ফটিকের দাদু ঠাম্মা
ফটিকের দাদু ঠাম্মা


বাঁশ বাগানটা পেরোতে গিয়ে বারেবারে গা ছমছম করে ফটিকের। যেন মনে হয় ঠাকুর্দা তাকে কড়া দৃষ্টিতে নজর রাখছে। আজ বাবার পকেট থেকে বিড়িটা ঝেপে এনে টান দিতেই কে যেন ধমকে উঠল। ফটিকের তো বিষম খেয়ে একাকার কান্ড। কিন্তু কেউ তো নেই। আবার কাজে মন দিতেই কে যেন বলল, “দেখো প্রতিমা তোমার নাতির কীর্তি।” এবারে ফটিক ভয় পেল। প্রতিমা যে তার ঠাম্মার নাম। তিনিও তো মাস তিনেক হলো মারা গেছেন। ফটিক বিড়ি হাতে মানে মানে কেটে পড়ার জন্য পা বাড়াতেই আবার ধমক, “এই কোথায় চললি? কোত্থেকে পেলি এসব ছাই-পাশ বল?” এবার একটা মেয়েলি গলা। ফটিক তুতলে বলল, “ব-বাবার পকেটে।”
এবার বাঁশ বাগান দুলে উঠল, “এই লোকটার জন্য আমার ছেলেটা উচ্ছন্নে গেল গো। কতবার বলেছিলাম বাচ্চা ছেলেটাকে সিগারেট কিনতে পাঠিও না। তা বুড়ো শুনলে তো? এখন দেখো গোটা বংশ বিড়ি ফুঁকছে।” দাদু প্রতিবাদের মৃদু চেষ্টায় বলল, “আহা, আমি তো তাও সিগারেট ফুকতাম। তোমার ছেলে তো বিড়ি ফোকে।” সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠল আরেকজন, “চোপ। শাক দিয়ে আর মাছ ঢেকো না।” ফটিক দেখল দাদু চুপ মেরেছে। এটাই সঠিক সময়। বাঁশবাগান ছেড়ে হাঁটা লাগাল ফটিক। একটা ঠান্ডা হাওয়া কানের কাছে এসে বলে গেল, “রোজ একটা করে বিড়ি রেখে যাবি বাগানে। মিস হলেই কিন্তু দেবো ব্যাটা তোর ঘাড় মটকে।”