দাম্পত্য
দাম্পত্য
দিন আর রাতের সন্ধিক্ষণে যখন আলো আঁধারির খেলা, পাখীরা ডানা ঝাপটিয়ে ছোটে আপন আপন বাসায়, পশ্চিম আকাশে আবছা আলোর মাঝে উঁকি দেয় শেষবেলার সূর্যের নিভু নিভু রক্তিম আভা, সুমনা রোজ বারান্দায় এসে বসে। এই সময়টা তার একান্তই নিজস্ব। একসময় কত কেঁদেছে সে, আজ আর তার মনখারাপ করে না। মনই নেই তার মন খারাপ। সে যে এখন যন্ত্র কেবল, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা-যত্ন, সংসার দেখভাল, স্বামীর সুবিধা অসুবিধা দেখা আর সন্তানপালন, এই হল তার দৈনন্দিন কাজ। স্বামীর প্রয়োজনে স্বামীর পাশে তার ডাক পড়ে, সামাজিকতা রক্ষার্থে। সুমনা জানে তাকে নিয়ে ফিসফাস হবে চারিদিকে, তবু যেতে হয় ভালবাসাবিহীন সম্পর্ককে হাসি নামক অলংকার দিয়ে ঢেকে সমাজের চোখে দৃষ্টিকটু না দেখায় যাতে। ডাক্তার স্বামীর নার্সের সঙ্গে সম্পর্কের কথা হাওয়ায় ভেসে আসে তার কাছে। তবু তাকে নীরবে ধর্ষিত হতে হয় প্রতি রাতে স্বামীর দ্বারা। সেই নার্সের সামনেও তাকে সুখীর অভিনয় করতে হয়। যদিও সে জানে, নার্সটি মুখ বেঁকিয়ে দাঁত কাত করে হাসে, আর জানে কত সুখে ভরে আছে তার জীবন।
তবু সে সিঁথিতে সিঁদুর পড়ে রোজ। মঙ্গলকামনা! কী জানি, হয়তো বা অভ্যাস। তার সিঁথির সিঁদুর সকলকে বলে দেয় সে ডাক্তার অরুণ রায়ের স্ত্রী আর রাতের বিছানা জানে তাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা।