মাতৃভাষার অবহেলা
মাতৃভাষার অবহেলা
শিপ্রার পাশের বাড়ির মেঘা নামক মেয়েটি ইংলিশ মিডিয়ামে পড়তো বলে তার মায়ের খুব দর্প। কথায় কোথায় তার মা নিজের মেয়ের প্রশংসা করতো। মেয়েটিও কম নয়, সেও সবসময় নিজেকে জাহির করে বেড়াতো। শিপ্রা যেহেতু বেঙ্গলী মিডিয়ামের স্টুডেন্ট ছিল তাই তার মাঝে মধ্যে একটু খারাপ লাগতো ওনাদের কথা শুনে।
পাড়ায় দূর্গা পুজোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিপ্রা প্রত্যেক বছরই অংশগ্রহণ করে।
শিপ্রা যখন দশম শ্রেণীতে পড়ে সেই বছর পাড়ার দূর্গা পুজোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সে এবং পাশের বাড়ির মেঘা দুজনেই অংশগ্রহণ করেছিল। ভাগ্যক্রমে শিপ্রা এবং মেঘা দুজনেই সংগীত পরিবেশন করেছিল। শিপ্রা রবি ঠাকুরের মায়াবনো বিহারিণী গানটি গেয়েছিলো আর মেয়েটি একটি হিন্দি গান গেয়েছিল। অবশ্যই মেয়েটির গানটায় করতালির আওয়াজ বেশি পাওয়া গেছিলো। সে যাই হোক।
অনুষ্ঠান শেষে রিতা কাকিমা মেঘার মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ওই মেয়েটি অনুষ্ঠানে কেন বাংলা গান গায়নি।
মেঘার মা একটু বিরক্তিসহ প্রতিউত্তরে বলেছিলেন, ওনার মেয়ের বাংলা ভাষাটা একদমই ভালো লাগেনা। উনি আরও বলেছিলেন যে এখন সবকিছুই তো ইংলিশে করতে হয়, তাহলে বাংলা ভাষা শিখে হবে কি? তাই উনি কখনো তার মেয়েকে বাংলা ভাষা শেখার জন্য বা বাংলার কালচার সম্পর্কে জানার জন্য বলেননি।
এসব শোনার পর রিতা কাকিমা শুধু একটা কথাই বলেছিলেন, "নিজের মাতৃভাষাকে অবহেলা করে কেউ কখনো বড়ো হতে পারে না।"