দুঃস্থ:-
দুঃস্থ:-
সাহাদের প্রাসাদোপম বাড়িতে আজ হৈহৈ কাণ্ড। বাড়ির ছোট নাতির জন্মদিন উপলক্ষে সাহা বাড়ির কর্তামশাই বিরাট উৎসবের আয়োজন করেছেন। নিমন্ত্রিত সকলে আসছেন এক এক করে। সাহা কর্তার বিরাট ব্যবসা, একাধিক ক্ষেত্রে উনি ওনার বাণিজ্য সম্প্রসারণ করে রেখেছেন। কিন্তু কর্ম জগতে অনেক ধন সম্পত্তি রোজগার করলেও মনের দিক থেকে এখনও ভীষণ কিপ্পিন।
দুঃস্থদের সাহায্যে কখনোই তাদের পাশে থাকতে রাজি নন তিনি। আজ ওনার নাতির জন্মদিন উপলক্ষে তিনি বেজায় খুশি, ওনার বাড়ির এক গরীব কাজের মহিলা কর্তাবাবাকে আজ এত খুশি দেখে নিজের বাচ্চার চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা চাইল। কিন্তু মহিলাটির সকল আশায় জল ঢেলে দিয়ে সাহা কর্তা ওনাকে আর্থিক সাহায্য করতে অস্বীকার করে দিলেন। মহিলাটি দুঃখী মনে চলে গেলেও সাহাবাবু তিল মাত্র বিচলিত হলেন না।
******
জন্মদিনের পার্টি শেষ হলে পরে দেখা গেলো অনেক খাবার রয়ে গেছে, সাহা বাবুর স্ত্রী নীরাদেবী প্রস্তাব দিলেন খাবার গুলো গরীব দুঃখীদের বিতরণ করে দেবার। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সাহা বাবু বললেন,"না, বেঁচে যাওয়া খাবার ঘরে তুলে রাখা হোক, খেতে হয় আমরাই খাবো, এতে আমাদেরই খরচ বাঁচবে। অন্যকে দিয়ে কি হবে?"
নীরাদেবী অবাক হয়ে ভাবেন, 'ওনার কর্তা এত কুটিল,এত হিসেবী। পয়সা ছাড়া কিছুই বোঝেন না এই এত বয়স হবার পরেও! শুধুই লাভ লোকসানের চিন্তা...শুধুই অর্থ সম্পত্তির প্রতি এত লোভ। এর ফলে তিনি হয়তো বিত্তবান হয়েছেন, কিন্তু কারোর শুভ কামনা তিনি পান নি কখনও....'
হঠাৎ ওনার স্ত্রী লক্ষ্য করলেন ডাস্টবিনের মধ্যে থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার উঠিয়ে কুড়িয়ে কুড়িয়ে খাচ্ছে একটা ছেলে,বড্ডো মায়া হলো ওনার। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন কিছুতেই সেই উচ্ছিষ্ট খেতে দেবেন না ছেলেটিকে, উনি বাড়ির ভেতরে দৌড়ালেন ছেলেটির জন্য খাবার নিয়ে আসার জন্য। ওনার স্বামী হয়তো ধন সম্পদের লোভী কিন্তু নীরাদেবী ওনার স্বামীর মতন হতে পারবেন না। একজন গরীব দুঃখীকেও যদি উনি সুষ্ঠু ভাবে ভোজন করাতে পারেন উনি তৃপ্ত হবেন তবুও ওই উচ্ছিষ্ট খেতে দেবেন না ছেলেটিকে।