সাইকো পর্ব পাঁচ
সাইকো পর্ব পাঁচ
Part 1 link:- https://storymirror.com/read/story/bengali/95taktm5/saaiko/detail
Part 2 link:-https://storymirror.com/read/story/bengali/gf9vzstq/saaiko-prb-dui/detail
Part 3 link:- https://storymirror.com/read/story/bengali/y06rs85r/saaiko-prb-tin/detail
Part 4 :-
https://storymirror.com/read/story/bengali/jjj4uhm2/saaiko-prb-caar/detail
দেখতে দেখতে দিন কেটে যায়। ইদানিং আর বুটিক শপে বসতে ভালো লাগে না রবার্তোর। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বেশ কিছুদিন বেড়িয়ে এলেন কন্টিনেন্টের নানা দেশ থেকে। লন্ডন শহর, মার্গারিটার বাপের বাড়ি। ছবির মতো সাজানো, টেমসের ধারে সূর্যোদয়।পিকাডিলি সার্কাসে কিনে খাওয়া ইন ফিউশন। টিউব রেলে চড়ে ওভাল থেকে টোটেনহ্যাম। লর্ডসের মাঠে খেলা দেখা। সব স্বপ্ন তো সফল হল রবার্তোর এবং মার্গারিটার। তখন তারা একে অন্যকে উন্মাদের মতো ভালোবাসছেন। কেউ এক মুহূর্ত কাউকে ছাড়া থাকতে পারছেন না।
এই আমার সাজানো প্রাসাদ। ছাদে ওঠো, দেখবে চারপাশের ভূমধ্যসাগরের অনন্ত জলরাশির সীমাহীন অবস্থান। আর একটু এগিয়ে গেলে তুমি নতুন এক দ্বীপের সন্ধান পাবে। এসো, আমরা না হয় এখানে আমাদের প্রেম আর ভালোবাসা দিয়ে নতুন স্বর্গ গড়ে তুলি। একদিন তুমি আমার সন্তানের জননী হবে, পরম যত্ন এবং স্নেহে তাকে মানুষ করবে। একদিন আমি এই পৃথিবী থেকে চলে যাব। তখন সে-ই হবে আমার সার্থক উত্তরাধিকারী।
এই হল রবার্তোর মনোগত বাসনা। পৃথিবীতে সমস্ত মানুষই বোধ হয় এমনই একটা বাসনা নিয়ে বেঁচে থাকে, অথবা বাঁচার চেষ্টা করে। তবু কী যেন হয়ে গেল। আবার সেই একই চিন্তা। একই অনুভূতি। অস্থিরতা। মার্গারিটারের দিকে তাকিয়ে রবার্তোর মনে হল, এই মেয়েটি হাড়-মাংসের সমাহার ছাড়া আর কেউ নয়। এর মধ্যে ক্লেদাক্ত মন আছে, আছে হিংসা এবং ঘৃণা। এদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই পৃথিবীতে। আজ বাদে কাল মার্গারিটাকে মরতেই হবে।
একেবারে শেষ মুহূর্তে বেচারী মার্গারিটা সব কিছু অনুমান করতে পেরেছিলেন। সাধ্যমতো বাধা দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিবেশ ছিল তার প্রতিকূল। ভূমধ্যসাগরের এই একলা থাকার প্রাসাদ ছেড়ে তিনি বাইরে আসবেন কী করে? তখন মার্গারিটার আচরণের ওপর রবার্তোর কড়া নজর। এক অর্থে বলা যায়, মার্গারিটাকে তিনি প্রায় নজরবন্দী করে রেখেছিলেন।
তখন মার্গারিটা কারো সাথে কথা বলতে পারছেন না। গৃহে বন্দিনী অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। এখন আর রবার্তো তাঁকে শরীর খেলায় অংশ নেবার জন্য ডাকেন না। রবার্তোর চোখে মুখে ফুটে উঠেছে বুনো হিংস্রতা।
অসহায় মার্গারিটা শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলেন। আর রবার্তো তখন তাকে নিয়ে খেলছেন প্রবৃত্তিতম খেলা। যখন যা বলছেন তিনি, সেই কাজ তক্ষুনি পালন করতে হচ্ছে বেচারী মার্গারিটাকে। এভাবে বেঁচে থাকার অর্থ কী? মাঝে মধ্যে ভাবছেন মার্গারিটা। কিন্তু সে ভাবনার কথা রবার্তোর কানে পৌঁছে দেবেন কেমন করে?
মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল মার্গারিটাকে। লাশ গায়েব হয়ে গেল। থানার ওসি হাসতে হাসতে শ্যাম্পেনে ঠোঁট রেখে বলেছিলেন—এবার দুষ্টুমি একটু কমিয়ে ফেলুন, স্যার। বুঝতেই তো পারছেন, আমার বদলে অন্য কেউ ইনচার্জ হয়ে এলে আপনার কিন্তু দফারফা। মনে রাখবেন, ইতিমধ্যেই আপনার বিরুদ্ধে তিন তিনটি খুনের মামলাদায়ের করা হয়েছে। এর থেকে আপনার বেরিয়ে আসার পথ হয়তো আমি বাতলে দেব। কিন্তু সকলে তো এক নয়। কথা রেখেছিলেন রবার্তো। ইদানিং আর বুটিকের দোকানে তাঁকে দেখা যায় না। তার মানে? তিনি কি পালটে গেছেন? এখন কি নিজের ওপর আস্থা ফিরে এসেছে তাঁর? এখন বুঝি নিত্য নতুন মহিলাদের দেখে রবার্তোর মন একেবারে পালটে গেছে। তবুও চোখ বন্ধ করলে ইসাবেলার কথাই মনে পড়ে যায় তাঁর। মনে পড়ে যায় মার্গারিটাকে। এবং অনিবার্যভাবে মেরিনিয়া। এই তিন নারীর পাশাপাশি আর এক সর্বনাশিনীর ছবি রবার্তোর মনের ক্যানভাসে ফুটে ওঠে। তিনি হলেন শার্লে। শার্লে তাঁর জীবনটা একেবারে তছনছ করে দিয়েছেন। সেই বালক অবস্থায় ওই স্মৃতি তিনি ভুলবেন কী করে?
যেখানেই যাক যে নারীকেই দেখুক তার সঙ্গে সঙ্গে শার্লের কথা মনে পড়ে । রবারতো চিন্তা করতে থাকে তার অতীতের কথা জীবনের কথা সে আর মেরিনিয়া কত সুখী না ছিল কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণ তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। রবার তো চেষ্টা করলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে তার পুরনো জীবনে যেখানে সে খুবই সুখী ছিল তাই সে বর্তমান নিয়মিত বুটিক সাথে যাওয়া শুরু করল এবং নাইট ক্লাবে যায় দ্বীপেও।
কিন্তু জীবন নাটকের নাটকীয়তা না থাকলে গল্পের মজা আসে না । তাই আমাদের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে আবার আসে রবার্তোর সুখী জীবনকে তছনছ করতে। আসে রবার্তোর অর্থ ও যৌবনের প্রতি তাদের অন্তরে লুকিয়ে থাকা লোলুপ প্রেমকে প্রকাশ করতে । কিন্তু এবার জানিনা বিধাতার কি ইচ্ছা, সে আবার প্রেমের প্রস্তাব স্বীকার করে কিন্তু কেবল এক রাতের জন্য যেমনটি শার্লে করেছিল।রবার্তো ভেবেছিল শার্লে যেভাবে তাকে ঠকিয়েছে সেইভাবে সব মেয়েকে ঠকাবে, এক কথায় যাকে বলে প্রতিশোধ।
কিন্তু ওই যে কথাটা আমি আগেও বলেছিলাম এখনোও বলছি মানুষ ভাবে এক আর ভাগ্যবিধাতা বোধহয় তার জন্য অন্য কিছু লিখে রাখেন। নইলে রবার্তোর কেন সেই আগের মত অবস্থা বুটিকশপে যায় না, না যায় নাইট ক্লাবেও। ইতিমধ্যে দু-দুটি মেয়েকে আবার হত্যা করেছে ,রাত্রির প্রেম নিবেদনের পর যখন তারা পরস্পর পরস্পরকে চুম্বন করে তখনই রবার্তোর মনে ঠিক একই ধারনা একে আমার যে করেই হোক পরলোকে পাঠাতে হবে । এবং কথাও রেখেছি দু_দুবার রবার তো তারপর আর কেউ আসে না তাকে প্রেম নিবেদন করতে। একদিন রাতে ওসি এলো রবার্তোর বাড়িতে মুখে চিন্তিত ভাব। বলল "স্যার আপনার দুষ্টুমিটা আর চলবে না আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমারতো বদলি হবেই, সবাই যা শুরু করছে তাতে না হয় উপায় কি আছে বল । এর মধ্যে চেষ্টা করব আপনার কেসটা ক্লোজ করার কিন্তু অন্য কেউ হয়ে গেলে আপনার দফারফা সকালে তো এক নয় বলুন।" রবার্তোখুবই চিন্তিত বলল সে তো চায় না কোন মেয়েকেই হত্যা করতে কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণ তাকে কুরে কুরে খায় । ওসি উপদেশ দিলে তাকে সাইক্রিয়াটিস্টের কথা বলে। যা আগে অনেকেই বলেছে যাদের মধ্যে অন্যতম রমেন । সে কয়েকবার বলেছে লুইয়ের অনুরোধে কিন্তু আগে রাজি হয়নি ,এখন তো ভয় তাই তো রাজি হল।
রোম শহর তাতে বিশাল বড় এক বিল্ডিং এর মধ্যে রবার্ত বসে , যার সামনে সাইক্রিয়াটিস্ট নামটা বোধ হয় ক্লারা। মহিলা বটে তবে শহরের সবচেয়ে বড় সাইক্রিয়াটিস্ট, সে বহুদিন থেকে রবার্তোকে চেনে নাইট ক্লাবের মাধ্যমে কিন্তু কোনদিন বলতে সাহসী নয় তার প্রেমের কথা রবার্তোকে । আজ তাকে এখানে দেখে অবাক। রবার্তো বলল প্রথম দু মাসের পর তার আর ভালো লাগেনা । এমন মনে হয় যেন নারী জাতি তার সর্বনাশের গোড়া আর সে সেই গোড়া উপড়ে ফেলতে চায়। আসলে জীবনের প্রথম প্রভাদে তাকে এক মহিলা প্রতারিত করেছে এ অপমানটা তিনি সহ্য করতে পারেননি । বাকি দিনগুলো বোধহয় প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল সে।
সুন্দর সকাল মনোরম পরিবেশ একটা নারকেল গাছের নিচে তুমি বসে আছো । এই সময় একটা নারকেল পড়লো তোমার মাথার উপর , তখন তোমার অবস্থা কেমন হবে? ঠিক একই অবস্থা হয়েছে ক্লারার এইসব কথা শুনে। এই রকম কেস সেআগে কখনো শুনিনি ।সে বুঝতে পারছে না কি বলবে?