ক্ষীরাই
ক্ষীরাই
ক্ষীরাই কথা লিখতে গেলে মনে পরে যায় জীবনানন্দ দাশের লেখা একটি কবিতার লাইন কথা,
‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি। তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর’।
বাঙালি ঘুরতে ভালোবাসেন ফুলের বাগান দেখতে। তাঁরা জানান, কাশ্মীরের টিউলিপ গার্ডেন বা সিকিমের অর্কিড গার্ডেনের কথা। তাই ছোটেন কাশ্মীর, উত্তরখন্ড কিংবা সিকিম। আপনি জানেন কি ঘরের কাছে বাংলাতেই রয়েছে বাহারি ফুলের বাগান! বিঘার পর বিঘা জুড়ে ছড়িয়ে নানা রঙের লক্ষ লক্ষ বাহারি ফুল। ঘরের কাছেই রয়েছে বাংলার ‘ফুলের উপত্যকা’ ক্ষীরাই।কাঁসাই নদীর তীরে অবস্থিত ক্ষীরাই (Khirai)।ক্ষীরাই আসলে একটি নদীর নাম আর সেই নদীর নামেই গ্রামের নামকরণ হয়েছে। একটি স্বপ্নের গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি ছোট্ট স্টেশন ক্ষীরাই।বাংলার ফুলের দেশ হলো ক্ষীরাই।বাংলার ফুলের সাম্রাজ্য ক্ষীরাই,গ্রামের নাম দোকান্দা। স্থানীয় লোকেরা বলেন ক্ষীরাই স্টেশন থেকে হেটে গিয়ে কাঁসাই নদীর ব্রীজের ধারে যে বিস্তীর্ণ জায়গায় ফুলের চাষ হয় সেই গ্রামের নাম দোকান্দা। কাসাই নদীর ব্রীজ পার করে গ্রামেটির বিস্তীর্ণ জায়গায় ফুল চাষ হয় তার নাম পশ্চিমখোলা।যেহেতু ক্ষীরাই স্টেশন নেমে যাওয়া টা সহজ হয় তাই লোকমুখে ক্ষীরাই নামেই প্রসিদ্ধ হয়েছে।পাঁশকুড়া স্টেশন থেকেও যাওয়া যায়..
হাওড়া থেকে মেদিনীপুরগামী ট্রেনে পাঁশকুড়া ও ক্ষীরাই পরপর দুটি স্টেশন। দুর্গা পুজোর পরেই থেকেই কাঁসাই ও ক্ষীরাই নদীর ডান ও বাঁ দিকে মাইলের পর মাইল জমি জুরে ক্ষেতে বসানো হয় চারাগাছ, তা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে রঙের ফুলের ভরে ওঠে ।
শীতকালে গাঁদা (লাল, কমলা, হলুদ), অ্যাস্টর, চন্দ্রমল্লিকা( গোলাপি, সাদা,বেগুনী,হলুদ), মোরগঝুঁটি, গোলাপ ও আরো অনেকরকম ফুলের চাষ হয়।কম খরচে একদিনের ঘুরে আসার জন্য দারুন জায়গা। হাওড়া থেকে পাঁশকুড়া নেমে টোটো পাওয়া যায়, আবার ক্ষীরাই স্টেশন নেমে যাওয়া যায়। ১৫ মিনিটের হাঁটা পথ।তবে এখন পর্যটকদের ভিড় হয়ছে তাই টোটো ও মারুতি চলাচল রাস্তা হয়েছে এখানে।এখান থেকে খুব অল্প দামে ফুল ও গাছের চারাও নিয়ে আসতে পারেন আপনারা। শুধু ফুল নয়, গ্রামের মানুষের ভালো ব্যবহার আপনার মন ভালো করে দেবে। সহজ সরল মানুষ গুলোর সাথে একটু ভালো করে মিশতে পারলেই অনেকটা ভালোবাসা ফিরে পাবেন।
এক কথায় বাংলার ফুলের উপত্যকা হিসাবে পরিচিত এই ক্ষীরাই – ‘VALLEY OF FLOWERS’। এই রাজ্যের ফুলের চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশই এখানে চাষ হয়।চোখ জুড়িয়ে যাওয়া নানা রঙের ফুলের সৌন্দর্যের টানে ভিড় জমাচ্ছেন দূরদূরান্তের পর্যটকেরা।পর্যটকদের কল্যাণে এখানে বিভিন্ন খাবারের স্টলও, হোটেল, ফাস্টফুডের দোকান, রেস্টুরেন্টেও ব্যবসা চলছে জমিয়ে।