Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

4  

Sharmistha Mukherjee

Horror Thriller

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ পর্ব ৫

আরশির আতঙ্ক 🧟‍♀️ পর্ব ৫

18 mins
1.0K



আরশির চোখ - মুখ আস্তে আস্তে রক্তে ভিজে উঠছে দেখে তারা আর মোনা আরশিকে ছেড়ে লাফ দিয়ে সরে যায় । আচমকা আরশি বিশ্রীভাবে খোনা গলায় হাসতে শুরু করায় সকলেই প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায় । চোখের নিমেষেই আবার সম্পূর্ণ নিজের স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসে আরশি । তারপরেই চীৎকার করে কাঁদতে শুরু করে । আরশির ঐ অবস্থা দেখে কেউ আরশির সামনে যেতে সাহস পাচ্ছিল না , এমনকি জিৎ ও না । কিন্তু তারা ছুটে গিয়ে আরশিকে জড়িয়ে ধরতেই আরশি জ্ঞান হারিয়ে তারার কোলে ঢলে পড়ে । জিৎ তাড়াতাড়ি করে আরশিকে তুলে নিয়ে শোবার ঘরের বিছানার উপর শুইয়ে দেয় । সবাই অপেক্ষা করতে থাকে আরশির জ্ঞান ফেরার । সেদিন কেটে যায় আরশির জ্ঞান ফেরে না । পরের দিনও জ্ঞান না ফেরায় জিৎ মিসেস করের সাহায্যে ডাক্তারকে ডেকে পাঠায় । ডাক্তার আরশিকে ভালো করে পরীক্ষা করে জানান , " দেখুন উনি প্রচন্ড দূর্বল । খুব সম্ভবত দীর্ঘদিন ঘুম না হওয়া আর প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বেশি মানসিক চাপের ফলে ওনার এই অবস্থা । আমি কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি, শীঘ্রই আনিয়ে নিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করুন । ডাক্তার চলে যাওয়ার সময় জিৎকে বাইরে একটু আড়ালে ডেকে বলেন , " ওনার দিকে ভালো করে খেয়াল রাখবেন আর কোনো অসুবিধা হলেই আমাকে ফোন করবেন । " আরশিকে মোনা আর তারার কাছে রেখে জিৎ আর উজান তড়িঘড়ি বেরিয়ে যায় ওষুধের দোকানে । এদিকে আরশি তখন ঘুমোচ্ছে দেখে তারা মোনাকে আরশির কাছে বসিয়ে রান্নাঘরে চলে যায় সবার জন্য কিছু খাবার তৈরি করতে । সারা রাত সবাইকে জাগতে হয়েছিল তাই মোনার কখন যেন ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে যায় । মোনার আচমকা ঘুম ভাঙ্গে তারার আর্তনাদ আর কাপ-প্লেট ভাঙার শব্দে । মোনা চোখ খুলেই দ্যাখে বিছানায় আরশি নেই , আর তারা ঘরের ভেতরে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে । তারার দৃষ্টি লক্ষ্য করে মোনাও উপর দিকে তাকিয়ে একটা ভয়ানক চীৎকার করে জ্ঞান হারায় । তখন আরশি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় বিছানায় শুয়ে থাকে । তারা ভয়ে কাঁপতে শুরু করে ঠিক তখনই সদর দরজা খুলে জিৎ আর উজান ঘরে ঢোকে । জিৎকে দেখেই তারা হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে বলে , " দাদাবাবু দিদি ! দিদি ! " । জিৎ বলে, " কি হয়েছে দিদির ? দিদি ঠিক আছে তো ? কিরে বল ? " উজান ছুটে আরশির শোবার ঘরের দিকে গিয়ে দ্যাখে মোনা বিছানার উপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে 

আছে । পাশেই শুয়ে আছে আরশি । সুন্দর মুখখানা কেমন যেন পাংশুটে হয়ে গেছে । চোখের কোলে নেমেছে কালো ছায়া । কেমন যেন মরার মতো পড়ে আছে । আরশির এই অবস্থা দেখে উজান খুব ভয় পেয়ে যায় । কোনোরকমে মোনাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জিৎ আর তারাকে আরশির কথা জানায় । উজানের মুখে আরশির কথা শুনেই জিৎ ছুটে যায় আরশির ঘরে । আরশির এতো সুন্দর মুখখানার বিকৃত রূপ দেখে জিৎ কান্নায় ভেঙে পড়ে । তারপর জিৎ আর উজান দুজন মিলে আরশির ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে Paranormal Investigator এর খোঁজে । বেশ অনেকক্ষণ ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করার পর প্রায় তিনজন Paranormal Investigator এর খোঁজ পাওয়া যায় । জিৎ একে একে তিনজনের সাথেই আরশির ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ দেয় । ওনাদের মধ্যে মিসেস মিশেল কার্টার সমস্ত ব্যাপারটি শুনে আগ্রহ প্রকাশ করেন । জিৎ এবং উজান একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে তারা আর মোনাকে সবটা জানায় । কিন্তু একমাত্র তারা ছাড়া আর কেউই আরশির ঘরে বা আরশির কাছে যেতে সাহস পায় না ।


পরের দিন সকালে Paranormal Investigator মিসেস মিশেল কার্টার নিজের সহকারী কর্মীদের নিয়ে আরশির ফ্ল্যাটে আসেন । ফ্ল্যাটে ঢোকার সময় দরজার সামনে মিসেস কার্টার থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন । জিৎ বললো , " Please Come Misses Carter " কিন্তু তিনি হাত দেখিয়ে থামতে বললেন তাই জিৎ চুপ করে যায় ।উজান, মোনা দুজনেই মিসেস কার্টারের এরকম আচরণে অবাক হয়ে যায় কিন্তু তারা হঠাৎ বলে ওঠে ম্যাডাম কার্টার আপনি কি কিছু আঁচ করতে পেরেছেন ? মিসেস কার্টার ততোক্ষণে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন । ঘরে পা দিতেই প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাস যেন ধাক্কা মেরে যায় মিসেস কার্টারকে । তিনি বুঝতে পারেন বাড়িতে সত্যিই অশরীরির উপস্থিতি আছে । তিনি ধীরে ধীরে আরশির শোবার ঘরের দিকে এগিয়ে যান । আরশির শোবার ঘরের দিকে এগোতে এগোতে মিসেস কার্টার এক সহকারীকে বলেন , " The incorporeal is in this room. I can feel the presence " - এই বলতে বলতে আরশির ঘরে ঢুকে আরশিকে দেখেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন । আরশির চোখে - মুখে তখন অশরীরির উপস্থিতি স্পষ্ট । তবে Jesus Christ এর Cross কপালে ছোঁয়াতেই আর Holly Water আরশির উপর ছিটিয়ে দিতেই আরশি নিস্তেজ হয়ে নিজের সাবলীল রূপে ফিরে আসে । মিসেস কার্টারের সহকারী ছিলেন চারজন ( শন, ক্রিস্টিন, এলিনা, মার্ক ) এবং স্বামী মিস্টার কার্টার । মিসেস কার্টার তার সহকারীদের নির্দেশ দেন আরশির পুরো ফ্ল্যাটটিকে অন্ধকার করে দিয়ে আত্মাকে আহ্বান করার সমগ্র প্রস্তুতি নিতে । সহকারীরা মিলে সব নিমেষের মধ্যে গুছিয়ে ফেললো । মিস্টার কার্টার আর জিৎ দুজনে মিলে আরশিকে ধরাধরি করে চেয়ারে বসিয়ে বেঁধে দেয় । Holly Water দিয়ে চেয়ারের চারদিকে গন্ডি কেটে দেন মিসেস কার্টার । চতুর্দিকে শুধুই মোমবাতির মৃদু আলো - আধাঁরির খেলা । 


