STORYMIRROR

Bisweswar Mahapatra

Abstract Comedy Romance

3  

Bisweswar Mahapatra

Abstract Comedy Romance

যোগাযোগ

যোগাযোগ

3 mins
350


এই প্রথম বৃষ্টিটাকে খুব ভালো লেগেছে অস্মিতার৷

সদ্য বিবাহীতার জীবনে এ এক আনন্দের দিন হয়ে দিনলিপিতে গ্রথিত থাকবে৷

আজ সারাদিন সৈকত বেলাভূমিতে সাগরের হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি স্নাত হওয়ার মজাটাই আলাদা৷

এর জন্য যদি প্রসস্তি করতে হয় তো-তার সিংহ ভাগ প্রসংসা পাওয়ার অধিকার আছে শ্বশুরের৷

আজ অস্মিতার কপালের সিঁদুর আর এই মধুচন্দ্রিমার সফলতা এনে দিয়েছে তার শ্বশুর সুনয়ন সিংহরায়৷

কলেজ জীবনের প্রথম প্রেম অংশুমিতাভ কে

অস্মিতার পরিবার মেনে নিতে পারছিলোনা ৷

অংশুর বেকারত্ব নিয়ে হাঁসিঠাট্টা হতো,এমন কী ওদের বাড়ির থেকে অস্মিতার জন্য চাকুরীজীবি পাত্রও দেখা হয়েছিলো৷

অস্মিতা তাতে নীমরাজি৷

সে অংশুকে কখনওই হারাতে চাইতো না৷

বাড়ির সকলের অসহযোগীতা অস্মিতার ভালোবাসাকে টুকরো-টুকরো করতো প্রতিদিন৷

মনভাঙা অস্মিতার জীবনে একদিন অকস্মাৎ দেখা হয়ে যায় সুনয়ন সিংহরায়ের৷পেশায় ব্যবহারজীবি হলেও অমায়িক এই মানুষটাই অস্মিতাকে খুঁজে বার করে৷জানতে চায় তার মনের খবর৷

অস্মিতা কে আশ্বস্থ করে যে—মা তোমার কোন চিন্তা নেই,আমিই তোমার পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলে এর হাল নিরসন করবো৷ঠিক তাই করেওছেন৷

আজ অংশু একটা ছোটখাটো কোম্পানির মালিক৷ তার প্রভাব তার বাবার বাড়িতেও যে পড়েছে সেটা অস্মিতা জানে৷

আজ অস্মিতার বাস যাত্রার সেই যোগাযোগ টা মনে পড়ে যাচ্ছে বারবার৷

তার ভালোবাসার দিনগুলিতে অংশু একবারও পরিবারের পরিচয় দেয়নি৷তবুও এ কেমন যোগাযোগ ভাবতে গিয়ে অবাক লাগে অস্মিতার!

 প্রায় অসম্মতির মতো করে অস্মিতার জেদ মেনে বিয়েটা দিয়েছিলো৷অস্মিতার বাড়ির লোকজন বিয়ে রাতে অংশুমিতাভ কে প্রথম দেখে৷সেখানে কি বা আলাপ চারিতা হবে৷বিয়ে পর সেই রাতে ওরা মন্ডপ থেকে সরাসরি অংশুমিতাভ-র বাড়ি চলে যায়৷তাই আর বিশেষ কিছূ জানা সম্ভব হয়নি৷

কি একটা কাজের জন্য দ্বিরাগমনটাও অনেক দেরী করে হয়েছিলো৷ফলত অংশুমিতাভ কে সকলের না চেনারই কথা৷সেদিন দ্বিরাগমন বলুন আর দেখা করতে আসাই বলুন ওরা দুজনে অস্মিতার বাবার বাড়ি এলো৷নিছক মজা করার জন্য অংশুমিতাভ অস্মিতাকে একটু দুরে থাকতে বলে নিজে অস্মিতাদের বাড়ি পৌঁছে অস্মিতার খোঁজ করল৷ বাড়ির সকলে অংশুর পরিচয় জানতে চাইল৷সে পরিচয় দিলো একটা সময় সে আর অস্মিতা কলেজে পড়ত কিন্তু,বিদেশে একটা কোম্পানির কাজ পাওয়ায় দীর্ঘদিন তার সঙ্গে দেখা হয়নি 

তাই—

অস্মিতার সরল বিশ্বাসী বাবা মা অংশুকে তার বিয়ের যাবতীয় ঘটনা বর্ননা করল৷আর তাদের জামাই যে এখনো পর্য্যন্ত তাদের বাড়ি আসেনি সে বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করল৷

ইতি মধ্যেই অস্মিতা হন্তদন্ত হয়ে এসে —অংশুকে উদ্দেশ্য করে বলল—কি রে অংশু তুই কবে বিদেশ থেকে ফিরলি?

এই আজ ফিরেছি৷আর ফিরেই সোজা তোর সঙ্গে দেখা করতে চলে এলাম৷আর তোর বাড়িতে এসে শুনলাম তোর বিয়ে হয়ে গিয়েছে৷তাই ভাবছিলাম ফিরেই যাবো এমন সময় তুই হন্তদন্ত হয়ে এলি৷

তা এসেছিস যখন তুই এখন এ বাড়িতে থাক৷বলেই অস্মিতা তার মায়ের উদ্দেশ্যে বলল—মা,ওমা,তুমি রান্নাবাড়ি চাপিয়ে ফেল৷অংশু এ বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করবে৷

অস্মিতার মা আবারও বাইরে এলো অস্মিতার গলা শুনে৷এসেই বিস্ফারিত নয়নে বলল—এমা তুই কোন খবরাখবর না দিয়ে এভাবে আসলি তা জামাই কোথায়?

সে আসতে পারবে না৷তার নাকি অনেক কাজের চাপ৷আমি আসবো বলে বলতে টাকা পয়সা দিয়ে তার কাজে বেরিয়ে গিয়েছে৷

ওমা সে কি কথা—দ্বিরাগমন হোল না,অথচ প্রথমবার তুই একা চলে এলি৷

আমি কি ওর এরকম হাবভাব হবে জানতাম৷এখন বিয়ে করেই বুঝতে পারছি৷তোমাদের বাড়ি আসবে কি আমাকেই একটুও সময় দেয় না৷

তুই সত্যি বলছিসতো মা৷জামাইয়ের আবার মনে অন্যকোন রঙ টঙ ধরে নেই তো!

এতক্ষন পাশে বসে থাকা অংশুকে কেন যে অস্মিতার বাড়ির লোক জামাই বলে চিনতে পারলো না তাই ভাবছে অংশুমিতাভ৷

অস্মিতা আর অংশুর এই রম্য নাটকীয় সংলাপ অস্মিতার বাড়ির লোক ঘুনাক্ষরেও টের পেল না যে তারা দুজনে যুক্তি করে এখানে এসেছে৷

অস্মিতা মায়ের সন্দেহপূর্ণ কথা শুনেই হো হো করে হেসে উঠল৷

অস্মিতার এরকম আচরণে অস্মিতার মা সহ সকলে তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে আছে৷

কিছূ পরে সম্বিত ফিরে আসতেই লজ্জা পেয়ে সকলে ঘরের অন্দরে চলে গেল৷

এদিকে ততদিনে অস্মিতার বাবার দেখা পাত্র বুদ্ধি দোষে সরকারী চাকুরী খুঁইয়ে পাঁড় মাতাল হয়ে রাস্তার যেখানে সেখানে পড়ে থাকে৷

আজ অস্মিতার বাবা-মা মেয়ে জামাইয়ের জীবনযাপন দেখে বুঝতে পারছে তাদের যোগাযোগটা কতটা নিবিঢ় কতটা মাধুরীময়৷সেদিন অস্মিতা যদি ভুল করে বাবার যোগাযোগে দেখা পাত্র কে বিয়ে করত তাহলে আজ নিজের পছন্দের পাত্রের কারণে অস্মিতার বাবা কে লজ্জিত হতেই হোত৷



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract