দেরী করে দিলাম
দেরী করে দিলাম
" হ্যালো , এসিপি প্রদ্যুম্ন স্পিকিং । "
" ঠাকুর বলছি । আমার গব্বর চাই , জিন্দা নয়তো মূর্দা । "
" কিন্তু ঠাকুর সাব আপনার কথাতেই তো শুধু আমরা যেতে পারি না রামগড় । সরকার থেকে অনুমতি লাগবেই যে । আচ্ছা জয় , বীরুর কী হলো ? "
" আমি অবাক হচ্ছি তুমি এটা জানো না জয় বোমার আঘাতে মারা গেছে । বীরু আর বসন্তি সুখে সংসার করছে । "
" তাহলে হিসেব মতো তো গব্বরের জেলে থাকার কথা ! "
" হিসেবে সব চলে না এসিপি । গব্বর আবার জেল থেকে পালিয়েছে । তাই এবার ওকে খালাস করে দেবো জ্যান্ত পেলেই । "
" ঠিকাছে ঠাকুর সাব আমরা আজি রওনা দিচ্ছি । "
রামগড়ে দয়া আর অভিজিতের বেশী আর কাউকে আনলেন না প্রদ্যুম্ন । কয়েকজন কে জিজ্ঞাসা করতে জানা গেলো ঠাকুরের বাড়ী এখান থেকে অনেকটা দূর । অনেক দূর হাঁটার পর একটা গোরুর গাড়ীতে তিনজন উঠে বসলো ।
ঠাকুর সাহেবের হাভেলির কি পরিবর্তন ! এখন পেল্লায় অট্টালিকা । " আসুন এসিপি আসুন । "
" আমায় গব্বরের আস্তানা চেনানোর লোক দরকার । " বললেন এসিপি ।
" আস্তানা আর সেই নেই প্রদ্যুম্ন । জেল পালিয়ে ও এখন ডাকাতি ছেড়ে মাদকের ব্যবসায় লালে লাল হয়ে উঠেছে । ওর তাই এখন দুই মহল্লা বাড়ি । "
" কিচ্ছু ভাববেন না । শুধু দেখিয়ে দিন একবার । "
" ঠাকুরসাব কেমন আছেন ? " পিছন থেকে প্রশ্ন শুনে প্রদ্যুম্ন ও বাকি দুজন তাকালেন ।
" আরে বীরু আর বসন্তী , তোমরা ! "
" অনেকদিন ওর মাসির মুখ দেখেনি । আর আপনার সাথেও দেখা নেই ভাবলাম ঘুরেই আসি একবার ! কিন্তু এনারা ... ও আপনারা সি.আই.ডির তো ! "
" ঠিক ধরেছো বীরু । "
" তো ওনারা কেন ? "
" গব্বর জেল ছেড়ে এক বছর হলো পালিয়েছে আর এসেই ড্রাগসের ধান্দা শুরু করে দিয়েছে । শুনেছি বর্তমান জেলারকে খুন করেছে । যাক তাই ওদেরকে ডাকা ! গব্বর এবার মাদক সেবন করিয়ে গ্রামবাসীদের শেষ করছে ... না কিনলে খুন করছে । তুমি এসেছো ভালোই হয়েছে , ওদের পথ দেখিয়ে দাও । "
" ঠিকাছে । বসন্তী এখানে থাক । চলুন আপনারা । "
" ও বাবা এতো পুরো ফিল্মস্টারের বাড়ি ! " বলে দয়া ।
" ঠিক বলেছেন , শালাকে এবার মেরেই ফিরবো । "
গেটের মুখে দুই পাহাড়াদারকে দয়া অভিজিৎ ঘায়েল করে ভিতরে ঢুকলো ।
" স্যার আমি নীচের তলায় লোকগুলোকে দেখছি বীরুর সাথে । " বলে অভিজিৎ ।
ওপরের ঘর তখন দরজা বন্ধ দেখে প্রদ্যুম্ন বলে , " দরজাটা ভেঙ্গে দাও দয়া । "
এক লাথিতে দরজা পপাত চ । গব্বর আর দুই সাঁকরেদ বন্দুক নিয়ে খাড়া । দয়া কায়দা করে পিস্তলটা নামানোর ভঙ্গি করে ডিগবাজি খেয়ে ওদের পা লক্ষ্য করে গুলি করলো । বন্ধুক পড়তেই ওরা মেঝেতে বসে পড়লো ।
নীচের ঘরে কটা লোককে শায়েস্তা করে মাদক দ্রব্য সিজ করতে কিছুক্ষণ ব্যস । গব্বরকে ঠাকুরের কাছে এনে প্রদ্যুম্ন বলে , " এই নিন ঠাকুর । "
" বেশ , ওকে এবার ছেড়ে দাও , আমি হিসেবটা মেটাই । "
" না তা হয় না । ওর ফাঁসির বিচার হওয়ার চেষ্টা করবো । "
" এসিপি স্যার , আপনি জানেন না , ও আবার বেরিয়ে আসবে ! " বলে বীরু ।
" তা হয় না বীরু ! "
" হয় নিশ্চয়ই হয় । " বলে বীরু ।
" এর অনুমতি আমরা দিতে পারি না । " বলে অভিজিৎ ।
সুযোগ পেয়ে গব্বর প্রদ্যুম্নের পিস্তল ছিনিয়ে পালাতে গেলে ভিতর থেকে ঠাকুরের বৌমা এসে একটা বন্দুক হাতে বেরিয়ে সজোরে নিশানা করে ট্রিগার টিপে দেয় । গুলিটা পিঠে লাগতেই একটা তৃপ্তির হাসি হাসে বৌমা ।
" মাফ করবেন বাবা ! এটা করতে দেরী করে দিলাম । "