তৃপ্তি
তৃপ্তি
প্রতিদিন মেঘা কলেজ যাওয়ার আগে আমিষ তরকারি দিয়ে ভাত খেয়ে যায়। কিন্তু যত সমস্যা শনি-মঙ্গলবারে। এই দুটো দিন যে নিরামিষ রান্না হয় বাড়িতে। আর মেঘার ছোটো থেকেই নিরামিষের থেকে আমিষ খাবার বেশি পছন্দ। পাতে কিছু থাকুক না থাকুক একটুকরো মাছের ঝোল হলেই ওর ভাত খাওয়া হয়ে যায়। এমনিতে ওর খাওয়া নিয়ে বাড়ির কেউই খুব বিশেষ কড়াকড়ি করে না। কিন্তু সমস্যা হলো ঠাকুমাকে নিয়ে। উনি কিছুতেই শনি-মঙ্গলবার বাড়িতে আমিষ ঢুকতে দেন না। বাড়িতে উনি সকলের বড়ো এবং সম্মানীয় ব্যক্তি। তাই ওনার কথা কেউ ফেলে না। ওনার মতে, শনি-মঙ্গলবার বাড়িতে আমিষ রান্না হলে গৃহস্থ্যের অকল্যাণ হয়। তাই ওই দুদিন আমিষ নৈব নৈব চ।
আজ আবার শনিবার। কলেজের জন্য রেডি হয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে ভাতের সাথে উচ্ছে দিয়ে মটর ডাল, আলুভাজা এবং পাঁচমিশালী একটা তরকারি দেখে মুখটা ব্যাজার হয়ে গেল মেঘার। খাবারটা একটু মুখে দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে রেখে দিলো। হাতটা ধুয়ে এসে আধখাওয়া ভাতের থালাটা নিয়ে সাবধানে বাড়ির পেছনে চলে গেল মেঘা। থালার কিছুটা খাবার ও পাঁচিলের ওপর রেখে দিলো কাকপক্ষীতে খাবে বলে। আর বাকিটা কালুকে নামের একটা কুকুরকে খাইয়ে দিয়ে থালাটা রান্নাঘরের বেসিনে রেখে দিয়ে বেরিয়ে গেল কলেজের উদ্দেশ্যে।
কলেজে ফার্স্ট ক্লাস করতে গিয়ে পেটে হালকা মোচড় দেয় মেঘার। খাবার যাই খাও না কেন তৃপ্তি করে না খেলে শরীর খারাপ লাগবেই। ক্লাস শেষ হতেই মেঘা ব্যাগ থেকে পেট ব্যাথার ওষুধটা বের করে খেয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পর একটু বেটার ফিল হতেই কলেজ ক্যান্টিনে গিয়ে নিজের পছন্দের কিছু আমিষ পদের অর্ডার দেয় মেঘা। খাবারগুলো খেয়ে মেঘা তৃপ্তির একটা ঢেঁকুর তুলে মনে মনে ভাবে, আজ রাতের খাবারটাও টিউশন থেকে ফেরার সময় খেয়েই বাড়ি ফিরবে।