তাজ্য মেয়ে
তাজ্য মেয়ে


এক অসহ্যকর পরিস্থিতি।
কি ছিল লিখা এই ভাগ্যে এই জীবনে, এতো অদ্ভুত প্রকৃতি। সত্যিই ভাবতেই অবাক লাগে।
মানুষ যেটা চাই তাতেই তার বাধা।
চাওয়াটা কি এতো বড় ভুল! নাকি ভুলটা কিসে, বুঝেই আসেনা আজ।
কতোই বা এমন আকাশ সমান আবদার ছিল! কেন আজ এতো টা তুচ্ছ! এতোটা নিস্তব্ধ সবচেয়ে মূল্যহীন বস্তু টি মনে হচ্ছে!
জানিনা ঠিক কি এমন পাপ ছিলো যে, চাওয়া পাওয়ার হিসেবটা আজও অত্যন্ত ব্যাপকভাবে অবহেলিত এই পরিবেশের কাছে।
এখনো স্পষ্ট সব। যা ঘটে গেছে জীবনে, আসলে জীবন টা শেষ হয়ে গেলে হয়তো সব ঠিক হয়ে যেতো।
কিন্তু হাতে ধরে কি আর তা শেষ করা যায়! অন্তত যতক্ষণ পর্যন্ত না এইটা শেষ হয় সেটাকে বয়ে বেড়ার মতো পরিস্থিতি থাকা লাগবে।
কিন্তু সেটাই তো কেউ বুঝেনা বা আজও বুঝেনি।
কিসে ভালো থাকা যাবে, পেলে সুখি থাকা যায়, কতটুকু কি লাগবে কেউই বুঝলোনা আজ।
একা করে দিল ভাবনা চিন্তার বেড়াজালে ছেড়ে!
ঠেলে দিলো আজ অজানা অন্ধকারে।
শুনেছি পরিবারের মানুষ পাশে থাকে সবচেয়ে খারাপ মুহুর্তে। অথচ এই ভাবনা গুলো মিথ্যে করে দিয়ে আজ আমি একা এইটা উপলব্ধি করাচ্ছে তারা বারেবার। হ্যাঁ আজ আমি একা সম্পুর্ন একা। এই দুনিয়ায় দোপেয়ের সমাজে, একমাত্র স্রষ্টা ছাড়া সঙ্গ দেওয়ার কেউই নেই।
অনুভবে সেই স্রষ্টাই রয়ে গেছে, তাছাড়া বাকি সব অন্ধকার। কাল্পনিক অন্ধকার। আসলেই অন্ধকার না তবে এই আলো আমার কাছে এখন কারন ছাড়া জলে থাকা বাতির মতোই মনে হচ্ছে, মূল্যহীন মনে হচ্ছে সবটা।
কেমন জানি ম্লান সময়। যদি সবাইকে পাশে পেতাম তবে থাকতো আমার প্রানহীন অস্তিত্ব যা কেউ বুঝেনা বা বুঝার ক্ষমতা রাখেনা।
তারা মনে করে আমি পাথর কেউ মনে করে আমি ম-ম তবে সবটাই খারাপ দিক দিয়ে।
আমার ভেতরে কি চলে সেইটা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর আমার নিজ সত্তা ছাড়া কেউই জানেনা প্রকৃত পক্ষে।
আর এসব বুঝ আমি দিতে পারবো না আমার সেই সাধ্য নেই যে, এমন না যে আমি চেষ্টা করিনি। অনেক করেছি, বলেই বুঝেছি এদেরকে বুঝানো আমার পক্ষে অসম্ভবই শুধু নয়। অত্যন্ত জটিল। অসাধ্য একেবারেই আমার।
যাহোক আমার ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে এরকম একটা পরিক্ষার মুখোমুখি আমি।
আমার পরিক্ষাটা কি আমি নিজেও বুঝিনা, অগ্নি, ভালোবাসার, ভালোথাকার নাকি কাউকে ভালো রাখার!
আমি সত্যিই তা জানিনা ঠিক কিসের পরিক্ষা দিয়ে চলেছি, তবে আমার পরিক্ষার কঠিন পরিস্থিতি কঠিন পদ্ধতি টুকু আমিই বুঝছি, আর যিনি অন্তর্যামী যিনি নিচ্ছেন তিনিই জানেন।
একটাই মানুষ কে চাওয়ার ফলাফল এই দশা আজ জীবনে।
সেই মানুষটা যাকে ভালোবেসে বুঝেছি জীবনে যদি কেউ আসে এর থেকে ভালো কেউ আসতে পারেনা। ভালো থাকার জন্য একটা জীবন পাড়ি দিতে হলে এর চেয়ে ভালো আর কাউকে পেতে পারিনা। এমন একজন যাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবো।
সৃষ্টির্কতা সম্পর্কে যতটুকু জানি তাকে বোঝাতে পারবো। নিজের মতো করে গড়ে তুলতে পারবো, তার মনের যে সাদা পাতা সেইটা এলোমেলো আঁকিবুকিতে পরিপূর্ণ। আমি সেটা মিটিয়ে আমার রঙয়ে রাঙাবো।
আচ্ছা আমার এই চাওয়াটুকু তে কি ভুল ছিলো। যার ফলে আজ আমাকে অভিশপ্ত হতে হলো!
আমি কি খুব বেশি চেয়ে ফেলেছি! খুব বেশী বাজে কিছু!
কেন এরকম হতে হলো!
যাকে দেখে আসছি সেই ছোট্ট থেকে, যখন মনে ছিলো না কোনো আবেগ বা আবেগের কোন বাস।
তখন দেখে কি হতো জানিনা, বুঝিনা কি চলতো এই মন জুড়ে।
তবে এইটুক বুঝি যে এই অশান্ত চোখ চলে যেতো তার অবস্থানের রেশ হাতরাতে।
একদিন এই চাহনির এই অশান্ত চোখের ভাষা বুঝেছিলাম।
তবে অনেক দেরিতে।
ততোদিনে তার চঞ্চল মন চলে গেছিলো অন্য কোন জগতে। যেই জগৎ আমার আর তার মাঝে দাঁড় করে রেখেছে এক বাধা অবাধার অবাধ্য দেওয়াল।
ঠিক সময়ে ধরা দিলে হয়তো এমনটা হতো না হতে হতো না এতোটা অবাধ্য আমাকে। কিন্তু কি আর করার! আসলে সবটাই নিয়তি।
আমার পরিক্ষাটাও হয়তো জরুরীই ছিলো।
তাছাড়া আর কিছু দেখছিনা।
আজও সে আমার। তবে আমি কারো না, পরিস্থিতি এমনই এক কঠিন দিকে দাঁড় করিয়েছে আমাকে।
খুবই কষ্ট লাগে, সে দূরে তবু তার ভালোবাসার টানে আমি যুদ্ধ করে যাচ্ছি, তাকে পাওয়ার যুদ্ধ।
কারন না পেলে যে কষ্ট পাবো তার চেয়েও বেশি অনেক খারাপ কিছু ঘটে যাবে। আমি সারাজীবন দগ্ধ হয়ে থেকে যাবো।
অন্য এক জগৎ এর আসামী রয়ে যাবো আজীবন। যা হয়তো কেউই জানবেনা। কেউই বুঝবেনা। তবে খোটা খেয়ে জীবন শেষ হবে।
অন্য কেউ কি দিবে জানিনা। সেই উপলদ্ধি করার ক্ষমতা আমার নেই।
তবে নিজের বিবেকের কাছে আমি অপরাধী থাকবো।
আর হবে বলতে আমি নিজেকে কোনোদিনই ক্ষমা করতে পারবো না।
আমি সহ্য করতে পারবো না কিছু।
সবচেয়ে খারাপ যদি কেউ থাকে তো সেইটা থাকবো আমি।
আমি সত্যিই আর ভাবতে পারছিনা। আমার ভাবতেই কষ্টে চৌঁচির হয়ে যাচ্ছে ভেতরটা ফেটে। আর হলে কি হবে আমি তা জানিনা।
আমি এই মুহূর্তে টা ছাড়াও সারাজীবন এরকম এক জীবনে পড়ে থাকতে যে চাইনা।
এই ছোট্ট জীবন টা নিয়ে যে আমার অনেক শপ্ন। অনেক আশা অনেক কিছু করার শখ।
সেইটা করতে না পারলে আমার চেয়ে অসুখি আর ব্যর্থ বুঝি আর কেউ থাকতেই পারেনা।
সাময়িক দুরাবস্থা কিভাবে যাবে জানিনা, তবে পরবর্তি অবস্থা সত্যিই আরও ভয়াবহ।
যদি কেউ আমাকে একটু বুঝতো অনেক টা ভাগ্যবতী লাগতো নিজেকে, তবে সত্যিই দুর্ভাগ্য আমার আমি বুঝতে পারছি তা ভালো মতো।
আমার জগতে আমি অনেক কিছু পারি, আমি অনেক কিছু ভাবি, তবে তা আমার জগতের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
আর কোথাও নেই এর কোন আঁচ নেই অংশ।
জানিয়ে কিছু করাটাও আমি পছন্দ করিনা। আসলে মহৎ কিছু করলেও চাইনা কেউই জানুক।
মানুষ আমাকে অকেজোই ভাবুক। নিকাম্মাই ভাবুক। তাতেও কিছু যায় আসেনা। তবে আমার জন্যে কারো ক্ষতি হোক এমনটা চাইনা। সত্যকার অর্থেই চাইনা।
তবে বেঁচে থেকেও ইচ্ছাগুলো অপুর্ন অবস্থায় রেখে যেতে চাইনা।
যদিও মৃত্যুর জন্য আমি সবসময় প্রস্তুত।
কারণ সেটা বলে কয়ে আসবে না।
আজ এতো টা অসহায় বলে চারিদিকের আলো যেমন অর্থহীন, তেমনি বিশাল এই আকাশের সকল এই রং বর্নহীন।
শুধুমাত্র দেখে চলেছি অন্যদিক নেই তাকার মতো তাই বলেই, অথচ যার বর্ন খুজে পায়না তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।
হুম, কারন সেযে আমাকে দোষারোপ করবেনা। শাস্তি দিবেনা কোন বা অভিযোগ করবে না।
তাইতো তার দিকে নিশ্চিতে চেয়ে রয়েছি এখন।
তাতে বিচরণ করা সকল প্রকার তারকাদেরও পর্যবেক্ষন করে চলেছে আমার এই চক্ষুদয় তবু মন থেকে তিব্র ব্যাথার পরিমান পুরোপুরি কাটছেনা।
সেই টা সম্ভব ও না।
কারন কবে যে সেই সুদিন আসবে তা জানিনা।
_