STORYMIRROR

আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

4  

আরিয়ানা ইচ্ছা

Classics Others

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

4 mins
230


(চুক্তিভিত্তিক বন্ধন/বিয়ে)





পর্ব,,, ২৪,,, 

***এরপরে কেটে গেছে আরও চৌদ্দ দিন,, নওশীর ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ায় ও এখন কলেজে নিয়মিত ক্লাস করছে,, নওশী এখন সব সময় মন খারাপ করে থাকে।

___,,,কাল থেকে তো আরোও মন খারাপ,, কালকে বিকেলে ও লুকিয়ে মামনির ফোন থেকে মায়ানের নাম্বারটা নিয়ে রাতে নওশেদ আলী ঘুমানোর পর মোবাইলটা এনে নাম্বারটা উঠিয়ে অভিমান এক সাইডে রেখে ডায়াল করে,, তবে দুই, তিনবার কল দেওয়ার পরও মোবাইল বন্ধ পেয়ে রাগে ক্ষোভে বাবার মোবাইলের কললিষ্ট থেকে নাম্বারটা ডিলেট করে। 

,,,ও যে কাগজে নাম্বারটা লিখে নিয়ে আসছিলো ওটা মুচড়ে বাইরে ফেলে দেয়।,, এখনও অর্থনীতির ক্লাসে স্যার পড়ালেও ওর মন সেদিকে নেই ভাবটা,, ভাবটা স্যারের দিকে তাকিয়ে পড়া শুনছে এরকম হলেও,,,ওর মন পড়ে আছে মায়ানের ভাবনায়!!!! 

___,,,,ক্লাস শেষ করে ও বাইরে আসবে এমন সময় একজন পিয়ন বললো ওকে প্রিন্সিপাল স্যার ডাকছে,, ও অবাক হয়না কারন প্রিন্সিপাল স্যার আসফাক হায়দারের পরিচিত হওয়ায় মাঝে মাঝে ডেকে খোজ খবর নেয় ওর,,,,। 

***প্রিন্সিপাল স্যার বললো,, ওকে আসফাক হায়দার বাড়িতে ডেকেছে কি যেনো দরকার আছে,, নওশী এই খবর পেয়ে ছুটে গেলো,, কারো কোনো বিপদ হয়নি তো!!!! এটা ভেবে। ও বাড়ির কলিংবেল বাজালে মায়া দরজা খুলে দিলো।,,, মায়া এখনও স্কুল ড্রেস পড়া অবস্থায় আছে।



,,নওশী দ্রুত পায়ে ড্রইং রুমের দিকে যেতে গেলে মায়া তাকে বাধা দিলো,, বললো,,সবাই আনতারা বিবির ঘরে আছে,, ___আনতারা বিবির ঘরের দরজার কাছে গিয়ে একটা পুরুষ কণ্ঠের আওয়াজ শুনে নওশী পুরো চমকে যায়।,,, নওশী দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে দেখে মায়া তার হাত ধরে টেনে ঘরের ভিতরে নিয়ে গেলো।,, মায়া ঘরে গিয়েই উচ্চস্বরে বলতে শুরু করলো,, "ভাইয়া দেখো এইযে নওশী আপু"। মায়ার দরজার দিকে তাকিয়ে যেনো বিভ্রান্তে পড়ে গেলো।

,,,,,






🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁










__এটা কে!! স্কুল ড্রেসের সাদা আর নীল চেকচেক কাপড়ের বোরকা পড়ে মাথায় সাদা হিজাব দিয়ে মুখটা সহ গা ঢাকা। আর হাতে পায়ে কালো রঙের মুজা। ,, শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে। ,, তবে ওই চোখ দুটো দেখে মানুষটাকে চিনা যায়,, নাহলে উপায় নেই।,,, পাঁচ বছরে অনেকটাই বদলে গেছে মেয়েটা।

,,,

____,,,,তার পিচ্চি নুশু এখন বড় হয়ে গেছে,, ইচ্ছে হলেও এখন আর জড়িয়ে ধরা যাবেনা।,, নওশী ঠোঁট কামড়ে কোনো রকমে কান্না আঁটকে রেখেছে,,একবার তাকিয়ে নামিয়ে নেওয়া তৃষ্ণার্ত চোখজোড়া দিয়ে আবার দেখলো পঁচিশ বছরের যুবকটাকে,, আগের চেয়ে অনেকটা স্বাস্থ্য ভালো হয়েছে।

,, শ্যামলা ত্বকটা পরিস্কার হলেও চোখের নিচে কালি দেখা যাচ্ছে।,, তবে সব কিছুতে হাল্কা পরিবর্তন আসলেও চুল গুলো এখনো কোকড়া আর অগোছালো হয়ে আছে,,যেমনটা ও পছন্দ করতো।,, ওর মনে আছে ও যখনই মায়ানের মাথাটা কাছে পেতো তখনই চুল গুলোতে হাত বুলাতো আর বলতো কখনো যেনো এগুলো পরিবর্তন না করে । 

