বিশ্বাসঘাতকতা
বিশ্বাসঘাতকতা


মিলন,মনীষ আর রাহুল তিন বন্ধু। এদের মধ্যে রাহুলের অবস্থা একটু ভাল। পড়াশুনা শেষ করে চাকরীর দুর্মূল্য বাজারে কেউই কিছু করে উঠতে পারেনা। তিনজনে মিলে রাহুলদের বাড়িতেই একটি ব্যাগ তৈরির কারখানা শুরু করে।মিলন ও মনীষ সামান্য কিছু আর বাকিটা বলতে গেলে রাহুলই দিয়ে ব্যবসাটা দাঁড় করাতে চেষ্টা করে।কথা হয় লভ্যাংশ থেকে কিছুকিছু করে রাহুলকে তারা শোধ করবে।তিনবন্ধু মিলে কাঁচামাল সংগ্রহ করা,নানান মার্কেটে ঘুরে ঘুরে বিক্রির জন্য দোকান ঠিক করা সবই আস্তে আস্তে গুছিয়ে নেয়।বেশ ভালোই চলতে লাগে ব্যবসা।ইতিমধ্যে রাহুলের মাতৃবিয়োগ হয়। তাকে মায়ের কাজের পূর্ব পর্যন্ত ব্যবসা নিয়ে ভাবতে নিষেধ করে অপর দুই বন্ধু মনীষ ও মিলন।এরই মাঝে মিলন চাকরীর একটি পরীক্ষা দিতে চেন্নাই যায় দিন সাতেকের জন্য।মনীষ হয়তো এমন একটি সুযোগের অপেক্ষায় করছিলো বা এমন সুযোগ আসাতে সে এটাকে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগায়।সে নিজের নামে বিলবই ছাপায় একটি প্যাডও তৈরি করায়;প্রতিটা দোকানে পেমেন্ট আনতে যেয়ে নিজেকে মালিক ও রাহুল, মিলনকে কর্মচারী বানিয়ে সই-সিল সমেত তাদের রসিদ দেয় পুরো টাকা আদায়ের পর।বলাবাহুল্য পুরো টাকাটাই সে নিজ হস্তগত করে।
মায়ের পারলৌকিক কর্ম শেষ হয়, এদিকে মিলনও চেন্নাই থেকে চাকরীর পরীক্ষা শেষে ফিরে আসে।কাজের বাহানা দিয়ে মনীষ, রাহুল ও মিলনকে পেমেন্টের জন্য মাকেটে পাঠায়।সেখানে পৌঁছে তারা সবকিছুই জানতে পারে এও দেখে মনীষ একার নামেই ট্রেডলাইসেন্স বের করেছে বিলবুক,প্যাড সবকিছুতেই শুধু মনীষের নাম।হতভম্ভ হয়ে যায় দুই বন্ধু।এত বড় বিশ্বাসঘাতকা!শুধুমাএ টাকার লোভে ছেলেবেলার বন্ধুত্বকে অস্বীকার করা?এত লোভ মনিষের? ছি! ছি! এর একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে এটা ভেবেই দুই বন্ধু বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।কিন্তু যতই তারা বাড়ির কাছাকাছি আসতে থাকে ততই তাদের রাগ কমতে থাকে;একসাথে তিনবন্ধুর কাটানোর সময়গুলি মনে পড়তে থাকে।একসময় রাহুল ও মিলন দুজনেই একসাথে হেসে ওঠে সেই পুরানো দিনের কথা মনেকরে।
বাড়িতে ফিরে রাহুল ফোন করে মনীষকে জানায়,"যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কারখানাটি অন্যত্র সরিয়ে নিস;কারন আমার ও মিলনের মাথায় অন্য একটি ব্যবসার প্লান এসছে।"
# নন্দা