সাইনি রায়

Abstract Others

4  

সাইনি রায়

Abstract Others

স্বর্গের সিরিয়াল

স্বর্গের সিরিয়াল

16 mins
480



 

নরকে ছাই রোজই পার্টি আর স্বর্গে দেখো ? যদিও স্বর্গ চিরবসন্তের জায়্গা । এখানে সবসময় বইছে বসন্তের দখিনা বাতাস , আবহাওয়া অতি উত্তম । এখানকার সবাই অনিন্দ্যসুন্দর । বিনাপয়সায় ইন্দ্রের সভায় রম্ভা - উর্বশী - মেনকার শাস্ত্রীয় নৃত্য দর্শন , মিষ্ট ভাষণ , সকলের ব্যবহারে শালীনতা । এখানকার পোশাক - পরিচ্ছদও আভিজাত্য বহন করে । চোখ বন্ধ করে হাত বাড়িয়ে মনের মতো খানাপিনা চাইলেই তৎক্ষণাৎ হাজির । সদা সুখ বিরাজ করে এখানে।কিন্তু এসব সত্ত্বেও মর্ত্যের সিরিয়ালখোর মানুষদের কি সিরিয়াল ছাড়া স্বর্গ রোচে ? উঁহহু , এক্কেবারে রোচেনা । তাইতো মর্ত্য থেকে স্বর্গে যাওয়া পুণ্যার্থীরা আজ সিরিয়াল দর্শন হেতু স্বর্গে ধর্নায় বসেছে । মৃত্যুর পর তাদের শরীর তাদের সঙ্গ ত্যাগ করলেও আজও তাদের আত্মা সিরিয়াল ত্যাগ করতে পারেনি । তাই মৃত্যুর পরও তারা ' সিরিয়াল ওয়াচার ' হতে চায়।

অন্যদিকে নরকে যতই তেলের কড়ায় পাপীকে ভাজা ভাজা করা হোক বা চাবুকে পিঠ ফালা ফালা করে ফেলা হোক না কেন , এখানে চব্বিশঘন্টার জন্য সিরিয়াল দেখা এক্কেবারে ফ্রি । আর এতেই বেজায় চটেছে স্বর্গের বাসিন্দারা । একে তো সারাজীবন মর্ত্যে নানা দুঃখ - কষ্ট সহ্য করে , লোকের গালমন্দ খেয়ে , ঘষ্টে - ঘষ্টে অতি কষ্টে পূণ্য সঞ্চয় করে স্বর্গে আসা আর এখানে এসে একটু শান্তি করে দুদণ্ড বসে যে সিরিয়াল দেখবে তারা , তার কোনও ব্যবস্থা নেই ? আর ওদিকে সারাজীবন লোককে ঠকিয়ে , লোকের পিঠে ছুরি বসিয়ে নরকে আসা পাপীগুলো সিরিয়াল দেখছে আর মজা মারছে ! এ কেমন অবিচার হল শুনি ? ভগবানের দরবারেও কি কোন বিচার নেই ? না এ হতে পারেনা । তাই স্বর্গের বাসিন্দারা আজ একজোট হয়ে আন্দোলনের পথে। আন্দোলনের নাম ' হ্যাশট্যাগ সিরিয়াসলি সিরিয়াল ' ।

'' যত্ত দোষ সব তোমার " ধর্মরাজ যম যার উদ্দেশ্যে কথাটা বললেন , তিনি আপাতত মুখটা কাঁচুমাঁচু করে মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন আর বিড়বিড় করে বলছেন , " হ্যাঁ , সবসময় যমালায়ে যা ভুলত্রুটি হয় তা চাপানোর জন্য এই ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো তো আছেই । " ইনি হলেন চিত্রগুপ্ত ।

যমরাজ আরো বলে চললেন , " তাই বলি কাজে আজকাল এত ফাঁকিবাজি কেন ? খানিক থেমে আরো সংযোজন করলেন , " আজকাল আমার আজ্ঞা - টাজ্ঞার তোয়াক্কা তো করো না দেখছি । একবার জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করলে না যে ওই মর্ত্যের কি যেন বলে সিরিয়াল না কি ওসব দেখতে দেওয়া যাবে কি না ?

চিত্রগুপ্ত কি একটা বলতে যাচ্ছিলেন । যমরাজ তাঁকে থামিয়ে কড়া গলায় ধমক দিয়ে বলে উঠলেন , " আর যাও বা নরকের পাপীদের জন্য সে ব্যবস্থা করলে , তা বলে তুমি নিজে ওদের দলে ভিড়ে যাবে ? কাজকর্ম ফেলে ওদের সাথে বসে সিরিয়াল দেখ ? ছিঃছিঃ । আবার তার উপর কি যেন বলে , দুপুরবেলায় রি .............রি .................."

