STORYMIRROR

Pamor Kantak

Crime Thriller

3.8  

Pamor Kantak

Crime Thriller

আমি একটি মদের বোতল

আমি একটি মদের বোতল

12 mins
390

আমার বেশি কিছু বলার নেই, বিশ্বাস করুন, কিন্তু নিজের জীবনের গল্প লোককে শোনানোর ইচ্ছা আমার বহুদিনের, আশা করতে পারি দয়া করে বিরক্ত না হয়ে ধৈর্য না হারিয়ে আপনারা আমার গল্পটা শুনবেন। যাকগে, নিজের কথাটা বেশি কথা না বলে না হয় তবে শুরুই করে দি।
তো, ব্যাপারটা হচ্ছে যে, আমি একটি মদের বোতল। একটি বোতল তৈরীর কারখানায় জন্মেছিলাম, তারপর সেখান থেকে একটা পাবে বাক্সবন্দি হয়ে পৌঁছে আমার শরীরে দামি ওয়াইন ভরে দিয়ে আমার গায়ে মদের লেবেল পড়ে গিয়ে পাবের একটি তাকে আমারই মত আরও অনেক বোতলের পাশে আমি এদ্দিন শোভা পাচ্ছিলাম। যে দোকানে ছিলাম, সেখানে একদিন একটা বিহারী‌ ছেলেকে কতগুলো বাঙালী হঠাৎ ক্ষেপে উঠে পিটিয়ে মেরে ফেলে দিল, ওদেরই বন্ধু, প্রথমদিকে ওরা সবগুলো মিলে হুল্লোড় করছিল, বিহারীটা নাকি দশটা টাকা ধার নিয়েছিল ওদের থেকে, শোধ না দেওয়ায় রাগের মাথায় সেটা নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে এই কান্ড, বিহারিদের এমনিতেও লোকে কোনো কারন থাকলেও বা না থাকলেও সহ্য করতে পারে না জাতটাই এমন, তারপর সেই ঘটনার জেরে স্থানীয় বিহারি একতা মঞ্চ না কী এক সংগঠনের তরফ থেকে এই মদের দোকানে এসে অনেক হম্বিতম্বি করা হয়েছিল, এমনকি দোকানের যে মালিক তাকে অবধি বাঙালী বলে কলার ধরে আমার সামনেই পিটিয়ে ছিল সেই সব লোকেরা, অনেক গ্লাস চেয়ার টেবিল আর অনেক মদের বোতলও ভেঙেছিল তারা, আবারও পুলিশ এসেছিল, যখন ওরা মদের বোতল গুলো একেক করে তুলে তুলে ভাঙছিল আমার তখন মনে খুব ভয় ধরে গেছিল, আবার আমাকে না ধরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, কিন্তু তখন আমার ভাগ্য বেশ ভালই ছিল বলে সে বেলা কপালজোরে বেঁচে গেছি। নিজের চারপাশের এই শীতল মনুষ্য সমাজকে দেখে খুব খারাপ লাগত, সামান্য কটা টাকার মূল্য এখানে বেশি মানুষের জীবনের চেয়েও, কী কারনে যে ওরা বেফালতু ওই বিহারি ছেলেটাকে পিটিয়ে মারতে গেল কে জানে। অনেক লোকের অনেক ঘটনা শুনতাম, সেই পাবের নানান কোণার নানান টেবিলের নানান প্রান্ত থেকে আমার কানে নানান গল্প এসে পৌঁছত, এই যেমন ধরুন কিছু লোক গল্প করছে যেই বাচ্চা মেয়েটিকে তারা একটু আগে ধর্ষন করে তার লাশটা জ্বালিয়ে দিয়ে এসেছে তার ব্যাপারে, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর তার লাশটাকে ধর্ষণ করার মুহূর্তের নানা চটুল বর্ণনা তারা নিজেদের মধ্যে ফিস্ফিসিয়ে বলে চলেছে আর তাদেরই পাশে টেবিলের ওপর বসে আমি সেই সব বর্ণনা শুনছি, শুনতে শুনতে গা গুলিয়ে উঠছে, কিন্তু তাও শুনে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারছিও না, বা ধরুন এক চাকরি না পাওয়া নিরাশ যুবক ভাবছে আত্মহত্যা করার কথা আর আপনমনে সেটা বলে চলেছে সবার সামনেই জোরে জোরে, যদিও তাতে আশপাশের কারো কিছু এসে যায় না, বা ধরুন একটা বুড়ো তার অন্যান্য বুড়ো হাবড়া সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে গল্প করছে কীভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে সে বাথরুমের দরজার ফুটো দিয়ে নিজের নাতনিকে স্নান করতে দেখেছে যেমন রোজ দেখে আর নিজের নাতনির শরীরের ভূগোল বোঝাচ্ছে তার অন্যান্য বুড়ো বন্ধুদের, কিংবা কোনো এক সদ্য বিপত্নীক তার অন্যান্য সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে মদ আকন্ঠ গিলে গল্প করছে যে কীভাবে তার স্ত্রী যাকে সে নিজের ধ্বজভঙ্গের জন্য কোনোদিন সুখ দিতে না পারায় আর অন্য কোনো পুরুষও তার বউয়ের মুখের অসহ্য দুর্গন্ধের দরুন তার সাথে কথা অবধি না বলায় হতাশায় সে মহিলা আত্মহত্যা করল এবং মাঝে মাঝে বলে উঠছে "ভাল হয়েছে মাগিটা মরে, সব সময় পাড়ার জোয়ান ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে গিয়ে খানকিগিরির চেষ্টা করত, শালি খানকিমাগী। ও নিজে নিজেকে না মারলে কোনদিন আমিই ঘুমের মধ্যে খানকিমাগীকে খুন করে বসতাম!", আমিও ভাবছিলাম আরো কী না কী দেখতে আর শুনতে হবে এই পাবে থাকলে, কিন্তু তারপর হঠাৎ একদিন সেই পাবেই কাজ করা একটি ড্রাগ অ্যাডিক্ট ছোকরা আমাকে সবার নজর থেকে লুকিয়ে চুরি করে নিয়ে গিয়ে ড্রাগের টাকা জোগাড়ের জন্য তার পরিচিত একটি অল্পবয়সী কিশোরী মেয়ের কাছে সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য একেবারে জলের দরে বেচে দিল, আর সে আমাকে টাকা দিয়ে কিনে নিজের ব্যাগের ভেতর বইখাতার সাথে লুকিয়ে নিয়ে গেল, আমার মূল্য এরা এত কমিয়ে দিল দেখে সত্যি বলতে খুব রাগই হয়েছিল, নিজের মাদকাসক্তির কাছে হেরে গিয়ে সংযম না রাখতে পেরে শেষে কিনা সেই ছেলেটা এই কাজ করলে। আমাকে নিজের বাড়িতে নিজের ঘরে যত্ন করে রেখে দিয়েছিল মেয়েটি লুকিয়ে, তার মতলব ছিল টিউশানে যাওয়ার নামে বেরিয়ে নিজের বন্ধুদের সাথে মদ খেয়ে ফুর্তি করবে। কিন্তু সমস্যাটা হলো যখন মেয়েটির বাবা মা আগেই মেয়েটির ব্যাগের ভেতর ঘটনাচক্রে আমায় আবিষ্কার করে ফেলে। আর তখনই শুরু হয় অশান্তি। মেয়েটার বাপটা তো প্রায় মেয়েটার গায়ে হাতই তুলে ফেলত যদি না মা টা সেটায় বাধা দিত। মেয়েটি নিজের‌ টিউশানের মাইনের টাকা সব কামিয়ে তাই দিয়ে জমানো টাকায় আমায় কিনে এনেছিল নিজের বাড়িতে।‌ কিন্তু সেই আমাকে সেই মেয়েটির বাপটা নিয়ে গিয়ে সোজা ফেলে দিল তাদের বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারের একটা নোংরা ফেলার বাক্সে। নোংরা তরিতরকারির খোসা, পঁচা খাবারদাবার ইত্যাদির ঢিবির মধ্যে গিয়ে পড়লাম আমি, একটা পরিষ্কার ঝা চকচকে দেখতে মদের বোতল। তখন থেকে বেশ কয়েকদিন তারপর আমি ওখানেই ছিলাম, কদিন যে ছিলাম, তার কোনো হিসাব আমার নিজেরও নেই , কিন্তু যে কদিন ছিলাম, তদ্দিনে বেশ কয়েকটা ঘটনা এবং কাহিনী আমি দেখে ও শুনে ফেললাম, আমার আশপাশ দিয়ে যাওয়া বা আমার কাছেপিঠে দাঁড়িয়ে গল্প করা নানা লোকেদের মুখ থেকে। যদিও আমার জীবনের কাহিনীর সাথে সেসবের কোনো যোগ নেই, তবে সেগুলোও একটু একটু করে না হয় শোনাই আপনাদের।
যে মেয়েটির বাড়ি থেকে আমাকে তাড়ানো হল, সেখান থেকে তার পর এক দিন রাতের বেলা তুমুল ঝগড়া আড় অশান্তির আওয়াজ শুনতে পেলাম, তার পর হঠাৎ দেখলাম পুলিশ কোথা থেকে চলে এল, এবং এসে সেই মেয়েটির বাবাকে তুলে নিয়ে গেল, এবং তার পর সেই মেয়েটি পরবর্তীতে নিজের বাপের উপর মিথ্যা রেপ এর কেস দিয়ে দেয় একদিন হঠাৎ করে। তার মা টিও সব জেনে নিজের মেয়ের‌ প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে নিজের স্বামিকে বাঁচাতে মুখ খোলে না, অন্তত শুরুতে। তারপর সেই লোকটা যখন সেই কষ্টে রাগে দুঃখে অপমানে নিজের জীবনটাই দিয়ে দিল জামিনে ছাড়া পেলেও, তখন মেয়েটি মুখ খুলে নিজেই সব স্বীকার করে, যে তার বাপ তাকে পার্টি করার থেকে আটকানোয় ও বকাবকি করায় রাগের মাথায় নিজের মায়ের বুদ্ধিতে সে এমনটা করে, নিজের দোষ স্বীকার করে তার মাও, যদিও কারোরই কোনো সাজা হয় না।
সেই ঢাকনা খোলা ডাস্টবিনের নোংরা আবর্জনার দুর্গন্ধে ম ম করত সারা পাড়া। আর সেটাতেই আরশোলা পোকামাকড়ের সাথে পড়ে ছিলাম আমি, একটা দামি বিলিতি মদের বোতল। কীটগুলো চলাফেরা করে বেড়াত আমার গায়ে, জঘন্য লাগত। কিন্তু কিছু করারও ছিল‌না আমার। অনেক লোক পাশ দিয়ে যেত, দেখত আমায়, ভাবতাম তারা কেউ হয়ত একটা পরিষ্কার মদের বোতল দেখতে পেয়ে এক দিন লোভ সামলাতে না পেরে ঠিকই নিয়ে যাবে আমায়, কিন্তু তারা আমায় দেখে একটা নোংরা ফেলার বাক্সের মধ্যে এরম একটা পরিষ্কার মদের বোতল পড়ে আছে দেখে কেউ কেউ অবাক হলেও আমায় তুলে নিত না। তখন খুব বিরক্তই হতাম আমি। 
"কম্বল লে লো সির্ফ বিস রুপায় মে" বলে চেঁচাতে চেঁচাতে লোকগুলো পাড়ায় কম্বল কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছিল। শীতে দুপুর রোদে দরজা এঁটে ঘুম দেওয়া পাড়াতে একদিন একটি মহিলার হঠাৎ কম্বল কেনার শখ হওয়ায় সেই ছেলেগুলোকে নিজের বাড়ির বারান্দায় ডেকে কম্বল দেখছিলেন। লোকগুলো সংখ্যায় দু-তিনজন, ভুজুং ভাজুং দিয়ে সেই মহিলার বাড়িতে ঢুকল, বেরোল বেশ কয়েকক্ষন পরে, বাড়ির ভেতরের টাকাপয়সা প্রায় সবকিছু সাফ করে দিয়ে। সদর দরজাটা যাওয়ার আগে নিজেরাই আলতো করে ভেজিয়ে দিয়েছিল। সারাটা দিন আর তার বাড়িতে কেউ যায় নি, সন্ধ্যার দিকে শুধু একটা চোর ঢুকল আবার তার বাড়িতে। সেই প্রথম সেই মহিলার আর ছোট্ট বাচ্চা ছেলেটার লাশদুটো‌ আবিষ্কার করে। হকচকিয়ে গেছিল বেশ, যদিও ভেতরে তার নেওয়ার মত টাকাপয়সা কিছুই ছিল না, শেষমেশ একতলা ছোট্ট বাড়িটার বারান্দায় একটা কোণে রাখা সাইকেলটা নিয়ে সেই বাড়ি থেকে চোরটা বেরোচ্ছিল, ঠিক তখনই আবার মহিলার বরটা ফিরে এসে তাকে একেবারে হাতেনাতে ধরে ফেলল এবং চিতিকার করে লোক জড়ো করল। এবং পরে নিজের বউ আর ছেলের লাশগুলোও দেখল। