জানলার ওপারে
জানলার ওপারে
জানলার ওপার থেকে ভেসে আসা শব্দগুলো ছিল বুবাইয়ের ভীষন প্রিয়, শীতকালে জানলা বন্ধ করে রাখলেও পাশের বাড়ির জানলার ওপার থেকে শব্দগুলো শোনা যেত, কারন টিনের চাল দেওয়া এক তলা ছোট ছোট বাড়ি দুটো একেবারে একে অন্যের প্রায় গা ঘেঁষে বলা চলে, এতই কাছে যে ওপারে কেউ নিঃশ্বাস ফেললে এপারে তা বুবাইয়ের ঘাড়ে এসে পড়ে এমন অবস্থা, মাঝখানে একটা ছোট্ট নীচু পাঁচিলের সীমানা আছে বটে তবে তা শব্দ রুখতে তো আর কাজে লাগবে না।
বুবাইয়ের জীবনে সবথেকে বড় পাপ বোধহয় ভালবেসে বিয়ে করা, এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে, যে কেমন লাগে, বুবাইয়ের শরীরের খিদে প্রবল, কিন্তু বউয়ের আবার তা সহ্য হয় না, তাকে বিছনায় ফেলেই বুবাই একেবারে জানোয়ারের মত কামড়ায় আর খামচায়, অন্তত শুরুর দিকে তাই করত, ফলে যা হয় আরকি, বুবাইকে এক প্রকার প্রায় লাথি ঝাটা মেরেই নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে কুমারী, আর বুবাই এক প্রকার বাড়িতে হাত মেরেই কাজ চালায়, আসলে বিছনায় বাকি প্রায় বেশিরভাগ পুরুষের মত জানোয়ার হয়ে গেলেও আদতে খুবই ভীতু গোবেচারা ধরনের লোক আর তার বউ বেশ শক্তপোক্ত গড়নের, ফলে যা হয় আরকি, বউকে পেটানো বা জোর করা কিছুই করতে পারে না উল্টে বউয়েরই হাতে মার খায়, যদিও তার অনেক সময় রাগের মাথায় ইচ্ছে করে বউকে ঘুমের মধ্যে গলা কেটে বা টিপে মেরে ফেলতে আর তার পর জোর করে তার লাশের সাথে ওইসব করতে, মাঝে মধ্যে বেশ্যা পাড়ায় যায়, সেখানে গিয়েই নিজের খিদে মেটায় না হয়, তার বউও সব জানে, কিন্তু কিছু বলে না, কারন তার নিজেরও পাড়ারই এক জোয়ান ছেলের সাথে ঐসব চলছে, যে ব্যাপারে আবার বুবাই নিজেও সব বোঝে কিন্তু সেও কিছু বলে না, তার অর্থাৎ বুবাইয়ের আছে এক সামান্য কাপড়ের দোকান, ব্যবসা মোটামুটি অল্পস্বল্প যা হয় তা হয় তবে তার মধ্যে থেকেও বেশিরভাগ মেরে দেয় রোজ তোলা তুলতে আসা শাসক দলের টাট্টু গুলো যেখানে এখনো তার দোকানের ঘর ভাড়া বকেয়া, ফলে বউয়ের পাশাপাশি ওগুলোর উপরেও ভীষন রাগ তার, সেখানে অর্থাৎ বুবাইয়ের কাপড়ের দোকানে নানা মহিলারা মেয়েছেলেরা আসে, তাদেরকেও অনেকসময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে দেখে বুবাই, ভাবে, কখন কোমড়ের আঁচলটা আরও একটু সরবে বা বুকের আঁচল বা ওড়নাটা আরও একটু নামবে, অনেকসময় নানাভাবে গায়ে হাত বোলানোরও চেষ্টা করে আবার অনেক সময় মারের ভয়ে তার সেটা সাহসে কুলিয়েও ওঠে না, এমনকি তার যৌন খিদে এতই প্রবল যে কোনো বাচ্চা ছেলে বা মেয়ে তার দোকানে এলে পরে তার গায়েও নানাভাবে নানা অছিলায় অনেকসময় হাত বুলিয়েই নেয় বুবাই এবং তার সুবিধে এই যে বাচ্চারা আর কী বা বুঝবে, তার পর তারা চলে গেলে পরে তার হাত চলে যায় সোজা তার দুই পায়ের মাঝখানের জায়গায়, ইদানীং বুবাই টের পাচ্ছে, যে তার মধ্যে এই মাংসের খিদেটা আরও বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন এবং তার নিজেরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ক্রমশ, এক বার নিজের বাড়ির বাইরে ড্রেনের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে কী যেন খাওয়া বা খোঁজা এক বিড়ালের উন্মুক্ত পায়ু গহ্বরের দিকে চোখ যেতেই পেছনে দাঁড়িয়ে তার পায়ুছিদ্র দেখতে দেখতে যথারীতি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল সে, তার পর জোর করে সেই মার্জারটিকে চেপে ধরতে গিয়েই উল্টে তার হাতে বাজেভাবে আঁচড় খেয়েছিল সে, কিন্তু ডাক্তারের কাছে যায়নি, আর ভাগ্যবলে তার জলাতঙ্কও ধরেনি, আর পরে সেই বিষয়টাকে নিয়ে ভেবেছিল অনেক, যে এই কাজটা যেটা সে সেই বেড়ালটার সাথে করতে চেয়েছিল সেটা সে কি ঠিক করতে যাচ্ছিল, তার কাপড়ের দোকানে একটা বাচ্চা ছেলে কাজ করে, তাকে দেখে প্রায় আঠারো বলে মনে হয়, কিন্তু এখনও তার আরও একটা বছর লাগবে সেই বয়সে পৌছুতে, ছেলেটা থাকে একটা বস্তি এলাকায়, তার বাড়িতে আছে মার খাওয়া লোকের বাড়িতে খাটুনি করে খেটে মরা একটা মা আর বউ পেটানো একটা মদখোর মাতাল বাপ, অনেকসময় সেই বাচ্চা ছেলেটাকেও পেটায় সে আর বেশিরভাগ সময় মদ খেয়ে বস্তির নর্দমায় পেছন উল্টে পড়ে থাকে, ছেলেটা তাও খুবই গোবেচারা শান্ত নিরীহ গোছের, অনেকসময়ই দোকানে কাজ করতে করতে সেই ছেলেটির গোলালো পাছাটা লক্ষ্য করেছে বুবাই, অনেকসময়ই তার প্রবল ইচ্ছে করেছে ওটাতে সজোরে এক চাটি মারতে, বা হাত বোলাতে, কিন্তু সেটাও সে করে উঠতে পারেনি কী এক কুণ্ঠাবোধের কারনে, এক দিন তবে সকল কুণ্ঠা হারিয়ে সেই ছেলেটিকে কাজের পর মন ভাল করার অছিলায় অনেক বুঝিয়ে মানিয়ে একটা মদের ঠেক এ নিয়ে গেছিল সে, আর সেখানে আকণ্ঠ গিলিয়েছিল প্রথমে, তার পর নিয়ে এসেছিল সোজা নিজের বাড়িতে, তখন তার বউ বাড়িতে ছিল না, গিয়েছিল নিকটেই নিজের কোন এক আত্মীয়ার বাড়িতে (অন্তত তাই বলে বেরিয়েছিল), টলতে টলতে ছেলেটিকে নিজের বউয়ের শোবার আলাদা ঘর এ নিয়ে গিয়ে তাকে প্রথমে নগ্ন করার চেষ্টা করেছিল সে, বিছনায় চিত হয়ে শুয়ে গোঙাচ্ছিল ছেলেটা, তার প্রায় কোনো হুঁশ ছিল না বললেই চলে, ছেলেটার গায়ের জামার সব বোতাম ইতিমধ্যেই খুলে ফেলে তার দেহে হাত বুলিয়ে চুমু খেয়ে জিভ দিয়ে আবার নানা জায়গায় চাটছিল বুবাই, ছেলেটা বেহুঁশ, ছেলেটার পরনের নিম্নবস্ত্রও খুলে ফেলার চেষ্টা করছিল বূবাই কিন্তু তা সহজে খুলছিল না, ওদিকে কামার্ত বুবাইয়ের তখন রক্ত একেবারে টগবগিয়ে ফুটছে, কিন্তু ছেলেটার প্যান্টের চেন্টা খুলতে গিয়ে টানাটানিতে সেই ছেলেটার যৌনাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া বাজেভাবে কেটে গিয়ে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়ে গেল, ছেলেটি তখনও মদের ঘোরে বেহুঁশ থাকার ফলে কোনো চিৎকারও না করতে পেরে ব্যাথায় শুধু মাঝে মধ্যে হালকা কোকিয়ে উঠছিল আর গোঙাচ্ছিল, তখন আবার সেই রক্ত কী করে বন্ধ করবে বুবাই সেই চিন্তায় পড়ে গেল, অনেক কষ্টে কিছু তুলো রক্তে ভিজিয়ে ওষুধ লাগিয়ে পরে রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করা গেলেও সেই দিন সেই ছেলেটির সাথে আর সম্ভোগ করতে পারেনি, তার পর যখন সেই দিন রাতের দিকে সেই ছেলেটির হুঁশ ফিরল, তখন নিজের বিশেষ স্থানে কী এক জ্বালা অনুভব হওয়ায় চেন খুলে নিজের যৌনাঙ্গের সেই অবস্থা দেখে রাগে বিরক্তিতে ব্যাথায় বুবাইকে তার হাজার প্রশ্ন, কী করে তার পুরুষাঙ্গের সেই হালত হল আর কেনই বা বুবাই তাকে সোজা নিজের বাড়ি নিয়ে এল, আর বুবাই কিছুই বলতে না পেরে আমতা আমতা করে যায় সমানে, বুবাই অনেক কষ্টে শেষমেশ যা যুক্তি খাঁড়া করল, তা হল এই যে, তাকে নিজের বাড়ি দেখাতে নিয়ে আসার পর তার হঠাৎ বেগ আসায় সেই ছেলেটি নিজেই নাকি হিসু করার সময় নিজের প্যান্টের চেন অসাবধানতায় খুলতে গিয়ে সেই বিচ্ছিরি কান্ড নিজেই ঘটিয়ে ফেলেছিল এবং মদের ঘোরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল, ফলে সেই রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করার জন্য তখন বুবাইকে তাকে নগ্ন করতে হয়েছিল, এবং তার সেই ঘা এর শুশ্রূষাও করতে হয়েছিল কারন অনেক বেশিই নাকি রক্ত বেরোচ্ছিল, এই কথা শুনে একটু অবাক এবং অপ্রস্তুতও হয়ে পড়েছিল প্রথমে সেই ছেলেটি এই ভেবে যে একটা পুরুষ তাকে নগ্ন করে দেখেছে, পরে সে সেখান থেকে চলে গিয়েছিল নিজের বাড়ি, কারন বাড়ি ফিরতে তার সেদিন অনেক রাত হয়ে গেছিল, বুবাই তাকে বলেছিল ছেলেটিকে বুবাইয়ের নগ্ন করার ঘটনার কথা বা কিছু যেন সেই ছেলেটি আবার নিজের বাড়িতে না জানায়, ছেলেটি অভয় দিয়ে বলেছিল তার বাড়িতে কেউই সে সব জানতে পারবে না, নিজের মোবাইলে সেই ছেলেটি দেখল, যে তার মা অনেক বার তাকে কল করেছে, কিন্তু সে মদ খেয়ে বেহুঁশ থাকার ফলে নিশ্চয় ধরতে পারেনি, আর বুবাইকে শুধোলে সেও বলেছে, যে সে কী উত্তর দেবে তাই ভেবে না পেয়ে আর ফোন ধরেনি। যাওয়ার আগে বুবাইয়ের কাছ থেকে একটু জল চেয়ে নিয়ে নিজের মুখ কুলি করে ধুয়ে তার কাছ থেকে মুখশুদ্ধি জাতীয় কিছু একটা চেয়েছিল সেই ছেলেটি যাতে তার বাড়িতে তার মা তার মুখ থেকে মদের কোনো গন্ধ না পায়, বুবাই তাকে দিয়েছিল একটা জিনিস, সেটা নিয়ে চিবোতে চিবোতে ছেলেটি যাবার পর সেই দিন অনেক বার নিজের মাথা চাপড়েছিল বুবাই, রাগে আর হতাশায়, আর ওই একইভাবে নিজে যে কাজটা সে সেই ছেলেটির সাথে তাকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করিয়ে নিয়ে করতে যাচ্ছিল সেটার নৈতিকতার ব্যাপারে ভেবে গেছিল আর রাতে ঘুমোনোর বেলা যথারীতি জানলার ওপার থেকে আসা সে সব শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
চরম ভাবে কাম বাসনা গ্রস্ত ধর্ষকামী সেই হারামজাদা বুবাই, আর তার বাড়ির সেই জানলা, যেখানে কান পাতলেই বুবাই পাশের বাড়ির থেকে শুনতে পায় এক দম্পতির মধ্যেকার নৈশ কালীন সুরত কর্মের কিছু নিষিদ্ধ আওয়াজ, গরম কালে জ্বালা ধরানো গরমে যখন সে সেই ঘরের জানলা খোলা রেখে শোয় তখন তো সেই সব আওয়াজ সে শুনতে পায়ই, এমনকি শীতকালেও বন্ধ জানলার ওপার থেকেও স্পষ্ট সেসব শব্দ কানে আসে তার, আর সে সব শব্দ শুনে সে যে জেগে থেকে কী করে, তা নিশ্চয়ই আর আলাদা করে বলে দিতে হয় না, বা বলে দিতে যদি নিতান্তই হয়, তাহলে খুবই ভালো মনের ভাল ছেলে বা মেয়ে পাঠক পাঠিকাদের জন্য এটুকু বলা যায় সে শুয়ে শুয়ে সেই সব শব্দে দারুন উদবুদ্ধ হয়ে হাতের ব্যায়াম করে, আর সেই হাতের ব্যায়ামটা যে আসলে কী যদি এখন সেটাও বুঝিয়ে বলতে হয়, তাহলে সেই সব ভাল মানুষেরা এই লেখা না পড়লেই পারেন, পাড়াটা এমনিতে রাতের বেলা একেবারে নিশ্চুপ নিঝুম থাকে, ফলে সেই সব শব্দ বেশ ভালই কানে এসে পৌছোয় তার, তবে অনেক সময় কিছু কান্ডজ্ঞানহীন লোকেরা সাউন্ড বক্স নিয়ে এসে সবার ঘুমের দফারফা করে রাতভর উল্লাস করলে বা পাড়ার কিছু কুকুরেরা রাতের বেলা সংগীত জুড়ে দিলে পরে খুব বিরক্তি ধরে বুবাইয়ের, ইচ্ছে করে গিয়ে সব লোকগুলোকে জঘন্যতম উপায়ে খুন করতে বা যত কুকুর আছে সব কটার মুখ একেবারে পেরেক এঁটে বন্ধ করে দিতে, যে কারনে একটা বেচারা সারমেয়কে তো একটা পাউরুটির ভেতরে কিছু পেরেক ঢুকিয়ে সেই পাউরুটি খাইয়ে একেবারে রক্তাক্ত করে ছেড়েছিল বুবাই, সেই কুকুরটা পরে সেই ঘা থেকেই মরে গেল, কিন্তু এক রাত, খালি একটা অপয়া রাত শালি সব কিছু একেবারে তেহস নেহস করে ছেঁড়ে দিল মাইরি।