" রিপিট টেলিকাস্ট " মাথা চুলকে চিত্রগুপ্ত যমরাজকে ধরিয়ে দিলেন । যমরাজ কটমট করে চিত্রগুপ্তের দিকে তাকিয়ে ।

চিত্রগুপ্ত বোকাবোকা হাসি হেসে বললেন , " না মানে ইয়ে , কাজের চাপে মাঝে মধ্যে যখন দেখা হয়ে ওঠেনা তখন ওই আর কি দুপুরে ভাতঘুমের বদলে ভাতসিরিয়াল "

" তবে আর কি আমায় উদ্ধার করে দিয়েছো । " যমরাজ চোখ লাল করে চিলচিৎকার করে বলে উঠলেন ।

ঠিক এমন সময় দেবর্ষি নারদ ' নারায়ণ নারায়ণ ' মন্ত্রোচ্চারণে যমরাজের সামনে আবির্ভুত হলেন । সবাই দেবর্ষিকে স্বাগত জানালেন । " কি যমালায়ে এত বিশৃঙ্খলা কেন ? যমরাজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করলেন দেবর্ষি নারদ ।

চিত্রগুপ্ত মনে মনে বললেন , " এলেন আরেকজন আগুনে ঘি ঢালতে ।''

যমরাজ সবকিছু দেবর্ষিকে সবিস্তারে বর্ণনা করলেন । দেবর্ষিও খানিক গালে হাত দিয়ে কি যেন ভাবলেন । তারপর যমরাজকে বললেন , "হুম , সবই তো বুঝলাম । এক কাজ করুন না কেন ? আমি বলি কি , সব দেবতাদের নিয়ে একটা বৈঠকের আয়োজন করুন । তারপর দেখবেন সবাই মিলে আলোচনা করে এই সমস্যার কিছু একটা পথ নিশ্চই বের হবে । "

যমরাজ স্বস্তি পেলেন । তারপর একটা নির্দিষ্ট দিনে বৈঠকে উপস্থিত হলেন স্বর্গের সমস্ত দেব - দেবীগণ । বিষয় - স্বর্গের সিরিয়াল । আপাতত প্রাথমিক তদন্তভার গ্রহণ করতে হবে নারদমুনিকে । এরজন্য তিনি সময় পাবেন একসপ্তাহ । এই একসপ্তাহ তিনি টানা মর্ত্যের নানারকম সিরিয়াল এবং তার রিপিট টেলিকাস্টও দেখবেন । তারপর একসপ্তাহ পরের বৈঠকে তিনি এই সিরিয়াল সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্য পেশ করবেন ।

একসপ্তাহ পর যথারীতি কথামতো আবার সমস্ত দেব - দেবীদের নিয়ে স্বর্গে বৈঠক বসলো । সবাই উপস্থিত । কিন্তু ব্যাপার কি ? যার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই বৈঠকের আয়োজন তিনি কই ? সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ , কারণ স্বয়ং দেবর্ষি নারদ অনুপস্থিত । সময় পার হয়ে যায় নারদমুনির অথচ দেখা নেই । চিত্রগুপ্ত তো মনে মনে হাসছেন । কেউ কেউ বিরক্তিবোধ করছেন আর নারদমুনির এহেন কান্ডজ্ঞানহীনতা নিয়ে সংশয় প্রকাশও করছেন । ঠিক এমন সময় উদ্ভ্রান্তের মতো বৈঠকে উপস্থিত হলেন দেবর্ষি নারদ । চুলগুলো উস্কোখুস্কো । চেহারা দেখে মনে হচ্ছে বেশ কিছুদিন খেতে - ঘুমোতে পারেননি । তাঁর ঢেঁকি কোথায় তিনিই জানেননা । এক্কেবারে পাগল পাগল অবস্থা । সবাই এসবের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি কারোর প্রশ্নের তোয়াক্কা না করে সোজা গিয়ে পড়লেন অশ্বিনী ভ্রাতৃদ্বয়ের পায়ে। ' বাঁচান ' বলে সটান ভিরমি খেলেন । সবাই শশব্যস্ত হয়ে পড়লেন । বৈঠক গেল মুলতুবি হয়ে । টানা তিনদিন অশ্বিনী ভ্রাতৃদ্বয়ের চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হয়ে যখন পুনরায় বৈঠকের ডাক পড়লো , তখন মুখ খুললেন দেবর্ষি নারদ । সবাই ওনার কথা শোনার জন্য উদগ্রীব ।

" বন্ধ করুন এসব বন্ধ করুন , কি এসব ? " বলে প্রথমে খানিক চিৎকার করে পরে বিড়বিড় করে কিসব যেন বললেন । তারপর সবার সামনেই তুলে ধরলেন সিরিয়াল সম্বন্ধীয় যাবতীয় নথি ।

" ওরে বাবারে এসব গাঁজাখুরি কারা দেখে আর কারা বানায় ? খায় না মাথায় মাখে এসব ? সংস্কৃতিকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য মোক্ষম বিষ " পরে দেবাদিদেব মহাদেবের দিকে তাকিয়ে বললেন , " অমৃত মন্থনের সময় যে বিষ উঠেছিল মহাদেব যা আপনি কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন এ তার থেকেও বিষাক্ত । "

" অ্যাঁ বলেন কি ? " ধর্মরাজ যম হতবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন ।

" হ্যাঁ ধর্মরাজ , তবে আর বলছি কি , এসব বন্ধ না করলে অচিরেই স্বর্গের পরিবেশ কলুষিত করবে এই বস্তু । " তারপর একটু থেমে পুনরায় বলতে শুরু করলেন , " আমার একটা প্রস্তাব আছে , যদি অনুমতি দেন তো বলি । "

সব দেব - দেবীগণ সমস্বরে অনুমতি দিলেন ।

দেবর্ষি নারদ বলতে শুরু করলেন , " এবার থেকে নতুন নিয়ম লাগু করা হোক স্বর্গে । যে বা যারা সিরিয়াল দেখবে , তার জন্য স্বর্গের দরজা বরাবরের জন্য বন্ধ । সে পাপী বলে বিবেচ্য হবে । তাই তার জায়গা নরকে হবে। "

" তাতে ভারী বয়েই গেল । " আগ বাড়িয়ে সবার মধ্যিখান থেকে চিত্রগুপ্ত বলে উঠলেন ।

যমরাজ রক্তচক্ষু বের করে চিত্রগুপ্তের দিকে একবার তাকালেন ।

চিত্রগুপ্ত রীতিমতো যমরাজকে পাত্তা না দিয়ে আবার বলতে শুরু করলেন , " সবাই নরকে গিয়ে সিরিয়াল দেখার জন্য মুখিয়ে আছে । দেবর্ষি , আপনি তো এমনভাবে বলছেন যেন মর্ত্যের মানুষজন এসব দেখে খুনোখুনি , বোমাবাজি করছে । আরে স্বর্গে দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় অপ্সরীদের নৃত্য - গীত পরিবেশনটা যদি বিনোদন হয় তাহলে মর্ত্যে সিরিয়াল হলো মর্ত্যবাসীদের এন্টারটেইনমেন্ট । " তারপর আরো বলতে থাকলেন চিত্রগুপ্ত যে , তিনি কেন নরকে সিরিয়াল দেখার অনুমতি দিয়েছিলেন , " একদিন আমি নরকের রাস্তা ধরে ধর্মরাজের সভায় আসছি । আসলে দেরি হয়ে গিয়েছিলো , বাড়িতে বৌকে পুজোয় পারিজাত জোগাড় দিতে গিয়ে । তাই ভাবলাম ও পথ দিয়েই যাওয়া ভালো । দূরত্বটাও কমবে , তাড়াতাড়ি সভায় পৌঁছানোও যাবে । এমনসময় দেখি চারটে পাপী পাথরের পাশে বসে ধোঁকছে । চাবুকে বেচারাদের শরীর কেটে রক্তারক্তি । সদ্য নরকে এসেছে , এখনো সহ্য হয়নি এসব । আমায় বাবা বলে ডাকলো । আমি কাছে যেতেই আমায় বললো ........"

দেবী লক্ষীর চোখে জল । তিনি শাড়ির আঁচলের কোনায় চোখের জল মুছতে মুছতে জড়ানো গলায় চিত্রগুপ্তকে প্রশ্ন করলেন , " আহাগো কি বললো তারা ? "

তারপর মা লক্ষীকে প্রণাম করে চিত্রগুপ্ত জানালেন সেদিন ওরা কাতর কণ্ঠে বলেছিলো , " বাবা , আপনার কাছে একটা অনুরোধ আছে যদি রাখেন । খালি পেটে যে আর মার সহ্য হয় না বাবা । একটা যদি কিছু ব্যবস্থা করেন"

চিত্রগুপ্ত ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করেছিলেন , " কেন তোমাদের খেতে দেওয়া হয়না ? "

জিভ কেটে পাপীদের দল বলেছিলো , " আজ্ঞে না না , আমরা সে খাবারের কথা বলছিনা । আমরা অন্য খোরাকের কথা বলছি । মানে সিরিয়ালের কথা বলছি । মানে সিরিয়াল দেখলে কষ্টটা কম হবে , শাস্তিটা সহ্য হবে । এই আরকি। দেখুন না বাবা , যদি কিছু করা যায় ।"

চিত্রগুপ্ত প্রথমে ব্যাপারটা বুঝতে পারেননি তাই পাপিষ্ঠরা চিত্রগুপ্তকে একসপ্তাহ সিরিয়াল দেখার প্রস্তাব দেয় যাতে তা দেখে চিত্রগুপ্ত যেন সিরিয়াল সম্মন্ধে জানতে পারেন এবং ওদের দুঃখ বুঝতে পারেন । চিত্রগুপ্ত বিশেষ মন্ত্রবলে মর্ত্যের সবরকম সিরিয়াল দেখে তবেই নরকে সিরিয়াল দেখার আজ্ঞা দেন ।

" হ্যাঁ আমিও টানা এক সপ্তাহ সিরিয়াল দেখেছি , তবে দেবর্ষি নারদের মতো মরমর অবস্থা হয়নি আমার। যত্তসব বাড়াবাড়ি । আপনি তো এমন ভাবখানা করছেন যেন সিরিয়ালের জন্য বুঝি পৃথিবী রসাতলে গেছে । " ভরা বৈঠকে নারদমুনির দিকে ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে একনাগাড়ে কথাগুলো বলে চললেন চিত্রগুপ্ত ।

" পৃথিবী রসাতলে না যাক তুমি যে বড় সিরিয়ালের রসে মজেছ তা আমরা বেশ ভালোই বুঝতে পারছি । " তীক্ষ্ণ গলায় চিত্রগুপ্তকে আক্রমণ করেন যমরাজ ।

এতক্ষণ নারায়ণ চুপচাপ বসে সবকিছু শুনছিলেন । এবার মুখ খুললেন , "আমরা চিত্রগুপ্তের কথা শুনলাম আর নারদ তোমার প্রস্তাবও আমরা গ্রহণ করলাম । কিন্তু সিদ্ধান্ত তো শুধু তোমার মতের উপর বিচার করে হবেনা , আর চিত্রগুপ্তেরও তো একটা মান আছে । মানছি চিত্রগুপ্ত তড়িঘড়ি একা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে । কিন্তু এভাবে আমরা যদি হঠাৎ করে সেটা বন্ধ করে দিই , তাহলে বেচারা চিত্রগুপ্তের সন্মান কি ওই পাপীদের কাছে থাকবে ? তাই সব দিক খতিয়ে তবেই আমরা এই সমস্যার সমাধান বের করতে পারবো । হে নারদ , আগে সিরিয়াল সম্বন্ধীয় নথিগুলো তো পেশ করো । এই একসপ্তাহে কি দেখলে , কি বুঝলে সবকিছু ব্যাখ্যা করো আগে । "

নারদমুনি খানিক মাথা চুলকে আমতা আমতা করে বলতে শুরু করলেন , " আজ্ঞে ইয়ে মানে , কোত্থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছিনা । আচ্ছা গল্প থেকেই শুরু করি । আসলে এদের কোনো গল্প নেই । সবার গল্পই এক , এক্কেবারে যাতা । শুরুর একসপ্তাহ যা-ও বা একটা গল্প থাকে , তারপর সারাবছর সে গল্প ফিকে হতে হতে বিচ্ছিরি গোঁজামিল দিয়ে কোনোরকমে শেষ করে । "

দেবী সরস্বতী আঁতকে ওঠেন , " অ্যাঁ , আমার আশীর্বাদ নিয়ে এরা এসব গল্প বানাচ্ছে ? "

" তবে কি আর বলছি দেবী । আর মজা কি জানেন ? এসব সিরিয়াল আপনি ধরুন একমাস দেখলেননা , তার পরের মাসে দেখবেন সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে গল্প কেবলই ঘুরপাক খাচ্ছে । সব সিরিয়ালগুলোই এই এক গোয়ালের গরু । " নারদমুনি বললেন ।

সবার গালে হাত । নারদমুনি বলে চললেন , " একটা বিশাল অট্টালিকার মতো বাড়ি দেখানো হবে আর তাতে গুষ্টিশুদ্ধু সবাই থাকে । "

" তবে যে শুনি মর্ত্যে সব যৌথ পরিবার ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে ! তাহলে এরা কিছু ভালোও দেখায় বলো ? এরকম পরিস্থিতিতে মানুষ এসব দেখলে যদি কিছু শেখে তো ভালোই । যদি ভাঙা সংসারগুলো আবার জোড়া লাগে এসব দেখে , তো মন্দ কি ? " বক্তা স্বয়ং মহাদেব ।

" বরং উল্টোটা দেবাদিদেব মহাদেব । এসব দেখলে পরিবারগুলো উল্টে ভেঙে যাবে। সবাই শুধু সংসারে আগুন লাগাতে আর এর ওর পেছনে কাঠি করতেই ব্যস্ত । সব একেকটা আস্ত সং । আর পরিবারই বা বলছি কাকে ? সব তো খিচুড়ি । " নারদমুনি প্রশ্নকর্তা মহাদেবকে উত্তর দিলেন।

তা শুনে আবার মহাদেব অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন নারদমুনিকে , " অ্যাঁ , খিচুড়ি ? "

" তা নয় তো কি ? পরিবার বলতে বোঝায় আপনার গৃহে আপনার পরিবার , শ্রী নারায়ণের গৃহে শ্রী নারায়ণের পরিবার । কিন্তু কেমন হবে যদি আপনি , শ্রী নারায়ণ আর আপনাদের পরিবার একই ছাদের নিচে থাকেন ? " নারদমুনি সাধাসিধে মহাদেবকে এক্কেবারে ঘেঁটে দিলেন ।

" সে আবার কেমন কথা ? " মহাদেব হতবাক হয়ে গেলেন ।

" তবে কি আর বলছি দেবাদিদেব মহাদেব । এরা তো তাই করে । একটা বাড়ির মধ্যে ব্যাঙের ছাতার মতো নানান মানুষকে জোটায় । মা - বাবা , দাদু - ঠাকুমা , দিদা - মামাদাদু , কাকা - কাকিমা , মামা - মামিমা , পিসি - পিসেমশাই , মাসি - মেসো । উফ বলতে বলতে হাঁফিয়ে যাবো । " নারদমুনি খানিক থেমে একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে আবারো শুরু করলেন , " এত পর্যন্ত তাও ঠিক ছিল । কিন্তু তাতে কি আর এদের মন ভোলে ? উঁহুঁ তাই সেই একই বাড়িতে জুটলো বরের প্রাক্তন প্রেমিকা । বৌ এর দাদার আগের পক্ষের স্ত্রীয়ের সন্তান । ইত্যাদি ইত্যাদি ছিঃ ছিঃ । " বলেই নারদমুনি ' নারায়ণ নারায়ণ ' মন্ত্রোচ্চারণ করতে শুরু করলেন । ভাবখানা এমন যেন এই মহামন্ত্রোচ্চারণে সিরিয়াল দেখার পাপ ধুয়ে যাবে । কিন্তু যাঁর উদ্দেশ্যে বলা সেই মহাদেবের বিষয়টা বোধগম্য হলনা । অত জটিল বিষয় কি ভোলেবাবার বোঝার সাধ্যি আছে ? নারদ ব্যাপারটা আঁচ করতে পারলেন তাই তিনিই আবার এই জটিল তত্ত্ব মহাদেবের কাছে ' জলবৎ তরলং ' করে তুলে ধরলেন , " কি বুঝতে পারলেন না তো ? দাঁড়ান আমি সরল করে বোঝাচ্ছি । এই ধরুন আপনি কৈলাসে থাকেন । আপনার সাথে মা পার্বতী এবং আপনার সন্তানেরাও থাকেন । এবার কেমন লাগে দেখুন , যদি সেই কৈলাসে একই ছাদের নিচে সঙ্গে মা গঙ্গা , মা মনসা এবং প্রজাপতি দক্ষও থাকেন?"

মহাদেব শুধু একবার আড়চোখে সহধর্মিনীর দিকে তাকালেন । দেবী পার্বতী শুধু ভুরু দুটো কোঁচকালেন । মহাদেব আর কালবিলম্ব না করে সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলেন , " এ অসম্ভব "

" তবেই বুঝুন দেবাদিদেব মহাদেব । সিরিয়ালে এসব অসম্ভব অবাস্তবই সম্ভব আর বাস্তব হচ্ছে । " নারদমুনি জানালেন । তারপর শ্রী নারায়ণের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন দেবর্ষি নারদ , " আচ্ছা প্রভু , আপনি যখন বিশ্রাম নেন তখন কি আপনি শঙ্খ , চক্র , গদা , পদ্ম সঙ্গে নিয়ে ঘুমোন ? "

" এক্কেবারেই না " শ্রী নারায়ণ সটান উত্তর দিলেন ।

" নয় তো । বেশ । কিন্তু তাও ধরে নিলুম আপনি ওগুলো সঙ্গে নিয়েই ঘুমোন । আপনি দেবতা , আপনি বিশেষ কোনো মন্ত্রবলে ওগুলো সাথে করে নিয়ে ঘুমোলেও আপনার কোনো অসুবিধা হয়না । কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো কোন মহামন্ত্র বলে মর্ত্যের সিরিয়ালের নারীগণ গায়ে বেনারসি পরে , গলায় সীতাহার ঝুলিয়ে , কোমড়ে বিছেহার জড়িয়ে , সর্বশরীরে হাজারো প্রসাধনী লেপ্টে , মাথায় গোম্বুজাকৃতির খোঁপা বেঁধে ঘুমাতে যায় ? " নারদমুনির প্রশ্নে শ্রী নারায়ণের চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেল । তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লেন ।

তারপর দেবর্ষি নারদ দেবরাজ ইন্দ্রের দিকে তাকিয়ে বললেন , " আপনি কি মনে করেন অনন্ত যৌবন শুধু স্বর্গেই আছে ? আজ্ঞে না ভুল কথা । যান একবার শুধু একটা সিরিয়াল দেখুন । তারপর বুঝবেন । আমি তো একদিন একটা সিরিয়াল দেখছিলাম । সেখানে দেখলাম একটা যুবক আর এক যুবতী পাশাপাশি বসে আছে আমি ভাবলাম প্রেমিক যুগল হবে । ও মাগো মা পরে বুঝলাম এরা পিতা - পুত্রী । নারায়ণ নারায়ণ । এ কেমন বাবা যার চুল পাকেনা আর এ কেমন কন্যা যে বাবার সমবয়সী । "

নারদমুনির এহেন কথা শুনে সবাই এক্কেবারে স্তব্ধ ।

" আরে এই সিরিয়ালের সবরকম ফিরিস্তি দিতে শুরু করলেনা তা ওই চিত্রগুপ্তের গন্ধমাদনের মতো হিসাবের খাতাকেও হার মানাবে । " নারদমুনি মন্তব্য করলেন ।

" বল কি বাছা ? " দেবী পার্বতী বিস্মিত ।

" আর কি বলছি মা জননী চিত্রগুপ্তের খাতা তো দূরের কথা এসব দেখলে মহাদেবের মাথার জটও খুলে যাবে । তাই বলি কি সব তো এভাবে বলা অসম্ভব । আপনারা যদি এই পার্থিব বিস্ময়কে নিজেরা একবার চাক্ষুস করেন তো আরো ভালো বুঝতে পারবেন । " এইবলে দেবর্ষি নারদ সবাইকে প্রণাম জানিয়ে সিরিয়াল দেখার অনুরোধ করলেন ।

" হুম তা তো নিশ্চই । একা তোমার কথাতেই তো আর কথা নয় । সবারই চক্ষু কর্ণের বিবাদ - ভঞ্জন হওয়া দরকার । তোমার প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করলাম । কি বলেন দেব - দেবীগণ ? " শ্রী নারায়ণের প্রশ্নে সবাই একযোগে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালেন।

বৈঠক প্রায় শেষের দিকে । সবাই এই উঠবেন উঠবেন করছেন । এমন সময় নারদমুনির আরো কিছু মনে পড়লো , " দাঁড়ান দাঁড়ান । আরে আসল জিনিসটাই তো বললামনা । "

প্রজাপিতা ব্রহ্মা ত্রস্ত হয়ে প্রশ্ন করলেন দেবর্ষি নারদকে , " এখনও আসল জিনিস বাকি আছে বাবা ? "

" আজ্ঞে হ্যাঁ পিতা । " দেবর্ষি নারদ উত্তর দিলেন ।

একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস নিয়ে প্রজাপিতা ব্রহ্মা বললেন , " আর কেন বাবা বল। এতকিছু শুনলাম আর এটাই বা বাকি থাকে কেন ? "

" হ্যাঁ , তো যা বলছিলাম । আমি যে আসল জিনিসটার কথা বলছি তা হলো ধুমতানানানা সংগীত । " দেবর্ষি নারদ জানালেন ।

" ধুমতানানানা সংগীত ? সে আবার কি ? " সবার মুখে এই একই প্রশ্ন । সবাই খুব জানতে ইচ্ছুক এর ব্যাপারে ।

" বলছি বলছি " সবাইকে শান্ত করে দেবর্ষি নারদ বলতে শুরু করলেন , " এটা হলো এমন এক ধরণের সংগীত যা কথোপকথনের সাথেই সমান্তরালে চলতে থাকে । তা সে যতই বেসুরো শুনতে লাগুক না কেন । সুখ - দুঃখ , সাধ - শ্রাদ্ধ সবেতেই এই ধুমতানানানা সংগীত অতি আবশ্যক । সারা সিরিয়ালের সত্তর শতাংশ শুধু এই ধুমতানানানা সংগীত দিয়েই ভরা । আর বাকি তিরিশ শতাংশের দশ শতাংশ গল্প , দশ শতাংশ অভিনয় আর দশ শতাংশ একজন চরিত্রের পা থেকে মাথা পর্যন্ত বিশবার দেখানো আর সঙ্গে ' ঢিস ঢিস ' ধুমতানানা শব্দ । আর এসব কিছুর সঙ্গে নায়িকার চোখের জল এক্কেবারে বিনামূল্যে । আর বাকি যা কিছু আছে , আপনারা যখন স্বচক্ষে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন তখন দেখে নেবেন । "

" হুম তাহলে ঠিক আছে । সামনের সপ্তাহে সবাই মিলে এখানে একসাথে বসে সিরিয়াল অভিযান করা যাবে । " শ্রী নারায়ণ দিনক্ষণ বাতলে দিয়ে বললেন ।

" সবই তো বুঝলাম । কিন্তু আমার কিছু বক্তব্য আছে । আচ্ছা স্বর্গবাসীদের তরফ থেকে কি কেউ মুখপাত্র আছে নাকি ? না মানে আমাদের তো ওদের বক্তব্যও শোনা উচিত । ওরা কি চায় , কি দাবি এসব না জানলে সমাধানসূত্র বের হবে কি করে ? তাই ওদের মধ্যে থেকে এরকম যদি কেউ থেকে থাকে যে ওদের হয়ে এব্যাপারে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাহলে তাকে যেন পরেরবার বৈঠকে তলব করা হয় । " মহাদেব ত্রিনয়ন বন্ধ করে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কথাগুলো বললেন এবং তাঁর মতের সঙ্গে বাকি দেব - দেবীগণ সহমত পোষণ করলেন । এই বলে বৈঠক শেষ হয় শেষ হয় অবস্থা এমন সময় স্বর্গের প্রহরী হঠাৎই সভায় প্রবেশ করে সবাইকে চমকে দিলো । তার এমন করে বৈঠকে হঠাৎ প্রবেশ করার কারণ সবাই জানতে চাইলে প্রত্যুত্তরে যা জবাব পেলেন সবাই , তাতে সবারই ঘুম উড়ে যাবার মতো অবস্থা হলো । প্রহরীর বয়ান অনুযায়ী , প্রতিদিনের মতো সে তার প্রহরায় ব্যস্ত । দুপুরের আলসেমি তখনও কাটেনি । এমনসময় স্বর্গের এক পূণ্যবান মনুষ্য ইতিউতি চেয়ে চুপুচুপু স্বর্গের দরজা খুলে পা টিপে টিপে হাঁটা লাগায় । বিষয়টা প্রহরীর সন্দেহজনক ঠেকে । সে - ও লুকিয়ে পিছু নেয় । যেই ভাবা সেই কাজ । নরকের রাস্তা ধরেছিলো ব্যাটা । প্রহরী তো তাকে ধরে । প্রথমে মুখ খুলতে রাজি হয়নি , কিন্তু প্রহরী একটু চেপে ধরতেই আসল সত্যিটা বেরিয়ে পরে । সে দুপুরবেলা নরকে গিয়ে তার প্রিয় সিরিয়াল ' স্বামী আমার শত্তুর ' - এর রিপিট টেলিকাস্ট দেখতে যাচ্ছিলো । মর্ত্যে থাকতে রোজ নিয়ম করে দুবেলা সিরিয়ালটা দেখতো । মারা যাওয়ার পর তার আত্মার সদগতি তো হয়েছে কিন্তু সিরিয়াল ' আজও মরে নাই ' , সে আজও সমানে চলে যাচ্ছে । তাই মর্ত্যে তো আর ফেরা যাবেনা অগত্যা নরকই ভরসা । প্রহরী তাই এহেন স্বর্গের বাসিন্দাকে ধরে এনেছে এবং তার এখন কি করণীয় তাই সে জানতে বৈঠকে উপস্থিত হয়েছে ।

আবার বৈঠক বসলো স্বর্গে । ডাক পড়েছিল ধর্নাকারীদের নেতা বা নেত্রীর । এক অল্পবয়সী ছোকরা প্রবেশ করলো । বয়স মেরেকেটে সাতাশ । তাকে দেখেই দেবরাজ ইন্দ্রের প্রশ্ন , " তোমাকে দেখে তো ঠিক সিরিয়ালখোর বলে মনে হয়না , তুমি আবার নিজেকে এসবে জড়ালে কেন ? "

" সিরিয়াল যে আমি মরবার আগে একদমই দেখতাম না , তা নয় । আমি ওই সাধারণতঃ দেশভক্তিমূলক বা কোনো বিশেষ ব্যক্তিত্বের উপর তৈরি সিরিয়ালই দেখা বেশি পছন্দ করতাম । কিন্তু ওই প্রথম প্রথম সব ঠিক থাকে তারপর সব নিজেরা বানায় । সেই জন্যই আমি টেলিভিশনকে প্রণাম জানিয়ে দুকান মলেছি , আর কোনোদিন সিরিয়াল দেখবোনা । " ছোকরা দেবরাজ ইন্দ্রকে উত্তর দেয় ।

" আশ্চর্য তো তুমি নিজে এসব দেখোনা আর এমনি এমনি এইসব ছাইপাশ দেখার পক্ষ ধরে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব দিচ্ছো । এ কেমন কথা ? " দেবর্ষি নারদ ছোকরার উপর বেজায় চটে গিয়ে কথাগুলো বললেন ।

ছোকরাও সপাটে উত্তর দিলো , " আমি তো প্রথমে রাজিই হচ্ছিলামনা । কিন্তু ওদের মধ্যে থেকে কেউ নেতৃত্ব দিতে রাজি হলোনা বলেই তো আমায় বাধ্য হয়ে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে । আমি সিরিয়াল দেখিনা আর দেখবোওনা । আমার ভারী বয়েই গেছে । ওই অসহায় বুড়ো মানুষগুলোর কেউ নেই তাই ওদের পাশে দাঁড়িয়েছি । এরকম ফিরিস্তি দিতে হবে জানলে রাজি হতামনা । "

তারপর বেশ কিছুক্ষন চললো দুপক্ষের কথোপকথন । ছোকরাও তাদের পক্ষের সমস্ত দাবি - দাওয়া তুলে ধরলো বৈঠকে । ছোকরা বিদায় হলে শুরু হলো সিরিয়াল চাক্ষুস করার পালা । স্বর্গে তখন চলছে হৈ - হৈ ব্যাপার । দেব - দেবীদের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে । সবকিছুর পালা চুকে গেলে বহু টালবাহানার পর সময় এলো বহুচর্চিত ফল ঘোষণার । স্বর্গে ঢ্যাঁড়া পড়লো , নোটিশ টাঙানো হলো , জারি হলো নতুন বিজ্ঞপ্তি সিরিয়াল বিষয়ক ।

 প্রথমেই বড় বড় অক্ষরে তাতে লেখা আছে যে - সিরিয়াল দেখা মহাপাপ নয়। অতএব নরকের পাপীদের মতো এবার থেকে স্বর্গের পুণ্যবানরাও সিরিয়াল দেখতে পারবেন । এমনকি চাইলে দেবতারাও তা দেখতে পারেন । যদিও তাঁরা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তাঁরা এই সিরিয়ালের চক্করে নেই । কিন্তু চিত্রগুপ্ত সিরিয়াল দেখার ব্যাপারে অনড় । কিন্তু এহেন সিরিয়াল দর্শন হেতু কিছু নিয়মাবলী আছে যা স্বর্গের মনুষ্য এবং সিরিয়াল প্রেমী দেব - দেবীগণ উভয়পক্ষই মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন ।

প্রথমতঃ - স্বর্গে শুধুমাত্র এক বিশেষ কক্ষেই তা দর্শন করা যাবে । যত্রতত্র নয় । আর সেই বিশেষ কক্ষ খুব শীঘ্রই বিশ্বকর্মা কর্তৃক নির্মিত হবে ।

দ্বিতীয়ঃ - প্রত্যেকের জন্য শুধুমাত্র আধঘন্টা বরাদ্দ থাকবে । আর কোনো রিপিট টেলিকাস্ট দেখা চলবেনা ।

তৃতীয়তঃ - যারা সিরিয়াল দেখবে তাঁরা বাধ্যতামূলক ভাবে দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় সাংস্কৃতিক মূলক অনুষ্ঠানে শাস্ত্রীয় নৃত্য - গীত বা ভজন - কীর্তন পরিবেশনে অবশ্যই অংশগ্রহণ করবে ।

আর এইসব নিয়ম যে ঠিকভাবে পালন করবেনা বা উল্লঙ্ঘন করবে তাকে শাস্তিস্বরূপ মনুষ্য জন্ম নিয়ে মর্ত্যে যেতে হবে ।

স্বর্গের মনুষ্যরা এহেন ঘোষণায় যারপরনাই খুশি। তাদের এ শর্তাবলী মেনে নিতে কোনো অসুবিধা নেই । তারা মনে করছে তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে । অন্যদিকে চিত্রগুপ্ত যেহেতু ধর্মরাজ যমের অনুমতি না নিয়েই নরকে সিরিয়াল দেখার আজ্ঞা দিয়েছিলেন তাই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হলো । আর তাঁর শাস্তি হলো যে - আগামী ছয়মাস তিনি কোনো সিরিয়াল দেখতে পারবেননা ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract