শ্রোতার অভাব
শ্রোতার অভাব
কিছু মানুষ হয় যারা নিজের আবেগ অনুভূতি এসব কাউকে বলে না। বলতে চায় না। কারণ তারা জানে সামনের মানুষটার সেই অনুভূতি বোঝার ক্ষমতাই নেই। প্রতিটা মানুষের আবেগ অনুভূতি সৃষ্টি হয় নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভর করে। প্রতিটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা, এটাই স্বাভাবিক। ফলে একই ঘটনা ভিন্ন মানুষের মনে ভিন্ন অনুভূতির সঞ্চার ঘটায়। ধরো, তুমি ঘরে বসে থেকে থেকে বিরক্তি ঘিরে ধরেছে তোমায়। তুমি বাইরে বেরোতে চাও, কাজ করতে চাও। কিন্তু কোন বিশেষ কারণে তোমাকে ঘরবন্দীই থাকতে হচ্ছে। তুমি এই কথাটা তোমার কোন এক বন্ধুকে বললে, যে বন্ধুটা রোজ অফিসে যায়, একটি ব্যস্ত জীবন কাটায়। তুমি কি ভাবছো সে তোমার অনুভূতিটা বুঝতে পারবে? কখনোই না। সে বলবে, “আরে তুই কি সুন্দর ঘরে বসে আছিস! কোন পরিশ্রম নেই, কোন টেনশন নেই। আরামসে খা, ঘুমা, ফোন চালা। আমাকে দেখ সারাদিন নিশ্বাস ফেলার সময় নেই।” না, সে তোমার অনুভূতি বুঝলো না। কারণ দুজনের পরিস্থিতি পরিবেশ আলাদা। এভাবে ধীরে ধীরে মানুষ নিজের অনুভূতির কথা অপরকে বলা ছেড়ে দেয়। সে তখন নিজের উপর দায় নিয়ে নেয়। সে মনে করে যে তার নিজের ক্ষমতা নেই তার অনুভূতিকে ব্যক্ত করার। সত্যি, কিছু অনুভূতি হয় যেগুলোকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না হয়তো। প্রতিটা মানুষের বুকে জমে অনেক কথা, অনেক কষ্ট, অনেক ব্যর্থতা, অনেক না পাওয়া। তাই সময় পেলে সময় নিয়ে কারো কথা শোনো। তার অনুভূতিকে তার আবেগকে ঠুনকো করার চেষ্টা করো না। তাকে প্রমাণও করতে যেও না যে তার অনুভূতি মূল্যহীন। নিজের অনুভূতির কদর না পেলে মানুষ কষ্ট পায়। তাই শুধু শোনো, সামনের মানুষটা হালকা হবে। তার অনুভূতিকে অনুভব করতে হলে তার পরিস্থিতিতে নিজেকে কল্পনা করে দেখো। সেই অনুভূতি টের পাবে। প্রতিটা মানুষ অনেক কথা বলতে চায়। বলার লোক থাকলেও বোঝার লোক নেই। তোমাকে বুঝতেও হবে না, তুমি শোনো। তোমার কারনে কারোর বুকের বোঝা কিছুটা হালকা হলে তোমার কি ভালো লাগবে না?
