আরিয়ানা ইচ্ছা

Abstract Others

4  

আরিয়ানা ইচ্ছা

Abstract Others

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

4 mins
330



(চুক্তিভিত্তিক বন্ধন/বিয়ে)





পর্ব,,১৬,, 

***আসফা আসা দুইদিন পার হয়ে গেছে,, এ দুই দিনে আনতারা বেগম যেনো অর্ধেকটা সুস্থ হয়ে গেছে,, একটা মিষ্টি হাসি সব সময় উনার মুখে লেপ্টে আছে,,। 

,,,,আরাফ তো মায়া আর নওশীকে পেয়ে ওর মায়ের কাছে ভুলেও আসছেনা"""। এখন আসফা আর মহুয়া বেগম রান্নাঘরে রাতের খাবার এর ব্যবস্থা করছে আর মায়ান ওর বাবার সাথে নামাজ পড়ে এসে সোফায় বসে কথা বলছে,, পরিক্ষা শেষ এরপরের কার্যক্রমের ব্যপারে,,। আনতারা বিবি এখন উনার ঘরে বসে নওশী মায়া আর আরাফকে গল্প শুনাতে ব্যস্ত।



********


রাতের রান্না শেষ হলে আগে আসফা বড় প্লেটে করে, ভূনা খিচুড়ি, ডিম ভাজি, আলু ভর্তা, আচার নিয়ে আনতারা বিবির ঘরে আসে,, চার ছোট্ট বাচ্চাকে নিজ হাতে খাইয়ে এসে """" মাকে খাওয়াতে গেলো,, খাওয়ানোর সময় চোখ টা ঝাপসা হয়ে বার বার ভিজে উঠছিল,, সত্যি মানুষ বৃদ্ধ বয়সে আবার ছোট শিশু হয়ে যায়,, তখন তাদের আবার ছোট নিস্পাপ শিশুর মতো আগলে রাখতে হয়,,,। 

***আসফা ওদের খাইয়ে দিয়ে ডাইনিং এ গিয়ে দেখে ওর ভাই,ভাবী আর ওর ভাতিজা সবাই ওর অপেক্ষায় বসে আছে,, খাওয়া শুরু করেনি তাই ও একটি চেয়ার টেনে মায়ানের পাশে বসে যায়।,,,, খাওয়া দাওয়া করে আজকে আবার সবাই আনতারা বিবির ঘরে সময় কাটায়,,, ক্লান্ত হয়ে আরাফ আর মায়া খাটেই ঘুমিয়ে পড়েছে,, নওশী ও ঘন ঘন হাই তুলছে,, মহুয়া বেগম মায়াকে কোলে করে নওশীকে সাথে নিয়ে ওরাকে শুইয়ে দিতে চলে যায়,, আর আসফাক হায়দার ও বোনকে নিয়ে জরুরি কথা আছে বলে ছাদে নিয়ে যায়,,,।


,,,,,,ঘরে এখন শুধু আনতারা বিবি আর মায়ান আছে,,বিছানার এক কোনে আরাফ ঘুমে বিভোর,, আনতারা বিবি মায়ানকে হাত বাড়িয়ে ডাকে "ভাই আমার আয় কাছে,, কতদিন থেকে মন ভরে তোকে দেখিনি,,। মায়ান বিছানায় এসে ওর দাদীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে,,।

,,,,,,আনতারা বিবি ওর মাথার কোকড়া চুল গুলোতে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,, " তুই জানিস আমি তোকে প্রথম কোলে নিয়েছিলাম যখন,, আমার অন্তর জুড়িয়ে গেছিলো।,,, তখন আমার শুধু একটাই ভাবনা ছিলো,,আর তা হলো এটা,, "আমার কলিজার একটা অংশ একে আমাকে মানুষের মতো মানুষ তৈরি করতে হবে।

______••°°_°°••______,,,"দেখতে দেখতে দেখ আজ উনিশটা বছর পার করে ফেললী কিন্তু তোকে আমি যেমনটা দেখতে চাইতাম,,যেভাবে বড় হওয়া নিয়ে ভাবতাম,, তুই তার চাইতেও ভালো মানুষ হয়েছিস,, সারাজীবন এরকমই থাকবি দাদুভাই,, কখনো বদলাবি না,, আমার শিক্ষাতে কেউ কখনো আঙ্গুল তুলতে না পারে। মায়ান চোখ খুলে ওর মাথায় বুলাতে থাকা জড়ো হওয়া চামড়া বিশিষ্ট হাত টিকে ধরে উঠে বসে বলে " তুমি চিন্তা করোনা দাদী,, আমি তোমার শিক্ষার কখনো অমর্যাদা করবো,,অসম্মান হতে দেবোনা। তুমি শুধু সব সময় আমার সাথে থেকো আর জলদি সুস্থ হয়ে যাও,, আমার যে তোমাকে এভাবে থাকতে দেখে একদম ভালো লাগেনা",,,,,, বলতে বলতেই মায়ানের চোখ দিয়ে বড় বড় দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে ওর ঘন পাপড়ি যুক্ত চোখ থেকে,,,। 

*****আনতারা বিবি মায়ানের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললো, "আমি জানি তুমি নওশীর চলে যাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকো,, ভয় পাও,,তবে তুমি জানো আমি এই বিয়েটা মন থেকে মানি ভাই আর তাই বড় হও ভালো একটা চাকরি করে নওশীকে আবার বিয়ে করো,,ওকে কোথাও যেতে দিওনা নিজের কাছে থেকে,,, "

_____,,,,,মেয়েটা অনেক ভালো" মা,বাবা আর বোনের সাথে সাথে ওকেও আগলে রেখো সব সময়। ",,,, মায়ান ওর দাদীর দু হাত ধরে ক্ননা করে দেয়,, আর কাঁদতে কাঁদতে বলে,,, " তুমি এভাবে কেনো কথা বলছো? যেনো তুমি কোথাও চলে যাবে! তুমি সবসময় আমার কাছে থাকবে।"










✨✨✨✨✨✨✨✨










আনতারা বিবি মায়ানকে তখন আর কিছুই বলেনি,,ওর চোখ মুছে দিয়ে মনে মনে অনেক দু'আ করে প্রান ভরে ওর আদরের মায়ানের ভবিষ্যৎ কল্যানের উদ্দেশ্যে,,। 


*****ছাদের এক কোনে অনেকক্ষন চুপচাপ থাকার পরেও যখন আসফাক হায়দার কোনো কথা বলেনা তখন আসফা অধৈর্য্য হয়ে পড়ে,, বলে " কি হয়েছে ভাইয়া? তুমি এতো কি ভাবছো? এখন আমাকে বলার জন্যও এতো ভাবতে হচ্ছে? আমিকি এতোটাই পর হয়ে গেছি,,,?" 

____,,,,আসফাক হায়দার বোনের দিকে চাইলেন এবার বলেন,, "না তুই কখনো আমার কাছে পর হবিনা,, তাতে তুই যত দূরেই চলে যাসনা কেনো,, তুই সব সময় আমার স্নেহের ছোট বোন ছোট বোনই থাকবি।" ____,,,,, আমি ভাবছিলাম তুই ভালো আছিস ওখানে,,,

"

"রতন কি এখনও ওই ব্যপারটা নিয়ে রেগে আছে? আর এবার রোজিকেও তো আসতে দেয়নি,,,।

,,,আসফা ভাইয়ের চোখের দিকে তাকালো,, যেখানে ওর জন্য একরাশ চিন্তা আর ভালোবাসা ফুটে উঠেছে,, কিন্তু তার সাথে কিছু অজানা ব্যাথাও দেখা যাচ্ছে,, বোনকে নিয়ে যে চিন্তা তাতেই এই ব্যাথার কারণ তা বলে দিচ্ছে,,। 

,,,আসফা ভাইকে আশস্ত করতে বললো,, " তুমি শুধু শুধু আমার জন্য চিন্তা করছো ভাইয়া।"

____"ওখানে মা,বাবা,রতন সবাই আমাকে খুব ভালোবাসে তবে,, রতনের জেদটা একটু বেশী কিন্তু এবার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে ওই ও আসতো,, কিন্তু রোজীর ফাইনাল পরিক্ষা চলছে যার কারণে এই সময় আমরা দুজনেই চলে আসলে ও মন খারাপ করতো তাই রতন থেকে গেলো মেয়ের কাছে।"

_

কিছুক্ষণ থেকে আবার ও বললো,,

___"তবে ওর এখনো মনে হয় আমার তখন এদেশে আসার কারনেই আমাদের সন্তান টা এই দুনিয়ার মুখ দেখতে পায়নি,, যায় হোক আর যেমনই হোক ও আমাকে আর আমাদের সন্তানদের ভীষণ ভালো বাসে তাই এসব অযথা চিন্তা বাদ দিয়ে চলো রাত হয়েছে শুয়ে পড়ো।" 

*****মহুয়া বেগম মায়াকে শুইয়ে দিয়ে আর নওশীকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে মশারী টানিয়ে ঘরে চলে গেছে,,। আর মায়ান দাদীর ঘরে দাদীর ঘুমানোর পরে ছাদের ঘরে চলে গেছে,, একটা বই নিয়ে বসেছে। "" আরও এক ঘন্টা পরে সবাই ঘুমিয়ে গেলে ও চুপি চুপি নিজের ঘরে গিয়ে নওশীকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,, তবে ও প্রতিদিনের মতো আজকেও নওশীর চোখের কোনে পানি দেখতে পায়......


চলবে,,,


(পড়ে কেমন হলো জানাবেন,, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। ♥️✨)





Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract