Imran Hassan

Drama Romance Crime

4.7  

Imran Hassan

Drama Romance Crime

সাইকো পর্ব চার

সাইকো পর্ব চার

4 mins
500


Part 1 link:- https://storymirror.com/read/story/bengali/95taktm5/saaiko/detail


Part 2 link:-https://storymirror.com/read/story/bengali/gf9vzstq/saaiko-prb-dui/detail


Part 3 link:- https://storymirror.com/read/story/bengali/y06rs85r/saaiko-prb-tin/detail

তুমি ইসাবেলা, আমি রবার্তো - তুমি লিরানিজ পাহাড়ের বসন্ত বাতাস বহন করছো, আর আমি এনেছি ভূমধ্যসাগরের নীলাভ জলের শীতলতা। তোমাতে আমাতে রচিত হবে কাঙ্খিত মিলন স্বর্গ। এসো, এসো ইসাবেলা, এই আমার প্রমোদ নিকেতন, এখানে দাঁড়ালে নিজেকে স্বর্গের বাসিন্দা বলে মন হয়। ওই দেখো, ভূমধ্যসাগরের শান্ত নীল জলে এক একটি ইয়ট কেমন ভাসতে ভাসতে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটি প্রমোদ তরণীতে রাত নেমে আসে বাসনা কামনার হাজার পশরা সাজিয়ে। সুন্দরীতমাদের শরীর থেকে শেষ আচ্ছাদন অপহরণ করা হয়। নগ্নিকা কন্যারা হো হো হাসিতে হেসে ওঠে। তুমি ইসাবেলা, আমি তৃষিত তাপিত চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে আছি। তুমি কি নিজেকে একবার উন্মুক্ত করবে না? না, আমি আয়নাপথে তোমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকব। তোমার কামনার সুধা আমি পান করব। তোমার কামনা সুধা পান করে মাতাল হব। তুমি কিন্তু আমাকে দোষ দিতে পারবে না। 

            সব অর্থে ইসাবেলাকে কামুক বলা যায়। তাঁর পায়ের পাতা থেকে মাথার চুল অব্দি কামনার আমন্ত্রণ। রবার্তো বুঝলেন, হাসলেন এবং ইচ্ছা করেই ইসাবেলার হৃদ সাগরে সাঁতার কাটলেন। ইসাবেলার হৃসাগরের এপার ওপার পাওয়া যায় না। সেখানে রবার্তো এক শিক্ষানবিশ সাঁতারু ছাড়া আর কেউ নন। 

           দেখতে দেখতে দুটি মাস কেটে গেল অনাস্বাদিত আনন্দের প্লাবনে অবগাহন করে। একে অন্যকে পেয়ে তখন সম্পূর্ণ পরিতৃপ্ত। ইসাবেলার ফেলে আসা দিনগুলি খুব একটা ভালো নয়। ইতিমধ্যে দু-দুবার বিয়ের আসরে বসতে হয়েছে তাঁকে। একবার লিভটুগেদার করেছেন। এতদিন বাদে ইসাবেলার মনে হল, এই পুরুষের সান্নিধ্য তাঁকে কাঙ্খিত শান্তি দেবে। সুখী দাম্পত্য জীবন রচনা করতে পারবেন তিনি।

             মানুষ ভাবে এক, আর ভাগ্য বিধাতা বোধহয় তার জন্য অন্য কিছু লিখে রাখেন। না হলে আবার কেন নগ্নিকা ইসাবেলাকে দেখে রবার্তোর মনের ভেতর সেই একই অপরাধ বোধ জেগে ওঠে। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে তখন তিনি ইসাবেলাকে মোটেই সহ্য করতে পারছেন না। আবার সেই কঠিন শপথ—যে করেই হোক, এই মেয়েটিকে কাল সূর্য ওঠার আগে পৃথিবী থেকে চিরকালের মতো সরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কী করে? এবার কোন ষড়যন্ত্রের জাল বুনবেন তিনি? ঠিক বুঝতে পারা যাচ্ছে না। এই অঞ্চলে রবার্তোর বিশাল প্রতিপত্তি। কিন্তু এক ঘটনা বারবার ঘটানো যায় কি? নতুন কিছু ভাবতে হবে। এমন কিছু, যা দেখে পুলিশ সন্দেহ পর্যন্ত করতে পারবে না। এত বড়ো একটা লাশ সরাবেন কী করে? কোথায়? ভাবতে ভাবতে বেশ কয়েকটা দিন অনিদ্রিত অবস্থায় কেটে গেল বেচারী রবার্তোর। শেষ অব্দি তিনি একটা নতুন পন্থা আবিষ্কার করলেন। কী সেই পন্থা? নিয়মিতভাবে খাবারের সাথে অল্প অথচ মারাত্মক বিষ মিশিয়ে দেওয়া। মানুষের জীবনীশক্তি ক্রমশ কমে আসবে। শেষ পর্যন্ত মানুষ তলিয়ে যাবে ঘুমের অতলে, সেই ঘুম আর কখনও ভাঙবে না। 

        বুঝতে পেরেছিলেন ইসাবেলা, এখন শেষের প্রহর ঘনিয়ে এসেছে। না, চোখ থেকে অনুশোচনার চাউনি ছিটকে বেরোয়নি। তিনি তো ইচ্ছা করেই এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। এখন কাকে দোষারোপ করবেন? অবশেষে সত্যি সত্যি একদিন নীল হয়ে গেল তাঁর সমস্ত শরীর। অতি সাবধানে তাঁকে সমাহিত করলেন রবার্তো। মাঝরাতে হেসে উঠলেন হো হো করে পৈশাচিক হাসিতে। আবার সেই একই টাকার খেলা, স্থানীয় থানার অফিসার বারে বারে রবার্তোর কাছে আসেন। বিদেশী মদিরায় নেশাতুর হতে। তার সথে রবার্তোর দোস্তির সম্পর্ক। তবে এবারের ইনামটা একটু বেশি পরিমাণে দিতে হয়েছিল। জলজ্যান্ত এক তরুণী পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য উধাও হয়ে গেলেন, পুলিশের মুখ চাপা দিতে গেলে যথেষ্ট অর্থ লাগবে বৈকি।

   রবার্তো আবার ফিরে গেছেন রোম শহরে। অতীতের স্মৃতি প্রতি মুহূর্তে তাঁকে তাড়া করছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়লেন রবার্তো। আগে নাইট ক্লাবে খুব একটা যেতেন না। ঘরের মধ্যে বসে একা একা স্বপ্নের জাল বুনতেন। এখন বেপরোয়া উদ্দাম জীবন তাঁকে ডাক দিল। ডাক দিল নাইট ক্লাবের সুন্দরী শ্রেষ্ঠার দল। যারা হাতের ছলাকলা জানে, জানে কীভাবে পুরুষের মাথা চিবিয়ে খেতে হয়। কীভাবে ঠোটের কোণে দুষ্টু হাসির ইশারা এনে তাদের হিলপকেট থেকে সন্তর্পণে মরক্কো চামড়ার ব্যাগখানি লুট করতে হয়। একটার পর একটা ডলার গুছিয়ে নিতে হয়, পুরে দিতে হয় প্যান্টির আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক গোপন কুঠুরির মধ্যে। ঠোঁটের কোণে নিলাভ হাসির টুকরো এনে বলতে হয় — ডার্লিং, আর কতক্ষণ নিজেকে এভাবে গুটিয়ে রাখবে? আমি যে একা একা বড্ড বেশি বোর হয়ে যাচ্ছি। 

           এলেন মার্গারিটা। ব্রিটিশ তনয়া। এয়ার হোস্টেস। কোনো অশুভ মুহূর্তে রবার্তোর সাথে তাঁর অন্তরঙ্গ আলাপন। সেই আলাপচারিতা অতি দ্রুত শরীর সম্পর্ক পর্যন্ত পৌঁছে গেল। একে অন্যকে পেয়ে তৃপ্ত হয়েছেন, একথা জোর গলায় বলা যায়। কিন্তু মার্গারিটা জানতেন না যে, এই তৃপ্তি শেষ পর্যন্ত তাঁকে অন্ধকার নরকে ঠেলে দেবে। যা অনুমান করা হয়েছে, তা সত্যি বলে প্রমাণিত হল। মার্গারিটা তখন আরও বেশি করে রবার্তোকে ভালোবাসছেন। রবার্তোকেই জীবন সঙ্গী করবেন এমন একটা শপথ নিয়েছেন। রবার্তোর বাড়ির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে মার্গারিটা অবহিত ছিলেন। এমন ছেলেকে পাত্র হিসাবে পাওয়া তো গর্বের বিষয়। পাড়াপ্রতিবেশীও একথাই বলতে থাকে। 

          এল বিয়ের শুভ মুহূর্তটি। আবার বেজে উঠল বৃন্দবাদন। ল্যাটিন ভাষায় উচ্চারিত হল মহামিলনের মহামন্ত্র। এল প্রতীক্ষিত সোহাগরাত। যার জন্য সকলের মন উদ্বিগ্ন চিত্তে অপেক্ষায় থাকে। যদিও রবার্তো এর আগে দু-দু'বার এমন মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন, কিন্তু এবারেরটা বোধ হয় একেবারে আলাদা। লোকমুখে শুনেছিলেন ব্রিটিশ মেয়েদের মধ্যে এক অজানা আভিজাত্যবোধ লুকিয়ে থাকে। দুষ্টুমির চরম শিখরে উঠতে তাদের তীব্র অনীহা। 

       নিজের পৌরুষের ওপর সীমাহীন আস্থা আছে রবার্তোর। তিনি জানেন যৌবনের ছলাকলায় কীভাবে এক ঘুমন্ত মেয়েকে উদ্দীপ্তা করে তুলতে হয়। মার্গারিটা ভাবতে পারেননি যে, তাঁর জীবনে এত আনন্দঘন মুহূর্ত লুকিয়ে আছে। তিনিও প্রতি ক্ষেত্রে সাড়া দিয়েছেন, সাড়া দিয়েছেন এক অনুভবী মহিলার মতো। তাই তো মনের মনিকোঠার ক্যানভাসে ওই রাতটির স্মৃতি চিরকালের জন্য মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখেছিলো রবার্তো।

 Part 5:-                                                                          https://storymirror.com/read/story/bengali/6l0gyvul/saaiko-prb-paanc/detail


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama