বাবাকে দেখানো হয়েছে। ওনারা ছবিটাকে তিন্নির বলে স্বীকার করলেও ওর পরনের জ্যাকেটটা ওর নয় বলে দাবী করছেন। ইন্সপেক্টর মৃগকে ডেকে পাঠিয়েছেন।

শুভম জিজ্ঞাসা করলো,” ফোন নম্বরটার কোনো খোঁজ পেলেন?”

“ এখনও সুইচ অফ বলছে। কিন্তু আমি ওই নম্বরটা ট্র্যাকিঙে দিয়েছি। অন করলেই জানতে পারবো।“

“ আর ওই নম্বরটার লাস্ট লোকেশন কোথায় ছিল?”

“ ওটা বানারঘাটা চিড়িয়াখানার কাছে সুইচ অফ করা হয়েছে।“

(ক্রমশ...)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime