নন্দা মুখার্জী

Abstract Others

3  

নন্দা মুখার্জী

Abstract Others

চেষ্টা করে দেখি

চেষ্টা করে দেখি

2 mins
676



 প্রায় বছর সাতেক পরে যেন মুখোমুখি সংঘর্ষ | ভিড়ে ঠাসা রেলস্টেশনে মৌবনী ব্যাগগুলো নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলো | এক পা এগিয়ে যায় তো তিন পা মানুষের ধাক্কায় পিছনে পাশে সরে যায় | নিজেই তারপর ঠিক করে একটা কোন গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে ভিড় কমলে তারপর এগোবে | ট্রলিটিকে টানতে টানতে আর বাকি দুটিকে কাঁধের দুদিকে ঝুলিয়ে একটা কোনের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়ে ধাক্কা খায় এক ভদ্রলোকের সঙ্গে | দুজনেই একসাথে সরি বলেই যে যার মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে | মৌবনী ভাবে এতগুলো বছরে পারিজাতের একটুও পরিবর্তন হয়নি শুধু একটু চেহারাটা ভারী হয়েছে | আর পারিজাত মৌবনীর মুখের দিকে তাকিয়ে মনেমনে ভাবে এই কটা বছরে বনি যেন আরও অনেক অনেক সুন্দর হয়েছে | কিছুক্ষন চুপচাপ থাকার পর পারিজাতই প্রথম কথা বলে ঠিক সেই আগের কিগো সম্মোধনেই  

--- কি গো এতগুলো ব্যাগ নিয়ে কোথায় চললে ?

 সাত সাতটা বছর পরে দেখা | কিন্তু কতটা সাবলীল পারিজাত | নিজের ব্যাগটা একজায়গায় রেখে মৌবনীর ব্যাগগুলোকে নিয়ে ঠিক তার পাশেই রেখে বলে  

--- একটু সাইডে এসে দাঁড়াও| যা ধাক্কাধাক্কি চলছে তাতে মানুষ পিষে যাওয়ার মত পরিস্থিতি | 

 মৌবনী এতক্ষণ পর বলে  

--- কেমন আছো তুমি ?

 পারিজাত স্বতঃস্ফূর্তভাবে উত্তর দেয়,

--- ফাষ্টক্লাস | আর তুমি ?

--- আমিও ভালো আছি গো | 

 আপ্রাণ চেষ্টা করে মৌবনী নিজেকে পারিজাতের মত স্বাভাবিক রাখতে |

--- এই তোমার হাতে সময় আছে? একটু চা খেতে খেতে গল্প করলে হতনা?

--- হু তা আছে | দাঁড়াও দুকাপ চা নিয়ে আসি |

 পারিজাত চা আনতে এগিয়ে গেলো আর মৌবনী স্মৃতির সাগরে ডুব দিলো | দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল দুই বাড়ির অমতেই | পারিজাত বিয়ের ঠিক ছমাস আগে কেদ্রীয় সরকারের অধীনে চাকরি পেয়েছে | তাদের বাড়িতে আপত্তির প্রধান কারন ছিল মৌবনীরা ছিল কায়স্ত আর পারিজাতরা ছিল ব্রাহ্মণ মুখাৰ্জী | মৌবনীর পরিবারের আপত্তির কারন ছিল ওরা ছিল খাষ বাঙ্গাল আর পারিজাতরা ছিল খাষ ঘটি | দুই পরিবারের এই তালেগোলের কারনে দুজনে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে নেয় | আগে থাকতেই দুজনে মিলে একটা বাড়ি ভাড়া করে খুব সুন্দর করে সংসারটি সাজিয়ে রেজিস্ট্রি করেই বাড়িতে ঢুকে পরে | পরদিন বন্ধুদের সহায়তায় একটি রিসেপশন পার্টির মজাটুকুও দুজনে লুটেপুটে নেয় | দুটো বছর খুব সুখেই থাকে তারা | বাংলায় এমএ করা মৌবনীও একটি সরকারি স্কুলে চাকরি পেয়ে যায় | কিন্তু সমস্যা শুরু হয় মৌবনীর একজন সহকর্মীকে নিয়ে | মাঝে মধ্যেই মৌবনী স্কুলে না গেলে সে বাড়ি এসে উপস্থিত হয় | ফোনও করে কখনো সখনো| স্বামী স্ত্রীর দুজনের ফোনই যে কেউ  রিসিভ করে কথা বলে কারও হাত আটকা থাকলে | কারন দুজনের কোন লুকোচুপির ব্যাপার নেই | অল্প বয়সী একটি ছেলে বিএড করেই সবে চাকরিটা পেয়েছে | মৌবনীকে দিদিমনি বলেই ডাকে | পারিজাতের মনেহয় আকাশ যেন একটু বেশিই গায়ে পরা ছেলে | দুজনের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি এটা নিয়েই | 

