প্রীতিদি
প্রীতিদি
প্রীতিদি আসত রায়পুর থেকে।শীত থেকে বসন্ত এটুকু সময় প্রীতিদি থাকত।আমরা ছিলাম ওর সহকারী।জিনজার মতলব আদা আনতে পারবি! কেন,প্রীতিদি! সামোসা হবে।মানে কি! দূর উল্লু,সিঙারা।দৌড়ে বাড়ির রান্নাঘর।মা বোঝার আগেই সিঙারা হাজির।সামোসা বানানো হতো কিনতু প্রীতিদি এতো বিলিয়ে দিত,শেষমেশ আমরা পেতাম না,প্রীতিদিও না।পাওনা ছিল প্রীতিদির ভালোবাসা।গাল টিপে দিত,চুল আঁচড়ে দিত।সেসব অনেকদিন আগের কথা।বড় হলাম।
চাকরি পাচ্ছি না।কতো ইন্টারভিউ কিন্তু চাকরি আর হয় না।অবশেষে পেলাম বার্ণপুর নোটিফাইড এরিয়ার বড় বাবু।রিভার সাইড রোড দিয়ে হেঁটে যাওয়া যদিও নদীর গন্ধও নেই।দিদির বাড়ি ছিল চার্চ রোডে সেখানে অবশ্য গীর্জা ছিল।কয়েকদিন দিদির বাড়ি থেকে একটা বাড়ি ভাড়া পেলাম।সুন্দর বাড়ি, ৪ টে ঘর।খুব পছন্দ হল।দিদি বলল,টেলিফোন ধরিস না বাজলেও।আসলে ডেড ফোন
।বাথরুমে শাওয়ারে স্নান সারলাম।মিষ্টি এ
কটা মেয়েলি গন্ধ পেলাম।হয়তো এক সময় সুন্দরী কেউ থাকত।রাতে তারসঙ্গে দেখা হতে পারে।পাবলিক বুথ থেকে ফোন করে বাবা মা- কে জানালাম।বললাম,চলে এসো তোমরা।তাঁরা ভাবলেন,এতোদিনে বেকার ভবঘুরে ছেলেটার হিল্লে হল।বিছানায় পড়তেই ঘুম।ঘুম ভাঙল টেলিফোনের শব্দে।ধরলাম অভ্যাসবশত।দিদির কথা মনে নেই।হ্যালো! কি- রে লালটু! প্রীতিদি তুমি! গল্প হল খুব।শেষে বলল,বাড়িটা ভাল না।থাকিস না।কেন! বলল,পরে বলব।পরদিন সকালে বাড়িটার ছাদে গেলাম।পাশের ছাদে এক ভদ্রমহিলা অবাক চোখে দেখছেন আমায়।নিজেই এবার বললন,কেমন ঘুম হল! আমি হেসে বললাম,ভাল।টেলিফোন! বেজেছিল গভীর রাতে।ধরেছিলেন।হ্যাঁ।বললাম।
কতদিন পর প্রীতিদির সঙ্গে কথা হল।আপনার চেনা ছিল! হ্যাঁ।এবার বললেন,এই বাড়িতে সুইসাইড করেন।হাজব্যান্ডের সঙ্গে এসেছিলেন।কষ্ট হল।মনে পড়ল,প্রীতিদি যেত দোলের পরের দিন হাতে ফাগুয়ার রং লেগে থাকত।যাই হোক,আমার সঙ্গে কথা তো হল।