কালরাত্রি
কালরাত্রি


"কালরাত্রি"
1. তৃষা: ২৬ বছর বয়সী একজন লেখিকা, ভৌতিক গল্পে বিশেষ আগ্রহী।
2. আরিফ: তৃষার বন্ধু, ডকুমেন্টারি নির্মাতা। বাস্তববাদী এবং ভূতের গল্পে বিশ্বাসী নয়।
3. বৃদ্ধা: একটি গ্রামীণ নারী, যিনি একটি অভিশপ্ত ঘটনা সম্পর্কে জানেন।
4. ছায়া সত্তা: একটি রহস্যময় অশুভ আত্মা।
---
সিন ১: গল্পের সূচনা
লোকেশন: কলকাতার এক ব্যস্ত ক্যাফে।
তৃষা ও আরিফ কফি খেতে খেতে তৃষার নতুন লেখার বিষয়ে আলোচনা করছে।
তৃষা:
“আমি এবার একটা ভৌতিক গল্প লিখব। একটু ভিন্ন ধরনের। বাস্তব ঘটনার ছোঁয়া থাকবে।”
আরিফ:
“বাস্তব ঘটনা? ভূত-টুত কিছু নেই তৃষা। সব মানসিক ভ্রম।”
তৃষা হেসে বলে,
“তাহলে একটা কাজ কর, আমার সঙ্গে একবার শিয়ালমারী গ্রামে চলো। শুনেছি ওখানে একটা পুরনো বাড়ি আছে। বাড়িটা নাকি অভিশপ্ত।”
আরিফ গা ছমছমে হাসি দিয়ে রাজি হয়।
---
সিন ২: রহস্যময় গ্রামে আগমন
লোকেশন: শিয়ালমারী গ্রাম।
তৃষা ও আরিফ জীর্ণ, নির্জন রাস্তা ধরে গ্রামের মাঝামাঝি এসে পৌঁছায়। চারপাশে ছায়াময় পরিবেশ। গ্রামের এক বৃদ্ধার সঙ্গে তাদের কথা হয়।
বৃদ্ধা:
“তোমরা ওই বাড়ির কথা শুনে এসেছ? ও বাড়ি মানুষের নয়। যারা ওখানে যায়, তারা আর ফিরে আসে না। ওখানে রক্তের অভিশাপ রয়েছে।”
আরিফ:
“এই ধরনের গল্প অনেক শুনেছি। আমরা বাড়িটা একটু দেখে চলে যাব।”
বৃদ্ধা তাদের সাবধান করে, কিন্তু তারা কোনো পরোয়া করে না।
---
সিন ৩: অভিশপ্ত বাড়ির প্রবেশদ্বার
লোকেশন: শিয়ালমারীর পুরনো জমিদার বাড়ি।
বাড়িটি জীর্ণ, চারপাশে লতাপাতায় ঢাকা। সন্ধ্যার আলো বাড়িকে আরও ভীতিকর করে তুলেছে। তৃষা এবং আরিফ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।
আরিফ: (ক্যামেরা চালিয়ে)
“তৃষা, দেখো, বাড়িটা কতদিনের পুরনো! কোনো রহস্যই নেই। সবই পুরনো গল্প।”
তৃষা বাড়ির ঘরগুলো একে একে ঘুরে দেখতে থাকে। একটি ঘরে একটি আয়না ঝুলছে, যা অদ্ভুতভাবে পরিষ্কার।
তৃষা:
“এই আয়নাটা এত পরিষ্কার কেন? অন্য সবকিছু তো ধুলোয় ঢাকা।”
আয়নার ভেতরে হঠাৎই তাদের পিছনের দিকে কোনো ছায়ামূর্তি দেখা যায়। তারা পেছনে তাকায়, কিন্তু কেউ নেই।
---
সিন ৪: প্রথম অস্বাভাবিক ঘটনা
রাত গভীর হলে বাড়ির ভেতরে বিভিন্ন অদ্ভুত শব্দ হতে থাকে।
মেঝেতে কারো পায়ের শব
্দ।
দেয়ালে আঁচড়ের দাগ।
একটি ঘরের দরজা নিজের থেকেই বারবার খোলা-বন্ধ হচ্ছে।
আরিফ এসব কিছু ক্যামেরায় ধারণ করতে চায়।
আরিফ:
“দেখো, এসব বাতাস আর পুরনো কাঠের শব্দ। তৃষা, এগুলো গল্প লেখার ভালো উপাদান।”
কিন্তু তৃষা ক্রমশ অস্বস্তি অনুভব করে।
তৃষা:
“আরিফ, এখানে কিছু একটা ঠিক নেই। আমি মনে করি আমাদের এখান থেকে চলে যাওয়া উচিত।”
---
সিন ৫: আয়নার রহস্য
তারা আয়নার ঘরে ফিরে আসে। এবার আয়নার সামনে দাঁড়াতেই আরিফ তার প্রতিচ্ছবির পরিবর্তে আরেকটি অশুভ মুখ দেখতে পায়।
আরিফ: (চিৎকার করে ওঠে)
“এটা কী! আয়নাটা... এটা স্বাভাবিক নয়।”
আয়নার ভেতর থেকে একটি ছায়া বেরিয়ে এসে আরিফকে আক্রমণ করে। তৃষা ভয়ে চিৎকার করতে থাকে।
তৃষা:
“আরিফ! তুই ঠিক আছিস?”
আরিফ মেঝেতে পড়ে যায়। তার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়, আর তার গলায় অদ্ভুত কণ্ঠ শোনা যায়।
“তোমরা চলে এসেছ আমার জায়গায়। এবার তোমরাও এখানে বন্দি থাকবে।”
---
সিন ৬: বেঁচে থাকার লড়াই
তৃষা দ্রুত বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু দরজা ও জানালা সব বন্ধ হয়ে যায়। বাড়ির দেয়ালে অদ্ভুত লেখাগুলো ফুটে ওঠে।
“রক্তে অভিশপ্ত। মুক্তি নেই।”
তৃষা বৃদ্ধার দেয়া একটি লকেট বের করে চিৎকার করে বলে,
“যে তোমার অভিশাপ দিয়েছে, আমি তাকে জানি না! আমাকে মুক্তি দাও!”
ছায়াটি চিৎকার করে, বাড়িটি কাঁপতে থাকে।
---
সিন ৭: মুক্তি ও রহস্য
তৃষা আয়নাটি মেঝেতে ফেলে ভেঙে দেয়। আয়না ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে পুরো বাড়িটি শান্ত হয়ে যায়।
আরিফ জ্ঞান ফিরে পায়। তারা কোনো মতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে।
তৃষা বৃদ্ধার কাছে গিয়ে জানতে চায়,
“ও বাড়িতে আসলে কী ঘটেছিল?”
বৃদ্ধা:
“ওটা জমিদারের স্ত্রীকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর আত্মা ওই বাড়িতে বন্দি ছিল।”
---
শেষ দৃশ্য:
তৃষা ও আরিফ কলকাতায় ফিরে আসে। তৃষা তার গল্প শেষ করে। কিন্তু ঠিক তখনই আয়নার এক কোণে তৃষা নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়, যা স্বাভাবিক নয়।
পর্দা বন্ধ।
---
ফিল্মের মূল ভাবনা:
গল্পটি একটি অভিশপ্ত বাড়ির অভিজ্ঞতা এবং মানুষের কৌতূহলের ফল নিয়ে। এতে ধীরে ধীরে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয় এবং শেষে একটি টুইস্ট রেখে দর্শকদের ভাবিয়ে তোলে।