সেদিনও বুবাই সেইসবই করছিল, তখন শীতকাল, তখন বুবাইয়ের মনও খুব ভাল ছিল কারন গত কয়েকদিন ধরে তোলাবাজেরা এসে তাকে বিরক্ত করেনি, পরে খোঁজ নিয়ে এর কারন যা জানতে পেরেছিল বুবাই তা হল এই যে তাদের অঞ্চলে শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া এক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বদলে দিতে চাওয়া শাসক দলেরই দুই নেতাদের মধ্যে সেই বিদ্যালয়ের দখলদারি নিয়ে অন্তর্কলহের জেরে কয়েক দিন আগেই ঘটে যাওয়া দুই দলের রক্তারক্তিতে সেই তোলাবাজগুলোর মধ্যে দুজন নিহত আর বাকি তিনজন হাসপাতালে ভর্তি মার খেয়ে, ফলে সে কারনে বেজায় খুশি ছিল সে, পাশের বাড়ির সেই দম্পতির সাথে রোজকার মত সেই দিন রাত জাগছিল বুবাইও, তারা ক্লান্ত হয়ে বিছনায় রাতের কাজ সেরে শুয়ে পড়লে পরে তখন বুবাইও নিজের মত ঘুমিয়ে পড়বে, সেই সব শব্দগুলো পাগল করে তোলে বুবাইকে রোজকার মত, নিজের বিছনায় পা ছড়িয়ে চুপচাপ শুয়ে থেকে শুনে চলে সে সেই সব নিষিদ্ধ শব্দ, কিন্তু হঠাৎ সে সবের মধ্যে এক অদ্ভুত অপরিচিত শব্দ শুনতে পেল সে, আগের সুন্দর শব্দগুলো থেমে গেছে, এখন যে শব্দটা শুনতে পাচ্ছে সে সেটা মোটেও সুন্দর শোনায় না, এক মহিলা কণ্ঠের গোঙানো আর কোকিয়ে ওঠার আওয়াজ কিন্তু আরামে নয় বরং কী যেন এক দুঃসহ যন্ত্রনায়, তার মাঝে টুকরো টুকরো যেন এই কথাগুলোও ভেসে আসে বুবাইয়ের কানে, "কী করছ কী, ছাড়ো", কিছুক্ষণ ধরে যেন দুই নগ্ন শরীরের ধস্তাধস্তি হাত পা ছোড়া আর খামচানোর আওয়াজ শুনতে পায় সে, বুঝতে পারে না কী হয়েছে হঠাৎ, আর তার পর সেই মহিলা কণ্ঠও ক্ষীণ হয়ে এসে নিস্তেজ নিথর হয়ে যায়, আর সব শব্দও বন্ধ হয়ে যায় আপনাআপনি। বুবাই বুঝতে পারে, তার গাল কান সব গরম হয়ে উঠেছে তবে যৌন উদ্দীপনায় নয়, বরং ভয়ে, যেন খুব খারাপ কিছু হয়েছে এখনই তার শোবার ঘরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা পাশের সেই বাড়ির সেই ঘরে, লোকটা সেই মহিলাটাকে খুন করে ফেলল নাকি? নাকি তাকে মারছে বা কষ্ট দিচ্ছে? কিচ্ছু বুঝতে না পারলেও খুনের কথা মনে হতেই গা হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে বুবাইয়ের, কিন্তু সেই বাড়ির জানলা বন্ধ, আর তার নিজের ঘরেরও জানলা বন্ধ, সে খুলেই বা উঁকিঝুঁকি মেরে কী দেখবে, এক বার উঠে বিছনা ছেঁড়ে দাঁড়িয়ে ভাবে যে জানলাটা একটু খুলে দেখবে, কিন্তু কোনো এক অজানা আতঙ্কে যেন তা করবার সাহস জুগিয়ে পায় না সে, আর কীই বা হবে জানলা খুলে, পাশের বাড়িরও তো জানলা নিশ্চয়ই বন্ধ, উঁকি মেরে কী দেখতে পাবে সে, ভেবে থেমে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নগ্ন পায়ে ঠাণ্ডা মেঝেতে কয়েক মুহূর্ত, যেন আরও কিছু আওয়াজ বিশেষ করে সেই মেয়ে মানুষটির আওয়াজ শোনার চেষ্টা করে সে, কিন্তু কোনো আওয়াজই আর শুনতে পায় না সে, সেই দিনের বাকি রাত সে গোটাটাই জেগে থাকে, পরদিন সকালেও সেই পাশের বাড়ির থেকে কাউকে বেরোতে দেখেনি সে, কী হয়েছে কাল রাতে সেটাই সারাদিন দোকানে গিয়েও ভেবে গেল সে, কাজে তার তেমন মন বসেনি, তার পর ফিরে এসে যখন দেখল যে পুলিশ এসেছে সেখানে, তখন পুরো ব্যাপারটা জানতে পারল সে, গতকাল রাতে সত্যিই নিজের স্বামীর হাতে সেই মহিলাটি খুনই হয়েছিল রোজকার দৈহিক মিলনের মাঝে শ্বাস রুদ্ধ হয়ে, তারপর একটা বটি দিয়ে নিজের স্ত্রীয়ের নগ্ন লাশ আবার কেটে খন্ডবিখন্ড করে সেই পাগলাচোদা স্বামী, তার পর নিজেও বিষ খায়, পাড়ারই এক জন তাদের বাড়ি কী এক কাজে গিয়ে অনেক ডাকাডাকিতেও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে পাড়ার সব লোককে ডেকে ভেতরে দোর ভেঙে ঢুকে ব্যাপারটা দেখে সবাই পুলিশ ডাকে, কী কারন এই খুনের পেছনে পুলিশ তদন্ত করে বের করবে বলেছে, যদিও তাদের মধ্যে ঝগড়া মারামারির কোনো শব্দ কখনো শোনেনি বুবাই ফলত সে নিজেও বেশ অবাক গোটা ঘটনাটা নিয়ে, মনে পড়ে বুবাইয়ের, কাল রাতে যখন সে জেগেছিল তখন সেই ধস্তাধস্তি আর কাতর কোকানোর শব্দ থেমে যাওয়ার অনেক ক্ষন পর যেন কোপ মেরে মাংস কাটার মত শব্দও সে শুনতে পেয়েছিল, কিন্তু তখন উল্টোদিকে জানলার ওপারে চলছে টা কী, তা আর তখন কী করে জানতে পারত সে, সেই শব্দ শুনে আবার নতুন অনেক কিছুই তার মাথায় তখন এসেছিল। পাশের বাড়ির সেই মহিলার সাথে কখনো কথা বলার কোনো সুযোগ না ঘটলেও তাকে নিজের চোখে দেখেছিল হারামি বুবাই, তার শরীর চোখ দিয়ে বেশ ভালই উপভোগ করেছিল সে, বুক কোমর পাছা, সব একেবারে ডাঁসা আর যৌবনের বারুদে ভর্তি, যদিও সেই মহিলাকে দেখে বয়স না জানলেও বুবাইয়ের থেকে বয়সে খানিকটা বড় বলেই মনে হত বুবাইয়ের নিজেরও, তার বাড়িতে কখনো যাওয়ার বা সেই মহিলার সাথে একা কোথাও দেখা করার সুযোগ বা সৌভাগ্য কোনোটাই তার হয়নি, কিন্তু তা না হলেও তাকে ভোগ সে বরাবরই করতে চেয়েছে, রাতে সেই মহিলার সাথে তার স্বামীর দৈহিক মিলনের সময় মহিলার কাম ভেজা গলায় গোঙানোর আওয়াজ শুনে মৈথুন করে দারুন সুখ আর তৃপ্তি অনুভব করত বুবাই, নিজের মনে নিজেকে সেই মহিলার স্বামীর জায়গায় কল্পনা করত সে, অনেক সময় আবার সেই মহিলার স্বামীর ওপর তার দারুন রাগ আর হিংসা হত, কিন্তু এখন আর জানলার ওপার থেকে কোনো শব্দ পাবে না সে।