বাইবেল পড়তে শুরু করলেন মিস্টার কার্টার এবং মিসেস কার্টার নিয়মাবিধি শুরু করলেন । প্রায় আধঘণ্টার প্রচেষ্টায় আরশির শরীরে প্রবেশ করলো আনার আত্মা । মিসেস কার্টার প্রশ্ন করলেন , " কে তুমি ? " কিন্তু কোনো উওর নেই । আরশি মাথা নীচু করে যেন ঘুমে ঢুলছে । অনেক বার চীৎকার করেন মিসেস কার্টার , " Who are you ? কে তুমি বলো ? কি চাও ? " মিনিট পাঁচেক পর আরশি মাথা তুললো । খোনা দোআঁশলা কন্ঠে উত্তর দিলো, " আমি আনা, আন্দ্রেয়ানা মারিনো । আমি বদলা নিতে চাই । I want revenge. I want killed them. I want revenge. I want revenge " বলেই চীৎকার করে উঠলো । আরশির মুখ তখন চেনার উপায় নেই , সাংঘাতিক হিংস্র ভাবমূর্তি । আরশির এরকম বীভৎস রূপ আর হিংস্রতা দেখে সবাই খুব ভয় পেয়ে যায় । অনেকক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর আনার মৃত্যুর রহস্য আনা নিজেই বলবে স্থির করে তবে একটি শর্ত দিয়েছিল মিসেস কার্টারকে । আরশির মাধ্যমে আনার আত্মা বলেছিল, " আমি আমার ব্যাপারে সবকিছু শুধুমাত্র তারাকে জানাবো , আর কাউকে নয় । " আনার শর্ত শুনে সবাই ভয় পেয়ে যায় কিন্তু তারা এককথায় রাজি হয়ে যায় । " আনার আত্মা আরশির মাধ্যমে তারাকে সবকিছু খুলে বলে । সবকিছু শোনার পর তারা জিৎকে জানায় , " দাদাবাবু দিদির মাধ্যমে আনার আত্মা মিসেস কার্টার ও ওনার সহকারীদের এখান থেকে চলে যেতে বলেন , তবেই আনা দিদিকে মুক্তি দেবে । " একথা শুনে জিৎ একটু চিন্তায় পড়ে যায় কিন্তু ক্ষণিকের মধ্যে শুধুমাত্র আরশির মুক্তির কথা ভেবে তৎক্ষণাৎ মিসেস কার্টারকে অনুরোধ করে ,

" Please Misses Carter, you may go now. I want my Arshi . Please please . " বাধ্য হয়ে মিসেস কার্টার ওনার সহকারীদের নিয়ে আরশির ফ্ল্যাট থেকে চলে যান । তিনি যাবার সময় Holly water , Bible আর যীশু খ্রীষ্টের ক্রশ দিয়ে যায় তারার হাতে এবং জিৎকে বলেন , " Any problem, please call me. But she loves Tara very much. So she will not do any harm to Tara. " জিৎ সব শুনে তারাকে বলে, " তারা তুই দিদির মাধ্যমে আনার সাথে ভালো করে কথা বলবি । জিৎয়ের কথামতো তারা আনার সাথে কথা বলা শুরু করলো । তারা বললো, " আনা ম্যাডাম দয়া করে আমার দিদির কোনো ক্ষতি করবেন না । আপনার যা বলার আছে তা আপনি নিশ্চিন্তে আমাদের সবার সামনে বলতে পারেন । আমরা সবাই আপনার ব্যাপারে জানতে চাই , আপনাকে সাহায্য করতে চাই । দয়া করে আপনার সব কথা আমাদের কাছে খুলে বলুন । " তারার কথায় আরশির শরীরে থাকা আনার আত্মা সবাইকে নিজের ঘটনা জানাতে সম্মত হয় । এইটি ছিল এক অভূতপূর্ব ঘটনা যে, একটি আত্মা অন্যের শরীরকে মাধ্যম করে নিজের মৃত্যু রহস্য বলছে । 


আরশির মাধ্যমে আনার আত্মা নিজের জীবনের ঘটনা বলা শুরু করলো । আরশিকে সামনে রেখে বসে আছে জিৎ , মোনা , উজান , মিস্টার এবং মিসেস কর । তারা বসেছে আরশির পাশেই । ঘরে তখনও অনেক সংখ্যক মোমবাতির মৃদু আলো । বেশ গা ছমছমে হাড়হিম করা পরিবেশ । আরশির পড়নে আনার পোশাক , চুলের বাঁধন ও সাজগোজ সম্পূর্ণ আনার মতোই । ঘরের আলো - আঁধারিতে আরশিকে দেখে মিস্টার এবং মিসেস কর আৎকে ওঠেন । একটু আগেই যে পোশাক - সাজগোজে ছিল আরশি পরক্ষণেই সকলের সামনে সেই চোখের নিমেষে হয়ে গেল আনা । শুধুমাত্র মুখটাই আরশির । আরশির মাধ্যমে আনার আত্মা বলতে শুরু করলো নিজের মৃত্যুর রহস্য । 


