Pronab Das

Horror

1  

Pronab Das

Horror

অচেনা ব্যক্তির সাথে একদিন।

অচেনা ব্যক্তির সাথে একদিন।

2 mins
865


কাজের সূত্রে একবার উড়িষ্যার বারবিল নামক একটা জায়গায় যেতে হয়েছিল। পাহাড়ের ওপরে ছোট্ট একটা জনবসতি। এয়ার কন্ডিশন বাস থেকে নামার পর অদ্ভুত এক অস্বস্তি হচ্ছিল শরীরময়। অঞ্চলটিতে লৌহ আকরিক উত্তোলন করা হয়। দিনের প্রায় সর্বক্ষণই সারিবদ্ধভাবে ওই আকরিক বোঝাই গাড়ি চলাচল করে। আশেপাশের গাছপালা গুলো তো বটেই  বাড়ি, ঘর, রাস্তা ঘাট লাল ধুলোয় মাখামাখি থাকে। সেখান প্রত্যেকটি বাড়ি ঘর সব সময় দরজা জানালা বন্ধ করে রাখে। সে যেন এক দম বন্ধকর পরিবেশ। বাস থেকে নেমেই বুঝলাম, এই এলাকায় বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। দ্রুত কাজ মিটিয়ে সরে পরতে হবে না হলে ফুসফুসের অবস্থা বারোটা বেজে যাবে। পকেট থেকে ঠিকানা টি বের করে কয়েক কয়েকজন কে বলতেই সহজেই জেনে গেলাম । এখান থেকে মিনিট দশেক পাহাড়ী রাস্তার ঢাল বরাবর উঠে গেলেই একটা পাড়া পড়বে। সেখানেই নাকি তার বাড়ি।


তখন দুপুর দুটোর বেশি বেজে গিয়েছে। বুদ্ধিকরে বাসের ভেতরেই দুপুরের শুকনো খাবারটা খেয়ে নিয়েছিলাম। তা ছাড়া ঘন্টা দেড়েকের মধ্যেই ওই বাস টা ছাড়বে। সারা দিনে ওই একটা বাস যাতায়াত করে। তাই কাজ তার মিনিট পনের কুড়ির মধ্যেই সেরে ফেলতে পারলেই নিশ্চিন্ত।। ভদ্রলোক আমায় যথেষ্ট আদর যত্ন ঘরে বসতে দিল।


মিনিট চল্লিশ হল কাজ প্রায় শেষের মুখে । এমন সময় বাড়ির বাইরে বোমা পড়ার মতো কয়েকটা কয়েকটা বিকট শব্দ হল। উঠনেও মেইন রাস্তায় মনে হল বোমা পড়েছে।

সাথে সাথে সব কিছু বন্ধ হয়ে গেল। আমার বাড়ি ফেরার ওই বাস টাও সেদিনের মতো দ্রুত পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেল।ভদ্রোলক দুঃখ প্রকাশ করে আগামী দিনের আগে বাড়ীর রওনা দিতে পারব না বলে জানালেন। বাকি দিনটা ভদ্র লোকের সাথে কথা বলে ও অফিসের কাজ করে কাটিয়ে দিলাম।


রাত নটা নাগাদ খাওয়া দাওয়া সেরে শুয়ে পড়লাম, একই খাটে পাশাপাশি। অনেক গল্প কথাবার্তা র পর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে নেই। রাত তখন তিনটে কি সাড়ে তিন টে হবে। একটা অদ্ভুত অস্বস্তিতে ঘুম টা ভেঙে গেল। ঘাড় ঘুড়িয়ে মৃদু আলোর মধ্য দেওয়ালের দিকে পাস ফিরতেই দেখি ওই ভদ্রলোক আমার মুখের দিকে মড়া মাছের মত বড় বড় চোখে করে তাকিয়ে আছে। ঠিক কতক্ষন যে তিনি আমার দিকে ওভাবে তাকিয়ে আছে ঈশ্বর ই জানেন। কি ভয়ানক সেই দৃষ্টি, মুহূর্তেই রক্ত চলাচল বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট। থাকতে না পেরে ভয়ে আমি চিৎকার জুড়ে দিলাম তারস্বরে। আমার চিল চিৎকারের শব্দে তার দেহে যেন প্রাণ ফিরে এল। ধড়ফড় করে উঠে তিনি বাতি জ্বালালেন। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই ব্যাপার টা তাকে জানালাম।


প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে বললেন যে তার স্লিপিং ডিসঅর্ডার এর সমস্যা আছে। এটা তার বহুদিনের।


পরদিন সময় মত তিনি আমায় বসে তুলে দিয়েছিলেন। রাতের ওই ঘটনার জন্য ক্ষমাও চেয়েছিলেন।


যে ভয় সেদিন আমি পেয়েছিলাম তা আজও ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror