রহস্য স্মৃতি1
রহস্য স্মৃতি1
আটের দশকের শেষের দিক।চাকরী জীবনের সুচনায় তখন সবে খাতড়ায় জয়েন করেছি। বয়স তখন পঁচিশ ছাব্বিশ, ব্লক স্তরে এক মামুলি আধিকারিক। খাতড়া তখন অতিরিক্ত মহকুমা ,ছোট শহর, কিন্ত পঞ্চায়েত এলাকা। জনসংখ্যা বেশ কম, বাজার দোকান মন্দ না।
অপরিচিত স্থান, সুদুর বর্ধমান জেলার এক গ্রাম থেকে গেছি। কর্মস্থল , বাড়ি থেকে একশ পঞ্চাশ ষাট কিমি দূর। সে সময়ে শুধু দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবারেই রাজ্য সরকারের কর্মীদের ছুটি থাকায় ঐ শুক্রবার গুলোতে বাড়ি যাওয়া, দুতিন দিনের জন্য। বাকী সময়টা এখানে থাকতে বাধ্য।
সহকর্মীদের পরামর্শে নতুন চাকরী জয়েন করার পর , সেদিনই অফিসের নিকটস্থ এক লজে থাকতে শুরু করলাম । লজ্ বলতে যা বোঝায় এটা ঠিক তা নয়। মনমোহন বাবুর বাড়ী নিকটবর্তী এক গ্রামে। সচ্ছল চাষী,সেই সঙ্গে এম আর ডিলার । খাতড়ায় নিজস্ব দ্বিতল বাড়ীর ।নিচে উপরে উভয় তলায় তিনটে করে ঘর ও কমন পায়খানা বাথরুম ।
শুধুমাত্র বাসস্থানের ব্যবস্থাছিল, খাওয়া দাওয়া বাইরে হোটেলে। আমি ছাড়া আর একজন প্রাইমারি শিক্ষক দ্বিতলে দুটি ঘরে পাশাপাশি থাকতাম,একটা ঘর সে সময়ে ফাঁকাই ছিল। মনমোহন বাবু নিচের ঘরে থাকতেন, সঙ্গে খাস চাকর অনুকুল। সে বাবুর রান্না বান্না ,গা টিপে দেওয়া থেকে আর কী কী করত কে জানে !
মনমোহন বাবু, তার খাস চাকর, ও উপরে মাঝ বয়সী ভাড়াটিয়া প্রাইমারী শিক্ষক গুরুপদ পান্ডা সকলেই ছিলেন তাসে আসক্ত। আমি যেদিন লজে ঢুকলাম, সেদিন সন্ধ্যা থেকেই একতলায়, বারান্দায় ঐ তাসের আড্ডায় রীতিমত মেম্বার হয়ে গেলাম। টোয়েন্টিনাইন সেদিন খেলছিলাম।
আনাড়ি অনুকুলকে আমার পার্টনার করে ,মনমোহন বাবু ও পান্ডা বার বার জেতা নিশ্চিত ভেবেছিল।কিন্ত প্রথম দিনেই ক'বার পর পর হেরে মনমোহন বাবু ঘাবরে বললেন "এই বয়সে আপনার কী অভ্রান্ত অনুমান! কার হাতে কী তাস আছে যেন সব আপনার জানা।আর প্রখর চাল সত্যিই তারিফ যোগ্য। আপনি আমার পার্টনার হলে কেমন হতো! "
পান্ডা কাঁচুমাচু হয়ে আমাকে বললেন "অনুকুল একটু কাচা ,তবে আপনার এত ভালো তাস আসছে ওর ভাগ্যে হতে পারে।"
মনমোহন বাবু হেসে বললেন "কী যে বলেন ,উনি তো প্রায় পয়েন্ট হীন তাসেই বাজীমাত করছেন! "
আমি পান্ডার সাথে সহমত হয়ে বললাম, "একমাস অন্তত এই পার্টনার থাক।"
পান্ডা খুসী হলেও মনমোহন আশাহত কিন্তু আর কথা বাড়ালেন না।
আমার গ্রামের বাড়ীতেও তাসের জমজমাট আড্ডা বসত প্রতি দুপুরে।মুলত ,মা ও পাড়ার কিছু গিন্নি, কাকীমা জেঠুমা সম্পর্কিত এই তাসের আড্ডার মুল হোতা। চারজনের অভাব থাকলেই আমাকে বসতে হত। মর্নিং কলেজ পড়াশোনার কারণে কলেজ জীবনে , পরে তিন বছরের বেকার জীবনে , দুপুরে বাড়ীতেই থাকতাম । আদর আপ্যায়ন করে তাস খেলার সঙ্গী হতে এমন ডাকাডাকি মা ও পাড়ার কাকী জেঠিমা কাছে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার , না করার সাধ্য ছিল না । তাই আমি টোয়েন্টিনাইন,ব্রে, বিন্তি কল ব্রীজ,সব তাস খেলায় অচিরেই বেশ পারদর্শী হলাম ,তাসে নেশাগ্রস্ত হলাম।
মনমোহন বাবুর তাসের আড্ডায় শুধুমাত্র টোয়েন্টি নাইন খেলা হত।সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা অবধি চলত। হোটেলে খেতে যাবার জন্য উঠলে মনমোহন বাবু কোন জোড়াজুরি করতেন না। বলতেন "টাইম পাসিং ই আসল ,হার জিত গৌন।"
একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে ওঠে ঐ মনমোহন বাবুর সাথে।
বাল্য থেকেই আমার একটু গোয়েন্দাগিরি স্বভাব। একদিন মনমোহন বাবুর সকাল সকাল সদর বাঁকুড়া গেলেন। এই সুযোগে অনুকুলকে একটু দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "আচ্ছা অনুকুল দা, এত গল্প হয় ,কথা হয়,তোমার বাবুর গ্রাম এত কাছে ,প্রায় একমাস হল । না বাড়ি যেতে দেখলাম ,না বাড়ীর গল্প করতে শুনলাম ? উনার ছেলে মেয়ে স্ত্রীর এরা আছে নিশ্চয়ই !"
অনুকুল একটু ইতস্তত করে বলল "বাবু আপনি ভদ্রঘরের ছেলে,যতদূর মনে হয় মানুষ ভালো, আপনি যদি কথা দেন ,এসব কথা আর কোন তৃতীয় ব্যক্তি জানবে না, তা হলে বলতে পারি।"
আশ্বাস দিলাম , আর অনুকুল আমার টোয়েন্টিনাইন তাস খেলার পার্টনার, মদ সিগারেট নেশার মত তাসও এক নেশা, বাবা বলতেন। আর যেহেতু শুধু তার পার্টনার নয় , আমি তুখোড় তাসুরে ,তাকে অনেক বার ওর মালিকের বিপক্ষে গেম জিতিয়ে, ওর মনে এতদিনে বিশ্বাস ভরসা আদায় করে নিয়েছিলাম। তা না হলে এমন সব কীর্তি জানাল,তাতে মনমোহন বাবুর প্রতি আমার ধারনা এতটাই পাল্টে গেল,পরের দিনই এই লজ্ ছেড়ে চুপ চাপ অন্য একটা লজে চলে যাই !
অনুকুল বলল ,"বাবু এখন বিপত্নীক । খাতড়ায় এটা তার সখের বাড়ী, ব্যবসার জন্য করলেও লাভ হত না।আগে প্রায়ই গ্রামের বাড়ী যেতেন, আর আমি খাতড়ার ব্যাবসা আগলে থাকতাম । এক বছর হতে চলল গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী আগুনে পুড়ে আত্মহত্যা করে, সারা শরীর কালো ঝাঁইপোড়া হয়েছিল। মনমোহন বাবু দোষী না নির্দোষ সে তো কোর্টে বিচার হবে।আজ বাবু ঐ কেশের জন্য বাঁকুড়া গেছেন । আমি তো উনার বাড়ীতে থাকতাম না, তবে বহুদিনের চাকর । শুনেছি যখন গিন্নি মা দাউ দাউ করে জ্বলছিল, তখন এই মনমোহন বাবুকে মরে ভুত হয়ে দেখে নেবার হুমকী দেয়।এই খাতড়ার বাড়ীটা তখন ফার্টিলাইজারের ব্যাবসা ছিল, তখন দোতলাটা ব্যবহার যোগ্য ছিল না।"
এবার অনুকুল কেমন ভয় আর রহস্য গলায় বলল "সে দিনের ঘটনার পর থেকে, বাবু আর গ্রামের ঐ বাড়ীতে রাত কাটান নি। আগে, দিনে তবু বাড়ী যেতেন, প্রায় সাত আটমাস আর নিজে গ্রামের বাড়ী যান না। আমি গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস চাল ,ডাল তেল, টাকা,উনার ছেলেদের কাছে নিয়ে আসি। কারণ উনি খুলে না বললেও উনার ছেলেদের কথা বার্ত্তা শুনে মনে হয়।গিন্নি মা নিশ্চয়ই ভুত হয়েছেন। বাবুকে তো ভয়ভীতি দেখায়ই ,এমন কি ছেলেদের এমন কিছু স্বপ্নে হোক বা যেভাবেই হোক একটা ত্রাস করে , না হলে মায়ের আত্মহত্যার ছমাস পর, বাপকে দোষী সাব্যস্ত করে ছেলেরা কেশ করতে বাধ্য হয়! আবার বাবার যত উকিলের খরচা তো তাদেরই যায়। "
একটু চুপ থেকে কেমন ভয়ে ভয়ে বলে, " বাবু এখানে রাতে কেমন ভয় ভয় করে, তাই আমি উনি একঘরে শুই। রাতে বাথরুম গেলেও আমাকে জাগিয়ে যায়। নিচে তলার একটা ঘরে ঠাকুর, অন্য ঘরে গুরুদেবের জন্য নিদিষ্ট। এ বছর এর মধ্যেই দুবার গুরু এলেন। বেশ কদিন থাকলেন। হোম যজ্ঞী করলেন। এত ভক্তি বা হোম যজ্ঞ আগে তো দেখিনি। তাই কিছু ব্যাপার আছে নিশ্চয়ই।"
আর এর চেয়ে বেশী শোনার আগ্রহ আমার ছিল না ।
মনমোহন বাবু আচরণে বেশ ভদ্রলোক, সচারাচর নিজে থেকে অন্যের সাথে কথা বলেন না।তবে ঐ লজ্ ত্যাগ করলেও, আমার সাথে পথে দেখা হলেই ভদ্রতা করে বলতেন"সাহেব কেমন আছেন!যেখানেই থাকুন, আমার ওখানে মাঝে মাঝে তাস খেলতে যাবেন " হেসে বলতেন "হারলেও আপনার সাথে তাস খেলে আনন্দ আছে,"একটূ আফসোস বা পরাজয়ের গ্লানি যেন তার কথায় ফুটে উঠত ।"
কেমন যেন অস্বস্তি লাগত, ঐ মনমোহন বাবুকে দেখলেই ।লজ্ ছেড়ে দেওয়া সাথে আমার ভুত সংক্রান্ত ভীতু স্বভাব অনেকটাই দায়ী। কেমন যেন ভয় হল,যদি মনমোহনের বিষয়ে সব জেনেও ,ঐ বাড়ীতে থাকি ,তবে ওর মৃতা স্ত্রী হয়ত রুষ্ট হবে ! রাতে যদি ঝাঁই পোড়া শরীর নিয়ে দেখা দেয়!
তবে এ লজ্ ছাড়লেও , মনমোহনকে কাছাকাছি এলাকায় থাকতাম। কোন কোন দিন, নিকট কোন বারান্দায় বা দোকানের চৌকিতে তাস খেলতে সন্ধ্যার সময় বা কম রাতে দেখেছি। ছোট এলাকা খাতড়া , একা বাঁধন ছাড়া অবিবাহিত জীবন, অফুরন্ত সময়। অফিস ফিরে কজন বন্ধুদের সাথে সারা খাতড়াটা চক্কর কাটতাম। ভারত সেবাশ্রম থেকে কংসাবতীর ক্যানেল , সিমেন্ট রোড, পাইপ গ্রাউন্ড,কত শত।
আমার মত বয়সের দুই চাকুরে,মেস নয় ,ঘরভাড়ায় থাকে। তাদের বাড়ীতে প্রায় আড্ডা দিতাম। দুজনেই ব্যাঙ্কের পিও ,অবিবাহিত অবাঙ্গালী। সে সময়ে তারা বেতন পেতো আমার প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি ! আবার ব্যাঙ্কের লিজ নেওয়া ঘরে কম ভাড়ায় থাকত।রীতিমত ফ্যামিলি কোয়ার্টার। ভিন রাজ্য উরিষ্যা ও কর্নাটকে তাদের বাড়ী। দুই বন্ধু পাশাপাশি থাকত। তাদের সেসময়ে ঘরে টিভি ছিল,নিজস্ব কাজের মাসী ছিল, আমার দপ্তরের সাথে ব্যাঙ্কের যোগাযোগ ছিল, মুলত বেকার লোন, কারখানার লোন এসব কারনে, ওদের ব্যাঙ্ককে যেতে হত। মিটিং হত, চাকরী সুত্রে তাই ভালো বন্ধু ছিল ।
ভাঙ্গা বাংলা হিন্দিতে আলাপ গল্প চলত। টিভি দেখা আবার বিনা পয়সায় সম্মানের চা বিস্কুট জুটত।
এর মধ্যে একটা মেসে থাকতে লাগলাম ।আর প্রায় সন্ধ্যায় ঐ ব্যাঙ্ক কর্মী বন্ধুদের কাছে যাই।খানিকটা টিভির মোহে আবার তাদের অমাইক ভদ্র বিনম্র আচরণে। ওদের বাড়ি যাওয়ার পথে এক বারান্দায় মাঝে মধ্যেই সন্ধ্যারাতে মনমোহন বাবুকে তাস খেলতে দেখতাম। দেখা হলে ভদ্রতা বিনিময় হতো ,তবে সেই আড্ডায় তাস খেলতে বসতাম না।
যাইহোক রাজ্য সরকারের বেতন কম কিন্ত পরিচিতি ও সম্মান বেশী! মামুলি হোক আধিকারিক তো বটে, একটা সামাজিক দুরত্ব রাখতে হতো ।
সেদিন ব্যাঙ্ক কর্মী বন্ধুদের বাড়ী যাবার পথে ,মনমোহন বাবু আমায় দেখে নাছারবান্দা, চারজন হয়নি তাই তিনজনে খেলা জমছে না।বাকী দুজন তেমন পরিচিত না। বাকীরা তেমন গভীর ভাবে না হলেও আমায় দু এক চাল অন্তত টোয়েন্টিনাইন খেলতে বলে। অগত্যা চক্ষুলজ্জা আর সৌজন্যতাবশত আর বন্ধুদের বাড়ী না গিয়ে তাসে বসলাম।
শীতকালের এক মেঘলা দিনের ভর সন্ধ্যা , অল্প হাওড়ায় ছিল,বেশ শীত, চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরিতে চাঁদেকে খুঁজে পাওয়া ভার ,কেমন এক নির্জনতা থমথমে পরিবেশ ,এপথে মানুষের আজ আনাগোনা দেখছি না।সামনেই আলো আধাঁরে যেন রহস্যময় নিঃসঙ্গ বিশাল সি আই মাঠ। সময় যায় কিন্তুআর একজন যে আসেই না! তাই অগত্যা বেশ কিছুক্ষণ তাস খেলতে খেলতে নটা বেজে গেল। আজ মনটা খেলায় বসছিল না ,তাস ভালো আসছিল না,বার বার মনমোহন বাবুও তার পার্টনারের কাছে হারছি ।
কেমন ক্লান্ত অবসন্ন লাগছিল । উঠতে চাইলে মনমোহন বার বার অনুরোধ করে, একটু রসীকতা হেসে বলে,"সাহেব আজ হারছেন ,তাই ভালোলাগছে না! ভালো হাতও আপনার আসছে না। আর একটা বার দেখুন না ,নিশ্চয়ই আসবে!"
এর পর যে কবার খুব ভাল তাস পেলাম। রংএর গোলাম পেয়ার ,চোদ্দ, অন্য গোলাম পেয়েও, ভুল চালে হারছি, ক্ষমার অযোগ্য। হারলে মন খারাপ দুঃখ কোনদিন পেতাম না। তাই জেদ নয় হার মেনে বিদায় নেবো ভাবছি। তখন রাত দশটা ।আর খেলতে ইচ্ছাই নেই। বাকী দুজন তারাও খেলা বন্ধ করে এবার বাড়ী যেতে চায়। মনমোহন বাবু কিছুতেই রাজী নয়। এবার বায়না, লাস্ট বার আপনাকে জিতিয়ে খেলা শেষ করব।
সেখান থেকে তার লজ্ কাম বাড়ী পাঁচশো মিটারের কম নয় ,আমার একটু কম। ভদ্রতার তো এক সীমা থাকে! অবশেষে এক প্রকার জোর করেই উঠে পরলাম। বললাম মেস বন্ধ হয়ে যাবে। বাকী দুজনও তাতে সায় দিয়ে উঠে পরল।
কেমন হতাশায় দুঃখে মনমোহন এবার, অন্ধকারাছন্ন সি আই মাঠ বরাবর একা নিঃসঙ্গ কনেকনে শীতের রাতে হাঁটা দিলেন।তার বাড়ীর যাওয়ার পথের বিপরীত দিকে।
বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "ওদিকে এত রাতে আবার কোথায় চললেন"
কোন উত্তর দিলেন না।
পরদিন অফিস গিয়ে শুনলাম। মন্ডল লজের মালিক মনমোহন বাবুর গত সন্ধ্যায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তার চাকর, সেদিন গ্রামের বাড়ীতে গেছিল। রাতে ফিরে দেখে, লজের সিঁড়ি পরবর্তী একতলার অংশ তালাচাবি।সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে উদ্বিগ্ন হয়ে পান্ডা বাবুর কাছে মনমোহনের খবর নিলে পান্ডা বলেন ,তিনি সন্ধ্যায় বাড়ী থেকে মনমোহন বাবুকে বের হতে দেখেছেন ।আর একতলায় তালাচাবি দরজা জানালা বন্ধ সন্ধ্যার থেকেই আছে ।
রাতে অনুকুল ঐ ভাড়াটিয়া পান্ডার কাছে শুয়েছিল। পরদিন খুব সকালেই গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে খবর পান , ওখানে বাবু যান নি। ছেলেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশকে খবর দেয়। দরজা ভেঙ্গে পুলিশ দেখে মনমোহন বাবুর দেহ তার শোবার ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে।
বিষ্ময়ে ভয়ে আর দিশেহারা হয়ে ভাবলাম । কাল রাত দশটা অবধি আমি তবে কাদের সাথে তাস খেললাম! কিন্তু মনমোহন ও বাকিদের সাথে তাস খেলা বিষয়ে অফিসের সহকর্মীদের বললে , কেউ বিশ্বাস করতে চাইল না। কেউ সামনে , কেউ আড়ালে বলল এটা নাকি আমার গাঁজা সেবনের ফল। যেটা সঠিক উত্তর ছিল না। আজও সেই উত্তর পাই নি । আর গাঁজা কেন! কোন ধূমপান জীবনে আজ অবধি করি নেই।