ভূতে বিশ্বাস চায় কেউ করুক বা না করুক, কিন্তু ভূতের নাম শুনলেই বড় বড় নাস্তিকেরাও মুতে দিয়ে কট্টড় আস্তিক হয়ে ওঠে অনেক সময়ই, সেই পাড়ায় সেই বাড়িতে সেই খুনের ঘটনার পর থেকে আশপাশের অনেক লোকেরাই সেই তল্লাট ছেঁড়ে তল্পিতল্পা গুটিয়ে পালিয়ে গেছে, কেউ আবার সেই পোড়ো বাড়ির থেকে দূরে সরে সেই এলাকার মধ্যেই বাসা বদল করেছে, বুবাইয়ের স্ত্রীও বুবাইকে একা ফেলে রেখে সেখান থেকে শুধু ভূতের এক আজব অযৌক্তিক ভয়ে পালিয়েছে, বুবাইকেও সাথে নেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বুবাই কিছুতেই রাজি হয়নি, ফলে সেই মেয়েটি বুবাইকে ফেলে রেখে একাই পালিয়েছে, যারা এখনও সেই পাড়ায় আছে তারা অনেকে নানা সময় নানা রকম গল্প ফাঁদে আর ছড়ায়, কেউ বলে সন্ধ্যে বেলা সেই পোড়ো বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নাকি সেই বাড়ির ভেতর থেকে খোনা গলায় হাসি কান্নার হরেক রকম আওয়াজ তারা নাকি পেয়েছে, অনেকে নাকি আবার সাদা মত কিছু একটা হাওয়ায় ভেসে মিলিয়ে অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখেছে নিজেদের চোখের সামনেই, তবে একেবারে সেই বাড়িরই গা ঘেঁষে বানানো বাড়িতে থাকা বুবাই খোনা হাসি বা কান্নার আওয়াজ তো দূরস্থ, তার প্রিয় সেই সঙ্গম কালীন শব্দগুলোও আর শুনতে পায় না আর পাবেও না, আর তাতেই তার মনটা বেজায় খারাপ হয়ে আছে, কেন যে বুবাই নিজে সেখান থেকে পালাল না, তা সে নিজেও জানে না, সেই মহিলার প্রতি তার একটা টান বা দুর্বলতা বরাবরই ছিল, হয়ত সেই কারনেই, একেই কি ভালবাসা বলে, নাকি স্রেফ ছিটগ্রস্ত লোকের পাগলামোর লক্ষন এসব, জানে না বুবাই, লোকে আবার বুবাইকে নিয়েও অনেক কথা বলে, সে যায়নি কারন তাকে নাকি ভূতে পেয়েছে বা বশ করেছে, তার চেহারা নাকি দিনদিন কেমন হয়ে যাচ্ছে, নিজেকে যদিও আয়নায় আর দেখেই না বুবাই, কেবল রাত হলেই আজও পাগলের মত অপেক্ষা করতে থাকে বন্ধ জানলার ওপার থেকে তার সেই প্রিয় মহিলা কণ্ঠের আওয়াজের জন্য। আর রাত জাগে। কখনো তার এই রাত জাগার বিরাম হবে কি না তা জানে না সে, হয়ত সত্যিই ভালবাসাই ছিল, বা হয়ত ছিল না, কিন্তু সেই মহিলার আদর মাখা কণ্ঠের আওয়াজ শোনার জন্য আজও রাত জেগে চলে সে।
