উপেক্ষিতাঈপ্সিতা দেব
উপেক্ষিতাঈপ্সিতা দেব
🌿 উপেক্ষিতা💚
✍ ঈপ্সিতা দেব
মেধাবী আরাধ্যা রায়চৌধুরী বাড়ির অন্যান্য পুত্রসন্তানদের থেকে কোন অংশে কম ছিল না,বরং একটু বেশি ভালো ছিল।তবুও কন্যা সন্তান হওয়ার দরুণ মা ও বাবা ছাড়া পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছে সেই ছোট থেকেই আরাধ্যা উপেক্ষিত হচ্ছে।নীরবে সে চোখের জল ফেলত।কিন্তু সেই দিকে কারো নজর ছিল না।ও কন্যা সন্তান -- আজ নয় কাল পরের বাড়ির বৌ হবে ।সুতরাং বাড়ির ছেলের থেকে বেশি কেন কেউ ওকে বেশী গুরুত্ব দেবে?
অরণ্য বোন আরাধ্যাক খুব ভালোবাসে,যতটা পারে ওকে আগলে রাখে।অরণ্য উচ্চমাধ্যমিকের পর দিল্লিতে পড়তে যায়।তখন থেকে আরাধ্যর উপেক্ষিত হওয়াটা দ্বিগুণ হয়।উচ্চমাধ্যমিকের পর ওকে আর কলেজে না ভর্তি করে বিয়ের পিড়িতে বসানোর প্রচেষ্টা চলতে থাকে।এবার আরাধ্যা বেঁকে বসে।সেই সময় ও দাদা অরণ্যকে জানায় তখন ওদের মামাকে মেয়েটা পাশে পায়।মামা ছিলেন একজন উকিল, আরাধ্যকে উনি নিজের কাছে নিয়ে যান।এখন আরাধ্যা ল কলেজের ছাত্রী।
_______ পাঁচটা বছর কেটে যায়।এর মধ্যে অনেক কিছু বদলে গেছে।অরণ্য একটা কম্পানিতে চাকরি পেয়েছে।সে নিজের পছন্দের মেয়ে সৃজিতাকে বিয়ে করে দিল্লিতে থাকে।অরণ্যের মতো বাড়ির বাকি ছেলেরা কর্ম সূত্রে বাড়ির বাইরে।বাড়ির বয়স্ক সদস্যরা এখন শুধু ঐ বাড়িতে থাকে।ছেলেদের লক্ষ্য পুকুর ও বিশাল বাড়িটা প্রোমোটারের হাতে তুলে দেওয়া।মোটা অঙ্কের অর্থ বুঝে নেওয়া।এই নিয়ে অশান্তি তুঙ্গে।বয়স্ক সদস্যরা এই বাড়ির বিক্রিটা চায় না।আরাধ্যা মায়ের কাছ থেকে এই সব জানতে পারে।
পরিবারের সদা উপেক্ষিতা মেয়েটি প্রোমোটারের দৃষ্টি থেকে ওদের বিশাল বাড়িটা রক্ষার চেষ্টা করতে থাকে ।অবশেষে বছর দুয়েকর আইনি লড়াইয়ের বেড়া জাল টপকে আরাধ্যর প্রচেষ্টায় ওদের বিক্রির পরিকল্পনা ব্যার্থ হয়ে যায়।মাথার উপরে ছাদটা সুরক্ষিত হতে বাড়ির সবার আরাধ্যার প্রতি ধারনা বদলায়।