রহস্যময় প্রাসাদের কান্না
রহস্যময় প্রাসাদের কান্না


ঘন কুয়াশায় মোড়া এক বিশাল প্রাসাদ। পুরনো লোহার গেট নিজে থেকেই খটখট শব্দ করে খুলে যায়। দূরে এক গাড়ি থামে। গাড়ির ভেতর চারজন বন্ধু: **সৌমি** (মধ্য কুড়ি, সাহসী, সন্দেহপ্রবণ), **অভীক** (শেষ কুড়ি, গম্ভীর, রসিক), **তৃষা** (প্রথম কুড়ি, ভীতু, কুসংস্কারপ্রবণ), এবং **রুদ্র** (মধ্য কুড়ি, হাসিখুশি, দুষ্টুমি প্রিয়)।
**সৌমি**
(বিরক্তি নিয়ে)
এই তবে সেই বিখ্যাত চৌধুরী প্রাসাদ? পুরো ভূতের ডেরা মনে হচ্ছে।
**অভীক**
(রসিকভাবে)
তোমার মতো ভয়ঙ্কর অ্যাডভেঞ্চারের জন্য একদম পারফেক্ট।
**রুদ্র**
(হাসতে হাসতে)
জানো, লোকেরা বলে এখানে মাঝরাতের পরে কেউ টেকে না?
**তৃষা**
(ধীরে)
কারণ তারা বেঁচে থাকে না, রুদ্র! ভয় দেখিও না।
*তাদের নেমে আসার সাথে সাথে প্রাসাদের জানালাগুলি যেন তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। হাওয়ার সাথে অদ্ভুত একটা ফিসফিস শব্দ শোনা যায়। সবাই থেমে যায়।*
**অভীক**
শুনলে? এটা কে করল?
**সৌমি**
(উত্তেজিতভাবে)
এটা হাওয়া! চলো, ভেতরে যাই।
---
### **প্রাসাদের ভেতরে**
*অভ্যন্তরীণ: প্রাসাদের ফয়ারে – রাত*
একটা বিরাট পুরনো সিঁড়ি অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। মেঝেতে ধুলো আর জাল। একটা ভাঙা ঝাড়বাতি হালকা দুলছে।
**রুদ্র**
(হাসতে হাসতে)
এই যে ভূতেদের পাঁচ তারকা হোটেল! মানে সব ফ্রি—ভয়ও, আর জালাও।
**তৃষা**
রুদ্র, প্লিজ! এসব বলো না।
*একদম পিছনে দরজা নিজের থেকেই ধপ করে বন্ধ হয়ে যায়। সবাই চমকে ওঠে।*
**অভীক**
(চোখ বড় করে)
এটা হাওয়া হতে পারে না।
**সৌমি**
(গম্ভীরভাবে)
জেনারেটর খুঁজে আলো জ্বালাও, নইলে আমরা একা বাঁচতে পারব না।
---
### **প্রথম ভয়ঙ্কর ঘটনা**
*অভ্যন্তরীণ: প্রাসাদের বেসমেন্ট – রাত*
*সৌমি আর অভীক নেমে যাচ্ছে সিঁড়ি বেয়ে। চারদিকে অন্ধকার, শুধু টর্চলাইটের আলো। ভাঙা একটা জেনারেটর পড়ে আছে।*
**অভীক**
(বিদ্রূপের সাথে)
এটা তো মনে হয় ব্রিটিশ আমলের।
*হঠাৎ করে একটা শিশুর হাসি ভেসে আসে। ঠাণ্ডা হাওয়া তাদের মুখ স্পর্শ করে।*
**অভীক**
(চমকে উঠে)
এটা কি তোমার কাণ্ড?
**সৌমি**
(গম্ভীর গলায়)
তোমার কি মনে হয় আমি হাসলাম?
*টর্চের আলো কমে যায়। এক মুহূর্তে
র জন্য অন্ধকার। আলো ফিরে আসার পর দেখা যায়, এক কোণে ছোট্ট জোড়া চোখ জ্বলজ্বল করছে।*
**অভীক**
(কাঁপা কাঁপা গলায়)
চলো, উপরে যাই!
---
### **পোর্ট্রেটের ঘর**
*অভ্যন্তরীণ: প্রাসাদের বসার ঘর – রাত*
*ঘরটায় অনেক বড় বড় ছবি ঝুলছে। সবগুলোই প্রাসাদের প্রাক্তন বাসিন্দাদের। তাদের চোখ যেন ঘরের চারপাশে চলাফেরা করছে।*
**তৃষা**
(ভয়ে)
এই ছবিগুলো যেন আমাদের দেখছে!
**রুদ্র**
(হাসতে হাসতে)
আমায় দেখছে, কারণ আমি সুন্দর।
*একটা ছবি হঠাৎ করেই মাটিতে পড়ে যায়। ছবির পেছনে একটা গোপন দরজা দেখা যায়।*
**সৌমি**
চলো দেখি, এর ভেতরে কী আছে।
**তৃষা**
(চিৎকার করে)
না! আমরা কেন যাব? এখানে থাকাই ভালো।
---
### **গোপন পথ**
*অভ্যন্তরীণ: গোপন প্যাসেজ – রাত*
*সৌমি আর অভীক গোপন পথ ধরে এগিয়ে যায়। হঠাৎ করে একটা ছোট্ট ঘরে এসে পড়ে। ঘরটা ছোটদের খেলনায় ভর্তি। সব খেলনা অদ্ভুতভাবে নতুন।*
**অভীক**
(অস্বস্তি নিয়ে)
এটা অন্যরকম ভয়ঙ্কর।
*হঠাৎ ঘরের দরজা ধপ করে বন্ধ হয়ে যায়। খেলনাগুলো নড়তে শুরু করে। একটা ঝুলানো ঘোড়া নিজে থেকেই দোল খেতে থাকে।*
**ঝাঁপ দাও খেলনা বাক্স**
(গান গাইছে)
"চারদিকে চক্কর..."
*বাক্স খুলতেই এক বিকৃত মুখের পুতুল তাদের দিকে লাফিয়ে পড়ে।*
**সৌমি**
(চিৎকার করে)
দৌড়াও!
*তারা কোনোভাবে দরজা খুলে পালিয়ে যায়।*
---
### **ভয়ের মাত্রা বাড়ছে**
*অভ্যন্তরীণ: প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ – রাত*
*পুরো প্রাসাদ যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। ছায়াগুলো হাঁটছে, দেয়াল থেকে ফিসফিসানি আসছে, আর কোল্ড স্পটগুলো তাদের পিছু নিচ্ছে। হঠাৎ, রুদ্র অদৃশ্য হয়ে যায়।*
**তৃষা**
(কাঁদতে কাঁদতে)
ও কোথায় গেল? আমরা কি ওকে ফেলে যাব?
**অভীক**
(গম্ভীর)
আমরা সবাই যদি আলাদা হই, বাঁচব না। চলো ওকে খুঁজে বের করি।
---
### **ক্লাইম্যাক্স: মূল রহস্য**
*একটা পুরনো ডায়েরি আর একটা কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া যায়। বন্ধুরা বুঝতে পারে, প্রাসাদে আটকে থাকা আত্মাগুলো প্রতিশোধ চাইছে। তাদের ভুল সিদ্ধান্ত সবাইকে বিপদে ফেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত, সৌমি একা টিকে থাকে, কিন্তু কীভাবে পালাবে, সেটা অজানা।*