জয় নগরের বিবি মা
জয় নগরের বিবি মা
"বদি" বলতে বুঝি ভক্ত ব্রতীদের গলায় খড়ের মালা পড়া প্রথা। আবার অনেকে দাঁতের ফাঁকে একটি খড়ের টুকরো রাখতেন যাকে কুটি বলা হত ।প্রাচীন প্রথা ক্রমে অবলুপ্ত হচ্ছে।এখন কম দেখা যায়, বর্তমান প্রজন্মের বৌ - মেয়েরা এই পুরোন প্রথাই জানেন না হয়তো।

প্রসঙ্গত বলা যায়। কোনভাবে গরু জলে ডুবে , কিংবা গলায় ফাঁস লেগে, বা অন্য কোন দুর্ঘটনায়, মারা যায়। তাহলে গরুর মালিক গলায় খড়ের ফাঁস পরে, দাঁতে খড় কামড়ে বাড়ি বাড়ি মাগন ভিক্ষা করে গরুর শ্রাদ্ধ করত। মাগন বা ভিক্ষা নিতে ঐ বেশে উঠোনে দাঁড়িয়ে গরুর মতো হাম্বা রবে ভিক্ষা চাইতো লোক জন আগে বাংলার পাড়া গাঁয়ে দিকে।
নিদৃষ্ট দিনে মান শনিবার এবং মঙ্গলবার পৌঁছে গেলে। দেখতে পাবেন ,জয় নগর মজিলপুরের ,বিবি মা থানে ভীড় উপছে পড়ছে । বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের ভীড় এখানে চোখে পরে।৫০ বছর ধরে পূজা দিতে আসছেন এই প্রবীনারাও।

বামে বিবি মা ও ডানে রক্তা খঁ গাজীর মাটির স্তূপ প্রতীক।রক্তা খাঁ পাড়া,জয়নগর।আনুমানিক ২৫০ বছরের বেশী প্রাচীন এই থান।এই বিবি মার থানের হাজোৎ কারিনী আম্মাজান বেওয়ার বিবাহিত মেয়েরা
আমি লোকসংস্কৃতি ঠিক বুঝতে পারি না। কারণ সঠিক তথ্য পাওয়া জন্য কোন গ্রন্থে র সহযোগিতা পাওয়া যায় না। লোক দ্বারা পরিচালিত সব রিতী, তাই মুসলিম মহিলা কেও এখানে পূজা দিতে দেখা যায়। তবে
সাত বিবি বোধহয় নদী মাতৃক এই দেশে সাত নদীর পূজা। পরে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে এর আরাধনা শুরু করা হয় স্থানীয় মানুষের দ্বারা।

তবে সামাজিক ভাবে এই লোক সংস্কৃতি উৎসব এর গুরুত্ব অনেক খানি। এ শুধু হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্প্রতি প্রমান নয়। সামাজিক ভাবে নারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কথা বলে দেয় এই পূজাতে।
পূজা শেষ করে খালি স্থানে বন ভোজন প্রথা আছে এখানে । আদিতে বনেই ভোজন করা হত মনে হয় তাই বনভোজন কথাটি রয়ে গেছে আজ বোধহয় আমাদের মুখে।আমাদের ভাবায় এই প্রথা তবে কি এটি প্রাক নব্যপ্রস্তর যুগের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে ,যখন মানুষ বনে বাস করতো, তখন তো শিকার ও সংগ্রহের জীবন যাপন করতো। আমি মনে করি, আজ যে বিভিন্ন চন্ডি পূজা দেখি, সেখানে ও পাথর খন্ডকেই পূজা দেওয়া হয়। শিকার আগে পাথরে রক্ত উৎসর্গ করা হতো , সেটাই আজ সিঁদুর দানের প্রথা। বা পাথর গুলো লালা কড়ার কারণ।

তবে বিবি এই পূজার অন্য কিছু প্রথা থেকে সেই ধারনার সমর্থন পাওয়া যায় আদিম জীবনের প্রমান পাওয়া যায়। এখন যদিও বাগান বা মাঠে করা হয় বনের অভাবে।তাই বেশি ভাগ মানুষ ব্যাগে থলিতে মুড়ি বা অন্য খাবার নিয়ে আসেন।বিবি মা হাজোৎকারিনীক বিবি মার স্তূপের গর্তে ঢেলে দেন ভক্তদের আনা দুধ বা জল। লোক বিশ্বাস এই আশির্বাদী দুধ জল খেলে পূণ্য বা সুস্থ থাকবেন তারা। ।