STORYMIRROR

Pamor Kantak

Crime Thriller

3  

Pamor Kantak

Crime Thriller

বীণাপাণি মোমো স্টল

বীণাপাণি মোমো স্টল

12 mins
82

বীণাপাণি মোমো স্টল, নামটা শুনতে বড় অদ্ভুত লাগলেও খাবারের ছোট্ট স্টলটার নামটা সত্যিই এটা, এহেন অদ্ভূত নামকরনের সার্থকতা বিচারের বৃথা চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই কারন পরীক্ষায় এই নিয়ে কোনো প্রশ্‌ন আসবে না, তবে তাও অনুসন্ধিৎসু হয়ে কারন যদি নিতান্তই একটা ধরতেই হয় তাহলে বলে রাখা ভাল কারন হিসেবে অনেকে মজা করে বলে যেহুতু রাস্তাঘাটে আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকা চাকরির পরীক্ষার উত্তরপত্রের কাগজ দিয়ে মোমোর কাগজের প্লেট বা ঠোঙা বানায় তাই এইরকম নাম দিয়েছে, সেই ঘিঞ্জি বাজার এলাকায় তার সামনেই ঘোরাফেরা করছে মিলি নামের সেই বেশ্যাটা, যার পায়ের মাঝখান দিয়ে শোণিত ধারা বয়ে চলেছে, আর সেটাকে টিস্যুতে অনায়াসে মুছে মুছে ফেলছে সেই মেয়েটি, বাচ্চা মেয়ে মনে হয় দেখলে, মুখটা কেমন খুকি খুকি, গলার আওয়াজটাও অনেকটা তেমনই, কিন্তু বয়সের নিরিখে সে খুকি বা বাচ্চা আদৌ নয়, সে দাঁড়িয়ে আছে যদি আবার আরও কোনও খদ্দের পাওয়া যায়, তার ফেলে দেওয়া রক্তমাখা টিস্যুগুলোর কাছে ঘুরঘুর করছে কতগুলো কুকুর, অনেকগুলো তার যোনির কাছেও নিজেদের নাক নিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে লাথি দেখিয়ে যা যা বলে তাড়াচ্ছে খানকি মিলি, কিছুক্ষণ আগেই এক জনের সাথে করে এসে আবার নতুন খদ্দের খোঁজার চেষ্টা করে চলেছে সেখানে দাঁড়িয়ে, এর আগে একটা লটারির স্টলে গিয়েছিল মিলি, সেখান থেকে মাঝে মধ্যেই সে লটারির টিকিট কিনে থাকে, কিন্তু আজ দেখল সেখানে সেই স্টলটা আর নেই, আশপাশের লোকের থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারল যে লোকটাকে কয়েক দল মাথায় লাল গেরুয়া তিলক লাগানো গলায় গেরুয়া গামছা পেঁচানো বজরঙ দল নামের একটা গোঁড়া গুন্ডা দলের কিছু খোট্টা গুণ্ডা এসে পিটিয়ে গিয়েছে, তার কারন তারা ভেবেছিল সেই লোকটা হয়ত বাংলাদেশ থেকে এসে এখানে লটারির টিকিট বেচছে মানে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী আরকি, তাদের এরম মনে হওয়ার অদ্ভুত কারন হল লোকটা নিজের স্টলের ওপর যে বড় ছাতাটা লাগিয়ে রেখেছিল সেটার রঙ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার মতই লাল আর সবুজ, এবং সেই সময় বাংলাদেশে হঠাৎ করে উগ্র ইসলামীয় মৌলবাদের একটা ঢেউ দেখা দিয়েছিল ঠিক এদেশে বর্তমানে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের মতই এবং তার ফলে সেখানে হিন্দুদের এবং অন্যান্য সংখ্যা লঘুদের উপর নিয়মমাফিক অত্যাচারের পাশাপাশি কাফের সংখ্যা গুরু হিন্দুদের দেশ ভারতের জাতীয় পতাকা নানা জায়গায় বাংলাদেশের সাধারণ লোকেরা ইচ্ছে করে রাস্তায় ফেলে তার উপর পেচ্ছাপ করে বা পা দিয়ে সেটা মাড়িয়ে তার ভিডিও তুলে সেগুলো নানা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছিল আর তাই দেখে সেখানকার সংখ্যা গুরু মুসলমান এবং এদেশের সংখ্যা লঘু মুসলমানেরা উত্তেজনায় কম্পমান হস্তে হস্তমৈথুন করছিল সকল কাফের দের বিরুদ্ধে ফের এক নতুন জিহাদের আশায়, ঘটনাটা শুনে মিলি হাসবে না কাঁদবে কিছুই বুঝতে পারল না, শুধু মনে মনে ভাবল, ভাগ্য ভাল লোকগুলো মোহন বাগান ক্লাবে গিয়ে হানা দেয়নি, সে আরও শুনল সেখানে নাকি এই ঘটনার জেরে কদিন আগেই এক দল বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী দলের লোকেরা গিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছে সেই বহিরাগত গুণ্ডাগুলোর গ্রেপ্তারি চেয়ে, পুলিশ তাদেরকে যদিও এখনও খুঁজছে, সেখানে রাস্তার ওপর কয়েকটা "জয় বাংলা" লেখা প্ল্যাকার্ডও দেখতে পেয়েছিল মিলি, তার পর সেখান থেকে একটা লোককে কিছুক্ষনের জন্য করে টাকা নিয়ে এখন ঘুরতে ঘুরতে এই মোমো স্টলটার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সে, মোমো চাউমিন আরও অনেক রকম লোভনীয় খাবারের গন্ধ এসে লাগছে তার নাকে, ভাবছে এক প্লেট মোমো খেলে কেমন হয়, কিছুক্ষণ পর সেই মোমো স্টলটার কাছে এসে দাঁড়াল কয়েকটা গুন্ডা, তোলা নিতে, তাদেরকে দেখে নিজের দিকে তাদের নজর ঘোরানোর চেষ্টা করতে লাগল মিলি, একটা গুন্ডা গোছের লোককে দেখে শিস দিল সে, লোকটা তাকালও তার দিকে, কিন্তু তেমন পাত্তা দিল না। মিলি আবার "এই' বলে তাকেই পুনরায় ডাকল, লোকটা এবার বিরক্ত হয়ে মিলিকে বন্দুক বের করে বোঝাতে চাইল যেন সে আর বিরক্ত না করে, মিলি আবার সেটা দেখে ভয়ের বদলে আরও মজা পেয়ে তার উদ্দেশ্যে অঙ্গভঙ্গি করে মুখমৈথুন করার একটা ভঙ্গি করে দেখাতে লাগল হাসিমুখে, লোকটা মিলিকে কোনো পাত্তা না দিয়ে মোমো স্টলের লোকটার কাছ থেকে তোলা নিয়ে চলে গেল নিজের সাথের চ্যাংড়াগুলোর সাথে অন্যান্য দোকানগুলোর দিকে, তাদের থেকেও তোলা আদায় করতে, বেকার তাদের পেছনে কয়েক মিনিট নষ্ট হল এই ভেবে ব্যাজার মুখ নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল মিলি, তোলাবাজগুলো সেখানে আসার আগে মোমোওয়ালাটার কাছ থেকে সে কিছুক্ষণ আগেই এক প্লেট ভর্তি মোমো সাটিয়েছে খিদের চোটে। যা হয় আরকি, কাজ করে ক্লান্তি পেলে তার সাথে অনেকের খিদেও পেয়ে যায়, মিলির ব্যাপারটাও তাই, তারও খিদে পায় যেমন তখন সেই মোমো আর চাউমিনের গন্ধে পেয়ে গেছিল, অনেকসময় খাবারের দাম মেটাতে টাকা না থাকলে সে লোকের টা চুষে দেয় কিন্তু এই লোকটাকে মানে সেই মোমো স্টলের দোকানিকে টাকাটা মিটিয়েই দিয়েছিল মিলি, সেই টাকাও এই কিছুক্ষন আগেই হাত বদল হয়ে গেল সেই গুণ্ডাগুলোর হাতে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিরক্ত হয়ে মিলি ভাবছিল এখানে কেউ তার কাছে আসছে না, অন্য কোথাও যেতে, ঠিক সেই সময়, একটা বুড়ো হাবড়া লোক, চোখে চশমা, পরনে জামা আর লুঙ্গি, মিলিকে লক্ষ্য করে এগিয়ে এল, এসে তাকে জিজ্ঞেস করল তার সাথে মিলি যাবে কি না, বুড়োকে দেখে মিলির মনে হল, এর যা বয়স, এর টা ডলে ডলে দাঁড় করাতেই কয়েক ঘণ্টা লাগবে, বুড়োর সাথে মিলি বলে নিল আগে টাকার কথা, যা দাম মিলি বলল তার থেকে সে এক পয়সাও কম নেবে না বলে সেই বুড়োকে আগাম সাফ জানিয়ে দিল সে, বুড়োটা খচ্চরের মত হাসি হেসে বলল যে ঠিক আছে, তার সাথেই অতএব চলল মিলি, বুড়োর যা বয়স তাতে মিলিকে নিজেই সেই বুড়োর হাত ধরতে হচ্ছিল তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, তাকে নিয়ে মিলি কাছেই একটা চারতলা লজে গেল, সেখানে চারতলায় একটা ঘর ভাড়া নিল তারা কয়েক ঘণ্টার জন্য।

বুড়ো সেই বাথরুমে গেছে তো গেছেই, কী যে করছে তখন থেকে ভেতরে, কিছুই বুঝতে পারছে না মিলি। ঘরের দেওয়ালে একটা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে যাচ্ছে সে, ঘড়িটা বেশ অদ্ভুত দেখতে, ঘণ্টা আর মিনিটের কাটা দুটোর জায়গায় হাই হিল পড়া মেয়ের দুটো নগ্ন পা, ঘড়ির ডায়েলের মাঝে চুমু দেখানো একটা লাল রাঙ্গা ঠোঁট, সেই দুটো ঠোঁটের মাঝখান থেকে মেয়েদের সেক্সি পায়ের মত কাঁটা দুটো বেরোনো, আর সাথে একটা সেকেন্ডের সরু কালো কাটাও আছে যার মাথাটা অনেকটা পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের আকৃতির। বাথরুম থেকে ফ্লাশের আওয়াজ এল, বোধহয় বুড়ো হাগতে গেছে বা হয়ত কিছু একটা করছে। আর কতক্ষণ এখানে এভাবে তাকে বসে থাকতে হবে, তা বুঝতে পারল না মিলি, প্রায় দশ মিনিটের কাছাকাছি তো হতেই চলল, বিরক্ত হয়ে উঠে ঘরের জানলার কাছে গেল মিলি, স্লাইড জানলা, পর্দাটা একটু সরিয়ে বাইরেটা দেখতে লাগল সে, কালো আকাশের গায়ে চারদিকে ছোটখাট আলোর পুটকি, যেন কালো ব্ল্যাকবোর্ডের গায়ে সাদা চক দিয়ে কেউ ওগুলো এঁকেছে, জানলা দিয়ে বাইরে রাস্তাটার দিকে দেখল মিলি, নির্জন, একটা হলদে হ্যালোজেনের আলোয় আলোকিত তার কিছু অংশ, রাস্তার উল্টোদিকে আরেকটা লজ, সেখানে তিনতলার একটা ঘরে জ্বলছে আলো, ঘরের ভেতরটা জানলার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট দেখা না গেলেও বোঝা যাচ্ছে, সেখানেও বিছানায় দুটো নগ্ন শরীর জড়াজড়ি করছে, তাদের মধ্যে একজন অবশ্যই এক পুরুষ, কিন্তু আরেকজন যে সত্যিই কোনো মহিলা নাকি নয় তা ঠিক বুঝতে পারছে না মিলি, তার কারন লোকটা মানে সেই পুরুষটা চিত হয়ে শুয়ে থাকা তার আরেকজন সঙ্গীর দুই পায়ের মধ্যবর্তী গোপন স্থানে মুখ দিয়েছে, কিন্তু লোকটার মুখটা স্থির নয় বরং তার মুখটা ওঠানামা করছে নীচে ওপরে এইভাবে, মুখের এই রকম চলন মিলিও করে কারোর পুরুষাঙ্গ মুখ দিয়ে মৈথুন করে দেওয়ার সময়, কিন্তু বিছনার উপর চিত হয়ে যে শুয়ে তার মাথার চুল সব লম্বা মেয়েদের মতই এবং তার হাতে শাঁখা পলাও আছে, তার বক্ষের উপর সুডৌল স্তন যুগলের ঢেউও বোঝা যাচ্ছে, মিলি মনে মনে অনুমান করল, অপর সেই মানুষটা তাহলে সম্ভবত একটা হিজড়ে, এটা মনে হতেই সেই দৃশ্য দেখে বেশ অবাক আর কৌতুক বোধ করল মিলি, কিন্তু সেটা ভয়ে রূপান্তরিত হয়ে গেল নিমেষে, যখন সে দেখল, যে সেই লোকটা হঠাৎ সেই হিজড়েটার উপর নিজের দুই হাত দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার টুঁটি চেপে ধরে দম বন্ধ করে দিল, আর কিছুক্ষণ ধরে ছটফট করতে করতে সেই হিজড়েটা একটা সময় নিস্তেজ হয়ে আস্তে আস্তে অসাড় হয়ে গেল আর সাথে মল আর মূত্রত্যাগও করে ফেলে দিল সেই বিছানায় কারন বিছনার একটা অংশ হলুদ হয়ে গেল আস্তে আস্তে, এটা দেখে বেশ ভয় পেল খানকি মিলি, খুনিটা খুন করে বিছানা ছেড়ে উঠে সেই ঘরটার জানলার কাছে এগিয়ে এল পর্দাগুলো টেনে দিতে, যাতে সে উল্টোদিকের লজের চারতলায় জানলার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মিলিকে দেখে না ফেলে তার জন্য তৎক্ষণাৎ জানলার কাছ থেকে এক ঝটকায় সরে গেল মিলি, সে টের পেল, তার বুকটা খুব জোরে ধরাস ধরাস করছে, তার মাথায়ও বিন্দু বিন্দু করে ঘাম জমতে আরম্ভ করেছে যা টপটপ করে তার কপাল নাক আর কানের পাশ দিয়ে বেয়ে পড়ছে, তার গাল কান সব হয়ে গেছে লাল‌ আর গরম, তার ইচ্ছে করছিল তক্ষুনি সেই লজ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে, কিন্তু আবার ঠিক সেই সময় শালার বুড়োটা বাথুরম থেকে হাসিমুখে বেরিয়ে এল, বেরিয়ে এসে কোনো কথা না বলে বিছানায় বসে তার শার্টটা খুলে রাখল একপাশে, আর তারপর হাতের ইশারায় মিলিকে ডাকল নিজের কাছে "আয়" বলে, অনিহা সত্ত্বেও মিলিও একেক করে রোবটের মত কাপড় খুলে তার ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত করে ফেলে আস্তে আস্তে করে গেল সেই বুড়োটার কাছে, মিলির পরিণত বক্ষস্থল দেখে বুড়োর চোখ দুটো হয়ে গেল একেবারে ছানাবড়া গোল গোল, সে একটা ঢোক গিলে জিভ দিয়ে নিজের শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁটগুলো চেটে নিল একবার, তারপর মিলি তার একেবারে সামনে গিয়ে দাঁড়াতে নিজের রুগ্ন শীর্ণকায় হাতগুলো দিয়ে তার বুকে হাত বোলাতে লাগল, কিন্তু তারপরই আবার এক নতুন সমস্যা দেখা দিল, যখন সে হঠাৎ ধপ করে পড়ে গেল বিছানার উপর চিত হয়ে, মিলি বুঝতে পারল না কী হল ব্যাপারটা, পরে যখন দেখল বুড়োটা কাঁপতে কাঁপতে তার মুখ দিয়ে গ্যাজলা উঠছে, তখন বুঝল যে এ শালা মৃগী রোগী, সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে মিলি বুড়োটার মানিব্যাগ আর হাতের ঘড়িটা নিয়ে নিল, আর তারপর জামাকাপড় ঠিকঠাক করে পড়ে নিয়ে বুড়োটাকে ওখানে ওভাবেই ফেলে রেখে সেখান থেকে চলে গেল, সিঁড়ি দিয়ে তাড়াহুড়োয় নামতে গিয়ে হঠাৎ পায়ে একটা হালকা মোচর খেল সে, অল্প খুড়িয়ে খুড়িয়ে নেমে এল আবার ফাঁকা রাস্তায়, বুড়োটার কী হল না হল তা নিয়ে সে আর ভাবছে না, তবে সে যে খুন হতে দেখেছে একটু আগে, সেটা সমানে তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, যদিও খুনখারাপি জীবনে সে এই প্রথমবার দেখেনি, তবুও ভাবছে সে একটু আগে কী দেখল, কেন দেখল, সে সেই জানলার কাছে না দাঁড়ালেই বোধহয় ভাল ছিল, কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে হাটছিল মিলি, এইসব ভাবতে ভাবতে সে আবার ফিরে এল সেই মোমো স্টলের কাছে, গিয়ে সে হয়ে গেল আরও অবাক, যেই লোকটা কিছুক্ষণ আগে সবার কাছ থেকে তোলা চাচ্ছিল, সে এখন মরে পড়ে আছে গুলি খেয়ে রাস্তার মাঝে, আর তার লাশটাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে সব কৌতূহলী লোকজন, মিলি নিজেও এগিয়ে গেল দেখার জন্য, দেখল, লোকটার মাথার খুলি, ঘিলু সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারদিকে, লোকজনদের কাছ থেকে সে জানতে পারল, যে তোলার টাকা নিয়ে লোকগুলো নিজেরাই নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিল, তারপর সেখান থেকে ঝগড়ার মাঝে তার সাথিরাই তাকে হঠাৎ বন্দুক বের করে গুলি করে পালায়, ঘটনার আকস্মিকতায় মিলি নিজেও বেশ অবাক, এই লোকটাকে কিছুক্ষণ আগেই মিলি নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, যাই হোক, সেখানে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে আরও কিছুক্ষণ ভেবে চলল মিলি একের পর এক ঘটনাগুলোকে আত্মসাৎ করতে কিছুটা সময় নিয়ে, তারপর মিলি সেখান থেকেও চলে গেল। 

একটা দেওয়ালের গায়ে কোনো পলিটিক্যাল পার্টির দেওয়াল লিখনের গায়ের উপর কতগুলো পোস্টার চিপকে দিয়েছিল কারা যেন, সেগুলো আবার সবকটা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে, পোস্টারের অবশিষ্ট যেটুকু অংশ আছে, তাতে দেওয়ালে এক জায়গায় এক টুকরো কাগজ জুড়ে লেখা 'জ', আবার তার থেকেই কিছুটা দূরে আরেকটা ছেঁড়া অংশের ওপর লেখা 'বাং', ব্যাস, শুধু এইটুকুই, সেই দেওয়ালের গায়ে নীচে বাঁদিকে একটা জায়গায় লেখা রয়েছে "এখানে প্রস্রাব করিবেন না।" ঠিক সেই লেখাটার ওপরই টিপ করে দাঁড়িয়ে হিসু করছিল একটা ছেলে, একজন যুবক ছেলে, দূরে থেকে দাঁড়িয়ে তাকেই দেখে যাচ্ছিল মিলি, ছেলেটি যদিও তাকে লক্ষ্য করেনি, আস্তে আস্তে করে এক এক পায়ে তার কাছে এগিয়ে গেল সে, তারপর তাকে বলল, "বাহ রে, তোরটা তো খুব বড়।" ছেলেটা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল তার দিকে, মেয়েটা দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছিল তার দিকে তাকিয়ে, ছেলেটা তখনও হিসু করে যাচ্ছে, সেও মজা করে তাকে উদ্দেশ্য করে বলল, "কেন, তুই নিবি নাকি?" মিলিও এতে হাসল একটু, তারপর বলল, "হ্যাঁ, তুই যদি দিস।" ছেলেটা হিসু করা শেষ করে সেখান থেকে চলে যাচ্ছিল, মিলি তাকে ডেকে বলল, "কিরে, যাবি নাকি?" ছেলেটা ঘুরে দাঁড়াল, মিলিকে একবার দেখে নিল আপাদমস্তক। তারপর হাত ধরাধরি করে চলল তারা একে অপরের সাথে। একটা বার মানে সুরাখানায় গিয়েছিল তারা দুজনে, সেখানে তারা বসে কয়েক গ্লাস মদ গিলছিল আর একে অপরের সাথে এই সেই বিষয় নিয়ে গল্প করছিল, মিলি ছেলেটিকে মজা করে বলল, "তোকে দেখলাম ঠিক তাক করে যেখানে দেওয়ালে লেখা ছিল 'এখানে প্রস্রাব করিবেন না।' ঠিক সেইখানেই হিসু করছিলিস।" ছেলেটি হেসে উত্তর দিল, "হ্যাঁ, এমনি। ঐ জায়গাটায় শুনলাম এই দেওয়াল লিখনের ওপর পোষ্টার চিপকানো আর সেগুলো আবার পার্টির গুন্ডাদের ছিঁড়ে ফেলা নিয়ে সেই দুই দলের লোকদের মধ্যে একটা সাংঘাতিক মারামারি লেগেছিল এই কয়েক দিন আগে সেই জায়াগাটাতেই।" তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার বলল, "তা, তোর কত বড় লাগে?" মিলি তাকে পাল্টা হেসে জিজ্ঞেস করল, "তোর কত বড়? দেখে তো বেশ বড়ই মনে হল আমার।" বলে হেসে উঠল তারা দুজনেই, তারা কথা বলছিল আর মাঝে মাঝে একটু একটু করে মদ খাচ্ছিল, হঠাৎ মিলি লক্ষ্য করল, যে তার দিকে দূর থেকে সেই বারের কাউন্টারের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে আরেকটা লোক, মিলি এটা দেখল, বোধহয় এই ছেলেটাও তার প্রতি আগ্রহী কারন সে মাঝে মধেই মিলিকে আড়চোখে লক্ষ্য করছিল এবং তা মিলির নজর এড়ায়নি, "এক মিনিট একটু দাঁড়া।" সেই ছেলেটিকে বলে সে গিয়ে আবার অন্য সেই ছেলেটিকেও ধরে আনতে গেল, তার কাছে গিয়ে তাকে ধরে বলল, "কিরে, যাবি নাকি আমাদের সাথে?" ছেলেটির মুখে এমনিতে কোনো কথা নেই, একটু কেমন যেন হাঁড়িমুখো ধরনের, মিলিকে সেও একবার উপর নীচ দেখে নিয়ে তার হাত ধরে গেল, তারপর তারা তিনজনে আবার সেখান থেকে গেল মিলির ঠিকানায় ট্যাক্সিতে করে। ট্যাক্সিতে তারা তিনজনেই বসে ছিল চুপচাপ নিজের মত, বিশেষ তেমন কেউ কারো সাথে কথা বলছিল না।

একটা বস্তি এলাকা, সেখানে একটা গলিতে মিলির একটা ছোট্ট মত একতলা বাড়ি, সেখানেই সে থাকে। ঘরের দরজাটা খুলে তারা তিনজন ঢুকল ভেতরে, তারপর মিমি নিজের ব্যাগটা বিছানায় রাখল, বিছানাতে আবার নানান রকম জিনিস ছড়ানো, নানা রকম খেলনা, তবে ছোটদের নয়, বড়দের, ডিল্ডো ভাইব্রেটর থেকে শুরু করে নিয়ে ল্যুব, আরও অনেক কিছু, সে সবের মধ্যেই সেই ঘরের একটা কোণে ছোট্ট জায়গা জুড়ে অধিষ্ঠান করছে এক পাথুরে ভগবান। মিলি সেগুলো বিছানা থেকে সরিয়ে অন্য একটা জায়গায় রেখে দিয়ে প্রথমে তাদের সামনেই নিজের জামাকাপড় প্রায় সব খুলে ফেলল, তার যোনি থেকে একটু আগেই রক্তপাত হয়েছিল যা এতক্ষনে অনেকটাই কমে গেছে, তা সত্ত্বেও টাকার জন্য সবার সাথে করতে সে সবসময় তৈরী, সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে সেই ঘরে দাঁড়িয়ে সে প্রথমে বলল, "কিরে, তোরা কি একেক করে আসবি, নাকি দুজনেই একসাথে মারবি?" পরে দ্বিতীয় যেই ছেলেটিকে মিলি ধরে এনেছিল সে তখনও কোনো কথা না বলে মিলিকে গোমড়া মুখ করে চুপচাপ দেখে যাচ্ছে, প্রথম যেই ছেলেটাকে মিলি ধরেছিল, সে মিলির এই কথা শুনে নিজের গায়ের জামাকাপড় আস্তে আস্তে খুলতে লাগল, আর তখনই মিলি জিজ্ঞেস করল টাকার কথাটা, সেটা শুনে জামা খুলতে থাকা সেই ছেলেটা থেমে অবাক হয়ে বলল, "টাকা দেব মানে? আমি তো নিজেই একজন সেক্স ওয়ার্কার, আমি তো এখানে এসেছিলাম টাকা নেব বলে।" শুনে মিলি হয়ে গেল আরো অবাক আর বলল "মানে?! আমিও তো একটা বেশ্যা, বাল আমি ভাবলাম তুই ল্যাওড়া আমাকে টাকা দিবি সালা।", এই ছেলেটির কথাটা শুনে মিলির রাগ আর বিরক্তিও হল, ছেলেটা এক বারও তার পোশাক আশাক দেখে বা কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারল না যে সে এক জন বেশ্যা, যদিও সে মিলিকে এক বারও তার কাজের ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করেনি বা মিলিও তার কাছ থেকে তার ব্যাপারে কিছু জানতে চায়নি, লোকটা আর মিলি কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়েই থাকল, আর অপর যেই পুরুষটি সেইসময় ঘরে উপস্থিত ছিল, সে তাদের কথাবার্তা শুনে কিছুক্ষণ পর বলল, "আর আমার মেয়ে না, ছেলে লাগে, আমি এখানে এসেছিলাম এই ছেলেটাকে দেখে, তোকে দেখে না রে।" প্রথমে সেই ছেলেটি এবং পরে মিলির দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে বলল সে, অপর সেই ছেলেটি যাকে মিলি প্রথমে ধরেছিল এবং যে নিজের জামাকাপড় খুলছিল সে আবার এই কথা শুনে সমকামী অপর সেই লোকটার দিকে তাকাল, তারা দুজনে একে অপরের দিকে চেয়ে থাকল কিছুক্ষণ, তারপর জামা খুলতে থাকা সেই ছেলেটি বলে উঠল, "আমার আবার ছেলে মেয়ে দুজনকেই চলে।" "আমি তোকে টাকা দেব" অপর লোকটি বলল। এই কথা বলে তারপর সমকামী সেই পুরুষটিও নিজের জামাকাপড় খুলতে লাগল, মিলি কোমরে দুহাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অবাক হয়ে ঘরের মধ্যে, আর চুপচাপ তাদের দুজনের কান্ডকারখানা দেখে যাচ্ছে বেকুবের মত, সেই লোকগুলো ততক্ষণে পুরোপুরি নগ্ন উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে একে অপরের শরীর কিছুক্ষণ ধরে ছুঁয়ে দেখে তারপর মিলির সামনেই তাকে তোয়াক্কা বিন্দুমাত্র না করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়া শুরু করে দিয়েছে পাগলের মত, আর ইতিমধ্যে একজন আরেকজনের সামনে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসেও পড়েছে, মিলি আর কী করবে ভেবে না পেয়ে সেই ল্যাংটো অবস্থাতেই বিছানার ওপর একটা ভাইব্রেটর নিয়ে তাদের দুজনকে দেখতে দেখতে শুয়ে পড়ল।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime