স্ত্রীর পত্র
স্ত্রীর পত্র
......আজকে চিঠি লিখতে বসে তোমার কি বলে সম্বোধন করব বারবার হারিয়ে যাচ্ছে...।আমার ভালোবাসা তুমি হয়তো প্রিয়তম সম্বোধন করতে পারতাম কিন্তু কেন করিনি জানো...?।তুমি আমার খোঁজ নিতে ভুলে গেছো আমি কিন্তু একদিনের জন্যও তোমাকে ভুলিনি।আজ থেকে দু'বছর আগে তুমি ব্যবসার কাজে বাইরে গেছো এই দু'বছরে আমি অনেক চিঠি লিখেছি তোমায়... তা বোধহয় আমি নিজেও জানিনা কত...। কিন্তু এই দু'বছরে তোমার কাছ থেকে আমি মাএ দুটো চিঠি পেয়েছি,তারমধ্যে শুধু লেখা ছিল..."
"আমি ভালো আছি....."
"তুমি কেমন আছো...." আর নিজের ব্যবসার কথা।
সেই চিঠিতে কোথাও তো আমি নেই তাই আজ ধরে নাও এই চিঠি আমার শেষ চিঠি।তাই জীবনের প্রথম দিন থেকে আর আজ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে আমি সবকিছু তোমায় মনে করিয়ে দেবো...। মনে করো তো সাগরনিল...আমাদের প্রথম দেখার দিনটা। সেদিন আমি বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গিয়েছিলাম সমুদ্রের ধারে জায়গাটা বোম্বে মনে আছে তো। আমার নাম অপরাজিতা সেটা বোধহয় তুমি ভুলে গেছো।কিন্তু সেদিন তুমি আমায় এই নামে ডাকতে না।আমার চঞ্চলতা আমার উচ্ছ্বলতা দেখে তুমি আমায় বলেছিলে তোমার নাম তিতলি হওয়া উচিত ছিল...।আর তোমাকে ভালবেসেছিলাম তোমার দুটো চোখ দেখে ঠিক সাগরের মত ওর মধ্যে গভীরতা ছিল ভেবেছিলাম...তুমি ঠিক আমায় ঐরকমই ভালবাসবে।তারপর আমাদের বিয়ে হল জীবনের শুরুতে বেশ ভালই কাটছিল তুমি আমায় অনেক জায়গায় বেড়াতে নিয়ে গেছো। কিন্তু... যত দিন যেতে লাগল..
..'আমি যেন কোথাও হারিয়ে যেতে লাগলাম...' তোমার সেই আমার প্রতি টান কমতে শুরু করল।
...কেন জানতে পারি কি....?
আমাদের দুজনের ভালোবাসার চিহ্ন আছে আমাদের ফুটফুটে মেয়ে যার নাম রিয়া।আমি না হয় বড় সবকিছু বুঝতে পারছি মেনে নিচ্ছি কিন্তু ও তো ছোট বাচ্চা ওতো তার বাবাকে খুঁজে কোথায়....। তুমি দু'বছরেও তোমার এর কাজ শেষ হলো না..কিন্তু যেদিন তোমার বিজনেস এর কাজ শেষ হবে সেদিন হয়তো আমি অনেক দূরে চলে যাবো....।সেদিন আর আমায় দোষ দিওনা কেননা প্রজাপতি কে কাচের শিশিতে বন্ধ করে রাখতে দেখেছো...?.
..রেখে দেখো কিছুক্ষণ বাদে প্রজাপতিটা মরে যাবে....। ঠিক আমার সেরকম অবস্থা। চিঠি তো তাই আমি আর বড় করলাম না...কারণ তোমার তো সময়ের অভাব।...ভেবোনা আমি তোমায় কোন অভিযোগ করছি ভালোবাসি তাই এটা অভিমানে লিখলাম কষ্ট করে পড়েনিও তোমার তিতলি....
( হারিয়ে গেছে....)।