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পাড়ার সব লোক জমে গেল লোকটার চিৎকারে আর তারা ধরলও চোরটাকে। তারাও দেখল বাড়ির ভেতরে কী কান্ড। তারপর নিজেদের সারাদিনের সারাজীবনের নানান বিষয় নিয়ে জমে থাকা যাবতীয় ক্ষোভ একেবারে বমির মত উগড়ে দিয়ে এমন মার মারল সেই ছিঁচকে চোরটাকে যে একেবারে সেই স্থানেই তার পঞ্চত্ব প্রাপ্তি ঘটল। পরে পুলিশও এল সেখানে, এসে দেখল একটা ল্যাম্পপোস্টের গায়ে নগ্ন করে বাঁধা রক্তাক্ত চোরটার লাশ, আর সাথে দেখল বাড়ির ভেতরের হাল, মহিলাটিকে নগ্ন করে একটা চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে প্রথমে তার গলাটা নাকি কাটা হয়, তারপর তাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়।‌ তার গায়ের সব কাপড়ও অবধি তারা খুলে নিয়ে গেছিল, আর বাচ্চাটার গলায় গামছা পেঁচিয়ে ওরা ঝুলিয়ে দিয়েছিল সিলিং ফ্যান থেকে, এমনই পুলিশেরা বলল প্রাথমিক তদন্তে। যদিও সেই চোরটাই মেরেছিল কি না তা তারা ঠিক বলতে না পারলেও এটুকুই বলতে পারে যে এটা একাকী কারো কাজ নয়, অন্তত দু-তিনজন মিলে করেছে, আর যেহুতু চোরটা একা ছিল তাই 'সম্ভবত' সে করেনি বলে তারা ভাবছে। এই চোরটাকে ধরে পেটানোর জন্য দুয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছিল, কিন্তু পরে তাদের ছেঁড়েও দেয়। এরপর শীতের মরশুমে লোকেদের‌ গা আর মেজাজ গরম করতে এই "কম্বোল গ্যাং" এর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় খুব। 
তারপর শীতটা গিয়ে আবার গরমকাল এলেও রাতের দিকে বেশ ভালই ঠান্ডা পড়ত। একদিন সেই ডাস্টবিনের মধ্যে ওভাবেই পড়ে আছি, হঠাৎ দেখি, রাস্তার ধারের বাধানো ঠান্ডা পেভমেন্টের ওপর দাঁড়িয়ে সমানে ধোঁয়া টেনে চলা একটা ছেলে তার পায়ের কাছে এসে মাথা ঘষা একটা কুকুরকে চেপে ধরে তার গায়ে সমানে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে গেল একটি মেয়ে সেখানে আসা অবধি, তারপর সেই কুকুরটিকে ছেড়ে দিয়ে সেই মেয়েটির সাথে ঝগড়া মাথা গরম করে মেয়েটিকে এক ঘুষি মেরে ফেলে দিল পেভমেন্টের ওপর, তারপর চিৎপটাং মেয়েটির দিকে ঝুঁকে একটা ঘুষি পাকিয়ে দু-একটা খিস্তি মেরে চলে গেল ওখান থেকে। মেয়েটি বোধহয় মাথায় চোট পেয়ে মরেই গেছিল কারন আর নড়ছিলই না সে, গোটা ঘটনার আকস্মিকতায় আমি একেবারে স্তম্ভিত হয়ে ছিলাম। কী থেকে যে কী হল এবং কেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তারপর আবার দেখলাম, কিছুক্ষণ পর একটা রিকশাওয়ালা এসে থামলো পড়ে থাকা সেই মেয়েটির পাশে। নেমে কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ কী ভেবে এদিক ওদিক দেখে সেই মেয়েটির ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে নিজের গোপনাঙ্গের চুলকানি সেই মেয়েটির যোণিপথের ভেতর নিজের পুরুষাঙ্গ ঘষে ঘষে মেটাল, আর তারপর সেই মেয়েটির মুখের ওপর বীর্যপাত বা রতিক্রিয়া করে আবার চলে গেল সেখান থেকে নিজের রিকশা