STORYMIRROR

Bisweswar Mahapatra

Children Stories Inspirational Children

4  

Bisweswar Mahapatra

Children Stories Inspirational Children

পিঁপড়ের বুদ্ধি

পিঁপড়ের বুদ্ধি

2 mins
369

আমাদের বাড়ির উঠোনে তিনটি আমগাছ আছে।আমি সময় সুযোগ পেলে সেখানে গাছে হেলান দিয়ে সময় কাটাই।তখন সময়টা শরৎকাল,বাতাসে পূজা পূজা গন্ধ ভাসছে।এ সময় মনটা এমনিতে আনন্দময় থাকে সকলের।আমারও মনটা তেমন ছিল তাই উদার মন নিয়ে আগমনী গান গাইছিলাম গুনগুনিয়ে।হঠাৎ করে আমার চোখের দৃষ্টিটা চলে গেল একটি আমগাছের গোড়ায়।দেখি সেখানে একদল কালো পিঁপড়ের সমাবেশ।আমি সেইখানে এত পিঁপড়ের সমাবেশের কারণ অনুসন্ধানের জন‍্য উৎসুক হলাম আর সমবেত পিঁপড়ের কর্মকাণ্ডকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর বুঝতে পারলাম তারা শীতঘুমে যাবে তাই তারা বাসা তৈরি করতে ব‍্যস্ত।এবার আমার তাদের বাসা তৈরির পদ্ধতি দেখতে আগ্রহও বেশ বেড়ে গেল।আমি দেখতে পেলাম শুধু কি আমরা মানুষ পরিশ্রম আর দক্ষতা দিয়ে বাড়ি বানিয়ে ফেলতে জানি,তা নয় এই পৃথিবীতে বহু প্রাণীই আছে যারা তাদের দক্ষতার দ্বারা বাসা বানাতে পারে তাদের মধ‍্যে পিঁপড়েরাও যে পড়ে দেখতে পেলাম। দেখলাম এক একটি পিঁপড়ে মাটির গভীরে গর্ত করে তার থেকে তাদের দাঁতের সাহায্যে মাটি কেটে কেটে গোলা পাকিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে উপরে এনে একটা প্রাচীরঘেরা দুর্গের মত বানিয়ে ফেলতে চাইছে।আমি তাদের বুদ্ধিকে পরখ করার জন‍্য আমার পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে আলতো করে দুর্গটাকে ভেঙে গর্তের মুখটা বন্ধ করে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম দেখি পিঁপড়েরা কি করে।আমি অবাক নয়নে দেখলাম একটি পিঁপড়ে আমার বন্ধ করা গর্তের একটি ধার দিয়ে কোন রকম ফাঁক তৈরি করে বাইরে বেরিয়ে সেই দুর্গটাকে একবার ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে হনহনিয়ে বাইরের পথে চলে গেল আর যাওয়ার সময় পথে অপর যে পিঁপড়ে কে দেখতে পেল তাদের মুখে মুখে যেন কিছু বলে গেল।আমি সেখানে আরও বেশ কিছু সময় অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছি। দেখলাম, প্রায় দশ পনেরো মিনিটের পরে আরও একদল পিঁপড়ে কে নিয়ে সেই বাইরের দিকে যাওয়া পিঁপড়েটা ফিরে এলো।এখন বলে রাখি আমি পিঁপড়েটাকে চেনার জন‍্য তার উপর বেশ কিছুটা আলতা ফেলে দিয়েছিলাম যাতে তাকে আলাদা করে চেনা যায়।তাই তাকে চিনতে আমার খুব একটা অসুবিধা হয়নি।তারপর যা দেখলাম দেখেতো আমি হতবাক।এই যে দশ বারোটা পিঁপড়ের দল বাইরের থেকে এলো এদের মধ‍্যে একটি পিঁপড়ে পুরো জায়গাটা একবার পরিদর্শনের পর তার শুঁড় উঁচিয়ে অন‍্য কি যে নির্দেশ দিল বলতে পারবো না।তবে পিঁপড়ে গুলো সমবেতভাবে আমার ভেঙে দেওয়া দুর্গটাকে সরিয়ে সারিয়ে কিছুক্ষণের মধ‍‍্যে পুনরায় বাসা তৈরি করে শুড় উঁচিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে তাদের আস্তানায় ফিরে গেল।আমি এ দৃশ‍্য দেখতে দেখতে আমার কাজে ব‍্যস্ত হয়ে পড়লাম।এর কয়েক দিন পর দেখতে পেলাম সেই বাসাতে তারা শীতের খাদ‍্য সঞ্চয়ে দলবদ্ধ।তারা নির্দ্বিধায় এক একটা খাদ‍্যকনা এক একজন বহন করছে যা তাদের দেহের ওজনের দশগুন হবে।আর দলবদ্ধ ভাবেও অনেকগুন ভারী খাদ‍্য বহন করে সেই দুর্গে সঞ্চয় করছে।


Rate this content
Log in