  এই নিয়ে মন কষাকষি, হঠাৎ করে পারিজাতের রেগে যাওয়া, মাঝে মধ্যে ঝগড়া করে না খেয়ে অফিস চলে যাওয়ার মধ্যেই মৌবনী খবর দেয় তাদের পরিবারে তৃতীয় জন আসতে চলেছে | পারিজাত আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে | পিতৃত্ব অস্বীকার করে | মৌবনী অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে পারিজাতকে | কিন্তু এতো শান্ত স্বভাবের ছেলেটার হঠাৎ এই পরিবর্তনে মৌবনীও কম আশ্চর্য হয়না | তখন সবে মৌবনীর তিনমাস | স্কুলে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে সে পরে যায় | স্কুলেরই একটি বাচ্চা তখন ক্ষিপ্ত গতিতে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামছে | আর ঠিক তখনই মৌবনী ক্লাস নিতে উপরে উঠছে | বাচ্চাটি এসে মৌবনীর সাথে ধাক্কা খায় | সে তাল সামলাতে না পেরে কয়েকটি সিঁড়ি গড়িয়ে পরে অজ্ঞান হয়ে যায় | স্কুলের ছাত্র , শিক্ষক , শিক্ষিকা সকলের প্রচেষ্টায় তার জ্ঞান ফিরলেও কিছুক্ষনের মধ্যেই তার ব্লিডিং শুরু হয় | সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে নার্সিংহোম যাওয়া, তাকে ভর্তি করা, পারিজাতকে খবর দেওয়া সবকিছুই করে তার সহকর্মী আকাশ | পারিজাত হাসপাতাল পৌঁছে যখন মৌবনীর বেডের কাছে যায় গিয়ে দেখে সেখানে আকাশ দাঁড়িয়ে | সঙ্গে সঙ্গে মাথাটা তার গরম হয়ে যায় | দুদিন পর যখন মৌবনীর ছুটি হয় পারিজাত তাকে নার্সিংহোম থেকে আনতে যায়না | অফিসে বিশেষ কাজ আছে বলে | আকাশই তাকে বাড়ি নিয়ে আসে | বাচ্চাটা না থাকাতে স্বাভাবিক কারণেই মৌবনীর মন ছিল খুবই খারাপ | এইসময় যাকে সবথেকে কাছে পাওয়ার দরকার ছিল সে ই অকারনেই তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে | এই মুহূর্তে আকাশই তার কাছের মানুষ হয়ে উঠেছে | বাড়িতে ফিরে মৌবনী আকাশের কাছে জানতে চায় ,

--- আচ্ছা তোমার আমার প্রতি এতো ভালোবাসা কেন ? কি চাও তুমি আমার কাছে ?

যেহেতু মৌবনীর থেকে আকাশ অনেকটাই ছোট একদিন সেই তার দিদিমনিকে বলেছিলো তাকে তুমি বলেই কথা বলতে | আর নিজেও তুমি করেই বলে | এ নিয়ে স্কুলেও আড়ালে আবডালে একটু হাসাহাসি হয় | বুঝতে পারে মৌবনী সেসব | আর তার জীবনে তো তুমুল ঝড় আজ তাকে নিয়েই | তাই আজ সে প্রশ্নটা করেই ফেললো আকাশকে |

--- আমি তোমায় খুব ভালোবাসি দিদি |

 মৌবনী অবাক হল তার এই সম্মোধনে| সে তো তাকে দিদিমনি বলতো তবে আজ ---

 আকাশ বলতে শুরু করলো  

--- অনেকদিন আগেই বলতে চেয়েছি কিন্তু সেরকম সুযোগ আসেনি | আসলে তোমার মত দেখতে আমার একটা দিদি ছিল | আমি প্রায় চার বছরের ছোট তার | দিদির বিয়ে হয়েছিল কলকাতা থেকে অনেক দূরে | কাকদ্বীপে | কিন্তু দিদি ভাইফোঁটার দিনে প্রতি বছর প্রথম বাস ধরে কলকাতা এসে পৌছাতো শুধুমাত্র বাড়ি থেকে আমায় ফোঁটা দেবে বলে | এক দুদিন থাকতো তখন এসে | সারাবছর আর আসতোনা এমনকি জামাইষষ্ঠীতেও না | শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দিদির বাপেরবাড়ি আসা পছন্দ করতো না | তাদের কথামত বছরের একবারই বাড়িতে আসার অনুমতি মিলেছিল | দিদি ভাইফোঁটার দিনটিই বেছে নিয়েছিল | বছর চারেক আগে এমনই একদিন কাকদ্বীপ থেকে বাড়িতে আসার সময় বাস এক্সিডেন্ট করে দিদি চিরতরে চলে যায় | তোমার মধ্যে আমি আমার দিদিকে খুঁজে পেয়েছি | 

--- এতদিন এই কথাটা আমায় কেন বলোনি | এবার থেকে প্রতি বছর আমি তোমায় ভাইফোঁটা দেবো| আকাশ একটা চেয়ারে বসে ছিল | মৌবনী ডেকে তাকে খাটের উপর বসতে বলে | আকাশের চোখ থেকে তখন তার হারানো দিদির জন্য টপটপ করে জল পড়ছে | মৌবনী উঠে বসে আকাশের চোখের জল মুছিয়ে দিতে যায় আর ঠিক তখনই পারিজাত এসে ঘরে ঢোকে |

--- বাড়িতে বসেও পাপ কাজ করে চলেছো ?পাপের ফল তো শুরুতেই নষ্ট হয়ে গেলো তারপরও সেই কাজেই তোমরা লিপ্ত রয়েই গেলে |

 পারিজাতের কথা শুনে আকাশের সামনে মৌবনী লজ্জা আর ঘৃনায় মাটির সাথে মিশে যেতে লাগলো | কিন্তু কোন প্রতিবাদ না করে আস্তে করে আকাশকে বললো  

--- তুমি এখন এসো| আমি তোমায় ফোন করবো কিন্তু এই বাড়িতে আর এসোনা |

 আকাশ কিছু বলতে চেয়েছিলো পারিজাতকে কিন্তু চোখের ইশারায় মৌবনী নিষেধ করে | আকাশ মাথা নিচু করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় | পারিজাত তখন চিৎকার করে অকথ্য কুকথ্য ভাষা প্রয়োগ করতে থাকে | অসুস্থ্য শরীরে কানে আগুল দিয়ে থাকার মত মৌবনী চুপ করে থাকে | সে ভাবতেই পারেনা পারিজাতের ভিতর এমন একটা কুৎসিত মনের মানুষ লুকিয়ে ছিল | যেহেতু মৌবনী এসে বেডরুমেই উঠেছিল পারিজাত সেদিন রাতে ড্রয়িংরুমেই রাত কাটায় | সারাটা রাত চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে সে বেলা দশটা পর্যন্ত শুয়েই থাকে | পারিজাত অফিসে না খেয়েই বেরিয়ে যাওয়ার পর সে আকাশকে ফোন করে ,

--- ভাই তুমি কি স্কুলে বেরিয়ে পড়েছো ?

 যদি না বেরিয়ে থাকো আমার একটা কাজ করে দেবে ?

--- আরে তুমি বলোনা কি কাজ ?

--- আজকের মধ্যেই আমার জন্য একটা ঘরভাড়া জোগাড় করে দিতে পারবে ?

--- দিদি এই মুহূর্তে তা তো প্রায় অসম্ভব | কার জন্য ? তোমার নিজের কেউ ?

--- আমিই থাকবো ভাই |

  অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলো আকাশ তার দিদিকে | জামাইবাবুর সাথে কথা বলবে বলেও জানালো কিন্তু মৌবনী নাছোড় | সে আর এখানে থাকবেনা | শেষমেষ আকাশ তাকে জানালো তাদের বাড়িতে দুটো রুম আছে | সে চাইলে ঘর না পাওয়া পর্যন্ত তাদের বাড়িতে এসে থাকতে পারে | এ কটাদিন সে নয় মায়ের সাথেই রুমটা শেয়ার করে নেবে | দিন পনেরর মধ্যে একটা কিছু ব্যবস্থা সে করেই দেবে | মৌবনী তাতেই রাজি হয়ে আকাশকে  চলে আসতে বললো তার বাড়িতে | আর এক মুহূর্ত ও সে পারিজাতের সাথে থাকবেনা | কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সে আকাশের সাথে তার ভালোবাসার বন্ধন ছিন্ন করে বেরিয়ে গেলো | অবশ্য সাতদিনের মধ্যেই সে একটি সুন্দর ফ্লাট ভাড়া পেয়েও গেলো আকাশের সাহায্যেই | 

 তারপর কেটে গেছে সাতটি বছর | মৌবনী ট্রান্সফার নিয়ে কলকাতা ছেড়ে চলে গেছে বসিরহাট একটা স্কুলে | প্রতিবছর ভাইফোঁটার দিনে সে আসে আকাশকে ফোঁটা দিতে | তখন এসে সে তার ভায়ের বাড়িতে এক দুদিন কাটিয়ে যায় |তিনবছর হল আকাশের মা আকাশকে ছেড়ে চলে গেছেন | মৌবনী নিজে পছন্দ করে তার ভায়ের বিয়ে দিয়েছে | গ্রামের মেয়ে | মাধ্যমিক পাশ করেছে | বড় ননদ এসে যখন তার ভায়ের বাড়িতে থাকে সে তখন তাকে দেবতা জ্ঞানে সেবাযত্ন করে | খুব লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে ললিতা |

 স্মৃতির সাগরে ডুব দিয়ে নিজেও যেন কোথায় হারিয়ে গেছিলো | তাকিয়ে দেখে পারিজাত চা নিয়ে আসছে | ফোনটাও ইতিমধ্যে বেজে ওঠে | দেখে আকাশ ফোন করেছে |

--- দিদি তুমি কোথায় তোমাকে তো খুঁজেই পাচ্ছিনা |

--- আমি যে তোকে বললাম আমি একাই পৌঁছে যাবো তাও তুই নিতে এসেছিস ?

