সাজঘর থেকে স্টেজে (ধারাবাহিক)২
সাজঘর থেকে স্টেজে (ধারাবাহিক)২
২
তা এবারে সুগন্ধার যাত্রাপালা এবং থিয়েটারের নাটকের থিম হলো গিয়ে রামায়ণ। জম্পেশ বিষয়, সুতরাং সবাই জম্পেশ অভিনয় করতে পারলেই তবে না ঠিকমতো মঞ্চসফল পালা বা নাটক উতরোবে। তো এই নিয়ে গ্রামের ছেলেবুড়ো কারুর কোনো দ্বিমত নেই। সেই রথের দিন থেকে রিহার্সাল শুরু। তার সঙ্গে ঘরে ঘরে চলছে দুলে দুলে পার্ট মুখস্থ করার ধূমধাম। পরপর দুদিনে দুখানি পালা, তাও দুটোই রামায়ণের কাহিনী থেকে রূপান্তরিত। কঠিন কাজ। আরো কঠিন ফাটাফাটি করে মঞ্চস্থ করতে পারা। কারুর চেষ্টায় কোনো ত্রুটি নেই। গ্রামের সব বাড়ি থেকেই দু-একজন অভিনেতা অবশ্যই আছে। থাকতেই হবে। প্রত্যেক বছরেই থাকে। নাহলে দু-দুটো পালা নামানো কি চাট্টিখানি কথা? ভাড়া করা লোক এনে আজ অব্দি কোনো পালা সুগন্ধায় হয় নি। আর কোনোদিন তা হবেও না। সুগন্ধার দোল উৎসব কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এবং সর্বাধিক চাঁদা প্রদানকারী আলুর আড়তদার জগন্নাথবাবুর সাফ কথা... আশেপাশের দশটা গ্রামের লোককে দেখিয়ে দিত
ে হবে। শুধু চাষবাসের ক্ষেতে নয় অভিনয়ের ক্ষেত্রেও সুগন্ধাবাসীর সমান প্রতিভা।
দু-দুটো পালায় কুশীলবের সংখ্যা নেহাত মন্দ নয়। তারপর বিশ্বস্ত সূত্রের খবরে প্রকাশ, এবারে নাকি জগন্নাথবাবু সেরা অভিনেতাদের নগদ পুরস্কারে সম্মানিত করবেন। আহা হা! এমন সুযোগ কি ছাড়া চলে? সবাই একেবারে কোমর বেঁধে উঠেপড়ে লেগে পড়েছে। সবাই সবাইকে টেক্কা দিয়ে অনুশীলন করে চলেছে, কী ঘরে, কী রিহার্সালে। মাঝে মাঝে সপার্ষদ জগন্নাথবাবু রিহার্সাল পরিদর্শনে আসেন। কেমন কী সব এগোচ্ছে, ঐ দেখতে আর কী? এতে করে পালার অভিনেতাদের উৎসাহ আরো সহস্রগুণ বেড়ে যায়। আর তার ফলে তরতর করে বেড়ে এগিয়ে চলেছে দুই পালার রিহার্সালের বহরখানা। একদম সামনে এগিয়ে এসেছে দিন, দোল উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় থিয়েটার... নাটকের পালা "লক্ষ্মণের শক্তিশেল" এবং দ্বিতীয় সন্ধ্যায় যাত্রাপালা "রাবণ বধ"। ম্যারাপ বেঁধে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে জবরদস্ত কদমে। মাঝে হাতে মোটে দুটো দিন আর।