Epsita Deb

Abstract Tragedy Others

3  

Epsita Deb

Abstract Tragedy Others

অগ্নিস্নাতা ১১

অগ্নিস্নাতা ১১

3 mins
20



  

ভীষ্ম বলেন আপনি আমার শিরচ্ছেদ করুন কিন্ত আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে বলবেন না।আপনি আমার গুরু আপনার সঙ্গে কিভাবে যুদ্ধ করবো।।

বাল‍্যকালে আমি আপনার কাছ থেকেই অস্ত্রশিক্ষা লাভ করেছি।


এরপর ভীষ্মকে বদ্ধভূমিতে দেখা গেল।তিনি রথে উপবিষ্ট ছিলেন।কিন্তু পরশুরাম মাটিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।ভীষ্ম পরশুরামকে বলেন আপনি মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন রথে উঠে আসুন আর বর্ম ধারন করুন।


পরশুরাম হেসে বলেন ভীষ্ম এই পৃথিবীর মাটি আমার রথ,আর বেদ আমার ঘোড়া,বায়ু সারথী।বেদ মাতা গায়েত্রী ,সরস্বতী,সাবেত্রী আমার বর্ম।তাদের দ্বারা সুরক্ষিত হয়ে আমি যুদ্ধ করবো‌।

এরপর পরশুরাম মন থেকে এক অতি বিচিত্র এবং বিশাল রথের নির্মাণ করলেন।সেই দিব‍্য রথে রয়েছে সব প্রকার অস্ত্রের সমাহার ।

ত্ররপর ভীষ্ম রথ থেকে নেমে আসে এবং পরশুরামের নিকট গিয়ে আশীর্বাদ নিয়ে নিজ রথে ফিরে আসি।


তারপর তাদের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ আড়ম্ভ হল।সূর্যোদয় এর সঙ্গে যুদ্ধ আড়ম্ভ হয়।আর সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলে।বেশ কিছুদিন ধরে এইযুদ্ধ চলছে।কিন্তু ফলাফল কিছু নির্ণয় হয় নি ।ভীষণ যুদ্ধের অবসান পিতৃপুরুষ,দেবতা সকলের অনুরোধে হয়।


অবশেষে পরশুরাম ঐ স্থান ত‍্যাগের আগে অম্বাকে বলে আমি ভীষ্মকে পরাজিত করতে ব‍্যার্থ।ব্রহ্মাস্ত প্রয়োগ করতে উদ‍্যত হলে দেবতারা বাধা দেয় ।আমি আর শাস্ত্রসম্মত ভাবে এরসঙ্গে যুদ্ধ করতে পারবো না কন‍্যা অম্বা তুমি অন‍্য কাউকে খোঁজ।


অম্বা হিমালয় পর্বতে গিয়ে কৃচ্ছসাধনে রত হলেন।তুষারাচ্ছাদিত স্থানে উপবিষ্টা হয়ে একাগ্র চিত্তে দেবসেনাপতি কার্ত্তিককে আহ্বান করলেন।শিবপুত্র কার্ত্তিক শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা। আর তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ বীর।মহাদেব পুত্র কার্ত্তিক অম্বার আহ্বানে সন্তুষ্ট হয়ে আবির্ভূত হলেন। 


অম্বা নিজ কথা কার্ত্তিককে জানানোর পর ভীষ্মকে বধ করার জন‍্যে অনুরোধ করেন।কিন্তু শিবপুত্র দেবসেনাপতি জানান আমি যখন দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলাম তখন তখন ন‍্যায় বিচারের আকাঙ্ক্ষায় যা কিছুকে অন‍্যায় বলে মনে হয়েছিল সেই সবকিছুকে হত্যা করেছিলাম ।তারপর আমি দাক্ষিনাত‍্যের বহমান স্রোতস্বিনীতে আমার রক্তমাখা তরবারী ধৌত করি ,সঙ্গে হিংসা পরিত‍্যাগ করেছিলাম।তারপর থেকে আমি কুমার পর্বতে অবস্থান করি।তাই রাজকুমারী আমি তোমার দুর্দশা ও ভক্তি দেখে প্রসন্ন হয়ে তোমাকে আশীর্বাদ প্রদান করছি ।তিনি একটা গোলাপফুলের মালা দেন।বলেন এই মালা ধারনকারীই ভীষ্মের অন্তের কারন হবে।


অম্বা বহু আশা নিয়ে আবার বেড়িয়ে পড়লেন এমন কাউকে খুঁজতে যে ভীষ্মকে হত‍্যা করতে পারবে।কিন্তু কেউ সেই মালা স্পর্শ করতে পর্যন্ত রাজি হলেন না।ততদিনে সকল মহাপদে ও অম্বার দুর্নাম ছড়িয়ে পড়েছে।গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র গমনকালে অম্বাকে কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ।কেউ তার কাছে আসে না।এই পরিস্থিতিতে রাজকুমারী অম্বা পাঞ্চল নগরীতে এসে উপস্থিত হলেন ।কিন্তু পাঞ্চল রাজ তারসাথে দেখা করতে অসমর্থ হলে অম্বা মালাটিকে একটি থামে ঝুলিয়ে রেখে বিষণ্ণ হয়ে পুনরায় হিমালয়ে প্রস্থান করে।


রাজকুমারীর রূপ লাবণ্য সব কিছু আজ আর নেই।কঙ্কালসার চেহারায় সেই সময় প্রতিশোধের আগুন প্রজ্বলিত হচ্ছিল আর হয়তবা মনে হয়েছিল যদি পুনঃজন্ম বলে কিছু থাকে তবে ভীষ্মের সঙ্গে সেখানে মিলন সম্ভব।কারন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার দরুন এইজন্মে ভীষ্ম যখন আমাকে বিবাহ করতে অসমর্থ সেখানে জন্মান্তরে এমন কোনো বাধা থাকবে না,তাই আমাদের মিলন ঘটবেই,,,,,,,,,,,


এরপর অম্বা কঠোর তপস‍্যায় রত হন।তার তপস‍্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব প্রকটিত হয়ে অম্বাকে বর দেন পরবর্তী জন্মে তুমি হবে ভীষ্মের মৃত্যুর কারন।এই জন্মের স্মৃতি তোমার স্মরনে থাকবে।আর তোমার সকল ইচ্ছে পূরণ হবে 


এরপর অম্বা যমুনার তীরে এক চিতা প্রস্তুত করে।তাতে অগ্নি সংযোগ করে।তখন অম্বা নয়নসমুখে সেই প্রয়শ দৃশ্যমান স্বপ্নটি স্মরনে আসে। 



ঘন অন্ধকার ,একটা জ্বলন্ত চিতা,এক জটাধারী গেরুয়া বসন পরিহিতা রমনী এগিয়ে চলেছে তার দিকে।কিন্তু রমনীর মুখ স্পষ্ট নয় আবছা,,,,

জ্বলন্ত অগ্নির দিকে সে ধীর গতিতে এগিয়ে চলে।তারপর সেই অগ্নিতেই আত্মাহুতি___________

তবে আজ সেই রমনীর মুখ স্পষ্ট!সে আর কেউ নয় স্বয়ং রাজকুমারী অম্বা।স্বপ্নাদৃশ‍্যনুযায়ী অম্বাও একই রকম কার্য করে।ধীরেধীরে সে এগিয়ে যায় জ্বলন্ত চিতার দিকে_____________

সেই সময় অম্বার মনে আবার আসব ফিরে এই ভাবনাই বিরাজমান ছিল।এরপরই অম্বা জ্বলন্তচিতাতে প্রবেশ করেন,এইভাবে অম্বা হলেন অগ্নিস্নাতা।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract