১৫ মিনিট
১৫ মিনিট


রাত ১১:৪৫ :
জগৎপুর থানায় বসে ইন্সপেক্টর রুদ্রনীল বাগচি হঠাৎ একটা অজানা নম্বর থেকে কল পেলেন ।
" হ্যালো ইন্সপেক্টর বাগচি বলছেন ? "
" হ্যাঁ বলছি , বলুন । "
" দুদিন আগে রত্নলাল খুনের তদন্ত করছেন তো আপনি ? "
" হ্যাঁ হ্যাঁ , বলুন । "
" যে ছেলের দল একের পর এক সমাজবিরোধী কাজ করে চলেছে তাদের ঠিকানা আমি জেনে গিয়েছি । "
" বলুন ঠিকানা । "
" ১১ নম্বর কীর্তন পল্লীর শিবমন্দিরের পিছনের পোড়ো ... আঃ ... । "
" হ্যালো , হ্যালো । " ফোন কেটে গেলো ।
রাত ১১:৫০ :
নিজের সাথে আরও দুজন অন ডিউটি অফিসারকে নিয়ে কীর্তন পল্লীর পোড়ো বাড়ির দিকে রওনা দিলেন । শিবমন্দিরের কাছে এসে প্রত্যেকে সার্ভিস রিভলভারটা বের করে সন্তর্পণে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলেন ।
দরজা মচমচ করছে । ঘূণ ধরা দরজা দিয়ে এগিয়ে ভিতরে যেতেই একটা আওয়াজ শুনলেন বাগচি ।
" ওয়েলকাম ওয়েলকাম । "
" তোমরা আর পালাতে পারবে না ! ইউ অল আর আন্ডার অ্যারেস্ট । " বন্দুক উঁচিয়ে ধরলেন মিস্টার বাগচি । "
রাত ১১:৫৫ :
যে ছেলেটিকে বাগচি প্রথম দেখেন সেই-ই তাঁদের সকলকে ভেতরে নিয়ে আসে । বলে তারা ধরা দিতে প্রস্তুত , তাদের দলের ছেলেই খবর দিয়েছে , তারা জেনেছে পরে । নইলে আগেই মেরে দিত ।
ভিতরে গিয়ে আরও চারজনকে দেখলেন রুদ্রনীল । ঘর জুড়ে পোস্টার , ফেস্টুন , ঝাণ্ডা এসবে ভর্তি ।
" হ্যান্ডস আপ । " বললেন রুদ্রনীল । বাকি পুলিশও বন্দুক উঁচিয়ে রয়েছে ।
" কি স্যার ? এত তাড়া কেন ? এমনিতে তো ধরতে পারতেন না । নেহাত শ্যামল বেইমানি করলো তাই । " বলে উঠলো একটা ছেলে ।
" যা করার তাড়াতাড়ি করো , সময় নেই হাতে । "
" আচ্ছা ঠিকাছে , এই চল তোরা সব । " বলে ওই ছেলেটা হাতের সিগারেটটা আধজ্বলা অবস্থায় ফেলে দিলো ।
রাত ১২টা:
ঠিক গেটের থেকে আধ মিটার দূরে , অমনি বীভৎস শব্দ করে গোটা বাড়ি জ্বলে উঠলো । ছিটকে গেলো সব ছেলেগুলো । রুদ্রনীল বাবু একটা লাফ দিয়েছিলেন কিন্তু বাঁচতে পারলেন না । পুরো মুখ ঝলসে গিয়েছিলো ।
সকালবেলা সতীর্থ রোডের উকিলবাবু সবে কাগজে হেডলাইনটা পড়ছেন , " দুষ্কৃতি ধরতে পুলিশ সহ মোট ১০ জনের বোমা ফেটে মৃত্যু । "
সম্পূর্ণ পড়ার পর বাঁ গালের উপর হাত বুলিয়ে ম্লান হাসলেন । দুবছর আগে দিওয়ালির দিন হওয়া দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ গালও পুড়ে গিয়েছিলো ।
এমন সময় পাশের ঘরে কার যেন গলা শুনলেন , " রুদ্রনীল বাগচি আছেন ? "
কে জানে কোনো মক্কেল হবে বোধহয় । সেক্রেটারি এসে খবর দিলে কাগজ ছেড়ে পাশের ঘরে গেলেন ।