নিয়ে। তারপর আবার বেশ কিছুক্ষণ পর কোথা থেকে রাগে মেজাজে গজগজ করতে থাকা পাড়ারই একটা ছেলে এসে সেখানে সেই পড়ে থাকা মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে তার কাছে গিয়ে মেয়েটির উর্ধাঙ্গ একেবারে অনাবৃত করে দিয়ে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে মারতে হাঁপিয়ে উঠে কাছেপিঠে থেকে একটা বড় পাথর তুলে এনে মেয়েটির শরীরে বিচ্ছিরি ঘা করে দিয়ে তার মুখ থেঁতলে দিয়ে শেষে মেয়েটার দেহের আর মুখের ওপর প্রস্রাব করে দিয়ে চলে গেল সেখান থেকে, কেন, কী কারনে করল, আমি তো কিছুই বুঝলাম না। তারপর আবার ওই পাড়ারই একটা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানো বুভুক্ষু কুকুর এসে সেই মেয়েটার শরীরটাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগল। পরদিন সব খবরের কাগজের শিরোনামে সেই মেয়েটার লাশ উদ্ধারের ঘটনাটা বড় বড় অক্ষরে ছেপে বেরিয়েছিল। যতটকু লোকের মুখে শুনেছিলাম, তার বয়ফ্রেন্ড মানে প্রেমিক নাকি তাকে ব্ল্যাকমেল করছিল‌ গোপন ছবি নেট এ ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে। তাকে পুলিশ খুঁজে বের করে ধরার আগেই সে ব্যাটাও নাকি ভয়ে বাড়িতে আত্মহত্যা করে।
শোনা যায়, এরপর নাকি শাসক দলের তরফ থেকে ঐ এলাকায় এবং আরো বেশ কিছু জায়গায় মেয়েদের চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে সকল বিরোধী রাজনৈতিক কীটপতঙ্গরা আবার করে নিজেদের গর্ত কোনাখামচি থেকে বেরিয়ে এসে খবর চ্যানেলের ডিবেটে, পাড়ায় পাড়ায় সর্বত্র বিক্ষোভ প্রতিবাদের নামে ন্যাকামো মারাতে শুরু করে। একদল বামপন্থী নারীবাদী সংগঠনের বেশ কিছু মহিলারা একটা জায়গায় ট্রাফিক অবরোধ করে সম্পূর্ন নগ্ন অবস্থায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করে, যদিও সেখানেও আবার আরেক নতুন সমস্যা দেখা দেয় যখন আশপাশের হেঁটে যাওয়া বেশ কিছু যৌন লালসা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো লোকেরা তাদের সেই বিক্ষোভ মিছিলে ঢুকে পড়ে তাদের পেটাতে থাকে এবং সেই সুযোগে মেয়েগুলোর গায়ে নোংরাভাবে নিজেদের কালিমালিপ্ত হাতগুলো বুলিয়ে মজা নিতে শুরু করে, পুলিশ যারা তাদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে এসেছিল তারা চুপচাপ সেখানে দাঁড়িয়ে সেই তামাশাটা দেখে যায়, আর তারপর একটা সময় গিয়ে সেই মহিলাদেরকে তুলে তুলে ভ্যানে ভরে, মহিলাগুলোর মধ্যে আবার একজন নাকি অভিযোগ করে, তাকে সেই কোলাহলের মধ্যে একটা লোক ধর্ষন করেছে। এতে করে আবারো রাজনৈতিক ক্যাচাল জমে ওঠে, খবরের চ্যানেলে বিতর্ক সভায় বসে বিরোধী কুকুরগুলো শাসকের কুকুরগুলোর দিকে ঘেউ ঘেউ করলে পাল্টা আবার রুলিং পার্টির মনুষ্য রূপী সারমেয় প্রতিনিধিরা অন্যান্য রাজ্যের ধর্ষনের কিছু পরিসংখ্যান তুলে দেখায় যাতে তাদের নিজেদের রাজ্যে নারী নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরনের ব্যার্থতা বা নিষ্ফলতা লঘু অপরাধ বলে মনে হয়। বিশেষ করে বর্তমানকালের অন্যতম জনপ্রিয় বিষ্ঠা ভাণ্ড সোশাল মিডিয়া বা সমাজ মাধ্যম গুলোতে এই ঘটনা নিয়ে নানা লোকের নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, কেউ কেউ সেই সব মেয়েগুলোর সাথে হওয়া ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানিয়ে কড়া নিন্দা করে, তো কেউ কেউ আবার তার পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে মেয়েগুলোকে নানা কুরুচিপূর্ণ শব্দের অলংকারে সাজিয়ে বলে এবং লেখে তাদের সাথে যা কিছু হয়েছে ঠিকই হয়েছে, বরং আরও বেশি কিছু হওয়া উচিত ছিল, অনেকে আবার বলে এই সব মেয়েদের এই সব কাজের জন্যই আজকাল সমাজে চারিদিকে এত ধর্ষণ হচ্ছে, অনেকে আবার আরও এক কাঠি উপরে উঠে সেই সব মেয়েগুলোকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারার কথা বলে, এইসব ক্যাচাল এবং ক্যাওড়ামো(বা ল্যাওড়ামো) তারপর একটা সময় ঠান্ডাও হয়ে গেছিল, যেমন প্রতিবারই হয়ে যায়। এই সব কিছুই পাড়ার কয়েকজন মহিলা একদিন আমার ডাস্টবিনটার সামনে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন, সেখান থেকেই এই ঘটনার ব্যাপারে এত কিছু জানলাম।
এরপর বেশ‌ কয়েকদিন, কয়েক মাস হয়ে গেছিল আমার ওভাবে ওই নোংরার ডাব্বায় পড়ে থাকার। তেমন খুব আজব কিছু আর দেখিনি বা শুনিনি। শুধু ভাবছিলাম কবে যে এখান থেকে বেরোব। গরমে আমার ভেতরের সব মদ ততদিনে একেবারে পঁচে গেছিল। পাড়ার সেই কুত্তাটি যে সেদিন মনের আনন্দে সেই মেয়েটির লাশ ছিঁড়ে খেয়েছিল, আমার ডাস্টবিনটার গায়ে এসে এক নিশুতি রাতের বেলা হঠাৎ দিল একগাদা পেচ্ছাপ করে‌। ইচ্ছে করছিল‌ একটা লাথি কষাই ওটাকে, যদিও আমার হাত পা কিছুই নেই, কিন্তু আবার সেখানে কোথা থেকে একটা মাতাল ভবঘুরে এসে জুটল। বোধহয় মদ না পাওয়ায় পাগলের‌ মত ছটফট করছিল, হঠাৎ ওখানে সেই কুকুরটিকে দেখতে পেয়ে ওটাকে চেপে ধরে একেবারে আমার সামনেই ধর্ষণ করতে শুরু করে দিল। যদিও যেই কুকুরটা আমার ডাস্টবিনটার গায়ে একটু আগে এসে অসভ্যের মত নিশ্চিন্তে হিসু করছিল সেটাকে ওভাবে রেপড হতে দেখে আমার তখন একটু খারাপই লাগছিল যদিও আমি একটু আগে সেই কুকুরটাকে লাথি কষাতে চেয়েছিলাম। কিছুক্ষণ ওই কুকুরটাকে করার পর হঠাৎ সেই মাতালটার নজর পড়ল আমার ওপর। তৎক্ষণাৎ সেই ভেতো কুকুরটাকে ছেড়ে দিয়ে সেই মাতালটা এগিয়ে এলো আমার ডাস্টবিনটার দিকে, একটা মদের বোতল দেখতে পেয়ে যেন হাতে স্বর্গ পেল, আমাকে ডাস্টবিনটা থেকে তুলে হাতে নিয়েই আমার মাথার ঢাকনাটা নিজের কর্কশ হাতের মুঠোর চাপে ঘুরিয়ে খুলে ফেলে আমার ভেতরের গোটা মদটাই ঢকঢক করে ঢেলে দিল নিজের গলায়। বোধহয় বহুদিন ধরে তৃষ্ণার্ত ছিল। এর আগে অনেক লোকেই আমার ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন করেছে, তাদের কারও কারও মুখে মদের দুর্গন্ধ তো ছিলই, কিন্তু এই মাতালটার মুখের মত এত বিকট দুর্গন্ধ আমি কখনো পাইনি, প্রায় কয়েক ঢোকেই আমায় একেবারে সাবার করে খালি করে ফেলল। সে করল তো করল, কিন্তু তারপর মদের‌ ঘোরে যা করল, কোনোদিন ভাবিনি একটা বোতল হয়ে জন্মে একটা মানুষকে মুখমৈথুনও দিয়ে দিতে হবে, শুধু চুমু খাওয়া এবং মদ খাওয়ানো অবধি ব্যাপারটা সীমিত থাকলে তাও না হয় একটা কথা ছিল। সেই মাতালখোর আমার মুখের ফুটোর ভেতর নিজের ময়লা কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষাঙ্গটা আঁটোসাঁটোভাবে চালান করে নিজেই মৈথুন করা শুরু করে দিল - 'বোতলমৈথুন' বলা যেতে পারে হয়ত জিনিসটাকে। লোকে শুনলে হয়ত বিশ্বাসও করবে না। আমাকে দিয়ে নিজের গোপনাঙ্গটিকে অনেকক্ষন ঘষে ঘষে অবশেষে একটা সময় পর আমার ভেতর নিজের যৌনাঙ্গ হতে শ্বেত বীর্যধারা নিক্ষেপও করল। কী জঘন্য স্বাদ, এতদিন ধরে আমাতে জমা মদের থেকেও বিকট গন্ধ আর স্বাদ। তারপর সেসব করা হয়ে গেলে একগাদা বমি করে পরে কেলিয়ে পড়ল আমাকে নিয়ে মাটির ওপর নিজের বমির মধ্যে ওই অবস্থাতেই, আমি তখনও তার পুরুষাঙ্গের ডগা থেকে ঝুলছি। সকালের দিকে যখন তার হুঁশ ফিরল তখন পাড়ার লোকের ঝাড় খেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের যৌনাঙ্গের মুখ থেকে আমাকে টেনে বের করার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখল যে আমার মুখটা সেখানে শক্ত হয়ে এমনভাবে এঁটে গেছে যে অস্ত্রপ্রচার ভিন্ন আর কোনো উপায় নেই, অতঃপর মহা ফাঁপরে পড়ে সেখান থেকে ওই অবস্থাতেই হাঁটা দিল একটা কাছাকাছি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে, নিজে বের করতে গিয়ে পাছে রক্তারক্তি কান্ড ঘটিয়ে ফেলে এই ভয়ে। কিন্তু হাসপাতাল অবধি পৌঁছে হঠাৎ হয়ত কাকতালীয় ভাবেই তার লিভার ফেল হওয়ায় মুখে রক্ত গ্যাজলা উঠে হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপরেই ধপাস করে পড়ল বালটা। হাসপাতালের আশপাশের কিছু লোকেরা একটা লোককে হাসপাতালের সামনে ওভাবে অনেকক্ষন ধরে পড়ে থাকতে দেখে তাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখাল, ডাক্তার তাকে মরা বলে ঘোষণা করল। তারপর শুনলাম, ওরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে আমাকে বের করার। ভাবলাম, যাক, এই মরা মাতালের দুর্গন্ধিত যৌনাঙ্গে আটকে থাকার থেকে নিস্তার পাব, কিন্তু সেই মাতালটার সাথে আমার মৃত্যুঘন্টাও যে উপস্থিত হবে তা ভাবতেই পারিনি, আর সেটা হলো যখন ওরা আমাকে গ্লাস কাটার না কী নামে কোন এক যন্ত্র দিয়ে কেটে মাতালটার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিল, প্রস্তাবটা শুনেই শিউড়ে উঠেছিলাম ভয়ে। কিছু তো আর করার ছিল না আমার, করকর শব্দে একটা মেশিন দিয়ে আমায় কেটে হত্যা করে আমার খন্ডবিখন্ড লাশের টুকরোগুলোকে হাসপাতালের একটা ছোট্ট গোল ট্র্যাশ ক্যানে ফেলে দিল লোকগুলো। এভাবেই আমার খনিকের জীবনের পরিসমাপ্তি।


இந்த உள்ளடக்கத்தை மதிப்பிடவும்
உள்நுழை

Similar bengali story from Crime