আমার নাম আন্দ্রেয়ানা মারিনো । প্রায় পনেরো বছর আগে চাকরিসূত্রে আমি এখানে আসি । আমার অফিস থেকে আমি কোনো কোয়ার্টার না নিয়ে এই ফ্ল্যাটটা কিনে নিয়েছিলাম । আমার বাবা - মা প্রথমে ভারতবর্ষে একা ছাড়তে রাজি হন নি তবুও আমি অনেক কষ্টে তাদের রাজি করিয়ে এখানে আসি । এখানে কাজ করতে করতে অফিসের এক সহকর্মী উইলিয়ামের সাথে বন্ধুত্ব হয়, পরে অবশ্য সেই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে । ধীরে ধীরে মিসেস কর এবং আরও অন্যান্যদের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল । আমি আর উইলিয়াম লিভ ইন করতাম কিন্তু বিয়ে করার কথায় সে সবসময় রেগে যেত , তাই আমি বিয়ে নিয়ে বলাই ছেড়ে দিয়েছিলাম । এখানে কারো সাথে মেলামেশা করা উইলিয়াম একেবারে পছন্দ করতো না । আমাদের সম্পর্ক এতোটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে দ্বিতীয় বছর দূর্গা পূজার সময় আমি দুমাসের বেবী carry করছিলাম । সেটা আমি উইলিয়াম আর মিসেস করকে জানিয়েছিলাম । সেবছর নভেম্বর মাসে উইলিয়াম বললো যে সে দেশে যাচ্ছে । তার পরিবারের সাথে কথা বলে বিয়ের কথা পাকা করে তারপর ফিরবে । রবার্ট এই ব্যাপারে সব জানতো । রবার্ট ছিল উইলিয়ামের পিসির ছেলে । তাই আমার দায়িত্ব উইলিয়াম রবার্টের উপর দিয়ে যায় ।আমি মাঝে মধ্যে লক্ষ্য করেছিলাম রবার্টের নজর আমার প্রতি ভালো ছিল না । সেবছর নিউ ইয়ার পার্টি শেষ হবার পর সবাই চলে যায় , শুধু রবার্ট আর রবার্টের পাঁচটা বন্ধু ছিল । আমি রবার্টকে বলেছিলাম চলে যাবার সময় যেন দরজা লক করে যায়, এই বলে আমি আমার বেডরুমে চলে যাই । কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর উইলিয়ামের ফোন আসে । উইলিয়াম বলেছিল , " Sorry, I can't marry you.I am married and have a three year old daughter. I haven't told you anything before. Robert likes you. You stay with Robert. " এসব শুনে আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি । আর সেই সুযোগটাই নিয়েছিল রবার্ট । উইলিয়াম আর কোনোদিন আমার কাছে ফিরবে না শুনে আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি । রবার্ট বলে , " I'm extremely sorry Ana. I know everything but....... " , আনা চীৎকার করে বলে উঠলো, " I'm very stupid . I could have been called William once. I wouldn't have had this relationship then . Now I am four months pregnant . What will happen to me now ? " রবার্ট বললো , " Don't worry , I'm here for you " . একথা শুনে আমি আরো রেগে গিয়ে চীৎকার করতে শুরু করি । আমার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হঠাৎ করেই রবার্ট উঠে চলে যায় । মিনিট দুয়েক পর রবার্ট তার বাকী পাঁচ বন্ধুদের নিয়ে আমার বেডরুমে চলে আসে । আমি ওদের দেখে আবারও রাগে ফেটে পড়ি । আচমকা রবার্ট ও বাকী পাঁচজন আমার হাত - মুখ বেঁধে ফেলে একে একে আছড়ে পড়ে আমার শরীরটার উপর । আঁচড়ে - কামড়ে ফালা ফালা করে দেয় আমাকে । রক্তে ভেসে যাচ্ছিল আমার শরীরটা । যৌনাঙ্গ থেকে শুরু হোলো অস্বাভাবিক রক্তপাত । সকলে তাদের যৌন ক্ষিদে মিটিয়ে শান্তি পেল না , ধরা পড়ার ভয়ে আমাকে সবাই মিলে তুলে নিয়ে গেল ব্যালকনিতে । আমি ওদের কাছে হাতজোড় করে অনেক অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু কেউই আমার অনুরোধ রাখলো না । চোখের নিমেষে আমাকে সাততলার উপর থেকে তুলে ফেলে দিল নীচে । তখনই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ওদের কাউকে ছাড়বো না । তারপর থেকে এতো বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা । আমার টাকায় কেনা এই ফ্ল্যাটটাতে রবার্ট ভাড়া দিয়ে রোজগারের ভালোই উপায় করতে চেয়েছিল কিন্তু আমি তা হতে দেইনি । যতোবার যতো ভাড়া এসেছে আমি তাদের কাউকে থাকতে দেইনি । মাঝে তো রবার্ট বাধ্য হয়ে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল । প্রায় বছর আটেক পর আরশিকে ভাড়া দিতে দেখে আমার প্রতিহিংসা আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । রবার্ট যেদিন এখানে এসেছিল সেদিন থেকেই আমি প্রত্যেক মূহুর্ত জ্বলেছি প্রতিহিংসার আগুনে । আরশিকে দেখে আর কাজের মেয়ে তারার প্রতি আরশির এতো ভালোবাসা দেখে বুঝতে পারি যে একমাত্র আরশি পারবে আমার মনের ইচ্ছেপূরণ করতে । তাই ধীরে ধীরে আমি আরশির উপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করি । I want revenge " .  


সবাই চুপ করে বসে শুনছিল আরশির শরীরকে মাধ্যম করে থাকা অতৃপ্ত আত্মা আনার মৃত্যুরহস্য । ঘরের মধ্যে তখন পিন পতন নিস্তব্ধতা । হঠাৎই সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে তারা বলে উঠলো , " তোমার ইচ্ছেপূরণ করতে পারে শুধু দিদি ? কি ধরনের ইচ্ছে ? মানে কি করতে চাইছো আমার দিদির সাথে ? " তারাকে ঐরকম উৎকন্ঠিত হতে দেখে আনার আত্মা বলে , " ভয় নেই , আমি আরশির কোনো ক্ষতি করবো না । আমি শুধুমাত্র আরশির শরীরকে মাধ্যম করে একে একে রবার্টসহ ঐ পাঁচজনকে শেষ করবো । "

তারা আনার আত্মাকে বললো , " দিদির শরীরকে মাধ্যম করে তুমি প্রতিশোধ নেবে কিন্তু তাতে তো দিদির সমস্যা অনেক বেড়ে যাবে । পুলিশ ভাববে সবকিছু দিদিই করেছে, তাই দিদির হাজতবাস হতে পারে । সেটা আমরা কিছুতেই হতে দিতে পারি না । " তারার এতো তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দেখে বাকীরা হতবাক হয়ে যায় । আনার আত্মা তখন বলে ওঠে, "আমি আরশির শরীরকে মাধ্যম করবো ঠিকই কিন্তু আরশির কোনো ক্ষতি হবে না । কারণ, আমি প্রতিশোধ নেব আর সকলেই ভাববে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু । " একথা শুনে প্রত্যেকে একে অপরের মুখের দিকে তাকায় । মিসেস কর বলেন , " দ্যাখো আনা সব বুঝলাম কিন্তু যারা তোমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তাদের আমরা চিনবো কি করে ? রবার্টকে আমরা চিনি তাই কোনো অসুবিধা হবে না কিন্তু বাকি পাঁচজন ? " উজান বললো , " আরশির শরীরকে মাধ্যম না করে অন্য কোনো উপায় নেই ? " আনার আত্মা বিরক্ত হয়ে বিশ্রি কন্ঠে বলে উঠলো , " না নেই অন্য উপায় । আরশি শিক্ষিত , মর্ডান , সুন্দরী তাই ওদের উপর মায়াজাল বিস্তার করতে ওর কোনো সমস্যা হবে না , আর ওর শরীরে থাকাকালে আমার কোনোরকম সক্রিয় ভূমিকা থাকবে না যতোক্ষণ না ওরা এক এক করে আমার সামনে আসছে । কিন্তু ওরা আমার সামনে এলেই আমি সক্রিয় হয়ে উঠবো এবং কি করে ওদের চিরনিদ্রায় পাঠানো যায় সেই ব্যবস্থা করবো । " এই বলে হাড়হিম করা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো আরশির শরীরের মধ্যে থাকা আনার আত্মা । আবার হঠাৎ করেই হাসি থামিয়ে হিংস্র ভয়াল কন্ঠে সকলের দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিনিক্ষেপ করে বলে উঠলো , " যদি তোরা কেউ আমার কথা না মানিস বা আমাকে সরিয়ে ফেলার জন্য অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করিস তাহলে আর কোনোদিনও আরশিকে ফিরে পাবি না । So be careful . " এই কথা শেষ হতেই আরশির শরীরটা সোফার উপর লুটিয়ে পড়লো । তারা আর জিৎ তাড়াতাড়ি করে ছুটে গিয়ে আরশিকে তুলে নিয়ে বেডরুমে বিছানার উপর শুইয়ে দেয় । তারা মোনাকে বলে, " দিদি তুমি আর উজান দাদাবাবু এখানে দিদির পাশে থাকো আমি দিদির জন্য একটু গরম দুধ নিয়ে এক্ষুনি আসছি ।" এই বলে তারা রান্নাঘরে চলে যায় । গরম দুধ নিয়ে এসে আরশিকে খাইয়ে দেয় । এদিকে সবাই ভীষণ দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে কি হতে চলেছে সেইসব ভেবে । আরশির একটু সুস্থ বোধ করলে জিৎ, তারা, মোনা, উজান , মিস্টার এবং মিসেস কর সবকিছু খুলে বলে । আরশি সমস্ত ঘটনা শুনে কোনোকিছু না ভেবেই আনার আত্মাকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সাহায্য করতে রাজি হয়ে যায় । আরশি বলে, " আমি একটা মেয়ে, আমি বুঝতে পারছি নিজের মান রক্ষার জন্য আমরা সবকিছু করতে পারি । আর ওই শয়তানগুলো শুধু আনার ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে তাই নয়, ওর গর্ভে থাকা সন্তানেরও হত্যা করেছে । এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য ওদের খুবই ভয়ানক শাস্তি হওয়া উচিত । ওদের চরম থেকে চরমতম শাস্তি দেওয়ার জন্য আনার যা যা সাহায্য করা আমার দ্বারা সম্ভব তা সবটুকু আমি করবো । তারপর যা হবে দেখা যাবে । " জিৎ কয়েকবার বোঝানোর চেষ্টা করেও আরশির জেদ , না না একজন নারীর জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয় । তখন জিৎ এবং বাকি সকলে মিলে একজোট হয়ে আরশি ও আনার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয় । সেই সময় ঘরের ভিতরের আয়নার মধ্যে সবাই বিভৎস আনার মুখ নয়, মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত যে সুন্দরী আন্দ্রেয়ানা ছিল তাকেই দেখতে পায় সহাস্য বদনে । 


আয়নার মধ্যে আনার আসল চেহারা দেখে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে । এতোটাই সুন্দরী ছিল আনা । আরশি অবাক হয়ে দেখতে থাকে আনাকে । এতোদিন আনাকে কেউ দেখেনি শুধু আরশির শরীরের মাধ্যমে আনার অস্তিত্ব টের পেয়েছে , কথা হয়েছে আনার আত্মার সাথে কিন্তু আনার আত্মা দৃষ্ট হোলো এই প্রথম । আরশি আনাকে বলে,

 " আনা আমি আছি তোমার সাথে । শুধু আমি না আমরা সবাই আছি তোমার সাথে । তুমি যেভাবে বলবে, যা বলবে আমরা সেটাই করবো । তোমার সাথে হওয়া অন্যায়ের শাস্তি ঐ শয়তানগুলোকে পেতেই হবে । তার জন্য যা যা করতে হয় আমরা করবো । " কথাগুলো শুনতে শুনতে আনার আত্মার চোখ বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা ।" আত্মাও কাঁদে " বলে উঠলো জিৎ । তখন তারা বলে , " হ্যাঁ আত্মাও কাঁদে দাদাবাবু । আনার আজকে সন্তান নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার কথা কিন্তু ঐ শয়তানগুলো ওর জীবন শুধু নয় ওর গর্ভে থাকা সন্তানের জীবনও কেড়ে নিয়েছে । এই চোখের জল শুধু একজন নারীর নয় , একজন মায়েরও । " ঘরের মধ্যে নেমে এলো এক পিন পতন নিস্তব্ধতা । হঠাৎ সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে আনার আত্মা বলে উঠলো, " আমি আজ খুব নিশ্চিন্ত, আমার ভালো লাগছে এই ভেবে যে আজও এই সুন্দর পৃথিবীর বুকে তোমাদের মতো কিছু ভালো মানুষ আজও আছে । আমার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায় তোমাদের মধ্যেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে । এবার বলি কি করে এক এক করে আমার অপরাধিদের তোমরা আমার কাছে আনতে পারবে । " আরশি বললো, 

" হ্যাঁ বলো, আমরা সকলেই প্রস্তুত । " 


আনার আত্মা বলতে শুরু করলো, " আমার অপরাধিদের একজনকে পাবে আরশির অফিসে । "


 আরশি বললো, " হ্যাঁ ,

 রবার্ট তো ? " 


আনার আত্মা : " না , রবার্ট ছাড়াও তোমার অফিসে আর একজন আছে । "


আরশি : " রবার্ট ছাড়াও আরো একজন ? কে সে ? "


আনার আত্মা : " বিক্রম "


আরশি : " বিক্রম ! মানে বিক্রম চৌহান ? "


আনার আত্মা : " হ্যাঁ , ঐ জানোয়ারটা "


আরশি যেন আকাশ থেকে পড়লো । মনে মনে ভাবলো, বিক্রম তো খুব ভালো ছেলে , শান্ত - নম্র - ভদ্র । তাহলে সে কি করে ! কপালে বিশাল চিন্তার ভাঁজ পড়লো

 আরশির । 

আনার আত্মা বলে উঠলো , " না আরশি , বিক্রম ওরকম ভালো, শান্ত মানুষ সেজে থাকে কিন্তু আদতে সে একটা শয়তান ছাড়া কিছু

 না " । এই শুনে আরশি হকচকিয়ে গেল ,

 " সে কি ! আনার আত্মা কি মনের কথা পড়তে পারে ? এতোক্ষণ আমি মনে মনে এই কথাই ভাবছিলাম । " 


আরশি বললো , " ও তার মানে এই ভালো মানুষ সেজে থাকা বিক্রমের মুখোশ ? "


আনার আত্মা : " ঠিক তাই । ভালো মানুষের মুখোশ পরে কতো মেয়ের সাথে যে ঘনিষ্ঠ হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই । তোমার অফিস থেকে ঘন্টা খানেকের দূরত্বে একটা পানশালা ( Bar ) আছে সেখানে প্রত্যেক শনিবার রাতে বিক্রমকে পাওয়া যাবে । তবে হ্যাঁ, রাত সাড়ে দশটার পর আর পাবে না । এই ধরো রাত আটটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে বিক্রমকে যেভাবেই হোক ধরে এই ফ্ল্যাট পর্যন্ত আনতে হবে । তারপর যা করার আমি করবো । "

তারা হঠাৎ বলে উঠলো, " কিন্তু বিক্রম এই ফ্ল্যাটটা দেখে যদি চিনতে পেরে যায় ? "

আনার আত্মা : " না চিনতে পারবে না । একমাত্র রবার্ট ছাড়া এই ফ্ল্যাটটা কেউ চিনতে পারবে না । কারণ ওরা পাঁচজন ঐদিন প্রথম এসেছিল আমার ফ্ল্যাটে , তাও আজ থেকে প্রায় বছর তেরো আগে । তাই সেই নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই । "


আনার আত্মার মুখে ঐ পাঁচ শয়তান আরশির ফ্ল্যাট মানে অতীতে আনার ফ্ল্যাট চিনতে পারবে না জেনে সবাই খুব নিশ্চিন্ত

হয় ।


 আরশি বলে : " আনা এবার বলো আমরা কিভাবে কি করবো ? মানে ঐ শয়তানগুলোকে এক এক করে এই ফ্ল্যাটে আনবো কিভাবে ? কোথায় পাবো ঐ শয়তানগুলোকে ? 


সবার মনেই তখন একই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে । প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আনার দিকে । 


আনা বলে , " প্রথমে বিক্রমকে ফাঁদে ফেলতে হবে আরশির অফিস থেকে একটু দূরে " On The Rocks Bar " থেকে । আমি তোমাদের প্ল্যান বলে দিতে পারি , তোমরা কি শুনবে ? " 

সবাই উত্তর দিলো, " নিশ্চয়ই শুনবো , তুমি বলো । "  

আনা প্ল্যানটা বলতে শুরু করলো , 

 " শোনো , তোমাদের প্রত্যেকেই একজোট হয়ে খুব নিঁখুত ভাবে কাজটি করতে হবে । তোমরা মোট সাতজন আছো , তাই এমনভাবে সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে যাতে সাপও মরে আর লাঠিও না ভাঙে । Please make no mistake, be very careful not to let any of you enter the apartment with Vikram . তারপর শুরু হবে আমার কাজ । আমি সবাইকে আলাদা করে বুঝিয়ে দিচ্ছি । 


আনা : আরশি তুমি অফিসের পর খুব ভালো করে সাজগোজ করে On The Rocks Bar এ যাবে । মোনা আর জিৎ তোমরা দুজন জুটি বেঁধে আগের থেকেই সেখানে চলে যাবে । আরশি বিক্রম তোমাকে প্রশ্ন করতে পারে তুমি ওখানে কেনো ? তাই তুমি ওখানে গিয়েই শুধু মোনার সাথে দেখা করবে as a close friend । মোনা তোমাকে জিৎ- এর সাথে আলাপ করাবে তার বাগদত্তা হিসেবে । 

আরশি আর মোনা নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে বিক্রমকে ফাঁদে ফেলবে , তারপর কিছুর লোভ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসবে । 


আরশি : আনা এবার সবটুকু আমাদের উপর ছেড়ে দাও , আমরা সামলে নেব । 


আনার আত্মা : অসংখ্য ধন্যবাদ

 তোমাদের । তবে বাড়িতে উজান ও তারা থাকবে তো বুঝে পরিকল্পনা করতে হবে কে ; কিভাবে ; কি কি করবে । 


পরের দিন সকালে আরশির চেহারা আবার আগের মতোই তরতাজা হয়ে ওঠে । বেশ কয়েকদিন পর সে অফিসে এসেছে তাই মেজাজও ফুরফুরে ; কিন্তু মনের ভেতর চাপা উত্তেজনা । সবার সাথে হাসিঠাট্টা করে ভালোই কাটলো ; বিক্রম হঠাৎ প্রস্তাব দিলো অফিসের পর একটু আরশিকে নিয়ে বেড়াতে যাবে । আরশি হকচকিয়ে গেল , কি হোলো ? 


আরশি : কোথায় যেতে চাও বিক্রম ?


বিক্রম : আরে বেশি দূরে নিয়ে যাবো না , ভয় নেই তোমার । কাছেই একটা পানশালা আছে " On The Rocks Bar " সেখানে যাবো ; আসলে অফিসের পর আমি প্রায় রোজই ওখানে যাই । তুমি কি যাবে ? 


আরশি মনে মনে ভাবলো, আরে বাঃ ! এতো মেঘ না চাইতেই জল । দারুন জমে যাবে আজকের অভিযান । এই ভেবে একটা চটকদার হাসি দিলো । 


আরশি : Bar ? তুমি খাও ? Wow ! that's great । নিশ্চয়ই যাবো , সেই কলকাতায় থাকতে দুবার গিয়েছিলাম বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে । খুব মজা করেছিলাম জানো ! তোমার সাথে যাবো তবে আমি কিন্তু বেশিক্ষণ থাকবো না । ঠিক আছে ? 


বিক্রম : আরে ঠিক আছে ; ঠিক আছে । আমি তোমাকে বেশিক্ষণ আটকে রাখবো 

না । 


অফিসের ছুটির পর বিক্রম আর আরশি একটা অটোরিক্সা নিয়ে চলে গেল সেই পানশালায় । পানশালার ভিতরে ঢুকেই আরশি চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো ; একটু দূর থেকে জিৎ আর মোনা ইশারা করায় আরশি একটু নিশ্চিত হোলো । 

আরশি আর বিক্রম দুজনে মোনা আর জিৎ - এর থেকে মোটামুটি হাত দশেকের দূরত্বে বসলো । 


আরশি গিয়ে বসার পর বিক্রম ওয়েটারকে ডেকে দু পেগ ড্রিংকস অর্ডার করে । মিনিট খানেকের মধ্যেই ওয়েটার দু পেগ ড্রিংকস দিয়ে যায় । গ্লাসে দুবার চুমুক দিয়েই হঠাৎ আরশি বলে ওঠে , " Oh ! My God . Am I right or wrong ! That is my best friend Mona . What is she doing here in Bangalore ? And who is he with Mona ? One minute please, I'm coming right now Vikram . Please don't mind . "


বিক্রম বললো , " Hey! No, No, I don't mind, you may go. আর আরেকটা কথা আমি বাঙলা বলতে ও বুঝতে পারি,তাই তুমি বাঙলাতেই কথা বলতে পারো ।"  

আরশি " Thanks" বলে উঠে মোনা আর উজানের টেবিলে চলে যায় । 


মোনার টেবিলে যেতেই মোনা আর আরশি দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলো যেন বিক্রম ভাবে বহুদিন পর দুই বান্ধবী দুজন দুজনকে দেখে আনন্দে জড়িয়ে ধরেছে । পরিকল্পনা মতোই মোনা ও উজানের সাথে বিক্রমের আলাপ করিয়ে দিলো আরশি । 


আরশি : " Vikram , she is my best friend Mona and he is Mona's fiance, Ujan . Oh! Sorry জানিস মোনা বিক্রম দারুণ বাংলা বলতে পারে ।" 




🧟‍♀️🧟‍♀️🧟‍♀️🧟‍♀️🧟‍♀️ ক্রমশঃ প্রকাশ্য ................ 

 




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror