শকুন কাকিমা
শকুন কাকিমা
যদি ভেবে থাকেন ফোর জির থেকে আর কোনো বস্তু দ্রুতগতিসম্পন্ন হতে পারেনা বা সংবাদ সংস্থা পি.টি.আই - এর থেকে আর কেউ তাড়াতাড়ি খবর আদান - প্রদান করতে পারেনা তবে আপনি ভুল । কারণ এ ব্যাপারে পাড়ার কাকিমায়েরা যুগযুগ ধরে সবাইকে বহু গোল খাইয়ে আসছেন । বিদ্যুৎবেগে খবর চালাচালিতে এনাদের জুড়ি মেলা ভার ।ঢিঢি পাড়ার কাকিমায়েরাই বা এ অবস্থায় পিছনে থাকেন কি করে ? তিল থেকে তাল করা এনাদের একমাত্র উদ্দেশ্য । পাড়ার ছুঁড়িরা অশ্রদ্ধাভরে এনাদের নামকরণ করেছে , শকুন কাকিমা । এনাদের প্রধান হলেন বড় শকুন কাকিমা । যার সাধ থেকে শ্রাদ্ধ সবেতেই কৌতূহল । কারো বাড়িতে একটা আলপিন পড়লে ইনি পাড়ায় বোমা ফাটান । এহেন বড় শকুন কাকিমা বেশ কিছুদিন যাবৎ ধরে চুপচাপ । আজকাল বাড়ির বাইরেও বেরোচ্ছেন না । আর তার মেয়ে রাধাকেও কয়েকদিন যাবৎ পাড়ায় দেখা যাচ্ছেনা । ব্যাপার কি ? বড় শকুন কাকিমা মুখে কুলুপ আঁটলে কি হবে ? যে পাড়ার নাম ঢিঢি, সেখানে শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায় ? তায় আবার পাড়ায় মেজো - সেজো - ছোট শকুন কাকিমায়েরা আছেন । তাদের থেকেই জানা গেল বড় শকুন কাকিমার মুখে তালা লাগবার আসল কারণ । বড় শকুন কাকিমার মেয়ে রাধা তার কেষ্টর সাথে ভেগেছে , তাই মনমরা তিনি । চিরটাকাল এর ওর পিছনে চুঘলি করে গেছেন । কলসেন্টারে পাড়ার চাকুরিরতা খেটে খাওয়া মেয়েটার ভোররাতে বাড়ি ফেরাকে কেন্দ্র করে ভুরু কুঁচকেছেন । রাস্তায় কোনো ছেলে আর মেয়ে পাশাপাশি হাঁটলেই শুধু প্রেম - পিরিতের সম্পর্কই খুঁজে পেয়েছেন । আর পাড়ার কার ছেলে - মেয়ে কবে বিয়ে করবে সে ব্যাপারে ওনার মাথা ঘামানো বরাবরই আবশ্যিক কর্তব্যের মধ্যে পড়েছে । এবার ' দ্যাখ কেমন লাগে ? ' শকুন কাকিমা এবার হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন । তাই তিনি দুকান ম'লে নাক খৎ দিয়েছেন যে আর কোনোদিন কথা পাঁচকান করবেন না,কারোর সমালোচনা করবেন না। আর পাড়ার ছুঁড়িরা এখন উৎসবের মেজাজে । এটা তাদের নৈতিক জয় । যদিও বড় শকুন কাকিমার মেয়ে রাধাই , তাদেরই গোলপোস্টে আত্মঘাতী গোলটি খাইয়েছে তবুও । ছুঁড়িগুলো তো খুব ধন্যবাদ দিচ্ছে এই কীর্তিমানকে , আর মুখে মুখে ফিরছে তাদের ' রাধে রাধে ' ।