Sayandipa সায়নদীপা

Drama

5.0  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama

ইটস লকড

ইটস লকড

8 mins
2.0K



অপর প্রান্ত থেকে পুনরায় বিজি টোনটা ভেসে আসতেই রাগে ফোনটা ছুঁড়ে দিলো সৌম্যক। সুইচে চাপ পড়েই হোক বা আঘাত সামলাতে না পেরেই হোক চোখ বুজলো ফোনটা। লাফ দিয়ে গিয়ে ফোনটা কুড়িয়ে নিয়ে অন করার চেষ্টা করল সৌম্যক, কিন্তু সব বৃথা। ধুত্তোর… বলে খাটে বসে পড়ল সে। বেশ অনেকদিন ধরেই ফোনটা গণ্ডগোল করছিল, যে কোনোদিন যে দেহ রাখবে সেটা জানাই ছিলো তবুও ওভাবে ছোঁড়াটা উচিৎ হয়নি। এবার যদি না সারে তাহলে সেই বাবার কাছে হাত পাততে হবে। নতুন ফোন কেনার টাকা পাওয়া যাবে কিনা জানা নেই তবে বিশেষ কয়েকটি বাছা বাছা বিশেষণ দিয়ে যে নিজের বেকার ছেলেকে অনন্ত বাবু সম্বর্ধনা দেবেন সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বুকের ভেতরটা কেমন জ্বালা জ্বালা করতে শুরু করেছে সৌম্যকের। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর কোনো ছেলে যদি বেকার থাকে তাহলে গোটা দুনিয়া তাকে বিষ নজরে দেখা শুরু করে, এমনকি নিজের মা বাবাও ছাড়ে না। ফোনটার হৃদযন্ত্রে আরেকবার পাম্প দেওয়ার চেষ্টা করলো সৌম্যক, নাহ কপাটিকা গুলো বোধহয় খুললো না। আগেকার ফোনগুলো ভালো ছিলো--- বাড়িতে বসেই ব্যাটারি খুলে নাড়াচাড়া করার সুবিধা ছিল সেগুলোয়, যেটা ফোনটার পুনরায় জীবিত হওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখত। কিন্তু এখন তো সেসবের বালাই নেই, এখন শুধু গায়ে সূঁচ ফুটিয়ে সেন্সটুকু পরীক্ষা করা যায়; যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাড়া পাওয়া যায়না এখন। তবে জীবনটা এখন আগেকার ফোনগুলোর মতোই রয়ে গেছে, ধুঁকে ধুঁকে হলেও ব্যাটারিটা ঠিক চালু থাকে। সৌম্যকের খুব ইচ্ছে হল ওর জীবনের ব্যাটারিটাও যদি এই ফোনটার মত নিশ্চুপ হয়ে তাহলে বেশ হত। আচ্ছা তাদের রিলেশনের শুরুর দিকে কিসব যেন বলতো হৃতি --- তোমার সুদিনে পাশে না থাকতে পারি, দুর্দিনে পাশে থাকবো ইত্যাদি ইত্যাদি…

হুহ কলেজ জীবনে কতটুকুই বা দুর্দিন এসেছে সৌম্যকের জীবনে! আসল দুর্দিন তো এসেছে এখন। প্রত্যেকটা দিনই এখন দুর্দিন। রোজ চারবেলা খাবার নিয়ে বসলেও মনে হয় বাবার দয়ায় বেঁচে আছে। উফফ… অসহ্য!


  

আচ্ছা হৃতি কবে থেকে যেন সৌম্যকের ফোনটা রিসিভ করছে না…! যবে থেকে ওই জিতেন্দ্র আলুওয়ালিয়া চাকরিটা পেয়েছে তবে থেকে তাই নাহ! হুঁ… তাই হবে। জানতো, সৌম্যক জানতো এমনটাই হতে চলেছে একদিন। ওসব প্রতিশ্রুতি সব মিথ্যা, সব আসলে টাকার খেলা। ওই জিতেন্দ্রর যে হৃতির প্রতি একটা ট্যান আছে তা বেশ বুঝতে পারতো সৌম্যক, হৃতিও কি বুঝতে পারতো না নাকি! নিশ্চয় পারত। তাও ছেলেটার সাথে হেসে হেসে এতো কথা বলার কি ছিল। জিতেন্দ্র তো একবার বলেও ছিল, “হৃতি তুই সিঙ্গেল হলে তোর সাথে প্রেম করতাম।” নন-বেঙ্গলি হয়ে এতো সুন্দর বাংলা বলে, বাংলায় কবিতা লেখে… আহা কি আদিখ্যেতা! তা সৌম্যকও ভালো পাঞ্জাবী বলতে পারে তা নিয়ে হৃতি আদিখ্যেতা করেনা কেন! কিচ্ছু নয় সব লোক দেখানো। উফফ সব দোষ সৌম্যকের, নানা… ওর ভাগ্যের। ও যে কেন এমন ট্যালেন্ট বিহীন, লেলু কেবলু হয়ে জন্মাতে গেল কে জানে! পড়াশোনাতেও কোনোদিনও তাক লাগাতে পারেনি কাউকে, এদিকে ওই জিতেন্দ্রর মত কোনো এক্সট্রা ট্যালেন্টও নেই। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে ওদের প্রেম যখন শুরু হয় তখন নিন্দুকদের মন্তব্যটাই ঠিক ছিল - বাঁদরের গলায় মুক্তোর মালা। হৃতি পড়াশোনায় কত ভালো, কত সুন্দর আবৃত্তি করে, নিজে আবার কবিতাও লেখে… এমন একটা মেয়ে কি করে যে সৌম্যকের মত ছেলের প্রেমে পড়েছিল কে জানে! সৌম্যক প্রায়ই ভাবতো এতো সুখ ওর কপালে সইবে তো; আর ঠিক তাই হল। কিন্তু নাহ… সৌম্যক হতে পারে নেহাতই সাধারণ একটা ছেলে, হতে পারে পড়াশুনোয় ততটা ভালো নয়, হতে পারে ওর কোনো ট্যালেন্ট নেই… তা বলে কারুর অধিকার নেই ওর ইমোশন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার। হৃতি ওর থেকে মুক্তি চায় তাই না? ওকে মুক্তি দেবে সৌম্যক কিন্তু তা বলে এভাবে চলতে পারেনা। হৃতিকে সরাসরি ওর সামনে এসে বলতে হবে যে সে মুক্তি চায়। এইভাবে সৌম্যকে ঝুলিয়ে রাখতে সে পারেনা। কিছুতেই পারেনা। ঘড়ি দেখলো সৌম্যক, দু’টা বাজতে সাত মিনিট বাকি। হৃতির স্কুল ছুটি হয় ঠিক চারটের সময়, তারমানে সাড়ে তিনটে নাগাদ বাস ধরলে চারটার দিকে হৃতির স্কুলে পৌঁছাতে পারবে সৌম্যক। সৌম্যকের ফোন না পৌঁছাতে পারলে কি হবে আজ সৌম্যক সশরীরে পৌঁছে যাবে হৃতির কাছে, সরাসরি জানতে চাইবে হৃতি কি চায়। কিছু একটা হেস্তনেস্ত আজ করে ফেলতেই হবে। আর পারছেনা সৌম্যক, একে তো এই বেকারত্বের জ্বালা তার ওপর যে মানুষটাকে এই সময় সবচেয়ে বেশি দরকার সেই মানুষটাই এখন…


  

বাসটা জ্যামে আটকে বড্ড দেরি করে ফেললো, এখন চারটা দশ। কে জানে হৃতি স্কুল থেকে বেরিয়ে গিয়েছে কিনা! যদি তাই হয় তাহলে তো সৌম্যকের এখানে আসাই বৃথা। নানা… বৃথা নয়, স্কুল ফেরত ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের ভীড় ঠেলে একটু এগোতেই হৃতিকে দেখতে পেলো সৌম্যক, শুধু হৃতিই নয় সঙ্গে ওই জিতেন্দ্রও আছে। ভগবানেরও বলিহারি, ওই জিতেন্দ্র চাকরি পেয়েছে তো পেয়েছে ওর অফিসটাও নাকি হৃতির স্কুলের কাছাকাছি। কি জ্বালা! দেখে তো মনে হচ্ছে রোজই দেখা করে দুজন, তারমানে জল অনেকদূর গড়িয়েছে! সৌম্যক দেখতে পাচ্ছে হৃতি কিছু একটা বলছে জিতেন্দ্রকে… জিতেন্দ্র হৃতির কাঁধে হাত রাখলো দিয়ে কিছু বলছে… হৃতি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে হাসলো! হে ভগবান আর কত কি দেখতে হবে! আর নিজেকে সামলাতে পারলো না সৌম্যক, একরাশ রাগ, অপমান এসে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেললো ওকে। হৃতির কাছে ওর তার মানে কোনো গুরুত্বই ছিলো না কোনোদিন, একটা মানুষ হিসেবেও বোধহয় ওকে ভাবেনি কখনও। তাই তো এতো এতো সহজে ওকে ভুলে যেতে পারল নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যেতেই…

বুকের ভেতর জ্বলে ওঠা অপমানের আগুনটাকে ছড়িয়ে দিতেই হয়তো হাওয়ায় হাতটা ছুঁড়লো সৌম্যক। কিন্তু নাহ হাওয়াতে তো নয়, কোথাও গিয়ে যেন লাগলো ওর হাতের তালুটা। মুখ তুলে তাকালো সৌম্যক আর তাকাতেই গায়ের রক্ত জ্বল হয়ে গেল ওর। দেখলো ওর হাওয়ায় ছোঁড়া হাতের মুঠি গিয়ে বসেছে এক মহিলার বুকে। মহিলাও হতভম্ব দৃষ্টি নিয়ে মুখ তুলে তাকালেন ওর দিকে। কয়েক সেকেন্ড মাত্র… তারপরেই ওর গাল লক্ষ্য করে ধেয়ে এলো একটা চড়। আশেপাশের মানুষজন এসে ঘিরে ধরল ওকে, সবার মুখ উপচে খিস্তির প্লাবন আসতে লাগলো। এসব দেখে আরও ঘাবড়ে গেল সৌম্যক, তাও কোনোক্রমে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, “বিশ্বাস করুন ওটা এক্সিডেন্টালি ঘটে গেছে আমি এমনিই হাতটা…”

“এক্সিডেন্টালি তোর হাতটা গিয়ে এক্কেবারে ওনার বুকেই গিয়ে পড়ল?” চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলল একটা লোক। আরেকটা লোক পাশ থেকে বলে উঠল, “তোর হাতটা তো হেব্বি চালু রে, বেশ পজিশন দেখে এক্সিডেন্ট করতে জানে।”

“এসব লোককে ছাড়া উচিৎ নয়, এক্ষুণি থানায় নিয়ে চলুন, পারভার্ট কোথাকার! বাইরে থাকলে এরাই দুদিন পর রেপ করে বেড়াবে।” ভিড়ের মধ্যে থেকে মন্তব্যটা ছুঁড়ে দিলেন জনৈক মহিলা। প্রথম লোকটা বলে উঠল, “আরে ম্যাডাম পুলিশ কিস্যু করবেনা এদের। এদের জন্য দরকার পাবলিকের ক্যালানি…” কথাগুলো বলতে বলতেই লোকটা একটা ঘুঁষি ছুঁড়লো সৌম্যকের চোয়াল লক্ষ্য করে। টার্গেট মিস হলো না, সৌম্যকের চোয়ালটা ঝনঝনিয়ে উঠল। মুখের ভেতরে হঠাৎ একটা নোনতা স্বাদ এসে মিশে গেল। যন্ত্রণাকে অগ্রাহ্য করে আবার প্রতিবাদের চেষ্টা করল সৌম্যক কিন্তু ততক্ষণে বেশ কয়েকটা এলোপাথাড়ি কিল, ঘুঁষি এসে পড়তে শুরু করেছে ওর ওপর। সৌম্যকের শরীরটা বরাবরের পাতলা গোছের তাই এই সম্মিলিত আক্রমণের প্রতিরোধ করতে গিয়েও বিশেষ একটা সফল হলো না সে। বরং মারের চোটে সামনের সব কিছু যেন ঘোলাটে হয়ে এলো। কিন্তু এর মাঝে আচমকাই ঢালের মত কেউ যেন এসে আড়াল করে দিলো ওকে। তারপর সৌম্যক শুনতে পেলো সেই চির পরিচিত গলা, “আপনারা কোন অধিকারে ওকে এভাবে মারছেন?”

“আরে ম্যাডাম আপনি মাঝখান থেকে কথা বলবেন না, আপনি জানেন কি করেছে মালটা!” বলে উঠলো সৌম্যকের আক্রমণকারীদের কেউ একজন।

“জানি, আপনারা যেটুকু জানেন আমিও ততটুকু জানি আর তাই বলছি আপনাদের কোনো অধিকার নেই ওকে এভাবে মারার। দরকারে থানায় যান… যদিও আমি জানি ও এই ধরণের কিছু করার মানুষ নয়। যা ঘটেছে তা নিছক এক্সিডেন্ট।”

হৃতির কথায় উত্তেজিত জনতার মধ্যে একটা জোর গুঞ্জন উঠল এবং তাদের মধ্যে থেকে কেউ জিজ্ঞেস করে উঠল, “অনেক জানেন দেখছি লোকটার সম্পর্কে। তা কে হন আপনি?”

“আমি…” নাহ হৃতির জবাবটা আর শোনা হলনা সৌম্যকের, ঘোলাটে হয়ে আসা দৃষ্টিটা এবার আচমকাই কালো পর্দার মত নেমে এলো চোখের সামনে…


  

যখন জ্ঞান ফিরল সৌম্যক দেখলো একটা ছোট্ট ঘরের খাটে শুয়ে আছে ও, দেখে বুঝতে পারল কোনো ডিস্পেন্সারি সংলগ্ন ঘর। ওর মাথার কাছে চিন্তাগ্রস্ত মুখে বসে হৃতি। সৌম্যক কিছু বলার চেষ্টা করতেই হৃতি উত্তেজনা ভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠল, “ব্যাথা করছে? ডাক্তার বাবুকে ডাকবো?”


সৌম্যক ঘাড় নেড়ে না বলতে গেলো কিন্তু টের পেলো ব্যাথা ওর সত্যিই করছে। তাই কোনো রকমে বলল, “বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে…”


“জানি। তোর ওপর সেই বিশ্বাস আমার আছে। ইন ফ্যাক্ট ওই মহিলারও পরে মনে হয়েছে যে তুই ইন্টেনশনালি করিসনি ব্যাপারটা।”


“উফফ হোয়াট আ রিলিফ। তা পুলিশে দেবেনা তো আর?”


“আজ্ঞে না।”


“হৃতি…”


“হুঁ?”


“থ্যাংক্স…”


“ফর হোয়াট?”


“এখনও যে তুই আমাকে নিয়ে এতটা কনসার্ন সেই জন্য।”


“এখনও বলতে? কি বলতে চাইছিস তুই?”


“আমি সব জানি রে।”


“সব জানিস মানে?” এক রাশ বিস্ময় নিয়ে জানতে চাইলো হৃতি।


“আমি জানি আমি একটা বেকার ছেলে, কোনো কম্মের নই…”


“কি বলতে চাইছিস স্পষ্ট করে বল।” দৃঢ় গলায় বলে উঠল হৃতি।


“আমি জানি যে তুই আর জিতেন্দ্র… তুই… তুই ওকে ভালোবাসিস তাই না?”


“হোয়াট?” উত্তেজিত হয়ে উঠল হৃতি, “মাথায় চোট পেয়েছিস নাকি যে এইসব আলফাল বকছিস!”


“হৃতি…”


“কি হৃতি? দিনের পর দিন ফোন করতাম ধরতিস না, ধরলেও মেজাজ দেখাতিস। তোর ফ্রাস্ট্রেশন সব আমার ওপর ঝেড়ে দিতিস। তারপর তো ফোন ধরাই ছেড়ে দিলি। শুধু চ্যাট, তাতেও তোর দায়সারা উত্তর। আমি ভাবতাম খুব পড়াশুনো করছিস বোধহয়। সব মেনে নিয়েছিলাম কিন্তু...” কথাটা আর শেষ হলো না, গলাটা ধরে এলো হৃতির।


সৌম্যক বলল, “সে নাহয় আমি করতাম মানছি কিন্তু বিগত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তুই যে আর কোনোরকম যোগাযোগ করিসনি আমার সাথে! ফোন করলেও বিজি পাচ্ছি, নয়তো ধরছিস না। পরে রিং ব্যাকও করিসনি।”


“আর তাই তুই ধরে নিলি আমি জীতেন্দ্রর সাথে! উফফ…

তুই জানিস আমার বাবা রবিবার রাতে আচমকা বুকের ব্যাথায় কাহিল হয়ে যান, নার্সিংহোমে এডমিট করতে হয়েছিল। এই কদিন আমার যা চলেছে… কাল বাবাকে রিলিজ করতে আজই প্রথম স্কুল এলাম এই সপ্তাহে।”


“তুই আমাকে কিছু জানাসনি কেন?”


“মনে করে দেখ রবিবার রাতে আমি নার্সিংহোম থেকে ফোন করেছিলাম, তুই ফোন কেটে দিয়ে মেসেজ করেছিলি ‘ঘুম পাচ্ছে’।


“আয়াম সরি বাট তুই একটা মেসেজ করতে পারতিস তো!”


“বিশ্বাস কর ইচ্ছে হয়নি আর, সিম্পলি ইচ্ছে হয়নি। তোর এই অবহেলা সহ্য করতে করতে…

আজ তোকে কল ব্যাক করছিলাম কিন্তু ফোন সুইচড অফ বললো।”


“হুমম ফোনটা গেছে। কিন্তু আজ জিতেন্দ্র তোর স্কুলের সামনে কি করছিলো?”


“আমিই ওকে ডেকেছিলাম, ওর অফিস তো কাছেই। ওকে আমি বলেছিলাম তোর বাড়ি গিয়ে একবার তোর সাথে দেখা করে আসতে। এক সপ্তাহ যোগাযোগ হয়নি আজ আবার ফোনটাও… খুব চিন্তা হচ্ছিল। কাকু কাকিমার ভয়ে আমি তো যেতে পারিনা খোঁজ নিতে তাই ওকে বলেছিলাম।”


“তুই তখন তারমানে আমার খোঁজ নিতে বলছিলি ওকে আর আমি… উফফ আমি কি ইডিয়ট।” নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য হতাশা ঝরে পড়ল সৌম্যকের গলায়, হৃতি… হৃতি তুই এখনও আমি ভালোবাসিস সেই আগের মতোই? তুই আমাকে ছেড়ে যাবিনা তো?”


“কোথায় যাবো ছেড়ে? আমার হৃদয়টাকে তো তালা দিয়ে রেখে দিয়েছিস নিজের কাছে, কোথাও কিভাবে যেতে পারি আমি!”


“আর আমি যদি কোনোদিনও চাকরি না পাই তখন কি তালাটা খুলে দিতে বলবি?”


“কেন? তা বলবো কেন? তখন আমাদের ভালোবাসাটাকে পার্মানেন্টলি লক করার দায়িত্বটা আমাকে একাকেই নিতে হবে, কাকুর কাছে গিয়ে তোর হাত চাইবো বুঝলি?”


“হাঃ হাঃ পারবি?”


“কেন পারবো না? ছেলেরা পারলে মেয়েরা পারবে না কেন?”


“বাহ্ বা তাই নাকি?”


“হুমম স্যার, কিন্তু আপনি এভাবে আমাকে সন্দেহ করতে থাকলে…”


“সরি বেবি। প্লিজ এবারের মত ক্ষমা করে দে, আর কক্ষনো হবে না এমন। তুই শুধু কথা দে আমাকে ছেড়ে চলে যাবি না…”


হৃতি কোনো জবাব দেওয়ার আগেই বাইরের ঘর থেকে ভেসে এলো কতকগুলো লাইন, 


“I want, I want—

but I can't open it:

there's no key.

I can't wear it

on my sleeve,

or tell you from

the bottom of it

how I feel. Here,

it's all yours, now—

but you'll have

to take me,

too.”



“কে! কে কবিতা বলছে এখানে?”


“জিতেন্দ্র।”


“কি! সেও এখানে আছে নাকি?”


“সেইই তো তোকে তুলে এনেছে এখানে, নয়তো যতই পেংলু হ না কেন আমি কি পারতাম তোকে তুলে আনতে!”


“সে ঠিক আছে কিন্তু ও কি আমাদের কথা শুনছে এতোক্ষণ ধরে?”


“জানিনা। হতে পারে।” 


“তাহলে ও আজ আরেকটা শব্দও শুনুক…” ফিসফিস করে কথাগুলো বলেই হৃতিকে টেনে ধরল সৌম্যক তারপর ওর নরম ঠোঁটে ডুবিয়ে দিল নিজের ঠোঁট…



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama