আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

4.5  

আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

3 mins
439



(চুক্তিভিত্তিক বন্ধন/বিয়ে)



পর্ব,,২২,, 

***নওশীর যত্ন আর মায়ার বকবকানী আর আসফাক হায়দার ও মহুয়ার বেগমের আন্তরিকতায় কিভাবে যে দশদিন কেটে গেলো বুঝতেই পারলোনা নওশেদ আলী।,,, তবে এখন তিনি আর নওশীকে আলাদা রাখতে চাননা নিজের থেকে!!! বরং বাকিটা জীবন তিনি তার মেয়েকে আগলে নিয়ে বাঁচতে চান।,,, এ কয়েকদিনে মায়ানের সাথে ফোনে কথা হয়েছে উনার,,,

___আর তাই নওশেদ আলী বিকেলে বিকেলে চা খেতে বসে নওশীকে নিয়ে যাওয়ার কথা তুলে। মায়াতো তখন থেকেই কান্না শুরু করেছে আর থামার নামগন্ধ নেই। ,,, আবার নওশীর মনটা খারাপ হয়ে গেছে ও ওর বাবার সাথে যেমন থাকতে চাই তেমনি এই বাড়ির প্রতিও ওর খুব মায়া জন্মে গেছে। 

,,,,এই বাড়ির মানুষগুলো ছাড়া ও থাকতে পারবেনা। আর যখন ও বাইরে থেকে আসবে তাকে কিভাবে দেখবে,,!!! আসফাক হায়দার আর মহুয়া বেগম মুখে কিছু না বললেও ওরা মনে মনে করুনভাবে খুব করে দোয়া করতে থাকে নওশী যেনো এখান থেকে না যায়।

********



রাতে খেতে বসে সবার দুঃখ ভারাক্রান্ত মুখ দেখে নওশেদ আলীর খুব খারাপ লাগলো।,,, আবার রোজ রাতে নওশী ঔষধ খাইয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক গল্প করলেও আজকে কেমন যেনো মনমরা হয়ে ছিলো!!!! অনেক ভেবে চিনতে নওশেদ আলী সিদ্ধান্ত নিলো যেহেতু তার বাধ্যবাধকতা নেই কোথায় থাকতে হবে না হবে তাই তিনি এখানে একটা বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা ভাবলেন।,,,, সকালে নওশেদ আলীর সিদ্ধান্ত শুনে সবাই পুরোপুরি খুশি না হলেও মোটামুটি সবাই একটু স্বস্তি পেলো।,,, আসফাক হায়দার জানালো রাস্তার ওপারে একটা দুই রুমের ফ্লাট ফাঁকা আছে,,। তাই সেদিনই গিয়ে পছন্দ হওয়ায় ভাড়া একটু বেশী লাগলেও নওশীকে খুশি রাখতে ওটা নিয়ে নিলো।










🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼









,,,পরের মাসেই ঢাকা থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে ঢাকার ফ্ল্যাটের ভাড়াটা ক্যান্সেল করে এখানে একেবারের জন্য চলে আসেন নওশেদ আলী।,,, আসার আগে অবশ্য রিয়াজ উদ্দিনের সাথে একটা দিন কাটিয়ে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা করেছেন তিনি,,।এরপরের মাসের এক তারিখে সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে এই ফ্লাটে চলে আসলেন নওশেদ আলীরা 

,,,তিনতলা ফ্লাটটায় বাড়ির মতো করে প্রতি তলায় দুইটা করে রুম আর দুটো বাথরুম। রান্নাঘর আর একটা ডাইনিং...

,,তিনতলায় একটা ফ্যামিলি থাকে দুতলায় বাড়িওয়ালারা আর নিচতলায় নওশেদ আলীরা উঠলেন।,, মহুয়া বেগম হাতে হাতে সব গুছিয়ে দিলেন নওশীর,, সবার একটু খারাপ লাগলেও রাস্তা পার করে এক মিনিট হাঁটলেই আসফাক হায়দারের বাড়ি।

****নওশী মানবিক শাখায় পড়ার জন্য বাইরে প্রাইভেট পড়েনা। , বিকেলে আসফাক হায়দার ওকে পড়ায় আর এখন কোন বিষয়ে অসুবিধা হলে নওশেদ আলীও সাহায্য করে।,,, সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা বানিয়ে বাবা, মেয়ে একসাথে খাওয়ার পরে নওশী স্কুল যাওয়ার জন্য তৈরি হতেই মায়া হাজির হয়ে যায় ওর সাথে যাওয়ার জন্য। 

,,,আবার স্কুল থেকে এসে গোসল করে নামাজ পড়ার পরে নওশেদ আলীর রান্না করা খাবার খেয়ে,, একটু বিশ্রাম করার পর আসরের নামাজের সময় মায়া আবার হাজির হয়।,, ওকে সাথে করে এ বাড়িতে এসে আসফাক হায়দারের কাছে ইংরেজি আর গনিত পড়ার পরে মহুয়া বেগমের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে আজান দিলে মায়ানের ঘরে গিয়ে নামাজ পড়ে।,, মায়ানের ঘরটা একটু এদিকে হওয়ায় মায়া একাই ঘুমাতে ভয় পায় তাই মায়া আনতারা বিবির ঘরে থাকে,, আর নওশী যখনই এ বাড়িতে আসে মায়ানের ঘরে অধিকারবোধ নিয়ে থাকে। 

,,,এরপরে এক ঘন্টা সবার সাথে এখানে কাটিয়ে মহুয়া বেগমের হাতে রাতের খাবার খেয়ে তারপর ওর বাবা এসে আসফাক হায়দারের সাথে কথা বলে ওদের ফ্লাটে চলে যায়।

,,,এভাবেই চলছিলো তাদের প্রতিদিন আর ছুটির দিন গুলো সবাই একসাথে বেড়াতেও যেতো। 

,,,এভাবে ছয়মাস কেটে গেলো,, তবে নওশেদ আলী এভাবে বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছিলেন,,তাই আসফাক হায়দারের সাথে পরামর্শ করে এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটা জিম সেন্টার আছে তার পাশে একটা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার খুলেন,,যাতে করে এখানে জিম করতে আসা ছেলেরা এটা দেখতে পায় আর বিনামূল্যে ট্রেনিং দেওয়ার প্রথম মাসে মাত্র দশজন হলেও আস্তে আস্তে এটার ব্যাপারে অনেক জানাজানি হওয়ায় ছোট বড় সব ধরনের মিলিয়ে পঁচিশ জনকে এখন রোজ বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রেনিং দেন।

,,,দেখতে দেখতে আরও একটা আরও একটা বিকেল কেটে যায়,, আসফাক হায়দারও কলেজ থেকে বিদায় নেন,, ওখানে গরীব বাচ্চাদের তারা দুজন বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলো।,, নওশীর এস,এস,সি, পরীক্ষার পরে ওই ও এসব বাচ্চাদের টুকটাক পড়াতো।,, এভাবেই এদের দিন ভালোভাবে কাটলেও মালেশিয়াতে অবস্থান করা মায়ানের অবস্থা খুবই খারাপ।

,,ও খুব একাকিত্বতায় ভুগছে,, আর ওর মনে নওশীকে হারিয়ে ফেলার ভয় সব সময় তাড়া করে বেড়ায়,, তাই ও একমাসের ছুটি নিয়ে বাড়ি আসার কথা ভাবছে। ও কাউকে কিছু জানায়নি যে বাড়ি গিয়ে সারপ্রাইজ দিবে সবাইকে,,,........






চলবে....




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics