প্রতীক্ষার অবসান
প্রতীক্ষার অবসান
আদিবাসী ব্যাধের কন্যা শবরী প্রতীক্ষা করে ছিলেন ।
ফাল্গুনের কৃষ্ণা পঞ্চমীতে নয়,সপ্তমীতে জন্মেছিলেন।
পবিত্র ভাবে তিনি মুনির পূজো পাঠ লক্ষ্য করতেন।
নিজেকে অস্পৃশ্য জেনে,ওনার যাবার পথের ধুলো, ঝেড়ে, ঝেড়ে, রোজ, রোজ পরিষ্কার করে রাখতেন।
নীরব সেবায় তিনি হন মাতঙ্গ মুনির স্নেহভাজন ।
সেদিন তার সত্যিকারের মনের বাসনা পুরণ হয়,
যেদিন তিনি পেয়েছিলেন ওনার আশ্রমে আশ্রয়।
হতে পারে বটে, মহাবিশ্বে বর্তমান অনন্ত এই সময়, কিন্তু পার্থিব কোনো অনুভূতি কখনও অনন্ত নয়। হ্যাঁ, কারোর জন্যে প্রতীক্ষারও একদিন অবসান হয় । হয় বেঁচে থাকতে, অথবা মৃত্যুতে পরিনতি লাভ হয়। মাতঙ্গ মুনির বলা অমূল্য সেই কথা গুলোর মতই, নিজের বিশ্বাসটুকু যদি হীরের মতোই দামী মনে হয় !
মন মন্দির খানা যদি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা যায় ! সময় হলে, মনের টানে একদিন সে আসবে নিশ্চয়। রামের মতোই সহজ ভাবে এসে বসবে দীন আসনে, বুঝবে, আসলে দীন নয় তা,রাজ সিংহাসন সেই মনে। নিজে আগে পরখ করে তবেই সে তাঁকে খেতে দেবে। আপন ভেবে এঁটো খাবার রাম অনায়াসে খেয়ে নেবে। এতো আপন ভাবার মতো তাঁর কেউ নেই আর ভবে।
ততদিনে বাইরের রূপ হয়তো পুরোপুরি ঝরে গেছে । বয়সের ভারে তখন সোজা কোমরটা নুয়ে পড়েছে। বাতের ব্যাথায় অহরহ তার পা দুটো করে টনটন । কবে পেতে দেবে নিজের হাতে সেলাই করা আসন। তবু আশ্রমের প্রবেশ পথটুকু ঝেড়ে পরিপাটি রাখবে ।
মনে মনে সে ভাববে,যে কোনো দিন তার মনের রাজা এসে পড়বে। বলি রেখায় ভরা তার মুখটা সেদিন খুশিতে জ্বলবে। জন্ম স্বার্থক কথাটা ভেবে এবার শান্তিতে সে মরবে।
