মা, আমি আর কার্টুন
মা, আমি আর কার্টুন
অফিস থেকে ফিরে এসে প্রত্যহ আমি আর মা টিভি দেখার জন্য রণক্ষেত্রে অবতারিত হই। মাকড়সার জালের মতো একে ওপরকে কথার জালে ফাঁসিয়ে পরাস্ত করার চেষ্টা করি। রোজ রোজ মা আমার থেকে জিতে যায়। কিন্তু আজকে না। আজকে আমি আমার গেম প্ল্যানটা একটু চেঞ্জ করেছি। আজকে তো ডেফিনেটলি আমিই বিজয়ী হবো আর পুরস্কার হিসাবে পাবো টিভির রিমোট। হিহিহিহি!
একটু পরে টিভির ঘরে.......
মা : কার্টুন, কার্টুন, আর কার্টুন।
প্রতিদিন শুধু কার্টুন। বিরক্তিকর!
আমি : উফফ!!! মা তুমি কেন বোঝোনা?
কার্টুনে যা রসদ আছে, তার ছিটেফোঁটাও নেই তোমার ওই পেচকা টিভি সিরিয়ালে।
মা : এই এই টিভি সিরিয়ালগুলোকে একদম পেচকা বলবি না বলে দিলাম। এখন তুই ওঠ আমি টিভি দেখবো।
আমি : আরে মা... একদিন তোমার ওই টিভি সিরিয়ালগুলোকে ছেড়ে আমার সাথে বসে কার্টুনও তো দেখতে পারো। ভাবো... গরম গরম চায়ের পেয়ালাতে চুমুক দিতে দিতে মা- মেয়েতে মিলে জমিয়ে গল্প করতে করতে কার্টুন দেখবো। কি বলো মা...?
মা : হুম... অফারটা মন্দ নয়। তুই যদি চা আর সঙ্গে গরম গরম আলুর পকোড়া বানিয়ে আনিস তাহলে আজকে আমি তোর সাথে বসে কার্টুন দেখবো। বল তোর চলবে?
আমি : আরে চলবে কি...? আমার তো পুরো জমবে।
মা : তাহলে যা তাড়াতাড়ি।
একটু পরেই আমি গর্মা গরম চা আর সঙ্গে আলুর পকোড়া নিয়ে হাজির।
আমি : (পকোড়া খেতে খেতে) তো মা বলো আজকে তোমার আমার সাথে বসে কার্টুন দেখতে কেমন লাগছে? বলো বলো?
মা : কার্টুন তো তুই দেখছিস। আমি তো এখানে বসে চা আর পকোড়া খাচ্ছি।
আমি : মানে!
মা : আরে রোজ এই সময় তোর সাথে আমার ঝগড়া হয় কার্টুন আর সিরিয়ালের জন্য। তারপর ছাগলের মতন মা মা করে ডেকে বলিস মা আমার খিদে পেয়েছে... কিছু খেতে দাও। তখন আমাকে বাধ্য হয়ে তোর জন্য স্ন্যাকস বানাতে হয়। তাই আজকে তোর অফারটাকে আমি লুফে নিলাম।
আমি : মানে?
মা : মানে তোর তো ছয় মাসে চাল থেকে ভাত রান্না হয়। তাই তুই যতক্ষণে চা আর পকোড়া বানালি ততক্ষনে আমার সাড়ে তিনটে সিরিয়াল দেখা হয়েগেলো। আর বাকিগুলোর তুই চলে গেলে শান্তি করে শান্তির (আমাদের কাজের মাসি) সাথে বসে কাল রিপিট টেলিকাস্ট দেখবো।
আমি : তুমি আমার সঙ্গে চিটিং করলে...?
মা : চিটিং নয় সোনা মা। ইটস কলড মমস স্মার্টনেস। এবার তুই মন ভরে তোর কার্টুন দেখ। বাই দা ওয়ে থাঙ্কস ফর দা টি এন্ড পকোড়া।