 আকাশকে এখন তার দিদি তুইই বলে | পারিজাত এসে বলে ,

--- বাব্বা চায়ের দোকানে লম্বা লাইন | তাই দেরি হয়ে গেলো | চা খেতে খেতে পারিজাত টুকটাক কথা বলেই চলেছে | মৌবনী হু না তাই উত্তর দিয়ে চলেছে | আকাশ তার দিদির কথামত নির্দিষ্ট জায়গাতে আসতে গিয়ে ওদের দুজনকে একসাথে দেখে একটা থামের আড়ালে লুকিয়ে পরে | কারণ সে তার দিদি ও জামাইবাবুকে মিলিয়ে দেওয়ার কাজটা অনেক আগে থাকতেই করে রেখেছে | করছিলো শুধু সময়ের অপেক্ষা | হয়তো আজকে সেই সময়টা এসেছে | প্রথম বছরের ভাইফোঁটার ছবিগুলোর প্রিন্ট আউট করে এনে জামাইবাবুর বাড়ির লেটার বক্সে ফেলে আসার পর তিনি স্কুলে এসে আকাশের কাছে ক্ষমা চেয়ে বারবার মৌবনীর ঠিকানা জানতে চেয়েছে | কিন্তু আকাশ তার দিদিকে ছুঁয়ে কথা দিয়েছিলো কোনদিন কাউকে সে তার ঠিকানা দেবেনা | শুধু জামাইবাবুকে জানিয়ে ছিল একদিন নিশ্চয় আপনার সাথে আমার দিদির দেখা হবে আর সেদিনই আপনি দিদির দুটি হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে নেবেন | দিদি আপনাকে ভীষণ ভীষণ ভালোবাসে | 

 চা খেতে খেতে একথা সেকথার পর পারিজাত সরাসরি বলে ,

-- জীবন পথে চলতে গেলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অনেক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় | আমি ভুল করেছিলাম | আমাকে ক্ষমা করা যায়না ? আমরা কি পারিনা আর একবার চেষ্টা করে দেখতে |

--- মৌবনী প্রথমে অবাক হলেও পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে ,

-- ভেঙ্গে যাওয়া ঘরটা হয়তো তাতে জোড়া লাগবে কিন্তু মনটা ? সেই মনটা কি আর ফিরে আসবে ? একটা সম্পর্ক দাঁড়িয়ে থাকে বিশ্বাসের উপর | ঠিক যেমন একটা বাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে একটা ভিতের উপর | ভিতটাই যদি নড়বড়ে হয় বাড়িটা তো ভেঙ্গে পড়বেই| আর সংসার জীবনে বিশ্বাসটা হারিয়ে গেলে ভালোবাসাটাও পর্যুদস্ত হয় | সম্পর্ক আর কখনও জোড়া লাগেনা | 

 পারিজাত হঠাৎ করে মৌবনীর হাত দুটো ধরে বলে ,

--যে শাস্তি দেবে আমি মাথা পেতে নেবো | কিন্তু আমায় তুমি আর একটিবার সুযোগ দাও |

 আকাশ এসে হাসতে হাসতে বলে ,

--- তাহলে জামাইবাবু ট্যাক্সিটা কার ঠিকানায় নিয়ে যেতে বলবো ?দিদি তো আবার কলকাতা বদলি হয়েছে | একটা ফ্লাটও কিনেছে | দুজনেই বরং দিদির ফ্ল্যাটেই চলো | তোমার তো ভাড়া বাড়ি | কাল গিয়ে আমি জিনিজপত্র নিয়ে আসবো|

--- বনি তোমার মতামতটা--

--- দিদির আবার কি মতামত - দিদি তো এই দিনটার আশাতেই বসে আছে | মাঝখান থেকে ছুঁয়ে দিদিকে প্রতিজ্ঞা করার জন্য কয়েকটা বছর নষ্ট হয়ে গেলো |

--- আকাশ এবার কিন্তু তুই আমার কাছে মার খাবি |

 আকাশ ট্যাক্সি নিয়ে এসে হাজির হয় | দিদির ফ্লাট | লোকেশন জানিয়ে ট্যাক্সির দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে দিদিকে বললো ,

-- দিদি এখানে আমার একটা দরকারি কাজ পরে গেছে | তোমরা চলে যাও আমি কাজটা সেরেই আসছি | কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ড্রাইভারকে ইঙ্গিতে গাড়ি ছাড়তে নির্দেশ দিলো | 

 মৌবনী আর পারিজাত পুনরায় একটা ভালোবাসার ঘর বাঁধতে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে লাগলো |



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract