ঠিকানা ।
ঠিকানা ।


পাড়ার এক বাচ্চার থেকে অম্লানের চিঠিটা পেয়ে একটু অবাক হয়েছিলাম। ও পাড়ায় ওর বাড়ী। একসময় ওকে পড়াতাম। আমি ছিলাম ওর ফ্রেন্ড, ফিলোসফার এন্ড গাইড। এবারে ওর চিঠিতে আসি।
প্রিয় কৌশিকদা,
বন্ধুর সাথে বাজি রেখে ভুতুড়ে বাড়িতে রাত কাটাতে যাচ্ছি। বাড়িতে জানাইনি, মা আটকে দিত। সপ্তাহ খানেক পর তোমার বাড়িতে যাচ্ছি। তখন সব বলব।
চিঠির পেছনে ভূতুড়েবাড়ীর ঠিকানা দিয়ে দিলাম।
ইতি
অম্লান ।
সত্যি বলতে চিঠিটা পেয়ে একটু উৎকণ্ঠায় ছিলাম। আসলে ভুতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নে
ই, ভুতের থেকেও খারাপ মানুষকে বেশি ভয়ংকর বলে মনে করি।
সাত দিন হয়ে গেল। সকাল থেকেই ছেলেটার জন্য ভাবনা হচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে উৎকন্ঠার পারদ চড়ছে হু হু করে। ঠিক করে ফেললাম আগামীকাল ভোরেই অম্লানের খোঁজে রওনা দেওয়ার। একবার হাতের নাগালে পাই, আচ্ছা করে দেব কানটি মুলে।
রাত তখন এগারোটা। সবে শুয়েছি। দুবার দরজার কড়া নাড়ানোর শব্দ কানে এল। বিকেল থেকে লোডশেডিং। মোমবাতি জ্বালিয়ে দরজা খুলে দেখি অম্লান। উদ্ভ্রান্তের মত লাগছে। ওভাবে ওখানে যাওয়ার জন্য একটু বকা-ঝকা করে ঘরে বসালাম।
--বলেছিলামনা দেখা করে যাব।
--বাড়ী যাসনি কেন?
--কিভাবে দাঁড়াবো মায়ের সামনে?
-- সব ঠিক হয়ে যাবে। একটু জল খা।
ভেতরে গেলাম জল আনতে। হঠাৎই বাতি জ্বলে উঠল। এসে দেখি সে নেই। দরজা ভেতর থেকে তেমনই বন্ধ।
পরদিন ওই ঠিকানায় অম্লানের পোকা ধরে যাওয়া লাশটা উদ্ধার হয়।