,,মনে মনে ভাবে নওশী,," আচ্ছা ওকি তাহলে আমার কথাটা ভেবে চুল এখনো এমন করে রেখেছে!!?" নওশী মায়ানের চুল ওরকম দেখে খুশি হলেও আসফাক হায়দারের কথা শুনে ওর মুখটা আবার বিষন্ন হয়ে উঠলো। আসফাক হায়দার মায়ানের ঘাড় ধরে বললো,, "বুঝলি মায়ান এবার বিয়ের জন্য এখানে এসেছে,, তাই আমরা কাল ওর বিয়ের আয়োজন করেছি,, তুই আবার কাল কলেজ যাসনা। ,, সকাল সকাল চলে আসিস।"

___নওশী কোনো রকম আচ্ছা বলেই বললো,, "আমার মাথা প্রচুর ব্যাথা করছে মামনি,, আমি একটু বাড়ি গেলাম" বলেই কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে আসলো ওখানে থেকে। 

,,,ঘর থেকে বেরিয়েই ওর চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়তে শুরু হলো,, ঠোঁট কাঁপলো তীব্রভাবে।,, এদিকে নওশীর চলে যাওয়াটা এক অসহায় চোখে মায়ান দেখলো,, মনে মনে,, "নওশীর কি একটুও যায় আসেনা!! ওর অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে গেলে!!"

,,,এরপরের কিছুক্ষণ বিষন্ন মনে কাটিয়ে মায়ান,, দুপুরের সময় অল্প খাবার খেয়ে ক্লান্তি লাগছে বলে নিজের ঘরে চলে যায়। 

,,অতীতে,, সেইদিন যখন নওশী দৌড়ে সিড়ি বেয়ে কাঁদতে কাঁদতে নামে তখন নওশেদ আলী শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে নওশীর পিছু,পিছু নেমে দেখে ও শুয়ে কাঁদছে। তখনই কিছু একটা আন্দাজ করে নিয়ে আবার ছাদের ঘরে ফিরে গিয়ে তিনজনে মিলে ওদের বিয়ে নিয়ে আলোচনা করে। 

,,,আর আজকে মায়ান হঠাৎ বাড়ি এসে সারপ্রাইজ দিতে চাইলেও সবাই যেনো ওকেই চমকে দিয়েছে।"""

___,,বর্তমানে,, আজ রাতে দুটো হৃদয় বিষন্ন মনে কাটালেও,, বাড়ির বাকি চারজন ওদের কিভাবে খুশি করা যাবে এই ভাবনায় ব্যস্ত।

,,বিছানায় শুয়ে শুয়ে মায়ানের সকালের কথা মনে পড়ে,, ও এসে কলিংবেল বাজালে মহুয়া বেগম প্রথমে চমকে গেলেও পরে ওকে ধরে আনন্দের কান্না করে ফেলেন। ,, ওকে শান্ত করেও একে একে আসফাক হায়দার, মায়া এরা এসেও আবেগী হৃদয় প্রকাশ করে। 

,,পরে নওশেদ আলীকে কল করলে উনিও আসেন,, সবার সাথে কথা বার্তা, হালকা নাস্তা হলেও মায়ান উশখুশ করছিলো নওশীকে দেখার জন্য। ,, ও লাজলজ্জা ভুলে বলেই দেয়,, "নওশী কোথায়?"

তখন আসফাক হায়দার কলেজের প্রিন্সিপালকে কল করে ডেকে পাঠায়।,, এরপরে মায়ানকে বলে "বাবা আমি কখনো তোমার কাছে কিছু চাইনি, তুমি আমাকে সাহায্য করো,বাবা, আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বউ মারা গেছে। ,, মেয়েটাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। "" আমি ওকে তোমার বউ করে ওর বাবার উপকারের ঋন শোধ করতে চাই। " 

,,তার বাবা এভাবে হাত ধরে বলাই মায়ানের খুব খারাপ লাগে,,কিছুই বলতে পারেনা। তারপরে নওশী আসার পরে বাবা যখন কাল বিয়ের কথা বললো তখন নওশীর ডোন্ট কেয়ার ভাবটা দেখে মায়ানের অভিমান হলো খুব,, ও ভাবলো,, """ নাহ! আমার দেশে আসায় ঠিক হয়নি।,, নওশী যখন আমাকে ভুলে গেছে তখন আমিও অন্য কাউকে বিয়ে করে নেবো। 

আর এমনিতেও ওর মতো সুন্দরী পরীর মতো মেয়ের সাথে আমায় মানায় না............





চলবে......





Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics